সূরা : সূরা আল আহকাফ

حٰمٓ ۚ

হা-মীম।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

تَنْزِيْلُ الْكِتٰبِ مِنَ اللّٰهِ الْعَزِيْزِ الْحَكِيْمِ

মহা-সম্মানিত ও মহা-বৈজ্ঞানিক আল্লাহর নিকট হতেই এই আল কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

مَا خَلَقْنَا السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَاۤ اِلَّا بِالْحَقِّ وَاَجَلٍ مُّسَمًّي ؕ وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا عَمَّاۤ اُنْذِرُوْا مُعْرِضُوْنَ

আকাশ ও পৃথিবী আর এ দু'য়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে তা আমি যথাযথভাবে সৃষ্টি করেছি। আর একটি নির্দিষ্ট সময়ও স্থির করে নিয়েছি। কিন্তু যারা অস্বীকার করে, যার সম্পর্কে তাদেরকে সতর্ক করা হয়, তা হতে তারা মূখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

قُلْ اَرَءَيْتُمْ مَّا تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ اَرُوْنِيْ مَاذَا خَلَقُوْا مِنَ الْاَرْضِ اَمْ لَهُمْ شِرْكٌ فِي السَّمٰوٰتِ ؕ اِيْتُوْنِيْ بِكِتٰبٍ مِّنْ قَبْلِ هٰذَاۤ اَوْ اَثٰرَةٍ مِّنْ عِلْمٍ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِيْنَ

তুমি বলো ! তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাকছো, তোমরা আমাকে দেখাও, তারা পৃথিবী থেকে কি সৃষ্টি করেছে ? অথবা আকাশসমূহে তাদের কোনো অংশীদারিত্ব আছে কি ? এর থেকে পূর্বের কোনো কিতাব অথবা ঐতিহ্যগত কোনো জ্ঞান তোমাদের কাছে থাকলে তা আমার কাছে নিয়ে আসো, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়েই থাকো।

*46(4) নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 21(24),6(83-90),35(40),34(44),43(21),37(154-157),29(48),2(213),57(25),39(69),...।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَمَنْ اَضَلُّ مِمَّنْ يَّدْعُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَنْ لَّا يَسْتَجِيْبُ لَهٗۤ اِلٰي يَوْمِ الْقِيٰمَةِ وَهُمْ عَنْ دُعَآئِهِمْ غٰفِلُوْنَ

তার চেয়ে কে অধিক বিভ্রান্ত হতে পারে ? যে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন সত্তাকে ডাকছে, যা কিয়ামতের দিন পর্যন্ত তার ডাকে সাড়া দিবে না। আর তারা তাদের ডাক সম্বন্ধে অনবহিত।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَاِذَا حُشِرَ النَّاسُ كَانُوْا لَهُمْ اَعْدَآءً وَّكَانُوْا بِعِبَادَتِهِمْ كٰفِرِيْنَ

আর যখন সব মানুষকে একত্র করা হবে, সেদিন কিন্তু তারা এদের শত্রু হবে, আর তাদের দাসত্ব সম্বন্ধেও তারা অস্বীকার করবে।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَاِذَا تُتْلٰي عَلَيْهِمْ اٰيٰتُنَا بَيِّنٰتٍ قَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لِلْحَقِّ لَمَّا جَآءَهُمْ ۙ هٰذَا سِحْرٌ مُّبِيْنٌ ؕ

আর যখন তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট আয়াতগুলোকে আবৃত্তি করা হয়, তখন কাফিররা মহাসত্য (কোরআন) সম্পর্কে বলে, যখন তাদের কাছে পৌঁছায়, এটা সুস্পষ্ট যাদু।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

اَمْ يَقُوْلُوْنَ افْتَرٰىهُ ؕ قُلْ اِنِ افْتَرَيْتُهٗ فَلَا تَمْلِكُوْنَ لِيْ مِنَ اللّٰهِ شَيْئًا ؕ هُوَ اَعْلَمُ بِمَا تُفِيْضُوْنَ فِيْهِ ؕ كَفٰي بِهٖ شَهِيْدًۢا بَيْنِيْ وَبَيْنَكُمْ ؕ وَهُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ

তবে কি তারা এ কথাও বলছে যে, সে নিজেই এটা রচনা করেছে? তুমি বলে দাও ! আমি যদি এটা রচনা করে থাকি তবে তোমরা আমাকে আল্লাহ হতে রক্ষা করতে কিছুমাত্র সক্ষম হবে না। আর তিনি ঐ বিষয়ে খুব জানেন, যে সম্বন্ধে তোমরা আলোচনা করে বেড়াচ্ছো। সে সম্বন্ধে আমার ও তোমাদের মাঝে সাক্ষী হিসেবে তিনিই যথেষ্ট। আর তিনি ক্ষমাশীল, দয়াময়।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

قُلْ مَا كُنْتُ بِدْعًا مِّنَ الرُّسُلِ وَمَاۤ اَدْرِيْ مَا يُفْعَلُ بِيْ وَلَا بِكُمْ ؕ اِنْ اَتَّبِعُ اِلَّا مَا يُوْحٰۤي اِلَيَّ وَمَاۤ اَنَا اِلَّا نَذِيْرٌ مُّبِيْنٌ

তুমি বলে দাও ! আমি তো রাসূলদের মধ্য নতুন নই। আর আমি জানি না আমার সাথে কি আচরণ করা হবে, আর তোমাদের সাথেই বা কেমন করা হবে। আমি তো শুধু তাই অনুসরণ করে চলি, যা আমার প্রতি (কুরআন থেকে) ওহী করা হয়। আর আমি সুস্পষ্ট সতর্ককারী ছাড়া আর কিছু নয়।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

قُلْ اَرَءَيْتُمْ اِنْ كَانَ مِنْ عِنْدِ اللّٰهِ وَكَفَرْتُمْ بِهٖ وَشَهِدَ شَاهِدٌ مِّنْۢ بَنِيْۤ اِسْرَآءِيْلَ عَلٰي مِثْلِهٖ فَاٰمَنَ وَاسْتَكْبَرْتُمْ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظّٰلِمِيْنَ

তুমি বলো, তোমরা ভেবে দেখেছো কি! যদি এই কুরআন সত্যই আল্লাহর নিকট থেকেই এসে থাকে, আর তোমরা যদি তা অস্বীকার কর। আর ইসরাঈলের সন্তানদের মধ্য হতে কেউ এমন ধরণের কোনো কিতাবের সত্যতা সম্পর্কে সাক্ষ্য দেয়, এরপরে সে এতে ঈমান আনে, আর তোমরা অহংকার করতে লেগে যাও তাহলে নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারী সম্পদ্রায়কে সঠিক পথ দেখান না।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَقَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا لِلَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَوْ كَانَ خَيْرًا مَّا سَبَقُوْنَاۤ اِلَيْهِ ؕ وَاِذْ لَمْ يَهْتَدُوْا بِهٖ فَسَيَقُوْلُوْنَ هٰذَاۤ اِفْكٌ قَدِيْمٌ

আর কাফিররা কিন্তু যারা় ঈমান এনেছে তাদেরকে বলতে থাকে, এই কোরআন যদি কোনো উত্তম জিনিস হতো, তাহলে তারা আমাদের আগে এর (কোরআনের) কাছে যেতে পারতো না। আর তারা যখন কুরআনের দ্বারা সঠিক পথ অর্জন করার সৌভাগ্য লাভ করতে পারেনি, তখন তারা অচিরেই বলতে লাগবে, এটা তো এক পুরাতন মিথ্যা !

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَمِنْ قَبْلِهٖ كِتٰبُ مُوْسٰۤي اِمَامًا وَّرَحْمَةً ؕ وَهٰذَا كِتٰبٌ مُّصَدِّقٌ لِّسَانًا عَرَبِيًّا لِّيُنْذِرَ الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا ۖ وَبُشْرٰي لِلْمُحْسِنِيْنَ ۚ

আর পূর্ব থেকেই তো মূসার কিতাব পথপ্রদর্শক ও অনুগ্রহ হিসেবে এসেছে। আর এই কিতাব আরবী ভাষায় সত্যায়ন করে, যেনো সতর্ক করে তাদেররকে, যারা জুলুম করেছে। আর সৎকর্মশীলদের জন্যে সুসংবাদ দেয়।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

اِنَّ الَّذِيْنَ قَالُوْا رَبُّنَا اللّٰهُ ثُمَّ اسْتَقَامُوْا فَلَا خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلَا هُمْ يَحْزَنُوْنَ ۚ

নিশ্চয়ই যারা বলে আল্লাহই আমাদের প্রতিপালক, এরপর তাতে তারা অবিচল থাকে, তখন তাদের উপর কোনো ভয় নেই। আর তারা দুঃখিতও হবে না।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

اُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ الْجَنَّةِ خٰلِدِيْنَ فِيْهَا ۚ جَزَآءًۢ بِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ

ঐসব লোক তো তারাই, যারা জান্নাতের অধিবাসী হবে। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে, তারা যে সব কাজ করেছে তারই বিনিময়ে।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَوَصَّيْنَا الْاِنْسَانَ بِوَالِدَيْهِ اِحْسٰنًا ؕ حَمَلَتْهُ اُمُّهٗ كُرْهًا وَّوَضَعَتْهُ كُرْهًا ؕ وَحَمْلُهٗ وَفِصٰلُهٗ ثَلٰثُوْنَ شَهْرًا ؕ حَتّٰۤي اِذَا بَلَغَ اَشُدَّهٗ وَبَلَغَ اَرْبَعِيْنَ سَنَةً ۙ قَالَ رَبِّ اَوْزِعْنِيْۤ اَنْ اَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِيْۤ اَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلٰي وَالِدَيَّ وَاَنْ اَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضٰهُ وَاَصْلِحْ لِيْ فِيْ ذُرِّيَّتِيْ ۚؕ اِنِّيْ تُبْتُ اِلَيْكَ وَاِنِّيْ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ

আর আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে ভালো ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্ট করে গর্ভে ধারণ করেছে, আর বড়ই কষ্টের সাথে তাকে প্রসব করেছে। তার এই গর্ভে ধারণ করা আর দুধ ছাড়ানো ত্রিশ মাসে সম্পন্ন হয়েছে। এমন কি সে যখন তার পূর্ণশক্তিতে/তার যৌবন বয়সে পৌঁছে এবং চল্লিশ বছরের বয়সে উপনীত হয়, তখন সে বলে, হে আমার প্রতিপালক ! আমাকে সামর্থ্য দিন, আপনি আমার উপর ও আমার পিতা-মাতার উপর যে অনুগ্রহ করেছেন, আপনার সে অনুগ্রহের যেন আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি এবং আমি যেন সংশোধনের কাজ করতে পারি, যা আপনি পছন্দ করেন। আর আমার জন্যে আমার সন্তানদের মধ্যেও যোগ্যতা দান করুন। নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে তাওবার মাধ্যমে ফিরে এসেছি। আর নিশ্চয়ই আমি আত্মসমর্পণকারী-মুসলিমদের অন্তর্ভূক্ত।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ نَتَقَبَّلُ عَنْهُمْ اَحْسَنَ مَا عَمِلُوْا وَنَتَجَاوَزُ عَنْ سَيِّاٰتِهِمْ فِيْۤ اَصْحٰبِ الْجَنَّةِ ؕ وَعْدَ الصِّدْقِ الَّذِيْ كَانُوْا يُوْعَدُوْنَ

এরাই তো ঐসব লোক , যাদের উত্তম কাজসমূহ আমি গ্রহণ করবো, তারা যে সব কাজ করেছে। আর আমি তাদের মন্দ কাজগুলোকে ক্ষমা করে দিব, এরাই তো জান্নাতের অধিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। সেই প্রতিশ্রুতির সত্যতার কারণেই, যে বিষয়ে তাদের সাথে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَالَّذِيْ قَالَ لِوَالِدَيْهِ اُفٍّ لَّكُمَاۤ اَتَعِدٰنِنِيْۤ اَنْ اُخْرَجَ وَقَدْ خَلَتِ الْقُرُوْنُ مِنْ قَبْلِيْ ۚ وَهُمَا يَسْتَغِيْثٰنِ اللّٰهَ وَيْلَكَ اٰمِنْ ۖ اِنَّ وَعْدَ اللّٰهِ حَقٌّ ۚۖ فَيَقُوْلُ مَا هٰذَاۤ اِلَّاۤ اَسَاطِيْرُ الْاَوَّلِيْنَ

আর যে কেউ তার পিতা-মাতাকে বলবে, তোমাদের জন্যে ধিক্কার (আফসোস)। তোমরা আমাকে এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছ যে আমাকে (আবার সমাধি থেকে) বের করে আনা হবে। অথচ আমার পূর্বের শতাব্দীর পর শতাব্দীতে কত অসংখ্য সম্প্রদায় গত হয়েছে। আর তারা দু'জন আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করে বলে, তোমার সর্বনাশ হবে, তুমি ঈমান আনো। নিশ্চয়ই আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য। তখন সে বলে, এসব পুরাতন কালের লোকদের উপকথা ছাড়া আর কিছু নয়।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ حَقَّ عَلَيْهِمُ الْقَوْلُ فِيْۤ اُمَمٍ قَدْ خَلَتْ مِنْ قَبْلِهِمْ مِّنَ الْجِنِّ وَالْاِنْسِ ؕ اِنَّهُمْ كَانُوْا خٰسِرِيْنَ

এরাই তো ঐসব লোক, যাদের ব্যাপারে বিশেষ বাণী সত্য প্রমাণিত হবে। তাদের পূর্বেও বিদ্রোহী জিন আর ইনসান মানুষের উপর কার্যকরী হয়েছে।নিশ্চয়ই তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَلِكُلٍّ دَرَجٰتٌ مِّمَّا عَمِلُوْا ۚ وَلِيُوَفِّيَهُمْ اَعْمَالَهُمْ وَهُمْ لَا يُظْلَمُوْنَ

আর প্রত্যেকের জন্যই তাদের কাজকর্ম অনুসারে পদমর্যাদা রয়েছে। যেনো তাদের কাজকর্মের পূর্ণ প্রতিফল দান করা যায়। তাদের উপর কোনো অবিচার করা হবে না।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَيَوْمَ يُعْرَضُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا عَلَي النَّارِ ؕ اَذْهَبْتُمْ طَيِّبٰتِكُمْ فِيْ حَيَاتِكُمُ الدُّنْيَا وَاسْتَمْتَعْتُمْ بِهَا ۚ فَالْيَوْمَ تُجْزَوْنَ عَذَابَ الْهُوْنِ بِمَا كُنْتُمْ تَسْتَكْبِرُوْنَ فِي الْاَرْضِ بِغَيْرِ الْحَقِّ وَبِمَا كُنْتُمْ تَفْسُقُوْنَ

আর যেদিন কাফিরদেরকে আগুনের নিকট উপস্থিত করা হবে, বলা হবে 'তোমরা তোমাদের পার্থিব জীবনে তো নিজেদের রুচি অনুসারে সব কিছু লাভ করেছো, আর তা খুব করে ভোগ করেছো। অতএব আজ তোমাদেরকে চরম অপমানের শাস্তির মাধ্যমেই প্রতিফল দেওয়া হবে, আর তা এ কারণেই যে তোমরা পৃথিবীতে অযথা অহংকার করে বেড়াতে, আর তা এ কারণেও যে তোমরা অমান্য করেছিলে।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَاذْكُرْ اَخَا عَادٍ ؕ اِذْ اَنْذَرَ قَوْمَهٗ بِالْاَحْقَافِ وَقَدْ خَلَتِ النُّذُرُ مِنْۢ بَيْنِ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهٖۤ اَلَّا تَعْبُدُوْۤا اِلَّا اللّٰهَ ؕ اِنِّيْۤ اَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيْمٍ

তুমি আ'দ এর ভাইয়ের (হুদের) কথা স্মরণ কর। সে যখন তার জাতির যারা বালুময় এলাকার সাথে বাস করতো (উঁচু ঢিলার উপরে), তাদেরকে সতর্ক করে। আর তার আগে ও পরে অনেক সতর্ককারী অতীত হয়েছে। তারা বলেছে, তোমরা এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারোও দাসত্ব করবে না। নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সম্পর্কে সেই মহা দিনের শাস্তি নিয়ে ভয় করছি।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

قَالُوْۤا اَجِئْتَنَا لِتَاْفِكَنَا عَنْ اٰلِهَتِنَا ۚ فَاْتِنَا بِمَا تَعِدُنَاۤ اِنْ كُنْتَ مِنَ الصّٰدِقِيْنَ

তারা বলে, তুমি কি এই উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের কাছে এসেছো, যাতে তুমি আমাদেরকে আমাদের দেবতাগলোর কাছ থেকে ফিরিয়ে রাখবে। তাহলে তুমি যে বিষয় নিয়ে আমাদেরকে ওয়াদা দিচ্ছ, আমাদের উপরে তাই নিয়ে আসো। যদি তুমি সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হয়েই থাক।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

قَالَ اِنَّمَا الْعِلْمُ عِنْدَ اللّٰهِ ۫ۖ وَاُبَلِّغُكُمْ مَّاۤ اُرْسِلْتُ بِهٖ وَلٰكِنِّيْۤ اَرٰىكُمْ قَوْمًا تَجْهَلُوْنَ

সে বলে, প্রকৃতপক্ষে এ জ্ঞান তো শুধুমাত্র আল্লাহর নিকটে রয়েছে, আর আমি তোমাদের কাছে সেই পয়গাম পৌঁছাই, যা নিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি। কিন্তু আমি তোমাদেরকে দেখছি, তোমরা এক মূর্খ সম্প্রদায়।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

فَلَمَّا رَاَوْهُ عَارِضًا مُّسْتَقْبِلَ اَوْدِيَتِهِمْ ۙ قَالُوْا هٰذَا عَارِضٌ مُّمْطِرُنَا ؕ بَلْ هُوَ مَا اسْتَعْجَلْتُمْ بِهٖ ؕ رِيْحٌ فِيْهَا عَذَابٌ اَلِيْمٌ ۙ

অতঃপর যখন তারা তাদের উপাত্যকাগুলোর দিকে অগ্রসরমান মেঘমালারূপে তা দেখে, তখন তারা বলতে লাগে, এটা মেঘমালা আমাদের উপরে বৃষ্টি দিবে। না, তা নয়, বরং এটি সেই জিনিস, যা তোমরা তাড়াতাড়ি চেয়েছিলে। এটা ঝড়ো বাতাস, এর মধ্যে আছে বড় যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

تُدَمِّرُ كُلَّ شَيْءٍۭ بِاَمْرِ رَبِّهَا فَاَصْبَحُوْا لَا يُرٰۤي اِلَّا مَسٰكِنُهُمْ ؕ كَذٰلِكَ نَجْزِي الْقَوْمَ الْمُجْرِمِيْنَ

এটা তার প্রতিপালকের নির্দেশের মাধ্যমে প্রত্যেক জিনিসকে ধ্বংস করে দিবে। অবশেষে তারা সকাল বেলা এমন অবস্থায় পৌঁছায় তাদের বাড়িঘরগুলো ছাড়া আর কিছুই দেখা যায়নি। এভাবেই তো আমি অপরাধী সম্প্রদায়কে কর্মফল দিয়ে থাকি।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَلَقَدْ مَكَّنّٰهُمْ فِيْمَاۤ اِنْ مَّكَّنّٰكُمْ فِيْهِ وَجَعَلْنَا لَهُمْ سَمْعًا وَّاَبْصَارًا وَّاَفْـِٕدَةً ۫ۖ فَمَاۤ اَغْنٰي عَنْهُمْ سَمْعُهُمْ وَلَاۤ اَبْصَارُهُمْ وَلَاۤ اَفْـِٕدَتُهُمْ مِّنْ شَيْءٍ اِذْ كَانُوْا يَجْحَدُوْنَ ۙ بِاٰيٰتِ اللّٰهِ وَحَاقَ بِهِمْ مَّا كَانُوْا بِهٖ يَسْتَهْزِءُوْنَ

নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে এমন ক্ষমতা দান করেছি, তেমন ক্ষমতা তোমাদেরকে দান করিনি। আমিই তাদের জন্য কান, চোখ ও হৃদয় তৈরী করে দিয়েছি। কিন্তু তাদের কান, চোখ ও হৃদয় কোনো কিছুই তাদের কাজে আসেনি। কারণ তারা আল্লাহর আয়াতগুলো নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতো। যে সম্পর্কে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করতো, তাই তাদেরকে ঘিরে নিলো।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَلَقَدْ اَهْلَكْنَا مَا حَوْلَكُمْ مِّنَ الْقُرٰي وَصَرَّفْنَا الْاٰيٰتِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُوْنَ

আর নিশ্চয়ই আমি তোমাদের চারপাশের কত জনপদকে ধ্বংস করেছি। আর আমি আমার আয়াতসমূহকে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছি, যাতে তারা ফিরে আসে।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

فَلَوْلَا نَصَرَهُمُ الَّذِيْنَ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ قُرْبَانًا اٰلِـهَةً ؕ بَلْ ضَلُّوْا عَنْهُمْ ۚ وَذٰلِكَ اِفْكُهُمْ وَمَا كَانُوْا يَفْتَرُوْنَ

অতঃপর তারা যাদেরকে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্যে আল্লাহকে বাদ দিয়ে বিধানদাতারূপে গ্রহণ করেছিলো, তারা কেনো তাদেরকে সাহায্য করলো না ? বরং তারা তাদের কাছ থেকে হারিয়ে গেলো। আর এটাই তাদের মিথ্যার পরিণতি, আর যা তারা মিথ্যা রচনা করেছিল।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَاِذْ صَرَفْنَاۤ اِلَيْكَ نَفَرًا مِّنَ الْجِنِّ يَسْتَمِعُوْنَ الْقُرْاٰنَ ۚ فَلَمَّا حَضَرُوْهُ قَالُوْۤا اَنْصِتُوْا ۚ فَلَمَّا قُضِيَ وَلَّوْا اِلٰي قَوْمِهِمْ مُّنْذِرِيْنَ

আর আমি যখন (জিনদের মধ্য থেকে) একদল লোককে গোপন ভাবে তোমার কাছে নিয়ে আসি, তখন তারা কোরআন পড়া শুনতে লাগে। অতঃপর যখন তারা সেখানে উপস্থিত হয়, তখন তারা বলে, তোমরা চুপ করে শোনো। অতঃপর যখন কোরআন পড়া শেষ হয়। তখন তারা তাদের জাতির দিকে সতর্ককারী হয়ে ফিরে যায়।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

قَالُوْا يٰقَوْمَنَاۤ اِنَّا سَمِعْنَا كِتٰبًا اُنْزِلَ مِنْۢ بَعْدِ مُوْسٰي مُصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيْهِ يَهْدِيْۤ اِلَي الْحَقِّ وَاِلٰي طَرِيْقٍ مُّسْتَقِيْمٍ

তারা বলে, হে আমাদের জাতি ! নিশ্চয়ই আমরা একটি কিতাব পাঠ শুনে এলাম, যা মূসার পর থেকেও অবতীর্ণ হয়েছে। ভবিষ্যতে যা হবে, তার সত্যতা প্রমাণ করছে এবং সত্য ও সুপ্রতিষ্ঠিত পথের সন্ধান বলে দিচ্ছে।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

يٰقَوْمَنَاۤ اَجِيْبُوْا دَاعِيَ اللّٰهِ وَاٰمِنُوْا بِهٖ يَغْفِرْ لَكُمْ مِّنْ ذُنُوْبِكُمْ وَيُجِرْكُمْ مِّنْ عَذَابٍ اَلِيْمٍ

হে আমার জাতি ! আল্লাহর দিকে আহ্বানকারীর ডাকে তোমরা সাড়া দাও। আর তার উপরে ঈমান আনো। আল্লাহ তোমাদের পাপগুলোকে ক্ষমা করবেন। আর তোমাদেরকে নিদারুণ কষ্টকর শাস্তি হতে রক্ষা করবেন।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَمَنْ لَّا يُجِبْ دَاعِيَ اللّٰهِ فَلَيْسَ بِمُعْجِزٍ فِي الْاَرْضِ وَلَيْسَ لَهٗ مِنْ دُوْنِهٖۤ اَوْلِيَآءُ ؕ اُولٰٓئِكَ فِيْ ضَلٰلٍ مُّبِيْنٍ

আর যে ব্যক্তি আল্লাহর দিকে আহাবানকারীর ডাকে সাড়া দিবে না। সে তো আল্লাহকে পৃথিবীতে ব্যর্থ করে দিতে পারবে না। তার জন্যে তিনি ছাড়া কোনো আউলিয়া নেই। ঐসব লোক তো তারাই, যারা সুস্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

اَوَلَمْ يَرَوْا اَنَّ اللّٰهَ الَّذِيْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ وَلَمْ يَعْيَ بِخَلْقِهِنَّ بِقٰدِرٍ عَلٰۤي اَنْ يُّحْيِۦَ الْمَوْتٰي ؕ بَلٰۤي اِنَّهٗ عَلٰي كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ

তারা কি দেখেনি যে, আল্লাহ, যিনি আকাশ ও পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছেন, এ সবের সৃষ্টি করতে গিয়ে তিনি‌ কিছুমাত্র ক্লান্তি বোধ করেন নি। তিনি তো এসবের উপর এমন ক্ষমতা রাখেন, যে তিনি মৃতদেরকে জীবিত করবেন। হ্যাঁ, নিশ্চয়ই তিনি সব কিছুর উপর পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন

সূরা : সূরা আল আহকাফ

وَيَوْمَ يُعْرَضُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا عَلَي النَّارِ ؕ اَلَيْسَ هٰذَا بِالْحَقِّ ؕ قَالُوْا بَلٰي وَرَبِّنَا ؕ قَالَ فَذُوْقُوا الْعَذَابَ بِمَا كُنْتُمْ تَكْفُرُوْنَ

আর যেদিন কাফিরদেরকে আগুনের নিকট উপস্থিত করা হবে, (সেদিন জিজ্ঞাসা করা হবে) এটা কি সত্য নয় ! তারা বলবে, হ্যাঁ, আমাদের প্রতিপালকের শপথ, এটা সত্য। বলা হবে, তাহলে তোমরা এখন শাস্তির স্বাদ নিতে থাকো, যা তোমরা অস্বীকার করতে।

সূরা : সূরা আল আহকাফ

فَاصْبِرْ كَمَا صَبَرَ اُولُوا الْعَزْمِ مِنَ الرُّسُلِ وَلَا تَسْتَعْجِلْ لَّهُمْ ؕ كَاَنَّهُمْ يَوْمَ يَرَوْنَ مَا يُوْعَدُوْنَ ۙ لَمْ يَلْبَثُوْۤا اِلَّا سَاعَةً مِّنْ نَّهَارٍ ؕ بَلٰغٌ ۚ فَهَلْ يُهْلَكُ اِلَّا الْقَوْمُ الْفٰسِقُوْنَ

অতএব তুমি ধৈর্য ধারণ কর, যেমন সুদৃঢ় সংকল্পের অধিকারী রাসূলগণ ধৈর্য ধারণ করেছে। আর তাদের জন্যে তুমি তাড়াহুড়া করো না। যেদিন তারা তাদের চোখের সামনেই দেখতে পাবে, তাদের সাথে যে সব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। (সেদিন তাদের কাছে মনে হবে) তারা যেন একটি দিনের থেকে একদন্ড সময় পৃথিবীতে বাস করেছে। সত্য প্রচার করাই তো কর্তব্য। অতঃপর তারাই ধ্বংস হবে, যারা অমান্যকারী-ফাসিক সম্প্রদায়।