সূরা : সূরা আল হাক্কাহ
اَلْحَآقَّةُ ۙ সু
নিশ্চিত ঘটনা।
وَمَاۤ اَدْرٰىكَ مَا الْحَآقَّةُ ؕ
আর তুমি কি জানো? সেই সুনিশ্চিত ঘটনা কি জিনিস ?
كَذَّبَتْ ثَمُوْدُ وَعَادٌۢ بِالْقَارِعَةِ
সামূদ ও আ'দ, সেই মহাপ্রলয়কে মিথ্যা বলে।
فَاَمَّا ثَمُوْدُ فَاُهْلِكُوْا بِالطَّاغِيَةِ
আর সামুদকে, তাঁর ঝনঝা বায়ু দিয়ে ধ্বংস করা হয়
وَاَمَّا عَادٌ فَاُهْلِكُوْا بِرِيْحٍ صَرْصَرٍ عَاتِيَةٍ ۙ
আর আ'দ, প্রচন্ড ঝঞ্ঝা বায়ু দিয়ে তাদেরকে ধ্বংস করা হয়।
سَخَّرَهَا عَلَيْهِمْ سَبْعَ لَيَالٍ وَّثَمٰنِيَةَ اَيَّامٍ ۙ حُسُوْمًا ۙ فَتَرَي الْقَوْمَ فِيْهَا صَرْعٰي ۙ كَاَنَّهُمْ اَعْجَازُ نَخْلٍ خَاوِيَةٍ ۚ
তাদের উপর সাত রাত এবং আট দিন ধরে ক্রমাগত সেই ঝড়ো হাওয়া প্রবাহিত করেন। আর সেই জাতি তাতে এভাবে ধ্বংস হয়, যা দেখে শুকনা-মরা শুয়ে পড়া খেজুর গাছের মতোই লাগতো।
فَهَلْ تَرٰي لَهُمْ مِّنْۢ بَاقِيَةٍ
আচ্ছা ! তাদের মধ্যে বাকী রয়েছে, এমন কাউকে তুমি দেখতে পাচ্ছো কি ?
وَجَآءَ فِرْعَوْنُ وَمَنْ قَبْلَهٗ وَالْمُؤْتَفِكٰتُ بِالْخَاطِئَةِ ۚ
আর ফিরআউন ও তার পূর্বেকার লোকজন, আর যারা উল্টে দেওয়া বস্তীবাসীদের অধিবাসী ছিলো, সবাই অপরাধের কাজে লিপ্ত ছিলো।
فَعَصَوْا رَسُوْلَ رَبِّهِمْ فَاَخَذَهُمْ اَخْذَةً رَّابِيَةً
অতঃপর তাদের সবাই তাদের প্রতিপালকের রাসূলকে অমান্য করে। ফলে তাদেরকে শক্তভাবেই ধরা হয়।
اِنَّا لَمَّا طَغَا الْمَآءُ حَمَلْنٰكُمْ فِي الْجَارِيَةِ ۙ
পানি যখন উছলে পড়ে তখন আমিই তোমাদেরকে নৌযানের মধ্যে আরোহণ করিয়ে দিই।
لِنَجْعَلَهَا لَكُمْ تَذْكِرَةً وَّتَعِيَهَاۤ اُذُنٌ وَّاعِيَةٌ
যেনো তোমাদের জন্য স্মারক চিহ্নরূপে গণ্য হয়। আর স্মরণকারীদের কান যেনো সর্বদা স্মরণ রাখতে পারে।
فَاِذَا نُفِخَ فِي الصُّوْرِ نَفْخَةٌ وَّاحِدَةٌ ۙ
অতঃপর যখন নতুন আকৃতির মধ্যে ফুকে দেওয়া হবে।
وَّحُمِلَتِ الْاَرْضُ وَالْجِبَالُ فَدُكَّتَا دَكَّةً وَّاحِدَةً ۙ
জমিন ও পাহাড়গুলোকে উঠিয়ে নেওয়া হবে। তার পরেই সব কিছু ভেঙ্গেচুরে একাকার করে দেওয়া হবে।
وَانْشَقَّتِ السَّمَآءُ فَهِيَ يَوْمَئِذٍ وَّاهِيَةٌ ۙ
আর আসমান ফেটে পড়বে, ফলে সেদিন তা দুর্বল হয়ে যাবে।
وَّالْمَلَكُ عَلٰۤي اَرْجَآئِهَا ؕ وَيَحْمِلُ عَرْشَ رَبِّكَ فَوْقَهُمْ يَوْمَئِذٍ ثَمٰنِيَةٌ ؕ
ভূপৃষ্ঠের শক্তি (মালাক) থেমে থাকবে। আর সেদিন তোমার প্রতিপালকের সংসদ যারা তাদের উপর বহন করবে, তারা অত্যন্ত দামী হবে।
*69(17) নং আয়াতে থাকা আরবী "آرجاءي "/ "আরজা-য়ি" শব্দের ব্যাখ্যায় 26(36)...।
আর "ثمنية"শব্দটির ব্যাখ্যায় 12(20)...।
يَوْمَئِذٍ تُعْرَضُوْنَ لَا تَخْفٰي مِنْكُمْ خَافِيَةٌ
সেদিন তোমরা সবাই উপস্থিত হবে। আর তোমাদের মধ্যে গোপন কোনো কিছুই লুকিয়ে রাখা হবে না।
فَاَمَّا مَنْ اُوْتِيَ كِتٰبَهٗ بِيَمِيْنِهٖ ۙ فَيَقُوْلُ هَآؤُمُ اقْرَءُوْا كِتٰبِيَهْ ۚ
সুতরাং যার লিখিত আমলনামা তার ডান হাতে দেওয়া হবে, অতংপর সে বলবে, এখানে আমার আমলনামা, তোমরা পড়ে দেখো।
اِنِّيْ ظَنَنْتُ اَنِّيْ مُلٰقٍ حِسَابِيَهْ ۚ
নিশ্চয়ই আমি বিশ্বাস করেছিলাম যে, আমি আমার কাজ কর্মের হিসাবের অবশ্যই সম্মুখীন হবো।
كُلُوْا وَاشْرَبُوْا هَنِيْٓـئًۢا بِمَاۤ اَسْلَفْتُمْ فِي الْاَيَّامِ الْخَالِيَةِ
(বলা হবে) তোমরা এখন খাও এবং পান করো তারই বিনিময়ে, যা তোমরা আগের দিনগুলোতে পাঠিয়েছো।
وَاَمَّا مَنْ اُوْتِيَ كِتٰبَهٗ بِشِمَالِهٖ ۙ فَيَقُوْلُ يٰلَيْتَنِيْ لَمْ اُوْتَ كِتٰبِيَهْ ۚ
আর যার লিখিত আমলনামা বাম হাতে দেওয়া হবে, সে বলবে, হায় ! আফসোস ! আমাকে যদি আমার আমলনামা দেওয়া না হতো, তাই ভালো ছিলো।
وَلَمْ اَدْرِ مَا حِسَابِيَهْ ۚ
আমার জানা ছিলো না যে, আমার আবার একটা হিসাবও আছে।
يٰلَيْتَهَا كَانَتِ الْقَاضِيَةَ ۚ
হায় আফসোস ! (মৃত্যুই) যদি আমার চুড়ান্ত হতো !
ثُمَّ الْجَحِيْمَ صَلُّوْهُ ۙ
তারপর তাকে (জাহান্নামের) সংকীর্ণ জায়গায় নিক্ষেপ করে তোমাদের দায়িত্ব পালন করো।
69(31) নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 16(49,50),66(6)...।
ثُمَّ فِيْ سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُوْنَ ذِرَاعًا فَاسْلُكُوْهُ ؕ
তারপর তাকে সত্তর হাত দীর্ঘ শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলো।
اِنَّهٗ كَانَ لَا يُؤْمِنُ بِاللّٰهِ الْعَظِيْمِ ۙ
নিশ্চয়ই সে মহান আল্লাহতে বিশ্বাসী ছিল না
وَلَا يَحُضُّ عَلٰي طَعَامِ الْمِسْكِيْنِ ؕ
এবং অভাবগ্রস্তকে খাদ্যদানের ব্যাপারে উৎসাহ দিত না।
فَلَيْسَ لَهُ الْيَوْمَ هٰهُنَا حَمِيْمٌ ۙ
অতএব আজ এখানে তার জন্যে কোনো অন্তরঙ্গ বন্ধু নেই।
وَّلَا طَعَامٌ اِلَّا مِنْ غِسْلِيْنٍ ۙ
আর ক্ষতনিংস্রিত পুঁজ ছাড়া তার জন্যে খাবার বলতে কিছুই নেই।
لَّا يَاْكُلُهٗۤ اِلَّا الْخَاطِـُٔوْنَ
যা অপরাধী পাপিষ্ট লোক ছাড়া অন্য কেউ খাবে না।
فَلَاۤ اُقْسِمُ بِمَا تُبْصِرُوْنَ ۙ
তাই আমি সে সব জিনিসের শপথ করে বলছি, যা কিছু তোমরা দেখতে পাচ্ছো।
اِنَّهٗ لَقَوْلُ رَسُوْلٍ كَرِيْمٍ ۚۙ
নিশ্চয় এই কুরআন, একজন সম্মানিত রাসূলের মুখের বাণী।
وَّمَا هُوَ بِقَوْلِ شَاعِرٍ ؕ قَلِيْلًا مَّا تُؤْمِنُوْنَ ۙ
এটি কোনো কবির কথার সাথে নয়। কিন্তু তোমরা খুব কমই বিশ্বাস করো।
وَلَا بِقَوْلِ كَاهِنٍ ؕ قَلِيْلًا مَّا تَذَكَّرُوْنَ ؕ
আর এটি কোন গণকের বাণীও নয়, তোমর খুব কমই উপদেশ গ্রহণ করো।
تَنْزِيْلٌ مِّنْ رَّبِّ الْعٰلَمِيْنَ
এটি বিশ্বজগতের প্রতিপালকের পক্ষ থেকেই অবতীর্ণ করা হয়েছে।
وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ الْاَقَاوِيْلِ ۙ
আর সে (রাসূল) যদি আমার বিপক্ষে কিছু কথা বানিয়ে বলে।
*69(44) নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 10(61),5(67),7(203),13(38),40(78),72(26-28),10(15)...।
فَمَا مِنْكُمْ مِّنْ اَحَدٍ عَنْهُ حٰجِزِيْنَ
তারপরে আর তোমাদের মধ্যে কেউ থাকবে না, যে আমাকে ফিরিয়ে রাখতে পারবে।
وَاِنَّهٗ لَتَذْكِرَةٌ لِّلْمُتَّقِيْنَ
আর নিশ্চয়ই এটি মহৎব্যক্তিদের জন্যই উপদেশপূর্ণ গ্রন্থ ।
وَاِنَّا لَنَعْلَمُ اَنَّ مِنْكُمْ مُّكَذِّبِيْنَ
আর নিশ্চয়ই আমি জানি, তোমাদের মধ্যে কিছু লোক এই (কোরআনকে) অস্বীকার করবে।
وَاِنَّهٗ لَحَسْرَةٌ عَلَي الْكٰفِرِيْنَ
আর এটি নিশ্চয় কাফিরদের জন্য এক নিশ্চিত আক্ষেপের কারণ হবে।
فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيْمِ
অতএব তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নামের সাথে পবিত্রতা ঘোষণা করতে থাকো।