সূরা : সূরা হুজুরাত

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تُقَدِّمُوْا بَيْنَ يَدَيِ اللّٰهِ وَرَسُوْلِهٖ وَاتَّقُوا اللّٰهَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ سَمِيْعٌ عَلِيْمٌ

হে যারা ঈমান এনেছ ! তোমরা (কোন বিষয়ে) আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আগে আগে অগ্রসর হয়ো না। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু শুনেন, সবকিছু জানেন।

সূরা : সূরা হুজুরাত

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَرْفَعُوْۤا اَصْوَاتَكُمْ فَوْقَ صَوْتِ النَّبِيِّ وَلَا تَجْهَرُوْا لَهٗ بِالْقَوْلِ كَجَهْرِ بَعْضِكُمْ لِبَعْضٍ اَنْ تَحْبَطَ اَعْمَالُكُمْ وَاَنْتُمْ لَا تَشْعُرُوْنَ

হে যারা ঈমান এনেছ ! তোমরা নিজেদের (কথা ও সিদ্ধান্তের) আওয়াজকে নবীর আওয়াজের উপর প্রাধান্য দিবে না। আর নবীর কাছে উঁচু স্বরে নিজেদের কথাকে মান্য করানোর চেষ্টা করবে না। যেভাবে নিজেদের মধ্যে তোমরা উচ্চস্বরে জোরে করা বলে থাকো। নইলে হয়তো তোমাদের কর্মগুলো নষ্ট হয়ে যাবে। আর তোমরা তা টেরও পাবে না।

*49(2) নং আয়াতের ব্যাখ্যায় ,47(32,33),6(88),2(217),3(21,22),5(53),7(147),9(17,69),18(105),5(72)...।


সূরা : সূরা হুজুরাত

اِنَّ الَّذِيْنَ يَغُضُّوْنَ اَصْوَاتَهُمْ عِنْدَ رَسُوْلِ اللّٰهِ اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ امْتَحَنَ اللّٰهُ قُلُوْبَهُمْ لِلتَّقْوٰي ؕ لَهُمْ مَّغْفِرَةٌ وَّاَجْرٌ عَظِيْمٌ

নিশ্চয়ই যারা তাদের নিজেদের আওয়াজকে রাসূলের সামনে নিচু রাখে। তারাই ঐসব লোক, যাদের অন্তরকে আল্লাহ তাকওয়ার জন্য যাচাই করে নিয়েছেন। তাদের জন্যেই ক্ষমা ও মহা পুরস্কার রয়েছে।

সূরা : সূরা হুজুরাত

اِنَّ الَّذِيْنَ يُنَادُوْنَكَ مِنْ وَّرَآءِ الْحُجُرٰتِ اَكْثَرُهُمْ لَا يَعْقِلُوْنَ

নিশ্চয় যারা তোমাকে কক্ষের পিছন থেকে ডাকাডাকি করে তাদের অধিকাংশই জ্ঞান বুদ্ধি রাখে না (বে আক্বল)

সূরা : সূরা হুজুরাত

وَلَوْ اَنَّهُمْ صَبَرُوْا حَتّٰي تَخْرُجَ اِلَيْهِمْ لَكَانَ خَيْرًا لَّهُمْ ؕ وَاللّٰهُ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

আর তারা যদি ধৈর্য অবলম্বন করে, তাদের কাছে তোমার বের হয়ে আসা পর্যন্ত, তাহলে সেটাই তাদের জন্যে ভালো হবে। ‍আর আল্লাহ হলেন বড়ই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

সূরা : সূরা হুজুরাত

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اِنْ جَآءَكُمْ فَاسِقٌۢ بِنَبَاٍ فَتَبَيَّنُوْۤا اَنْ تُصِيْبُوْا قَوْمًۢا بِجَهَالَةٍ فَتُصْبِحُوْا عَلٰي مَا فَعَلْتُمْ نٰدِمِيْنَ

হে যারা ঈমান এনেছ ! যদি কোনো অমান্যকারী-ফাসিক লোক তোমাদের কাছে কোনো খবর নিয়ে আসে, তখন সে বিষয়ে ভালো করে পরিক্ষা করে নিবে, যাতে তোমরা নিজেদের অজ্ঞতার কারণে কোনো সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে না বসো। তারপরে নিজেদের কাজের জন্য তোমাদেরকে অনুতপ্তের সকাল না দেখতে হয়।

সূরা : সূরা হুজুরাত

وَاعْلَمُوْۤا اَنَّ فِيْكُمْ رَسُوْلَ اللّٰهِ ؕ لَوْ يُطِيْعُكُمْ فِيْ كَثِيْرٍ مِّنَ الْاَمْرِ لَعَنِتُّمْ وَلٰكِنَّ اللّٰهَ حَبَّبَ اِلَيْكُمُ الْاِيْمَانَ وَزَيَّنَهٗ فِيْ قُلُوْبِكُمْ وَكَرَّهَ اِلَيْكُمُ الْكُفْرَ وَالْفُسُوْقَ وَالْعِصْيَانَ ؕ اُولٰٓئِكَ هُمُ الرّٰشِدُوْنَ ۙ

তোমরা জেনে রাখো যে, তোমাদের মধ্যেই আল্লাহর রাসূল রয়েছেন। এমন অনেক কাজ রয়েছে, সেসব যদি রাসূল তোমাদের কথা মতোই করতে লেগে যায়, তাহলে তোমাদের অনেক ক্ষতি হবে। কিন্তু আল্লাহ তোমাদের কাছে ঈমানকে প্রিয় করেছেন, আর তোমাদের অন্তরকে ঈমান দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়ে দিয়েছেন। আর অবিস্বাস ও সত্যত্যাগ আর অবাধ্যতা তোমাদের কাছে অপ্রিয় করে দিয়েছেন। ঐসব লোক তারাই, যারা সঠিক পথগামী

সূরা : সূরা হুজুরাত

فَضْلًا مِّنَ اللّٰهِ وَنِعْمَةً ؕ وَاللّٰهُ عَلِيْمٌ حَكِيْمٌ

এটি আল্লাহর পক্ষ হতে সাহায্য ও অনুগ্রহ। আসলে আল্লাহ হলেন মহাজ্ঞানী ও মহা-বৈজ্ঞানিক।

সূরা : সূরা হুজুরাত

وَاِنْ طَآئِفَتٰنِ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ اقْتَتَلُوْا فَاَصْلِحُوْا بَيْنَهُمَا ۚ فَاِنْۢ بَغَتْ اِحْدٰىهُمَا عَلَي الْاُخْرٰي فَقَاتِلُوا الَّتِيْ تَبْغِيْ حَتّٰي تَفِيْٓءَ اِلٰۤي اَمْرِ اللّٰهِ ۚ فَاِنْ فَآءَتْ فَاَصْلِحُوْا بَيْنَهُمَا بِالْعَدْلِ وَاَقْسِطُوْا ؕ اِنَّ اللّٰهَ يُحِبُّ الْمُقْسِطِيْنَ

আর যদি (কোন সময়) মু'মিনদের দুটি দল নিজেদের মধ্যে ঝগড়া (কতল) শুরু করে দেয়, তবে তাদের মাঝে সংশোধন করে দাও। অতঃপর যদি তাদের মধ্যেকার কেউ একে অন্যের উপরে বাড়াবাড়ি করতে থাকে, তাহলে সেই বাড়াবাড়ি করা দলটিকে কতল করবে (সংশোধনের জন্য আয়াত দ্বারা ব্যক্তিত্বের কু-রিপুকে হত্যা করবে), তারা যতক্ষন না আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে আসে। অতঃপর যদি তারা ফিরে আসে , তাহলে তাদের মাঝে ন্যায়ানুগভাবে সুবিচার করে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালোবাসেন

*49(9)নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 5(44-49)...।


সূরা : সূরা হুজুরাত

اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ اِخْوَةٌ فَاَصْلِحُوْا بَيْنَ اَخَوَيْكُمْ وَاتَّقُوا اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ

প্রকৃতপক্ষে বিস্বাসীরা তো নিজেদের মধ্যে পরস্পর ভাই বোন। সুতরাং তোমরা তোমাদের ভাইদের মাঝে সংশোধন করে দাও। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। যাতে তোমাদের উপরে অনুগ্রহ করা সম্ভব হয়।

সূরা : সূরা হুজুরাত

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا يَسْخَرْ قَوْمٌ مِّنْ قَوْمٍ عَسٰۤي اَنْ يَّكُوْنُوْا خَيْرًا مِّنْهُمْ وَلَا نِسَآءٌ مِّنْ نِّسَآءٍ عَسٰۤي اَنْ يَّكُنَّ خَيْرًا مِّنْهُنَّ ۚ وَلَا تَلْمِزُوْۤا اَنْفُسَكُمْ وَلَا تَنَابَزُوْا بِالْاَلْقَابِ ؕ بِئْسَ الِاسْمُ الْفُسُوْقُ بَعْدَ الْاِيْمَانِ ۚ وَمَنْ لَّمْ يَتُبْ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الظّٰلِمُوْنَ

হে যারা ঈমান এনেছ ! কোনও সম্প্রদায়ের পুরুষদের উচিত নয়, অন্য কোনো সম্প্রদায়ের পুরুষদেরকে নিয়ে উপহাস করা। হয়তো তারা উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হবে, আর নারীদেরও উচিত নয়, অন্য নারীদেরকে নিয়ে উপহাস করা, হয়তো তারা উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হবে। আর তোমরা একে অন্যের উপরে দোষারোপ করো না, আর একে অন্যকে (খারাপ) উপনামে ডেকো না। ঈমান আনার পরে কাউকে খারাপ নামে ডাকা অন্যায়কারী-ফাসিকদের কাজ। আর যারা তাওবার মাধ্যমে বিরত হবে না, তারাই তো সীমালঙ্ঘনকারী।

সূরা : সূরা হুজুরাত

يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اجْتَنِبُوْا كَثِيْرًا مِّنَ الظَّنِّ ۫ اِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ اِثْمٌ وَّلَا تَجَسَّسُوْا وَلَا يَغْتَبْ بَّعْضُكُمْ بَعْضًا ؕ اَيُحِبُّ اَحَدُكُمْ اَنْ يَّاْكُلَ لَحْمَ اَخِيْهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوْهُ ؕ وَاتَّقُوا اللّٰهَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ تَوَّابٌ رَّحِيْمٌ

হে যারা ঈমান এনেছ ! তোমরা সবাই অত্যাধিক অনুমান করা হতে দূরে থাকো। নিশ্চয়ই কিছু অনুমান অপরাধ সৃষ্টি করে। তোমরা গোয়েন্দাগিরির মাধ্যমে গোপন কথা জানতে চেষ্টা করবে না, আর তোমাদের কেউ কারোর গীবত করবে না (কোন ব্যক্তি যে কাজ করেনি সেটা তার নামে বানিয়ে বলে সামনে বা পিছনে সমালোচনা করা হলো গীবত)। তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে আপন মৃত ভাইয়ের লাশের মাংস খেতে চাইবে ? তাতো তোমরা ঘৃণাই করবে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ হলেন তাওবা গ্রহণকারী, পরম দয়ালু।

সূরা : সূরা হুজুরাত

يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ اِنَّا خَلَقْنٰكُمْ مِّنْ ذَكَرٍ وَّاُنْثٰي وَجَعَلْنٰكُمْ شُعُوْبًا وَّقَبَآئِلَ لِتَعَارَفُوْا ؕ اِنَّ اَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللّٰهِ اَتْقٰكُمْ ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلِيْمٌ خَبِيْرٌ

হে মানুষ! নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সবাইকে একটি পুং-লিঙ্গ ও একটি স্ত্রী-লিঙ্গ থেকে সৃষ্টি করেছি। আর আমিই তোমাদেরকে বিভিন্ন সম্প্রদায় ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট বেশি মর্যাদাসম্পন্ন যে সর্বাধিক মহৎ। নিশ্চয় আল্লাহ হলেন মহাজ্ঞানী,খুব অবহিত।

সূরা : সূরা হুজুরাত

قَالَتِ الْاَعْرَابُ اٰمَنَّا ؕ قُلْ لَّمْ تُؤْمِنُوْا وَلٰكِنْ قُوْلُوْۤا اَسْلَمْنَا وَلَمَّا يَدْخُلِ الْاِيْمَانُ فِيْ قُلُوْبِكُمْ ؕ وَاِنْ تُطِيْعُوا اللّٰهَ وَرَسُوْلَهٗ لَا يَلِتْكُمْ مِّنْ اَعْمَالِكُمْ شَيْئًا ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

আরববাসীরা বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’। তুমি বলে দাও , ‘তোমরা ঈমান আননি’। বরং তোমরা বল, ‘আমরা আত্মসমর্ণ করেছি’। আর এখন পর্যন্ত তোমাদের অন্তরে ঈমান প্রবেশ করেনি। আর যদি তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর, তাহলে তিনি তোমাদের কর্মসমূহের কিছুমাত্র প্রতিফল দানে কম করবেন না। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

*49(14),নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 4(81)...।


সূরা : সূরা হুজুরাত

اِنَّمَا الْمُؤْمِنُوْنَ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِاللّٰهِ وَرَسُوْلِهٖ ثُمَّ لَمْ يَرْتَابُوْا وَجٰهَدُوْا بِاَمْوَالِهِمْ وَاَنْفُسِهِمْ فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ ؕ اُولٰٓئِكَ هُمُ الصّٰدِقُوْنَ

প্রকৃতপক্ষে মুমিন তো তারাই, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপরে ঈমান আনে। তারপরে বিন্দুমাত্র সন্দেহ পোষণ করে না। আর তাদের ধনসম্পদ ও জীবন দিয়ে আল্লাহর (কুরআনের) পথে উৎকৃষ্টতমকর্ম করে। এরাই হলো সত্যবাদী।

*49(15) আয়াতের ব্যাখ্যায় 24(47-51),9(44-46)...।

সূরা : সূরা হুজুরাত

قُلْ اَتُعَلِّمُوْنَ اللّٰهَ بِدِيْنِكُمْ ؕ وَاللّٰهُ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمٰوٰتِ وَمَا فِي الْاَرْضِ ؕ وَاللّٰهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيْمٌ

তুমি বলে দাও, তোমরা কি আল্লাহকে তোমাদের দ্বীন পালন সম্পর্কে জানাচ্ছ ? অথচ আল্লাহ তো আকাশসমূহের মধ্যে যা কিছু রয়েছে ও পৃথিবীর মধ্যে যা কিছু রয়েছে সবই জানেন। আর আল্লাহ সর্ব বিষয়ে মহাজ্ঞানী।

সূরা : সূরা হুজুরাত

يَمُنُّوْنَ عَلَيْكَ اَنْ اَسْلَمُوْا ؕ قُلْ لَّا تَمُنُّوْا عَلَيَّ اِسْلَامَكُمْ ۚ بَلِ اللّٰهُ يَمُنُّ عَلَيْكُمْ اَنْ هَدٰىكُمْ لِلْاِيْمَانِ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِيْنَ

(তারা মনে করে যে,) ‘তারা আত্মসমর্পণ করে তোমার প্রতি অনুগ্রহ করেছে’। তুমি বলে দাও, ‘তোমরা আত্মসমর্পণ করে আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছো বলে মনে করো না’। বরং আল্লাহই তোমাদেরকে ঈমানের দিকে পথ দেখিয়ে তোমাদের উপর অনুগ্রহ করেছেন, তোমরা যদি ঈমানের দাবীতে সত্যবাদী হয়েই থাকো’।

সূরা : সূরা হুজুরাত

اِنَّ اللّٰهَ يَعْلَمُ غَيْبَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ؕ وَاللّٰهُ بَصِيْرٌۢ بِمَا تَعْمَلُوْنَ

নিশ্চয় আল্লাহ আকাশসমূহের ও পৃথিবীর অদৃশ্য সম্পর্কে জানেন। আর আল্লাহ ঐ বিষয়েও সবকিছু দেখছেন তোমরা যা কিছু করছো।