সূরা : সুরা ইউসুফ

الٓرۚ تِلْكَ ءَايَٰتُ ٱلْكِتَٰبِ ٱلْمُبِينِ

আলিফ লাম রা, এই আয়াতগুলো সুস্পষ্ট আল কিতাবের।

সূরা : সুরা ইউসুফ

إِنَّآ أَنزَلْنَٰهُ قُرْءَٰنًا عَرَبِيًّا لَّعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ

নিশ্চয়ই আমি এই কোরআনকে আরবী ভাষায় অবতীর্ণ করেছি। যাতে তোমরা বুঝতে পার।*

*12(2) নং আয়াতের আরবী ভাষার ব্যাখ্যায় 13(37),16(103),20(113),26(195),39(28),41(3,44),42(7),43(3),46(12)...।

সূরা : সুরা ইউসুফ

نَحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ أَحْسَنَ ٱلْقَصَصِ بِمَآ أَوْحَيْنَآ إِلَيْكَ هَٰذَا ٱلْقُرْءَانَ وَإِن كُنتَ مِن قَبْلِهِۦ لَمِنَ ٱلْغَٰفِلِينَ

আমি তোমার কাছে অতি উত্তম কাহিনীসমূহ বর্ণনা করছি, যা আমি তোমার প্রতি ওহী করেছি এই কোরআনের মাধ্যমে। যদিও তুমি এর পূর্বে অনবহিতদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে।*

*12(3),নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 11(49)...।

সূরা : সুরা ইউসুফ

إِذْ قَالَ يُوسُفُ لِأَبِيهِ يَٰٓأَبَتِ إِنِّى رَأَيْتُ أَحَدَ عَشَرَ كَوْكَبًا وَٱلشَّمْسَ وَٱلْقَمَرَ رَأَيْتُهُمْ لِى سَٰجِدِينَ


ইউসুফ যখন তার পিতাকে বলে, হে আমার পিতা ! নিশ্চয় আমি এগারোটি তারা এবং সূর্য ও চাঁদকে দেখেছি- তারা আমাকে মান্য করছে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ يَٰبُنَىَّ لَا تَقْصُصْ رُءْيَاكَ عَلَىٰٓ إِخْوَتِكَ فَيَكِيدُوا۟ لَكَ كَيْدًاۖ إِنَّ ٱلشَّيْطَٰنَ لِلْإِنسَٰنِ عَدُوٌّ مُّبِينٌ


সে বলে হে আমার পুত্র, তোমার এই স্বপ্নের কথা তোমার ভাইদের কাছে বর্ণনা করো না। তাহ'লে তারা তোমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করবে, বড় চক্রান্ত। নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের জন্যে প্রকাশ্য শত্রু।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَكَذَٰلِكَ يَجْتَبِيكَ رَبُّكَ وَيُعَلِّمُكَ مِن تَأْوِيلِ ٱلْأَحَادِيثِ وَيُتِمُّ نِعْمَتَهُۥ عَلَيْكَ وَعَلَىٰٓ ءَالِ يَعْقُوبَ كَمَآ أَتَمَّهَا عَلَىٰٓ أَبَوَيْكَ مِن قَبْلُ إِبْرَٰهِيمَ وَإِسْحَٰقَۚ إِنَّ رَبَّكَ عَلِيمٌ حَكِيمٌ


আর এভাবেই তোমার প্রতিপালক তোমাকে মনোনীত করবেন এবং তোমাকে (আল কিতাবের 6236 টি) হাদিস সমূহ থেকে ব্যখ্যা শিখাবেন। আর তাঁর নিয়ামত তোমার উপর এবং ইয়াকুবের বংশধরদের উপর পূর্ণ করবেন, ঠিক যেমন তোমার পিতৃ-পুরুষ ইবরাহীম ও ইসহাকের উপরে এর পূর্বে তা পূর্ণ করেছেন। নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক মহাজ্ঞানী, মহা বৈজ্ঞানিক। 

সূরা : সুরা ইউসুফ

لَّقَدْ كَانَ فِى يُوسُفَ وَإِخْوَتِهِۦٓ ءَايَٰتٌ لِّلسَّآئِلِينَ


নিশ্চয়ই ইউসুফ ও তার ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসাকারীদের জন্যে অবশ্যই অনেক (শিক্ষণীয়) নিদর্শন রয়েছে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

إِذْ قَالُوا۟ لَيُوسُفُ وَأَخُوهُ أَحَبُّ إِلَىٰٓ أَبِينَا مِنَّا وَنَحْنُ عُصْبَةٌ إِنَّ أَبَانَا لَفِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ


তারা যখন বলে, ইউসুফ ও তার ভাই আমাদের পিতার কাছে আমাদের চেয়ে অধিক প্রিয়, অথচ আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ দল। নিশ্চয়ই আমাদের পিতা প্রকাশ্য বিভ্রান্তির মধ্যে আছে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

ٱقْتُلُوا۟ يُوسُفَ أَوِ ٱطْرَحُوهُ أَرْضًا يَخْلُ لَكُمْ وَجْهُ أَبِيكُمْ وَتَكُونُوا۟ مِنۢ بَعْدِهِۦ قَوْمًا صَٰلِحِينَ


অতএব তোমরা ইউসুফকে হত্যা কর অথবা তাকে অন্য কোন দেশে ফেলে আসো। তাহলে পিতার দৃষ্টি তোমাদের দিকেই নিবিষ্ট হবে। আর তোমরাও এরপর থেকে সংশোধনকারী লোক হয়ে যাবে !

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ قَآئِلٌ مِّنْهُمْ لَا تَقْتُلُوا۟ يُوسُفَ وَأَلْقُوهُ فِى غَيَٰبَتِ ٱلْجُبِّ يَلْتَقِطْهُ بَعْضُ ٱلسَّيَّارَةِ إِن كُنتُمْ فَٰعِلِينَ


তাদের মধ্যে হতে একপ্রবক্তা বলে, না, তোমরা ইউসুফকে হত্যা কর না। বরং তাকে কোনো গভীর কূপের মধ্যে নিক্ষেপ কর। পথযাত্রীদলের কেউ তাকে তুলে নিবে, যদি তোমরা কিছু করতেই চাও।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ يَٰٓأَبَانَا مَا لَكَ لَا تَأْمَ۫نَّا عَلَىٰ يُوسُفَ وَإِنَّا لَهُۥ لَنَٰصِحُونَ


তারা বলে, হে আমাদের পিতা! ইউসুফের ব্যাপারে আপনি কেন আমাদেরকে বিশ্বাস করছেন না? অথচ নিশ্চয়ই আমরা তার জন্যে হিতাকাঙ্ক্ষী !

সূরা : সুরা ইউসুফ

أَرْسِلْهُ مَعَنَا غَدًا يَرْتَعْ وَيَلْعَبْ وَإِنَّا لَهُۥ لَحَٰفِظُونَ


আগামী কাল তাকে আমাদের সাথে পাঠিয়ে দিন। সে সানন্দে ফল খাবে ও খেলা ধুলা করবে। আর আমরা সবাই তাকে যত্ন করব।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ إِنِّى لَيَحْزُنُنِىٓ أَن تَذْهَبُوا۟ بِهِۦ وَأَخَافُ أَن يَأْكُلَهُ ٱلذِّئْبُ وَأَنتُمْ عَنْهُ غَٰفِلُونَ


সে বলে, তোমরা তাকে নিয়ে যাবে, সে কথায় আমি খুবই চিন্তিত। আর আমার ভয় হচ্ছে, হয়তো তাকে কোনো নেকড়ে বাঘ খেয়ে ফেলবে। এ অবস্থায় তোমরাও যে তার থেকে অমনোযোগী হয়ে যাবে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ لَئِنْ أَكَلَهُ ٱلذِّئْبُ وَنَحْنُ عُصْبَةٌ إِنَّآ إِذًا لَّخَٰسِرُونَ


তারা বলে, তাকে যদি নেকড়ে বাঘ এসে খেয়ে ফেলে, আর আমরা ঐকবদ্ধ একটি দল থাকা সত্বেও, তাহ'লে তো অবশ্যই আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হবো।

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَلَمَّا ذَهَبُوا۟ بِهِۦ وَأَجْمَعُوٓا۟ أَن يَجْعَلُوهُ فِى غَيَٰبَتِ ٱلْجُبِّۚ وَأَوْحَيْنَآ إِلَيْهِ لَتُنَبِّئَنَّهُم بِأَمْرِهِمْ هَٰذَا وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ


অতঃপর তারা যখন ইউসুফকে নিয়ে যায়, আর তারা সবাই একমত হয় যে, তারা তাকে অন্ধকার গভীর কূপের মধ্যে ফেলে দিবে। এ অবস্থায় আমি তার কাছে ওহী করি, এমন এক দিন অবশ্যই আসবে, যেদিন তুমি তাদেরকে এ কাজ সম্পর্কে জানিয়ে দিবে। অথচ তারা এখন কোনো অনুভব করছে না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَجَآءُوٓ أَبَاهُمْ عِشَآءً يَبْكُونَ


তারা সবাই ঈশার-রাতের সময় তাদের পিতার কাছে কাঁদতে কাঁদতে ফিরে আসে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ يَٰٓأَبَانَآ إِنَّا ذَهَبْنَا نَسْتَبِقُ وَتَرَكْنَا يُوسُفَ عِندَ مَتَٰعِنَا فَأَكَلَهُ ٱلذِّئْبُۖ وَمَآ أَنتَ بِمُؤْمِنٍ لَّنَا وَلَوْ كُنَّا صَٰدِقِينَ


তারা বলে হে আমাদের পিতা, নিশ্চয়ই আমরা সবাই দৌঁড়ের পাল্লা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, আর ইউসুফকে আমাদের জিনিসপত্রের কাছে বসিয়ে রেখেছিলাম। এরই মধ্যে নেকড়ে বাঘ এসে তাকে খেয়ে ফেলে, আপনি তো আমাদের কোনো কথাই বিশ্বাস করেন না, যদি আমরা সত্যবাদী হই, তবুও

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَجَآءُو عَلَىٰ قَمِيصِهِۦ بِدَمٍ كَذِبٍۚ قَالَ بَلْ سَوَّلَتْ لَكُمْ أَنفُسُكُمْ أَمْرًاۖ فَصَبْرٌ جَمِيلٌۖ وَٱللَّهُ ٱلْمُسْتَعَانُ عَلَىٰ مَا تَصِفُونَ

তারা তার জামার উপর মিথ্যা রক্ত লাগিয়ে নিয়ে আসে। সে বলে বরং তোমাদের মন এ কাজ তোমাদেরকে সাজিয়ে দিয়েছে। অতএব আমার ধৈর্য ধরাই উত্তম। এক্ষেত্রে আল্লাহই সাহায্যস্থল তোমরা যা কিছু রচনা করছো।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَجَآءَتْ سَيَّارَةٌ فَأَرْسَلُوا۟ وَارِدَهُمْ فَأَدْلَىٰ دَلْوَهُۥۖ قَالَ يَٰبُشْرَىٰ هَٰذَا غُلَٰمٌۚ وَأَسَرُّوهُ بِضَٰعَةًۚ وَٱللَّهُ عَلِيمٌۢ بِمَا يَعْمَلُونَ


আর সেখানে একটি বিদেশী যাত্রীদল আসে। অতঃপর তারা তাদের পানি সংগ্রাহককে পাঠায়, সে যখন তার পানির বা‌লতি সেখানে নামিয়ে দেয়। তখন সে বলে উঠে, কি সুখবর ! এ যে একটি ছেলে। তারা তাকে পণ্যদ্রব্য হিসেবে লুকিয়ে রাখে। আর আল্লাহ ঐ বিষয়ে খুব জানেন, তারা যে সব কাজ করছে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَشَرَوْهُ بِثَمَنٍۭ بَخْسٍ دَرَٰهِمَ مَعْدُودَةٍ وَكَانُوا۟ فِيهِ مِنَ ٱلزَّٰهِدِينَ


আর তারা ইউসুফকে খুব সামান্য দামে বিক্রি করে দেয়, কেননা তারা এ ব্যাপারে তেমন বেশী লোভাতুর ছিলো না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَقَالَ ٱلَّذِى ٱشْتَرَىٰهُ مِن مِّصْرَ لِٱمْرَأَتِهِۦٓ أَكْرِمِى مَثْوَىٰهُ عَسَىٰٓ أَن يَنفَعَنَآ أَوْ نَتَّخِذَهُۥ وَلَدًاۚ وَكَذَٰلِكَ مَكَّنَّا لِيُوسُفَ فِى ٱلْأَرْضِ وَلِنُعَلِّمَهُۥ مِن تَأْوِيلِ ٱلْأَحَادِيثِۚ وَٱللَّهُ غَالِبٌ عَلَىٰٓ أَمْرِهِۦ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ

আর মিসরের (রাজধানীর) যে ব্যক্তি তাকে ক্রয় করে, সে তার স্ত্রীকে বলে, তার থাকার সম্মানজনক ব্যবস্থা করো। আশা করা যায় যে,  সে আমাদের উপকারে আসবে। অথবা আমরা তাকে পুত্র হিসেবে গ্রহণ করবো। এভাবেই আমি ইউসুফকে সে দেশে প্রতিষ্ঠিত করি। যেনো আমি তাকে আহাদিসের (কোরআনের 6236 টি আয়াতের) ব্যাখ্যা শিখাতে পারি। আল্লাহ তাঁর নিজের কাজের ক্ষেত্রে প্রবল। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَلَمَّا بَلَغَ أَشُدَّهُۥٓ ءَاتَيْنَٰهُ حُكْمًا وَعِلْمًاۚ وَكَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلْمُحْسِنِينَ


যখন ইউসুফ যৌবনে উপনীত হয়। আমি তাকে বুদ্ধি বিবেচনা (হিকমা) আর বিদ্যা-জ্ঞান দান করি। এভাবেই তো আমি সৎকর্মশীলদেরকে প্রতিফল দিয়ে থাকি।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَرَٰوَدَتْهُ ٱلَّتِى هُوَ فِى بَيْتِهَا عَن نَّفْسِهِۦ وَغَلَّقَتِ ٱلْأَبْوَٰبَ وَقَالَتْ هَيْتَ لَكَۚ قَالَ مَعَاذَ ٱللَّهِۖ إِنَّهُۥ رَبِّىٓ أَحْسَنَ مَثْوَاىَۖ إِنَّهُۥ لَا يُفْلِحُ ٱلظَّٰلِمُونَ


ইউসুফকে সেই মহিলা লোকটি, নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে চায়, যার ঘরে ইউসুফ বাস করছিলো। সে দরজা বন্ধ করে বলে তাড়াতাড়ি চলে এসো ! ইউসুফ বলে, আল্লাহর আশ্রয় চাই। নিশ্চয়ই তিনি আমার প্রতিপালক, তিনি আমার বসবাসের উত্তম ব্যবস্থা করেছেন। নিশ্চয়ই তিনি  সীমালঙ্ঘনকারীদের সফল হতে দেন না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَلَقَدْ هَمَّتْ بِهِۦۖ وَهَمَّ بِهَا لَوْلَآ أَن رَّءَا بُرْهَٰنَ رَبِّهِۦۚ كَذَٰلِكَ لِنَصْرِفَ عَنْهُ ٱلسُّوٓءَ وَٱلْفَحْشَآءَۚ إِنَّهُۥ مِنْ عِبَادِنَا ٱلْمُخْلَصِينَ


সেই মেয়ে লোকটি ইউসুফের দিকে আকৃষ্ট হয়। আর ইউসুফও তার দিকে আকৃষ্ট হচ্ছিল, তবে ইউসুফ যদি তার প্রতিপালকের প্রমাণ (নিদর্শন) দেখতে না পেতো! এভাবেই আমি ইউসুফের কাছ থেকে মন্দ ও অশ্লীলতাকে দূরে সরিয়ে রাখি। নিশ্চয়ই ইউসুফ আমার বিশুদ্ধ চিত্ত দাসদের অন্তর্ভূক্ত।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَٱسْتَبَقَا ٱلْبَابَ وَقَدَّتْ قَمِيصَهُۥ مِن دُبُرٍ وَأَلْفَيَا سَيِّدَهَا لَدَا ٱلْبَابِۚ قَالَتْ مَا جَزَآءُ مَنْ أَرَادَ بِأَهْلِكَ سُوٓءًا إِلَّآ أَن يُسْجَنَ أَوْ عَذَابٌ أَلِيمٌ


তারা উভয়েই দরজার দিকে দৌড়ে আসে। সেই মহিলা লোকটি তার জামার পিছন দিক থেকে ছিঁড়ে ফেলে। আর তারা উভয়েই দরজার কাছে মেয়ে লোকটির স্বামীকে দেখতে পায়। তখন মেয়ে লোকটি বলে, যে লোক তোমার পরিবারের সাথে কুকর্ম করার কামনা করে। তাকে কারাগারে বন্দী করা বা কোন নিদারুণ শাস্তি ছাড়া আর কিই বা তার প্রতিফল হতে পারে ?

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ هِىَ رَٰوَدَتْنِى عَن نَّفْسِىۚ وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِّنْ أَهْلِهَآ إِن كَانَ قَمِيصُهُۥ قُدَّ مِن قُبُلٍ فَصَدَقَتْ وَهُوَ مِنَ ٱلْكَٰذِبِينَ

সে বলে, সে (মহিলাই) তো আমাকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে ফুসলিয়েছে। তারই পরিবারের মধ্য হতে এক সাক্ষ্যদাতা সাক্ষ্য দেয়, ইউসুফের জামা যদি সামনের দিক থেকে ছিঁড়া থাকে,তাহলে সে মহিলা সত্য বলেছে, আর ইউসুফ মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হবে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَإِن كَانَ قَمِيصُهُۥ قُدَّ مِن دُبُرٍ فَكَذَبَتْ وَهُوَ مِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ


আর তার জামা যদি পিছন দিক থেকেই ছিঁড়া থাকে, তাহলে সে-ই (মহিলাই) মিথ্যা বলেছে, আর ইউসুফ সত্যবাদীদের অন্তর্ভূক্ত হবে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَلَمَّا رَءَا قَمِيصَهُۥ قُدَّ مِن دُبُرٍ قَالَ إِنَّهُۥ مِن كَيْدِكُنَّۖ إِنَّ كَيْدَكُنَّ عَظِيمٌ


অতঃপর সে যখন দেখে ইউসুফের পিছন দিক থেকে জামা ছেঁড়া, তখন স্ত্রী লোকটিকে সে (গৃহ স্বামী) বলে, নিশ্চয়ই এসব তোমাদের নারীদের ছলনা। নিশ্চয়ই তোমাদের ছলনা বড়ই ভয়ানক।

সূরা : সুরা ইউসুফ

يُوسُفُ أَعْرِضْ عَنْ هَٰذَاۚ وَٱسْتَغْفِرِى لِذَنۢبِكِۖ إِنَّكِ كُنتِ مِنَ ٱلْخَاطِـِٔينَ


ইউসুফ ! তুমি এতে মনোক্ষুন্ন হয়ো না। আর (হে মহিলা) তুমি তোমার অপরাধের জন্যে ক্ষমা চাও, নিশ্চয়ই তুমি অপরাধীদের অন্তর্ভুক্ত।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَقَالَ نِسْوَةٌ فِى ٱلْمَدِينَةِ ٱمْرَأَتُ ٱلْعَزِيزِ تُرَٰوِدُ فَتَىٰهَا عَن نَّفْسِهِۦۖ قَدْ شَغَفَهَا حُبًّاۖ إِنَّا لَنَرَىٰهَا فِى ضَلَٰلٍ مُّبِينٍ

শহরের মেয়েরা বলাবলি শুরু করে, সম্মানিত গভর্নরের স্ত্রী সে তার পালিত যুবক ছেলেকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করতে চায়। তারই প্রেমে সে দিশাহারা হয়েছে। আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি সে চরম বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَلَمَّا سَمِعَتْ بِمَكْرِهِنَّ أَرْسَلَتْ إِلَيْهِنَّ وَأَعْتَدَتْ لَهُنَّ مُتَّكَـًٔا وَءَاتَتْ كُلَّ وَٰحِدَةٍ مِّنْهُنَّ سِكِّينًا وَقَالَتِ ٱخْرُجْ عَلَيْهِنَّۖ فَلَمَّا رَأَيْنَهُۥٓ أَكْبَرْنَهُۥ وَقَطَّعْنَ أَيْدِيَهُنَّ وَقُلْنَ حَٰشَ لِلَّهِ مَا هَٰذَا بَشَرًا إِنْ هَٰذَآ إِلَّا مَلَكٌ كَرِيمٌ


অতঃপর সে (গভর্নরের স্ত্রী) যখন তাদের ষড়যন্ত্রের কথা শুনে, তখন সে তাদেরকে নিমন্ত্রণ করে। আর তাদের জন্য সে অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করে। আর তাদের প্রত্যেককে উত্তম আসনের ব্যবস্থা করে। আর সে ইউসুফকে বলে, তুমি এদের সামনে এসো। অতঃপর যখন সেই মেয়েরা ইউসুফকে দেখে, তখন ইউসুফের বড়ত্বের রূপ সৌন্দর্য্য তাদের মনে এমন করে ছেয়ে যায় যাতে তারা নিজেদের (কূ-মতলবের) হাতই কেটে ফেলে। তারা বলে, আল্লাহর মাহাত্ম্য ! এ তো কোনো মানুষ নয়, এ তো এক সম্মানিত সরদার (মালাক) ।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَتْ فَذَٰلِكُنَّ ٱلَّذِى لُمْتُنَّنِى فِيهِۖ وَلَقَدْ رَٰوَدتُّهُۥ عَن نَّفْسِهِۦ فَٱسْتَعْصَمَۖ وَلَئِن لَّمْ يَفْعَلْ مَآ ءَامُرُهُۥ لَيُسْجَنَنَّ وَلَيَكُونًا مِّنَ ٱلصَّٰغِرِينَ


তখন সে বলে, এই তো সেই যুবকটি, যাকে নিয়ে তোমরা আমাকে গালাগালি করছিলে। একথা ঠিকই আমি তাকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে চেয়েছি। কিন্তু সে এড়িয়ে গেছে। এ যদি সে কাজ না করে, যা আমি নির্দেশ দিচ্ছি, তাহলে তাকে বন্দি করা হবে, যেনো সে ছোটলোকদের অন্তর্ভূক্ত হয়।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ رَبِّ ٱلسِّجْنُ أَحَبُّ إِلَىَّ مِمَّا يَدْعُونَنِىٓ إِلَيْهِۖ وَإِلَّا تَصْرِفْ عَنِّى كَيْدَهُنَّ أَصْبُ إِلَيْهِنَّ وَأَكُن مِّنَ ٱلْجَٰهِلِينَ


ইউসুফ তখন বলে, হে আমার প্রতিপালক ! যে কাজের জন্যে তারা আমাকে ডাকছে, তার চেয়ে কারাগারই আমার কাছে অধিক প্রিয়। (হে আমার প্রতিপালক) এখন আপনি যদি আমার উপর থেকে তাদের এই ছলনা না ফিরান, তাহলে হয়তো আমি তাদের ছলনায় তাদের দিকে আকৃষ্ট হয়েই পড়বো ! আর আমি অজ্ঞদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়বো।

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَٱسْتَجَابَ لَهُۥ رَبُّهُۥ فَصَرَفَ عَنْهُ كَيْدَهُنَّۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلسَّمِيعُ ٱلْعَلِيمُ

তখন ইউসুফের প্রতিপালক তার ডাকে সাড়া দিলেন। ইউসুফের উপর থেকে নারীদের চালবাজী দূর করে দিলেন। একথা সত্য সুনিশ্চিত যে আল্লাহ হলেন মহা শ্রবণকারী, মহা জ্ঞানী।

সূরা : সুরা ইউসুফ

ثُمَّ بَدَا لَهُم مِّنۢ بَعْدِ مَا رَأَوُا۟ ٱلْءَايَٰتِ لَيَسْجُنُنَّهُۥ حَتَّىٰ حِينٍ


এর পরেও তারা নিদর্শনসমূহ (ইউসুফের নির্দোষের প্রমাণ সমূহ) দেখেছে, তবুও তাদের মত এই হয় যে, কিছু দিনের জন্য হলেও তাকে বন্দি করে রাখতেই হবে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَدَخَلَ مَعَهُ ٱلسِّجْنَ فَتَيَانِۖ قَالَ أَحَدُهُمَآ إِنِّىٓ أَرَىٰنِىٓ أَعْصِرُ خَمْرًاۖ وَقَالَ ٱلْءَاخَرُ إِنِّىٓ أَرَىٰنِىٓ أَحْمِلُ فَوْقَ رَأْسِى خُبْزًا تَأْكُلُ ٱلطَّيْرُ مِنْهُۖ نَبِّئْنَا بِتَأْوِيلِهِۦٓۖ إِنَّا نَرَىٰكَ مِنَ ٱلْمُحْسِنِينَ


তার সাথে আরো দুইটি যুবক কারাগারে প্রবেশ করে। তাদের মধ্যে একজন বলে, নিশ্চয়ই আমি সপ্নে দেখছি  আংগুরের রস নিংড়ে (মদ) বের করছি। আর দ্বিতীয় যুবকটি বলে আমি মাথার উপরে রুটি বয়ে আনছি আর সেখান থেকেই পাখীরা তা খাচ্ছে। আমাদেরকে আপনি এর ব্যাখ্যা বলে দিন, নিশ্চয়ই আমরা আপনাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত দেখতে পাচ্ছি।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ لَا يَأْتِيكُمَا طَعَامٌ تُرْزَقَانِهِۦٓ إِلَّا نَبَّأْتُكُمَا بِتَأْوِيلِهِۦ قَبْلَ أَن يَأْتِيَكُمَاۚ ذَٰلِكُمَا مِمَّا عَلَّمَنِى رَبِّىٓۚ إِنِّى تَرَكْتُ مِلَّةَ قَوْمٍ لَّا يُؤْمِنُونَ بِٱللَّهِ وَهُم بِٱلْءَاخِرَةِ هُمْ كَٰفِرُونَ


সে বলে, তোমাদেরকে যে খাবার দেওয়া হয়, সে খাবার এসে পৌঁছানোর পূর্বেই এর ব্যাখ্যা বলে দিবো। আমার প্রতিপালক আমাকে যা কিছু শিখিয়েছেন, সে সবের মধ্যে এও রয়েছে। নিশ্চয়ই আমি এমন জাতির পথপন্থা বর্জন করেছি, যারা আল্লাহর উপরে ঈমান আনে না, আর পরকাল সম্পর্কে অস্বীকার করে থাকে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَٱتَّبَعْتُ مِلَّةَ ءَابَآءِىٓ إِبْرَٰهِيمَ وَإِسْحَٰقَ وَيَعْقُوبَۚ مَا كَانَ لَنَآ أَن نُّشْرِكَ بِٱللَّهِ مِن شَىْءٍۚ ذَٰلِكَ مِن فَضْلِ ٱللَّهِ عَلَيْنَا وَعَلَى ٱلنَّاسِ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَشْكُرُونَ


আর আমি তো আমার পিতৃ পুরুষ ইবরাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের পথপন্থাই অনুসরণ করেছি। আমাদের পক্ষে শোভা পায়না যে, আল্লাহর সাথে আমরা (মৃত বুজুর্গো, পীর বা) কোনও বস্তুকে শরীক করবো। এ তো আল্লাহরই দান সাহায্য, আমাদের উপরে আর সমস্ত মানব জাতির উপরেও। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

يَٰصَىٰحِبَىِ ٱلسِّجْنِ ءَأَرْبَابٌ مُّتَفَرِّقُونَ خَيْرٌ أَمِ ٱللَّهُ ٱلْوَٰحِدُ ٱلْقَهَّارُ

হে আমার কারাগারের সঙ্গী দু'জন, পৃথক পৃথক বহু  প্রতিপালক কি উত্তম, না কি এক পরাক্রমশালী আল্লাহ? *

*12(39),নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 3(64)...।

সূরা : সুরা ইউসুফ

مَا تَعْبُدُونَ مِن دُونِهِۦٓ إِلَّآ أَسْمَآءً سَمَّيْتُمُوهَآ أَنتُمْ وَءَابَآؤُكُم مَّآ أَنزَلَ ٱللَّهُ بِهَا مِن سُلْطَٰنٍۚ إِنِ ٱلْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِۚ أَمَرَ أَلَّا تَعْبُدُوٓا۟ إِلَّآ إِيَّاهُۚ ذَٰلِكَ ٱلدِّينُ ٱلْقَيِّمُ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ

‘তোমরা তাঁকে বাদ দিয়ে কতগুলো নামের দাসত্ব করছ, যাদের নামকরণ তোমরা ও তোমাদের বাপ-দাদারা করেছ, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ কোনো প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। বিধান দেওয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারও নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন, যেনো তাঁকে ছাড়া আর কারো দাসত্ব না করো’। এটাই হচ্ছে সঠিক জীবন ব্যবস্থা, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই জানে না’।

*বিধান কেবল আল্লাহরই এব্যাপারে, 6(57,62),7(33,71),12(40,67),28(26,70,88),40(12),42(21),53(23)...।

সূরা : সুরা ইউসুফ

يَٰصَىٰحِبَىِ ٱلسِّجْنِ أَمَّآ أَحَدُكُمَا فَيَسْقِى رَبَّهُۥ خَمْرًاۖ وَأَمَّا ٱلْءَاخَرُ فَيُصْلَبُ فَتَأْكُلُ ٱلطَّيْرُ مِن رَّأْسِهِۦۚ قُضِىَ ٱلْأَمْرُ ٱلَّذِى فِيهِ تَسْتَفْتِيَانِ

‘তোমরা তাঁকে বাদ দিয়ে কতগুলো নামের দাসত্ব করছ, যাদের নামকরণ তোমরা ও তোমাদের বাপ-দাদারা করেছ, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ কোনো প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি। বিধান দেওয়ার অধিকার একমাত্র আল্লাহ ছাড়া আর কারও নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন, যেনো তাঁকে ছাড়া আর কারো দাসত্ব না করো’। এটাই হচ্ছে সঠিক জীবন ব্যবস্থা, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই জানে না’।

*বিধান কেবল আল্লাহরই এব্যাপারে, 6(57,62),7(33,71),12(40,67),28(26,70,88),40(12),42(21),53(23)...।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَقَالَ لِلَّذِى ظَنَّ أَنَّهُۥ نَاجٍ مِّنْهُمَا ٱذْكُرْنِى عِندَ رَبِّكَ فَأَنسَىٰهُ ٱلشَّيْطَٰنُ ذِكْرَ رَبِّهِۦ فَلَبِثَ فِى ٱلسِّجْنِ بِضْعَ سِنِينَ

সে (ইউসুফ) যার মুক্তিলাভ সম্পর্কে ধারণা পোষণ করছিল, তাকে বলে ভাই তুমি , তোমার প্রভূর কাছে আমার কথা উল্লেখ করবে'। কিন্তু শয়তান তাকে ভুলিয়ে দেয়, তার প্রভূর কাছে ইউসুফের কথা বলতে ! এভাবে সে বেজোড় বছর কারাগারে কাটিয়ে দেয়।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَقَالَ ٱلْمَلِكُ إِنِّىٓ أَرَىٰ سَبْعَ بَقَرَٰتٍ سِمَانٍ يَأْكُلُهُنَّ سَبْعٌ عِجَافٌ وَسَبْعَ سُنۢبُلَٰتٍ خُضْرٍ وَأُخَرَ يَابِسَٰتٍۖ يَٰٓأَيُّهَا ٱلْمَلَأُ أَفْتُونِى فِى رُءْيَٰىَ إِن كُنتُمْ لِلرُّءْيَا تَعْبُرُونَ


এবং রাজা বলে, নিশ্চয়ই আমি দেখছি সাতটি মোটাসোটা গাভী, এদেরকে সাতটি শুঁটকো গাভী খাচ্ছে। আর সাতটি সবুজ শীষ, আর অন্যগুলো শুকনা শীষ। হে মালাউ (মৌলবী মুফতিরা) ! তোমরা আমার স্বপ্নের ব্যাখ্যা শোনাও। যদি তোমাদের মধ্যে স্বপ্নের ব্যাখ্যা কারোর জানা থাকে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوٓا۟ أَضْغَٰثُ أَحْلَٰمٍۖ وَمَا نَحْنُ بِتَأْوِيلِ ٱلْأَحْلَٰمِ بِعَٰلِمِينَ


তারা বলে, এটি অর্থহীন সপ্ন। আর এরূপ সপ্নের ব্যাখ্যা আমাদের জানা নেই।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَقَالَ ٱلَّذِى نَجَا مِنْهُمَا وَٱدَّكَرَ بَعْدَ أُمَّةٍ أَنَا۠ أُنَبِّئُكُم بِتَأْوِيلِهِۦ فَأَرْسِلُونِ


আর দু'জন কয়েদীদের মধ্য হ'তে যে মুক্তি পেয়েছিলো, অনেক দিন পর তার মনে পড়ে, সে বলতে লাগে আমিই আপনাদেরকে এর ব্যাখ্যা জানাবো, অতএব আমাকে আপনারা পাঠিয়ে দিন (কারাগারে)।

সূরা : সুরা ইউসুফ

يُوسُفُ أَيُّهَا ٱلصِّدِّيقُ أَفْتِنَا فِى سَبْعِ بَقَرَٰتٍ سِمَانٍ يَأْكُلُهُنَّ سَبْعٌ عِجَافٌ وَسَبْعِ سُنۢبُلَٰتٍ خُضْرٍ وَأُخَرَ يَابِسَٰتٍ لَّعَلِّىٓ أَرْجِعُ إِلَى ٱلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَعْلَمُونَ

হে ইউসুফ ! হে সত্যবাদী ! আপনি তাদেরকে ব্যাখ্যা করে দিন, সাতটি মোটাসোটা গাভীকে সাতটি শুঁটকো গাভী খাচ্ছে। আর সাতটি সবুজ শীষ আর সাতটি শুকনা শীষ। আমি লোকদের কাছে ফিরে যাবো, যাতে তারা জানতে পারে (এর ব্যাখ্যা)।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ تَزْرَعُونَ سَبْعَ سِنِينَ دَأَبًا فَمَا حَصَدتُّمْ فَذَرُوهُ فِى سُنۢبُلِهِۦٓ إِلَّا قَلِيلًا مِّمَّا تَأْكُلُونَ


সে বলে, তোমরা পরপর সাত বছর ধরে চাষাবাদ করবে। অতঃপর যা কাটবে তার মধ্য থেকে কিছুটা খোরাকী ও অন্যগুলো শীষসহ বীজ হিসেবে রেখে দিবে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

ثُمَّ يَأْتِى مِنۢ بَعْدِ ذَٰلِكَ سَبْعٌ شِدَادٌ يَأْكُلْنَ مَا قَدَّمْتُمْ لَهُنَّ إِلَّا قَلِيلًا مِّمَّا تُحْصِنُونَ


এরপর আসবে কঠিন দূর্ভিক্ষের সাতটি বছর। তখন তোমরা সেই দিনের জন্য যা জমিয়ে রেখেছিলে তা খেয়ে যাবে। কিন্তু সামান্য পরিমাণ যা তোমরা বাচিয়ে রাখবে তা বাদে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

ثُمَّ يَأْتِى مِنۢ بَعْدِ ذَٰلِكَ عَامٌ فِيهِ يُغَاثُ ٱلنَّاسُ وَفِيهِ يَعْصِرُونَ


এরপরেই আসবে এমন এক বছর যার মধ্যে মানুষের জন্যে প্রচুর বৃষ্টি হবে। আর  তার মধ্যে তারা ফলের রস নিংড়াবে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَقَالَ ٱلْمَلِكُ ٱئْتُونِى بِهِۦۖ فَلَمَّا جَآءَهُ ٱلرَّسُولُ قَالَ ٱرْجِعْ إِلَىٰ رَبِّكَ فَسْـَٔلْهُ مَا بَالُ ٱلنِّسْوَةِ ٱلَّٰتِى قَطَّعْنَ أَيْدِيَهُنَّۚ إِنَّ رَبِّى بِكَيْدِهِنَّ عَلِيمٌ


আর (এসব শুনে) রাজা বলে, ইউসুফকে আমার কাছে নিয়ে আসো। রাসূল (রাজার বার্তা বাহক) যখন ইউসুফের কাছে আসে, তখন ইউসুফ বলে, তুমি তোমার প্রভুর (রাজার) কাছে ফিরে যাও। অতঃপর তাকে জিজ্ঞাসা করো, সেসব মেয়েদের অবস্থা কি দাঁড়ালো, যারা নিজেদের (কূ-মতলবের) হাত নিজেরাই কেটেছিলো। নিশ্চয়ই আমার চিরস্থায়ী প্রতিপালক তাদের ছলনা সম্পর্কে খুব জানেন।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ مَا خَطْبُكُنَّ إِذْ رَٰوَدتُّنَّ يُوسُفَ عَن نَّفْسِهِۦۚ قُلْنَ حَٰشَ لِلَّهِ مَا عَلِمْنَا عَلَيْهِ مِن سُوٓءٍۚ قَالَتِ ٱمْرَأَتُ ٱلْعَزِيزِ ٱلْـَٰٔنَ حَصْحَصَ ٱلْحَقُّ أَنَا۠ رَٰوَدتُّهُۥ عَن نَّفْسِهِۦ وَإِنَّهُۥ لَمِنَ ٱلصَّٰدِقِينَ


রাজা মহিলাদেরকে  বলে, তোমাদের কি হয়েছিলো? যখন তোমরা ইউসুফকে নিজেদের দিকে আকৃষ্ট করতে ফুসলিয়েছিলে ? তারা সবাই বলে উঠে আল্লাহর মাহাত্ম্য ! আমরা ইউসুফের মধ্যে কোনো রকম ত্রুটি খুঁজে পাইনি। সম্মানিত গভর্নরের স্ত্রী বলে, এখন তো সত্য ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়েছে। আমিই তাকে আমার দিকে আকৃষ্ট করতে ফুসলিয়েছিলাম, আর নিশ্চয়ই সে সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলো।

সূরা : সুরা ইউসুফ

ذَٰلِكَ لِيَعْلَمَ أَنِّى لَمْ أَخُنْهُ بِٱلْغَيْبِ وَأَنَّ ٱللَّهَ لَا يَهْدِى كَيْدَ ٱلْخَآئِنِينَ


এসব তো শুধু তাকে (সম্মানিত গভর্নরকে) দেখানোর জন্য যে, আমি তার অবর্তমানে বিশ্বাসঘাতকতা করিনি। আর আল্লাহ বিশ্বাসঘাতকদের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেন না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَمَآ أُبَرِّئُ نَفْسِىٓۚ إِنَّ ٱلنَّفْسَ لَأَمَّارَةٌۢ بِٱلسُّوٓءِ إِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّىٓۚ إِنَّ رَبِّى غَفُورٌ رَّحِيمٌ

আর আমি আমার নিজেকে নির্দোষ বলছি না। নিশ্চয়ই মন (নাফস) মন্দ কাজের দিকে নির্দেশ দিয়েই থাকে। তবে যাকে আমার প্রতিপালক দয়া করেন, তার কথা ভিন্ন। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। 

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَقَالَ ٱلْمَلِكُ ٱئْتُونِى بِهِۦٓ أَسْتَخْلِصْهُ لِنَفْسِىۖ فَلَمَّا كَلَّمَهُۥ قَالَ إِنَّكَ ٱلْيَوْمَ لَدَيْنَا مَكِينٌ أَمِينٌ

আর রাজা বলে, ইউসুফকে আমার কাছে নিয়ে আসো। আমি তাকে আমার নিজের জন্যে বিশেষভাবে গ্রহণ করবো। অতঃপর যখন (রাজা) ইউসুফের সাথে কথা বলে, তখন বলে, নিশ্চয়ই তুমি আজ থেকে সম্মানিত ও বিশ্বস্ত লোক হিসেবে আমার কাছেই থাকবে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ ٱجْعَلْنِى عَلَىٰ خَزَآئِنِ ٱلْأَرْضِۖ إِنِّى حَفِيظٌ عَلِيمٌ


ইউসুফ বলে, আপনি আমাকে দেশের খাজায়েন- ধনভান্ডার সমূহের কাজে নিযুক্ত করুন। নিশ্চয়ই আমি বিশ্বস্তরক্ষক, সুবিজ্ঞ'।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَكَذَٰلِكَ مَكَّنَّا لِيُوسُفَ فِى ٱلْأَرْضِ يَتَبَوَّأُ مِنْهَا حَيْثُ يَشَآءُۚ نُصِيبُ بِرَحْمَتِنَا مَن نَّشَآءُۖ وَلَا نُضِيعُ أَجْرَ ٱلْمُحْسِنِينَ


এভাবেই আমি ইউসুফকে সে দেশে সুপ্রতিষ্ঠিত করি। সে তার যেখানে ইচ্ছা বসবাস করবে। যে উপযুক্ত তাকেই আমার দয়া পৌঁছাই। আর আমি সৎকর্মশীলদের কর্মফল নষ্ট করি না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَلَأَجْرُ ٱلْءَاخِرَةِ خَيْرٌ لِّلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ وَكَانُوا۟ يَتَّقُونَ


আর পরকালের পুরস্কার তাদের জন্যই উত্তম, যারা ঈমান এনেছে, আর তাকওয়া অবলম্বন করেছে। 

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَجَآءَ إِخْوَةُ يُوسُفَ فَدَخَلُوا۟ عَلَيْهِ فَعَرَفَهُمْ وَهُمْ لَهُۥ مُنكِرُونَ


তারপর ইউসুফের ভাইয়েরা আসে। তারা সবাই ইউসুফের কাছে প্রবেশ করে। অতঃপর সে তাদেরকে চিনতে পারে। অথচ তারা কিন্তু তাকে চিনতে পারে না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَلَمَّا جَهَّزَهُم بِجَهَازِهِمْ قَالَ ٱئْتُونِى بِأَخٍ لَّكُم مِّنْ أَبِيكُمْۚ أَلَا تَرَوْنَ أَنِّىٓ أُوفِى ٱلْكَيْلَ وَأَنَا۠ خَيْرُ ٱلْمُنزِلِينَ


আর সে যখন তাদেরকে তাদের খাদ্যসামগ্রী দিয়ে প্রস্তুত করে দেয়, তখন ইউসুফ বলে, এর পরের বারে তোমাদের পিতার তরফ থেকে যে আরেকটি ভাই রয়েছে, তাকেও আমার কাছে নিয়ে আসবে। তোমরা কি দেখছো না যে, আমি কিভাবে পরিমাপ ঠিক রাখি। আর মেহমানদারী করে থাকি।

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَإِن لَّمْ تَأْتُونِى بِهِۦ فَلَا كَيْلَ لَكُمْ عِندِى وَلَا تَقْرَبُونِ


অতঃপর যদি তোমরা তাকে আমার কাছে নিয়ে না আসো, তাহলে তোমাদের জন্য আমার কাছে কোনো পরিমাপের (রসদ বরাদ্ধ) নেই, আর তোমরা আমার কাছেও আসতে পারবে না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ سَنُرَٰوِدُ عَنْهُ أَبَاهُ وَإِنَّا لَفَٰعِلُونَ


তারা বলে, শীঘ্রই আমরা তার সম্পর্কে তার পিতাকে রাজি করাবো। আর নিশ্চয়ই একাজটি আমরা করবো।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَقَالَ لِفِتْيَٰنِهِ ٱجْعَلُوا۟ بِضَٰعَتَهُمْ فِى رِحَالِهِمْ لَعَلَّهُمْ يَعْرِفُونَهَآ إِذَا ٱنقَلَبُوٓا۟ إِلَىٰٓ أَهْلِهِمْ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ

তখন ইউসুফ তার নিজের চাকরদেরকে বলে, তাদের পন্য (দাম) তাদেরই মালপত্রের মধ্যে রেখে দাও। যাতে তারা তা চিনতে পারে, যখন তারা তাদের পরিবারের কাছে ফিরবে। সম্ভবত তারা এভাবে (আবার)  ফিরে আসবে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَلَمَّا رَجَعُوٓا۟ إِلَىٰٓ أَبِيهِمْ قَالُوا۟ يَٰٓأَبَانَا مُنِعَ مِنَّا ٱلْكَيْلُ فَأَرْسِلْ مَعَنَآ أَخَانَا نَكْتَلْ وَإِنَّا لَهُۥ لَحَٰفِظُونَ


অতঃপর তারা যখন তাদের পিতার কাছে ফিরে আসে, তখন তারা বলতে লাগে, হে আমাদের পিতা! আমাদেরকে রসদ সামগ্রী নিতে বারণ করা হয়েছে। অতএব আমাদের সাথে আমাদের ভাইকেও পাঠিয়ে দিন। যেন আমরা আবার রসদ সামগ্রী নিয়ে আসতে পারি। আর নিশ্চয়ই আমরা তার জন্যে রক্ষাকারী হবো। 

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ هَلْ ءَامَنُكُمْ عَلَيْهِ إِلَّا كَمَآ أَمِنتُكُمْ عَلَىٰٓ أَخِيهِ مِن قَبْلُۖ فَٱللَّهُ خَيْرٌ حَٰفِظًاۖ وَهُوَ أَرْحَمُ ٱلرَّٰحِمِينَ

সে বলে, আমি কি তার ব্যপারে তোমাদেরকে বিশ্বাস করবো, যেমন এর পূর্বে তার ভাই (ইউসুফ) সম্পর্কে তোমাদেরকে বিশ্বাস করেছিলাম। তবে আল্লাহ হলেন উত্তম রক্ষণাবেক্ষণকারী। আর তিনিই দয়াশীলদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ দয়ালু।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَلَمَّا فَتَحُوا۟ مَتَٰعَهُمْ وَجَدُوا۟ بِضَٰعَتَهُمْ رُدَّتْ إِلَيْهِمْۖ قَالُوا۟ يَٰٓأَبَانَا مَا نَبْغِىۖ هَٰذِهِۦ بِضَٰعَتُنَا رُدَّتْ إِلَيْنَاۖ وَنَمِيرُ أَهْلَنَا وَنَحْفَظُ أَخَانَا وَنَزْدَادُ كَيْلَ بَعِيرٍۖ ذَٰلِكَ كَيْلٌ يَسِيرٌ

আর যখন তারা তাদের নিজেদের মালপত্র খুলে, তখন দেখতে পায় তাদের পণ্যমূল্য তাদের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে। তারা বলতে লাগে, হে আমাদের পিতা ! আমরা কি আশা করি? এই যে আমাদের পণ্যমূল্য আমাদের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছে। আমরা আবার সেখানে গিয়ে আমাদের পরিবারের জন্যে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে আসবো।আমাদের ভাইকে আমরা দেখাশুনা করবো। এভাবে আমরা অতিরিক্ত আরো একটি উট বোঝাই খাদ্যসামগ্রী নিয়ে আসবো। এবারে এই যা এনেছি তা খুবই কম।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ لَنْ أُرْسِلَهُۥ مَعَكُمْ حَتَّىٰ تُؤْتُونِ مَوْثِقًا مِّنَ ٱللَّهِ لَتَأْتُنَّنِى بِهِۦٓ إِلَّآ أَن يُحَاطَ بِكُمْۖ فَلَمَّآ ءَاتَوْهُ مَوْثِقَهُمْ قَالَ ٱللَّهُ عَلَىٰ مَا نَقُولُ وَكِيلٌ


সে বলে, তাকে আমি তোমাদের সাথে কখনও পাঠাবো না। যতক্ষন না তোমরা আল্লাহর নামে আমাকে প্রতিশ্রুতি দিবে যে, তাকে তোমরা অবশ্যই আমার কাছে নিরাপদে নিয়ে আসবে। তবে যদি তোমাদেরকে (কোনো বিপদ দ্বারা) পরিবেষ্টিত করা হয় সেটা ভিন্ন কথা। অতঃপর তারা যখন ইয়াকুবের কাছে প্রতিশ্রুতি দেয়, তখন ইয়াকুব বলে, আল্লাহর উপর ভরসা আমরা যা বলছি এব্যাপারে তিনিই একমাত্র কর্মবিধায়ক।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَقَالَ يَٰبَنِىَّ لَا تَدْخُلُوا۟ مِنۢ بَابٍ وَٰحِدٍ وَٱدْخُلُوا۟ مِنْ أَبْوَٰبٍ مُّتَفَرِّقَةٍۖ وَمَآ أُغْنِى عَنكُم مِّنَ ٱللَّهِ مِن شَىْءٍۖ إِنِ ٱلْحُكْمُ إِلَّا لِلَّهِۖ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُۖ وَعَلَيْهِ فَلْيَتَوَكَّلِ ٱلْمُتَوَكِّلُونَ


সে বলে, হে আমার ছেলেরা! তোমরা একই সাথে একটি দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। বরং তোমরা ভিন্ন ভিন্ন দরজা দিয়ে সেখানে প্রবেশ করবে। আমি তো আল্লাহর কোন বিধান তোমাদের উপর হতে ফিরিয়ে রাখতে পারব না। যাবতীয় হুকুম তো আল্লাহরই চলে। আমি তাঁর উপরেই নির্ভর করছি। নির্ভরকারীদের উচিত হচ্ছে আল্লাহর উপরেই নির্ভর করা।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَلَمَّا دَخَلُوا۟ مِنْ حَيْثُ أَمَرَهُمْ أَبُوهُم مَّا كَانَ يُغْنِى عَنْهُم مِّنَ ٱللَّهِ مِن شَىْءٍ إِلَّا حَاجَةً فِى نَفْسِ يَعْقُوبَ قَضَىٰهَاۚ وَإِنَّهُۥ لَذُو عِلْمٍ لِّمَا عَلَّمْنَٰهُ وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ ٱلنَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ


আর তারা যখন সেখানে প্রবেশ করে যেভাবে তাদের পিতা নির্দেশ দিয়েছিলো। কিন্তু ইয়াকুবের এই পরামর্শ আল্লাহর হুকুমে কিছুমাত্র নাড়াতে পারে না। সে তো শুধু ইয়াকুবের মনের বাসনাই ছিল, যা সে পুরা করে। নিশ্চয়ই সে ঐ বিষয়ে জ্ঞান সম্পন্ন লোক ছিলো, যা আমিই তাকে শিখিয়েছিলাম। কিন্তু অধিকাংশ মানুষ, তারা জ্ঞান রাখে না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَلَمَّا دَخَلُوا۟ عَلَىٰ يُوسُفَ ءَاوَىٰٓ إِلَيْهِ أَخَاهُۖ قَالَ إِنِّىٓ أَنَا۠ أَخُوكَ فَلَا تَبْتَئِسْ بِمَا كَانُوا۟ يَعْمَلُونَ


তারা যখন ইউসুফের কাছে প্রবেশ করে, তখন সে তার ভাইকে নিজের কাছেই আশ্রয় দেয়। আর বলে,নিশ্চয়ই আমি তোমার ভাই (ইউসুফ)। তারা যা কিছু করতে, তা নিয়ে দুঃখ কর না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَلَمَّا جَهَّزَهُم بِجَهَازِهِمْ جَعَلَ ٱلسِّقَايَةَ فِى رَحْلِ أَخِيهِ ثُمَّ أَذَّنَ مُؤَذِّنٌ أَيَّتُهَا ٱلْعِيرُ إِنَّكُمْ لَسَٰرِقُونَ


অতঃপর সে যখন তাদের খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুত করে দেয়, তখন তার আপন ভাইয়ের মাল পত্রের মধ্যে একটি পানপাত্র রেখে দেয়। এরপর এক ঘোষণাকারী ঘোষণা দেয় , হে যাত্রীদল ! নিশ্চয়ই তোমরা চোর।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ وَأَقْبَلُوا۟ عَلَيْهِم مَّاذَا تَفْقِدُونَ


তারা তাদের দিকে ফিরে এগিয়ে এসে বলে, তোমরা কি হারিয়েছো?

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ نَفْقِدُ صُوَاعَ ٱلْمَلِكِ وَلِمَن جَآءَ بِهِۦ حِمْلُ بَعِيرٍ وَأَنَا۠ بِهِۦ زَعِيمٌ


তারা বলে, আমরা রাজার পানপাত্র হারিয়েছি। আর যে কেউ তা নিয়ে আসবে, সে এক উটের বোঝা পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী পুরস্কার হিসেবে পাবে । আর আমি এ সম্বন্ধে মুখপাত্র-যিম্নাদার।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ تَٱللَّهِ لَقَدْ عَلِمْتُم مَّا جِئْنَا لِنُفْسِدَ فِى ٱلْأَرْضِ وَمَا كُنَّا سَٰرِقِينَ


তারা বলে, আল্লাহর কসম ! নিশ্চয়ই তোমরা জেনেছো যে, আমরা এদেশে খারাপ কাজ করার জন্যে আসিনি। আর আমরা চোরও নই।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ فَمَا جَزَٰٓؤُهُۥٓ إِن كُنتُمْ كَٰذِبِينَ


তারা বলে, তবে তার জন্যে কি শাস্তি হবে? যদি তোমরা মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হও।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ جَزَٰٓؤُهُۥ مَن وُجِدَ فِى رَحْلِهِۦ فَهُوَ جَزَٰٓؤُهُۥۚ كَذَٰلِكَ نَجْزِى ٱلظَّٰلِمِينَ


তারা বলে, যার মালপত্রের মধ্যে তা পাওয়া যাবে, সেই তার বিনিময় হবে, (এই তার জন্য শাস্তি)। এভাবেই আমি সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَبَدَأَ بِأَوْعِيَتِهِمْ قَبْلَ وِعَآءِ أَخِيهِ ثُمَّ ٱسْتَخْرَجَهَا مِن وِعَآءِ أَخِيهِۚ كَذَٰلِكَ كِدْنَا لِيُوسُفَۖ مَا كَانَ لِيَأْخُذَ أَخَاهُ فِى دِينِ ٱلْمَلِكِ إِلَّآ أَن يَشَآءَ ٱللَّهُۚ نَرْفَعُ دَرَجَٰتٍ مَّن نَّشَآءُۗ وَفَوْقَ كُلِّ ذِى عِلْمٍ عَلِيمٌ


অতঃপর সে তার ভাইয়ের পাত্রের পূর্বে তাদের পাত্রগুলো তল্লাসী শুরু করে। এরপর সে তার ভাইয়ের পাত্রের ভিতর থেকে তা খুঁজে বের করে। এভাবে আমি ইউসুফের জন্যে কৌশল করি। নইলে রাজার আইন অনুযায়ী, আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া সে তার ভাইকে ধরে রেখে দিতে পারত না। যে উপযুক্ত আমিই তাকে মর্যাদায় উন্নীত করে থাকি। এবং প্রত্যেক জ্ঞানীর উপর রয়েছে একজন মহাজ্ঞানী।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوٓا۟ إِن يَسْرِقْ فَقَدْ سَرَقَ أَخٌ لَّهُۥ مِن قَبْلُۚ فَأَسَرَّهَا يُوسُفُ فِى نَفْسِهِۦ وَلَمْ يُبْدِهَا لَهُمْۚ قَالَ أَنتُمْ شَرٌّ مَّكَانًاۖ وَٱللَّهُ أَعْلَمُ بِمَا تَصِفُونَ

তারা বলে, সে যদি চুরি করেই থাকে, তবে এর পূর্বেও তার ভাই চুরি করেছে। ইউসুফ একথা তার মনের মধ্যে গোপন রাখে। তাদের কাছে কিছুই প্রকাশ করে না। ইউসুফ (মনে মনে) বলে, তোমরাই তো খারাপ প্রকৃতির লোক। আল্লাহ ঐ বিষয়ে খুব জানেন, তোমরা যা কিছু বর্ণন করছো।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ يَٰٓأَيُّهَا ٱلْعَزِيزُ إِنَّ لَهُۥٓ أَبًا شَيْخًا كَبِيرًا فَخُذْ أَحَدَنَا مَكَانَهُۥٓۖ إِنَّا نَرَىٰكَ مِنَ ٱلْمُحْسِنِينَ


তারা বলে, হে সম্মানীত গভর্ণর ! তার অতিশয় বৃদ্ধ পিতা রয়েছেন। অতএব তার জায়গায় আমাদের একজনকে ধরে রাখুন। নিশ্চয়ই আমরা আপনাকে দেখছি মহানুভবদের অন্তর্ভুক্ত। 

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ مَعَاذَ ٱللَّهِ أَن نَّأْخُذَ إِلَّا مَن وَجَدْنَا مَتَٰعَنَا عِندَهُۥٓ إِنَّآ إِذًا لَّظَٰلِمُونَ


ইউসুফ বলে, আল্লাহর আশ্রয় চাচ্ছি। যার কাছে আমাদের সামগ্রী পেয়েছি তাকে ছাড়া অন্য কাউকে ধরবো? এরূপ করলে, তখন নিশ্চয়ই আমরাও সীমালঙ্ঘনকারীদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবো।

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَلَمَّا ٱسْتَيْـَٔسُوا۟ مِنْهُ خَلَصُوا۟ نَجِيًّاۖ قَالَ كَبِيرُهُمْ أَلَمْ تَعْلَمُوٓا۟ أَنَّ أَبَاكُمْ قَدْ أَخَذَ عَلَيْكُم مَّوْثِقًا مِّنَ ٱللَّهِ وَمِن قَبْلُ مَا فَرَّطتُمْ فِى يُوسُفَۖ فَلَنْ أَبْرَحَ ٱلْأَرْضَ حَتَّىٰ يَأْذَنَ لِىٓ أَبِىٓ أَوْ يَحْكُمَ ٱللَّهُ لِىۖ وَهُوَ خَيْرُ ٱلْحَٰكِمِينَ

অতঃপর যখন তারা তার থেকে নিরাশ হয়ে পড়ে, তখন তারা নির্জন জায়গায় একত্র হয়ে পরামর্শ করতে বসে। তাদের বড়জন বলে, তোমরা কি জানো না যে, তোমাদের পিতা তোমাদের কাছ থেকে আল্লাহর নামে প্রতিশ্রুতি আদায় করে নিয়েছেন ? এর পূর্বেও তোমরা ইউসুফের ব্যপারে অন্যায় করেছো। অতএব আমার পিতা যতক্ষন অনুমতি না দিবেন ততক্ষন আমি কিছুতেই এই দেশ ছেড়ে কোথাও যাবো না, অথবা আল্লাহ যদি আমার জন্যে অন্য কোনও ফায়সালা করেন, সেকথা ভিন্ন। আর তিনিই সর্বোত্তম ফায়সালাকারী।

সূরা : সুরা ইউসুফ

ٱرْجِعُوٓا۟ إِلَىٰٓ أَبِيكُمْ فَقُولُوا۟ يَٰٓأَبَانَآ إِنَّ ٱبْنَكَ سَرَقَ وَمَا شَهِدْنَآ إِلَّا بِمَا عَلِمْنَا وَمَا كُنَّا لِلْغَيْبِ حَٰفِظِينَ

তোমরা সবাই তোমাদের পিতার কাছে ফিরে যাও। (পরে অবশ্যই তারা তাদের পিতার কাছে ফিরে গিয়ে) বলে হে আমাদের পিতা ! আপনার ছেলে তো চুরি করেছে। আমরা এ সম্বন্ধে যা জেনেছি তারই সাক্ষী দিচ্ছি, আর আমরা অদৃশ্যের ব্যপারে অবহিত না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَسْـَٔلِ ٱلْقَرْيَةَ ٱلَّتِى كُنَّا فِيهَا وَٱلْعِيرَ ٱلَّتِىٓ أَقْبَلْنَا فِيهَاۖ وَإِنَّا لَصَٰدِقُونَ


যে জনপদের অধিবাসীদের মধ্য আমরা ছিলাম, আর যে কাফেলার যাত্রীদলের সাথে আমরা এসেছি তাদের কাছে জিজ্ঞেস করুন, নিশ্চয় আমরা সত্য কথাই বলছি।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ بَلْ سَوَّلَتْ لَكُمْ أَنفُسُكُمْ أَمْرًاۖ فَصَبْرٌ جَمِيلٌۖ عَسَى ٱللَّهُ أَن يَأْتِيَنِى بِهِمْ جَمِيعًاۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْعَلِيمُ ٱلْحَكِيمُ


ইয়াকুব বলে, বরং তোমাদের জন্য তোমাদের মন (কুপ্রবৃত্তি) এ কাজ সাজিয়ে দিয়েছে। 
অতএব ধৈর্য ধরাই উত্তম। হয়তো আল্লাহ তাদের সবাইকে আমার কাছে একত্রে নিয়ে আসবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ হলেন মহাজ্ঞানী ও মহা বৈজ্ঞানিক। 

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَتَوَلَّىٰ عَنْهُمْ وَقَالَ يَٰٓأَسَفَىٰ عَلَىٰ يُوسُفَ وَٱبْيَضَّتْ عَيْنَاهُ مِنَ ٱلْحُزْنِ فَهُوَ كَظِيمٌ


আর ইয়াকুব তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। আর বলতে লাগে হায় আফসোস ! ইউসুফের জন্যে, শোকের কারণে তার দু'চোখ সাদা হয়ে গেলো। অতঃপর সে বিষাদপূর্ণ হয়ে গেলো।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ تَٱللَّهِ تَفْتَؤُا۟ تَذْكُرُ يُوسُفَ حَتَّىٰ تَكُونَ حَرَضًا أَوْ تَكُونَ مِنَ ٱلْهَٰلِكِينَ


তারা বলতে লাগে, আল্লাহর শপথ, আপনি যদি কেবল এভাবে ইউসুফকেই স্মরণ করতে থাকেন, তাহলে অসুস্থ হয়ে পড়বেন। অথবা জীবন ধ্বংসকারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ إِنَّمَآ أَشْكُوا۟ بَثِّى وَحُزْنِىٓ إِلَى ٱللَّهِ وَأَعْلَمُ مِنَ ٱللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ


ইয়াকুব বলে, প্রকৃতপক্ষে আমি আমার শোক এবং বেদনা তো আল্লাহর কাছে নিবেদন করছি। আর আমি জানি এমন কিছু আল্লাহর পক্ষ থেকে যা তোমরা জানো না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

يَٰبَنِىَّ ٱذْهَبُوا۟ فَتَحَسَّسُوا۟ مِن يُوسُفَ وَأَخِيهِ وَلَا تَا۟يْـَٔسُوا۟ مِن رَّوْحِ ٱللَّهِۖ إِنَّهُۥ لَا يَا۟يْـَٔسُ مِن رَّوْحِ ٱللَّهِ إِلَّا ٱلْقَوْمُ ٱلْكَٰفِرُونَ



হে আমার ছেলেরা ! তোমরা যাও, অতঃপর ইউসুফকে আর তার ভাইকে খোঁজ করো, আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহর অনুগ্রহ হ'তে কাফির সম্প্রদায় ছাড়া অন্য কেউ নিরাশ হয় না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَلَمَّا دَخَلُوا۟ عَلَيْهِ قَالُوا۟ يَٰٓأَيُّهَا ٱلْعَزِيزُ مَسَّنَا وَأَهْلَنَا ٱلضُّرُّ وَجِئْنَا بِبِضَٰعَةٍ مُّزْجَىٰةٍ فَأَوْفِ لَنَا ٱلْكَيْلَ وَتَصَدَّقْ عَلَيْنَآۖ إِنَّ ٱللَّهَ يَجْزِى ٱلْمُتَصَدِّقِينَ


অতঃপর যখন তারা ইউসুফের কাছে প্রবেশ করে, তখন তারা বলে, হে সম্মানীত গভর্ণর, আমাদের ও আমাদের পরিবারকেও বড়ই কষ্ট স্পর্শ করেছে। আমরা সামান্য পূঁজি নিয়ে এসেছি। প্রয়োজন মত পরিমাপের খাদ্যসামগ্রী দিন। আর আমাদেরকে আপনি খুশি মনে কিছু বাড়িয়ে (সাদাকা) দিন !নিশ্চয়ই আল্লাহ খুশিমনে দান কারীদেরকে প্রতিদান  দিয়ে থাকেন।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ هَلْ عَلِمْتُم مَّا فَعَلْتُم بِيُوسُفَ وَأَخِيهِ إِذْ أَنتُمْ جَٰهِلُونَ


সে বলে, তোমরা কি জানো না যে ইউসুফ ও তার ভাইয়ের সাথে তোমরা কি কি করেছো ? যখন তোমরা অজ্ঞ-জাহিল ছিলে।


সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوٓا۟ أَءِنَّكَ لَأَنتَ يُوسُفُۖ قَالَ أَنَا۠ يُوسُفُ وَهَٰذَآ أَخِىۖ قَدْ مَنَّ ٱللَّهُ عَلَيْنَآۖ إِنَّهُۥ مَن يَتَّقِ وَيَصْبِرْ فَإِنَّ ٱللَّهَ لَا يُضِيعُ أَجْرَ ٱلْمُحْسِنِينَ


তারা বলে, তুমিই কি ইউসুফ? সে বলে হ্যাঁ, আমিই ইউসুফ। আর এই আমার আদরের ভাই। আল্লাহ আমাদের উপরে বড়ই অনুগ্রহ করেছেন। নিশ্চয়ই  যদি কেউ তাকওয়া অবলম্বন করে এবং ধৈর্য ধারণ করে, তাহলে আল্লাহ উত্তম সৎকর্মশীলদের শ্রম ফল নষ্ট করেন না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ تَٱللَّهِ لَقَدْ ءَاثَرَكَ ٱللَّهُ عَلَيْنَا وَإِن كُنَّا لَخَٰطِـِٔينَ


তারা বলে আল্লাহর শপথ, নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাকে আমাদের উপর প্রাধান্য দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আমরা অপরাধী ছিলাম।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ لَا تَثْرِيبَ عَلَيْكُمُ ٱلْيَوْمَۖ يَغْفِرُ ٱللَّهُ لَكُمْۖ وَهُوَ أَرْحَمُ ٱلرَّٰحِمِينَ


ইউসুফ বলে, তোমাদের উপর আজ কোনো অভিযোগ নেই। আল্লাহ তোমাদেরকে মাফ করুন। আসলে তিনি সব দয়াকারীদের চেয়েও শ্রেষ্ঠ দয়ালু।

সূরা : সুরা ইউসুফ

ٱذْهَبُوا۟ بِقَمِيصِى هَٰذَا فَأَلْقُوهُ عَلَىٰ وَجْهِ أَبِى يَأْتِ بَصِيرًا وَأْتُونِى بِأَهْلِكُمْ أَجْمَعِينَ

তোমরা আমার এই কামিস (জামাটি) নিয়ে যাও। অতঃপর তা আমার পিতার মুখের উপর রেখে দিও। এতে তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসবে (সেই সাথে সবই বুঝতে পারবেন)। আর তোমাদের পরিবারের সকলকেই আমার কাছে নিয়ে আসো।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَلَمَّا فَصَلَتِ ٱلْعِيرُ قَالَ أَبُوهُمْ إِنِّى لَأَجِدُ رِيحَ يُوسُفَۖ لَوْلَآ أَن تُفَنِّدُونِ


আর যখন যাত্রীদল রওনা হয়, তখন তাদের পিতা বলে, নিশ্চয়ই আমি তো ইউসুফের গ্রাণ পাচ্ছি ! তোমরা হয়তো বলবে লোকটা বুড়ো হয়ে দিশা হারিয়ে ফেলেছে !

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ تَٱللَّهِ إِنَّكَ لَفِى ضَلَٰلِكَ ٱلْقَدِيمِ

তারা বলে আল্লাহর শপথ ! নিশ্চয়ই আপনি তো সেই পুরনো ভূলের মধ্যেই রয়েছেন।

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَلَمَّآ أَن جَآءَ ٱلْبَشِيرُ أَلْقَىٰهُ عَلَىٰ وَجْهِهِۦ فَٱرْتَدَّ بَصِيرًاۖ قَالَ أَلَمْ أَقُل لَّكُمْ إِنِّىٓ أَعْلَمُ مِنَ ٱللَّهِ مَا لَا تَعْلَمُونَ

অতঃপর যখন সুসংবাদদাতা এসে পৌঁছায়, সেই জামাটি তার মুখের উপর রেখে দেয়, তখন ইয়াকুব দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। ইয়াকুব তাদেরকে বলতে লাগে, আমি কি তোমাদেরকে বলিনি, নিশ্চয়ই আমি আল্লাহর পক্ষ হতে এমন কিছু জানি যা তোমরা জানো না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالُوا۟ يَٰٓأَبَانَا ٱسْتَغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَآ إِنَّا كُنَّا خَٰطِـِٔينَ


তারা বলতে লাগে, হে আমাদের পিতা ! আপনি আমাদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করুন, আমাদের পাপসমূহের ক্ষমার জন্যে। নিশ্চয়ই আমরাই হচ্ছি অপরাধী।

সূরা : সুরা ইউসুফ

قَالَ سَوْفَ أَسْتَغْفِرُ لَكُمْ رَبِّىٓۖ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْغَفُورُ ٱلرَّحِيمُ


ইয়াকুব বলে, শীঘ্রই আমি তোমাদের জন্য আমার প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবো। নিশ্চয়ই তিনিই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। 

সূরা : সুরা ইউসুফ

فَلَمَّا دَخَلُوا۟ عَلَىٰ يُوسُفَ ءَاوَىٰٓ إِلَيْهِ أَبَوَيْهِ وَقَالَ ٱدْخُلُوا۟ مِصْرَ إِن شَآءَ ٱللَّهُ ءَامِنِينَ

অতঃপর যখন তারা ইউসুফের নিকট উপস্থিত হয়, তখন ইউসুফ তার পিতা-মাতাকে তার কাছে জায়গা করে দেয়। আর সে বলে আপনারা মিশরে (রাজধানীতে) এসে গেছেন। যদি আল্লাহ চান নিরাপদেই থাকবেন।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَرَفَعَ أَبَوَيْهِ عَلَى ٱلْعَرْشِ وَخَرُّوا۟ لَهُۥ سُجَّدًاۖ وَقَالَ يَٰٓأَبَتِ هَٰذَا تَأْوِيلُ رُءْيَٰىَ مِن قَبْلُ قَدْ جَعَلَهَا رَبِّى حَقًّاۖ وَقَدْ أَحْسَنَ بِىٓ إِذْ أَخْرَجَنِى مِنَ ٱلسِّجْنِ وَجَآءَ بِكُم مِّنَ ٱلْبَدْوِ مِنۢ بَعْدِ أَن نَّزَغَ ٱلشَّيْطَٰنُ بَيْنِى وَبَيْنَ إِخْوَتِىٓۚ إِنَّ رَبِّى لَطِيفٌ لِّمَا يَشَآءُۚ إِنَّهُۥ هُوَ ٱلْعَلِيمُ ٱلْحَكِيمُ

ইউসুফ তার পিতা-মাতাকে সিংহাসনের উপর বসায়। আর তারা সবাই তাঁর জন্য পরম আনুগত্য প্রকাশ করে। আর বলে হে আমার পিতা ! আমি পূর্বে যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, এটা হলো তার ব্যাখ্যা। আমার প্রতিপালকই তা সত্যে পরিণত করেছেন। আর আমার প্রতিপালক আমার উপরে অনেক অনুগ্রহ করেছেন। যখন তিনি আমাকে কারাগার থেকে বের করেছেন। আর আপনাদেরকে মরুভূমি থেকে এখানে নিয়ে এসেছেন। অবশ্য শয়তান আমার সাথে আমার ভাইদের বিরোধ সৃষ্টি করার পরে। নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক যা ইচ্ছা করেন, তা অত্যন্ত কৌশলের সাথেই সমাধান করেন ! নিশ্চয় তিনি মহাজ্ঞানী, মহা বৈজ্ঞানিক।

সূরা : সুরা ইউসুফ

رَبِّ قَدْ ءَاتَيْتَنِى مِنَ ٱلْمُلْكِ وَعَلَّمْتَنِى مِن تَأْوِيلِ ٱلْأَحَادِيثِۚ فَاطِرَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ أَنتَ وَلِىِّۦ فِى ٱلدُّنْيَا وَٱلْءَاخِرَةِۖ تَوَفَّنِى مُسْلِمًا وَأَلْحِقْنِى بِٱلصَّٰلِحِينَ


হে আমার প্রতিপালক ! নিশ্চয়ই আপনি আমাকে রাষ্ট্রক্ষমতার কিছু অংশ দান করেছেন। আপনিই তো আমাকে আহাদীসের (কোরআনের 6236,টি আয়াতের) ব্যাখ্যা শিখিয়েছেন। আকাশ ও পৃথিবীর স্রষ্টা তো আপনিই। দুনিয়া পরকালেও আপনিই আমার অলি (বন্ধু)। আপনি আমাকে মুসলিম হিসেবেই মৃত্যু দান করুন। আর আমাকে সংশোধনকারী লোকদের সাথে মিলিত করুন।

সূরা : সুরা ইউসুফ

ذَٰلِكَ مِنْ أَنۢبَآءِ ٱلْغَيْبِ نُوحِيهِ إِلَيْكَۖ وَمَا كُنتَ لَدَيْهِمْ إِذْ أَجْمَعُوٓا۟ أَمْرَهُمْ وَهُمْ يَمْكُرُونَ


এগুলো অদৃশ্য সংবাদসমূহের মধ্য হ'তে , যা আমি তোমার প্রতি ওহী করছি । আর তারা যখন একজোট হয়ে ষড়যন্ত্র করছিলো তখন তো তুমি তাদের সঙ্গে ছিলে না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَمَآ أَكْثَرُ ٱلنَّاسِ وَلَوْ حَرَصْتَ بِمُؤْمِنِينَ


তুমি যতই আকাঙ্ক্ষা করো না কেনো, অধিকাংশ মানুষ মু'মিনদের সাথে থাকবে না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَمَا تَسْـَٔلُهُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍۚ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَٰلَمِينَ


তুমি তো তাদের কাছে এজন্য কোনো পারিশ্রমিক চাচ্ছো না। এ কোরআনই তো বিশ্বজগতের জন্যে সংবিধান ।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَكَأَيِّن مِّنْ ءَايَةٍ فِى ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلْأَرْضِ يَمُرُّونَ عَلَيْهَا وَهُمْ عَنْهَا مُعْرِضُونَ


আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে কতই না নিদর্শন রয়েছে। যা তারা অতিক্রম করে যাচ্ছে, কিন্তু সে সব তারা এড়িয়েও চলে।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُم بِٱللَّهِ إِلَّا وَهُم مُّشْرِكُونَ


তাদের অধিকাংশই শিরিক করা ছাড়া আল্লাহর উপর বিশ্বাস করে না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

أَفَأَمِنُوٓا۟ أَن تَأْتِيَهُمْ غَٰشِيَةٌ مِّنْ عَذَابِ ٱللَّهِ أَوْ تَأْتِيَهُمُ ٱلسَّاعَةُ بَغْتَةً وَهُمْ لَا يَشْعُرُونَ


তবে কি তারা নিরাপদ বোধ করছে যে, তাদের উপর আল্লাহর কোন আচ্ছন্নকারী শাস্তি আসবে না অথবা হঠাৎ তারা টের না পেতেই কিয়ামত উপস্থিত হবে না?

সূরা : সুরা ইউসুফ

قُلْ هَٰذِهِۦ سَبِيلِىٓ أَدْعُوٓا۟ إِلَى ٱللَّهِۚ عَلَىٰ بَصِيرَةٍ أَنَا۠ وَمَنِ ٱتَّبَعَنِىۖ وَسُبْحَٰنَ ٱللَّهِ وَمَآ أَنَا۠ مِنَ ٱلْمُشْرِكِينَ

তুমি ঘোষনা করে দাও। এই কোরআনেই আমার পথ। আমি আল্লাহর দিকে ডাকি (কোরআনের) জ্ঞানের ভিত্তিতে, আমি নিজে আর যারা আমার অনুসরণ করে চলেছে তারাও। আল্লাহ পবিত্র মহান। আর আমি অংশীবাদী-মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত নই।

সূরা : সুরা ইউসুফ

وَمَآ أَرْسَلْنَا مِن قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُّوحِىٓ إِلَيْهِم مِّنْ أَهْلِ ٱلْقُرَىٰٓۗ أَفَلَمْ يَسِيرُوا۟ فِى ٱلْأَرْضِ فَيَنظُرُوا۟ كَيْفَ كَانَ عَٰقِبَةُ ٱلَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْۗ وَلَدَارُ ٱلْءَاخِرَةِ خَيْرٌ لِّلَّذِينَ ٱتَّقَوْا۟ۗ أَفَلَا تَعْقِلُونَ


আমি তোমার পূর্বে জনপদের অধিবাসীদের থেকে (জ্ঞানের মধ্য দিয়ে) শক্তিশালী লোকদের প্রতিই ওহী করেছি। তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করে না। যাতে তারা দেখতে পাবে, তাদের পূর্বেকার লোকদের পরিণতি কেমন হয়েছে ? আর পরকালের ঘরই তাদের জন্য উত্তম, যারা নিজেদেরকে (যাবতীয় অপকর্ম থেকে) বাঁচিয়ে চলে। তবে কি তোমরা বুঝবে না ?

সূরা : সুরা ইউসুফ

حَتَّىٰٓ إِذَا ٱسْتَيْـَٔسَ ٱلرُّسُلُ وَظَنُّوٓا۟ أَنَّهُمْ قَدْ كُذِبُوا۟ جَآءَهُمْ نَصْرُنَا فَنُجِّىَ مَن نَّشَآءُۖ وَلَا يُرَدُّ بَأْسُنَا عَنِ ٱلْقَوْمِ ٱلْمُجْرِمِينَ


এমন কি যখন রাসূলরা নিরাশ হয়ে পড়ে, তখন তারা ভাবতে থাকে যে, তারা হয়তো মিথ্যাবাদী বলে গণ্য হবে ! তখনই আমার সাহায্য তাদের কাছে পৌঁছে যায়। অতঃপর যে উদ্ধার পাওয়ার উপযুক্ত তাকে আমি উদ্ধার করি। আর আমার শাস্তি অপরাধী সম্প্রদায় হ'তে প্রতিরোধ করা হয় না।

সূরা : সুরা ইউসুফ

لَقَدْ كَانَ فِى قَصَصِهِمْ عِبْرَةٌ لِّأُو۟لِى ٱلْأَلْبَٰبِۗ مَا كَانَ حَدِيثًا يُفْتَرَىٰ وَلَٰكِن تَصْدِيقَ ٱلَّذِى بَيْنَ يَدَيْهِ وَتَفْصِيلَ كُلِّ شَىْءٍ وَهُدًى وَرَحْمَةً لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ


নিশ্চয়ই তাদের এই কাহিনীগুলোর মধ্যে জ্ঞানবুদ্বি সম্পন্নদের জন্যে শিক্ষা রয়েছে, এ হাদিস মনগড়া নয়। বরং এটি সে সবের সম্পর্কে সত্যায়ন করে, যা তাদের সামনে বিদ্যমান রয়েছে। আর সব কিছুর বিষয়ে বিশদ ব্যাখা হিসাবেও। আর পথের দিশা ও অনুগ্রহ ঐ লোকদের জন্যে যারা ঈমান আনে।