সূরা : সুরা নমল্
طٰسٓ ۟ تِلْكَ اٰيٰتُ الْقُرْاٰنِ وَكِتَابٍ مُّبِيْنٍ ۙ
ত্বা-ছী’ন, এগুলো বিশেষ পঠিত আল কুরআন ও সুষ্পষ্ট লিখিত একটি কিতাবের আয়াতসমূহ।
طٰسٓ ۟ تِلْكَ اٰيٰتُ الْقُرْاٰنِ وَكِتَابٍ مُّبِيْنٍ ۙ
ত্বা-ছী’ন, এগুলো বিশেষ পঠিত আল কুরআন ও সুষ্পষ্ট লিখিত একটি কিতাবের আয়াতসমূহ।
الَّذِيْنَ يُقِيْمُوْنَ الصَّلٰوةَ وَيُؤْتُوْنَ الزَّكٰوةَ وَهُمْ بِالْاٰخِرَةِ هُمْ يُوْقِنُوْنَ
যারা দায়িত্ব প্রতিষ্ঠা করে , আর সাহায্য প্রদান করে, আর পরকালের উপর যারা দৃঢ় বিশ্বাসী।
اِنَّ الَّذِيْنَ لَا يُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ زَيَّنَّا لَهُمْ اَعْمَالَهُمْ فَهُمْ يَعْمَهُوْنَ ؕ
নিশ্চয়ই যারা পরকালের উপর বিশ্বাস করে না, তাদের কাজকর্মসমূহকে আমি তাদের জন্যেই তো সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছি। ফলে তারা বিভ্রান্তিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ لَهُمْ سُوْٓءُ الْعَذَابِ وَهُمْ فِي الْاٰخِرَةِ هُمُ الْاَخْسَرُوْنَ
তারাই তো সেই দল, যাদের জন্যে রয়েছে খারাপ শাস্তি। আর তারাই তো পরকালে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত।
وَاِنَّكَ لَتُلَقَّي الْقُرْاٰنَ مِنْ لَّدُنْ حَكِيْمٍ عَلِيْمٍ
আর নিশ্চয়ই তুমি এই আল কোরআন লাভ করেছ একজন মহা-বৈজ্ঞানীক ও সর্বাধিক জ্ঞানীর পক্ষ হ'তে।
اِذْ قَالَ مُوْسٰي لِاَهْلِهٖۤ اِنِّيْۤ اٰنَسْتُ نَارًا ؕ سَاٰتِيْكُمْ مِّنْهَا بِخَبَرٍ اَوْ اٰتِيْكُمْ بِشِهَابٍ قَبَسٍ لَّعَلَّكُمْ تَصْطَلُوْنَ
সে যখন বলে, তার পরিবারবর্গকে যে, নিশ্চয় আমি এক জায়গায় আগুন দেখতে পেয়েছি। আমি শীঘ্রই সেখান থেকে তোমাদের জন্য কোনো সংবাদ অথবা তোমাদের কাছে জ্বলন্ত অঙ্গার নিয়ে আসব, যাতে তোমরা পোহাতে পার।
فَلَمَّا جَآءَهَا نُوْدِيَ اَنْۢ بُوْرِكَ مَنْ فِي النَّارِ وَمَنْ حَوْلَهَا ؕ وَسُبْحٰنَ اللّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ
অতঃপর সে যখন সেখানে এসে পৌঁছায়, তখন ডেকে বলা হয়, ‘ সে কল্যাণময়/ধন্য হয়েছে, যে এ আগুনের-আলোর মধ্যে আর এর চারপাশে রয়েছে। আর বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহ পবিত্র মহান’।
يٰمُوْسٰۤي اِنَّهٗۤ اَنَا اللّٰهُ الْعَزِيْزُ الْحَكِيْمُ ۙ
হে মূসা ! নিশ্চয়ই আমিই আল্লাহ, মহা-সম্মানী ও মহা-বৈজ্ঞানিক।
وَاَلْقِ عَصَاكَ ؕ فَلَمَّا رَاٰهَا تَهْتَزُّ كَاَنَّهَا جَآنٌّ وَّلّٰي مُدْبِرًا وَّلَمْ يُعَقِّبْ ؕ يٰمُوْسٰي لَا تَخَفْ ۟ اِنِّيْ لَا يَخَافُ لَدَيَّ الْمُرْسَلُوْنَ ۖ
আর তোমার সাহারাকে রেখে দাও, অতঃপর মূসা যখন দেখে, সেটা এনার্জির-শক্তির কারণে ফনা তুলেছে, তখন পিঠ ফিরিয়ে চলে যায়, পেছনে ফিরে তাকায় না। আমি বলি, হে মূসা ! ভয় করো না। নিশ্চয়ই আমি রয়েছি। আমার কাছে এসে রাসূলরা ভয় করে না।
اِلَّا مَنْ ظَلَمَ ثُمَّ بَدَّلَ حُسْنًۢا بَعْدَ سُوْٓءٍ فَاِنِّيْ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ
‘কিন্তু যে কেউ সীমালংঘন করেছে। তারপর মন্দ কর্মের পর নিজের মন্দ কর্মকে সৎকর্ম দিয়ে বদলে নিয়েছে, সেক্ষেত্রে নিশ্চয়ই আমি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَاَدْخِلْ يَدَكَ فِيْ جَيْبِكَ تَخْرُجْ بَيْضَآءَ مِنْ غَيْرِ سُوْٓءٍ ۟ فِيْ تِسْعِ اٰيٰتٍ اِلٰي فِرْعَوْنَ وَقَوْمِهٖ ؕ اِنَّهُمْ كَانُوْا قَوْمًا فٰسِقِيْنَ
আর (হে মুসা) তুমি তোমার হাত পকেটের মধ্যে প্রবেশ করাও, আর তা শুভ্র উজ্বল অবস্থায় বের হয়ে আসবে, তাতে কোনো রকম ত্রুটি থাকবে না। এ হলো নয়টি নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। ফিরআউন ও তার জাতির জন্যে। নিশ্চয়ই তারা অমান্যকারী ফাসিক্ব সম্প্রদায়।
فَلَمَّا جَآءَتْهُمْ اٰيٰتُنَا مُبْصِرَةً قَالُوْا هٰذَا سِحْرٌ مُّبِيْنٌ ۚ
অতঃপর যখন তাদের নিকট আমার আয়াতগুলো দেখিয়ে দেয়ার জন্যে আসে। তখন তারা বলে, এটা সুস্পষ্ট যাদু।
وَجَحَدُوْا بِهَا وَاسْتَيْقَنَتْهَاۤ اَنْفُسُهُمْ ظُلْمًا وَّعُلُوًّا ؕ فَانْظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُفْسِدِيْنَ
আর তারা অন্যায়ভাবে ও অহংকারবশত সেগুলোকে প্রত্যাখ্যান করে। অথচ তাদের অন্তর তা দৃঢ় বিশ্বাস করেছিল। তাই দেখ, বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের পরিণাম কেমন দাঁড়ায়।
وَلَقَدْ اٰتَيْنَا دَاوٗدَ وَسُلَيْمٰنَ عِلْمًا ۚ وَقَالَا الْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ فَضَّلَنَا عَلٰي كَثِيْرٍ مِّنْ عِبَادِهِ الْمُؤْمِنِيْنَ
আর অবশ্যই আমি দাউদ আর সুলাইমানকে জ্ঞান দান করেছি। আর তারা দু'জন বলে,সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্যে। যিনি আমাদেরকে তাঁর অনেক বিস্বাসী দাসদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন।
وَوَرِثَ سُلَيْمٰنُ دَاوٗدَ وَقَالَ يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ عُلِّمْنَا مَنْطِقَ الطَّيْرِ وَاُوْتِيْنَا مِنْ كُلِّ شَيْءٍ ؕ اِنَّ هٰذَا لَهُوَ الْفَضْلُ الْمُبِيْنُ
আর সুলাইমান, দাউদের উত্তরাধিকারী হয়। আর সে বলে, হে মানব জাতি ! আমাদেরকে পাখীর ভাষা শিখানো হয়েছে। আর আমাদেরকে প্রত্যেক জিনিসের অংশ দান করা হয়েছে। নিশ্চয়ই এটা সুস্পষ্ট মর্যাদা।
وَحُشِرَ لِسُلَيْمٰنَ جُنُوْدُهٗ مِنَ الْجِنِّ وَالْاِنْسِ وَالطَّيْرِ فَهُمْ يُوْزَعُوْنَ
আর সুলাইমানের কাছে জিনদের তথা শক্তির সাথে কাজ সম্পাদনকারী এবং ইনস্ তথা ব্রেইন দ্বারা কাজ সম্পাদনকারী ও উড়ন্তদের বাহিনী মওজুদ ছিলো।
حَتّٰۤي اِذَاۤ اَتَوْا عَلٰي وَادِ النَّمْلِ ۙ قَالَتْ نَمْلَةٌ يّٰۤاَيُّهَا النَّمْلُ ادْخُلُوْا مَسٰكِنَكُمْ ۚ لَا يَحْطِمَنَّكُمْ سُلَيْمٰنُ وَجُنُوْدُهٗ ۙ وَهُمْ لَا يَشْعُرُوْنَ
শেষ পর্যন্ত তারা যখন পিপীলিকার উপত্যকায় পৌঁছায়, তখন একটি পিপীলিকা বলে, হে পিপড়ার দল ! তোমরা নিজেদের ঘরে প্রবেশ কর। সুলাইমান ও তার সৈন্যবাহিনীর দল যেন তোমাদেরকে পিষে না ফেলে। এমতাবস্থায় যে, তারা টেরও পাবে না।
فَتَبَسَّمَ ضَاحِكًا مِّنْ قَوْلِهَا وَقَالَ رَبِّ اَوْزِعْنِيْۤ اَنْ اَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِيْۤ اَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلٰي وَالِدَيَّ وَاَنْ اَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضٰىهُ وَاَدْخِلْنِيْ بِرَحْمَتِكَ فِيْ عِبَادِكَ الصّٰلِحِيْنَ
তার কথায় সুলায়মান মুচকি হাসির পরে খুব জোরে হেসে পড়ে আর বলে, হে আমার প্রতিপালক ! আপনি আমাকে সৌভাগ্য দান করেছেন, যেন আমি আপনারই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি। আপনি আমার উপরে যেসব অনুগ্রহ দান করেছেন, আর আমার পিতা-মাতার উপরে। আর আমি যেন সংশোধনের কাজ করতে পারি, আপনি যা পছন্দ করেন। আর আপনি আমাকে আপনার অনুগ্রহ দ্বারা সংশোধনকারী দাসদের অন্তর্ভূক্ত করুন
وَتَفَقَّدَ الطَّيْرَ فَقَالَ مَا لِيَ لَاۤ اَرَي الْهُدْهُدَ ۫ۖ اَمْ كَانَ مِنَ الْغَآئِبِيْنَ
আর সুলাইমান উড়ন্তদের খোঁজ খবর নেয়। অতঃপর বলে, ব্যাপার কি ? আমি হুদ্হুদ্কে (গোয়েন্দা বিভাগের লোককে) দেখছি না। সে কি অনুপস্থিতদের অন্তর্ভুক্ত ?
لَاُعَذِّبَنَّهٗ عَذَابًا شَدِيْدًا اَوْ لَاَاذْبَحَنَّهٗۤ اَوْ لَيَاْتِيَنِّيْ بِسُلْطٰنٍ مُّبِيْنٍ
তাকে আমি অবশ্যই বড় কঠিন শাস্তি দিবো, নইলে পৃথক করে ফেলবো। কিংবা সে আমার কাছে স্পষ্ট কোনো শক্তিশালী দলীল-প্রমাণ নিয়ে আসবে।
فَمَكَثَ غَيْرَ بَعِيْدٍ فَقَالَ اَحَطْتُّ بِمَا لَمْ تُحِطْ بِهٖ وَجِئْتُكَ مِنْ سَبَاٍۭ بِنَبَاٍ يَّقِيْنٍ
তারপর হুদ্হুদ্ আর বেশি দেরী না করতেই এসে বলে, আমি এমন একটি তথ্য নিয়ে এসেছি যা আপনি জানতেন না। আমি সাবা'র (রাজ্যের) একটি সুনিশ্চিত সংবাদ এনেছি।
اِنِّيْ وَجَدْتُّ امْرَاَةً تَمْلِكُهُمْ وَاُوْتِيَتْ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ وَّلَهَا عَرْشٌ عَظِيْمٌ
নিশ্চয়ই আমি একজন মহিলা লোককে দেখতে পেয়েছি, যে সেদেশের লোককে শাসন করছে (রাজত্ব করছে) । আর তাকে সব কিছুই দেওয়া হয়েছে। আর তার আছে বিরাট সংসদ।
وَجَدْتُّهَا وَقَوْمَهَا يَسْجُدُوْنَ لِلشَّمْسِ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ وَزَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطٰنُ اَعْمَالَهُمْ فَصَدَّهُمْ عَنِ السَّبِيْلِ فَهُمْ لَا يَهْتَدُوْنَ ۙ
আমি তাকে আর তার জাতিকে দেখতে পেয়েছি তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে সূর্যের উদ্দেশ্যে সিজদা তথা ভক্তি করে যাচ্ছে। এবং শয়তান তাদের কাছে তাদের কাজ-কর্মকে সুশোভন করেছে। অতঃপর তাদেরকে সঠিপথ হ'তে বিরত রেখেছে। তাই তারা সঠিক পথ খুঁজে পাচ্ছে না।
اَلَّا يَسْجُدُوْا لِلّٰهِ الَّذِيْ يُخْرِجُ الْخَبْءَ فِي السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَيَعْلَمُ مَا تُخْفُوْنَ وَمَا تُعْلِنُوْنَ
তারা কেনো আল্লাহর উদ্দেশ্যে পরম আনুগত্য করবে না? যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর লুকায়িত বস্তুকে বের করেন। আর তিনি জানেন তোমরা যা কিছু গোপন করো আর যা কিছু প্রকাশ করো।
اَللّٰهُ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ
আল্লাহ এমন যে, তিনি ছাড়া সত্যিকারের কোন আইনদাতা নেই, তিনি হলেন সেই মহান সংসদের অধিপতি।
قَالَ سَنَنْظُرُ اَصَدَقْتَ اَمْ كُنْتَ مِنَ الْكٰذِبِيْنَ
সুলাইমান বলে, আমি এক্ষুনি দেখে নিচ্ছি, তুমি সত্য কথা বলছো, নাকি তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
اِذْهَبْ بِّكِتٰبِيْ هٰذَا فَاَلْقِهْ اِلَيْهِمْ ثُمَّ تَوَلَّ عَنْهُمْ فَانْظُرْ مَاذَا يَرْجِعُوْنَ
তুমি আমার এই কিতাবটি নিয়ে যাও, অতঃপর তা তাদের নিকট অর্পণ করো, এরপর তাদের কাছ থেকে সরে পড়বে। অতঃপর তুমি দেখবে, তারা কি উত্তর দেয়।
قَالَتْ يٰۤاَيُّهَا الْمَلَؤُا اِنِّيْۤ اُلْقِيَ اِلَيَّ كِتٰبٌ كَرِيْمٌ
রাণী বলে, হে সভাসদবৃন্দ-অফিসারগণ আপনারা শোনেন ! নিশ্চয়ই আমার কাছে একটি সম্মানিত কিতাব পেশ করা হয়েছে।
اِنَّهٗ مِنْ سُلَيْمٰنَ وَاِنَّهٗ بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ ۙ
নিশ্চয় এটা সুলাইমানের পক্ষ হ'তে এসেছে, আর এটা শুরু হয়েছে দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নাম দিয়ে।
اَلَّا تَعْلُوْا عَلَيَّ وَاْتُوْنِيْ مُسْلِمِيْنَ
(তা এই যে) তোমরা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করো না এবং আমার নিকট আত্মসমর্পণকারী হয়ে চলে এসো'।
قَالَتْ يٰۤاَيُّهَا الْمَلَؤُا اَفْتُوْنِيْ فِيْۤ اَمْرِيْ ۚ مَا كُنْتُ قَاطِعَةً اَمْرًا حَتّٰي تَشْهَدُوْنِ
সে (রাণী) বলে, হে সভাসদবৃন্দ তোমরা আমাকে আমার কর্তব্য সম্পর্কে অভিমত দাও। আমি চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত তোমাদের উপস্থিতি ছাড়া গ্রহণ করিনা।
قَالُوْا نَحْنُ اُولُوْا قُوَّةٍ وَّاُولُوْا بَاْسٍ شَدِيْدٍ ۙ وَّالْاَمْرُ اِلَيْكِ فَانْظُرِيْ مَاذَا تَاْمُرِيْنَ
তারা বলে, আমরা তো খুব শক্তিশালী, আর কঠিন যোদ্ধাও বটে। কিন্তু কাজ তো আপনার ইখতিয়ারেই রয়েছে। এখন দেখে শুনে যা আদেশ দিবেন তাই হবে।
قَالَتْ اِنَّ الْمُلُوْكَ اِذَا دَخَلُوْا قَرْيَةً اَفْسَدُوْهَا وَجَعَلُوْۤا اَعِزَّةَ اَهْلِهَاۤ اَذِلَّةً ۚ وَكَذٰلِكَ يَفْعَلُوْنَ
সেই রাণী বলে, নিশ্চয়ই রাজারা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে, তখন কিন্তু সেটাকে বিপর্যস্ত করে ফেলে, আর সেখানকার অধিবাসীদের মধ্যে যারা সম্মানিত থাকে, তাদেরকে অপদস্থ করে থাকে। আর এরূপই তারা করবে।
وَاِنِّيْ مُرْسِلَةٌ اِلَيْهِمْ بِهَدِيَّةٍ فَنٰظِرَةٌۢ بِمَ يَرْجِعُ الْمُرْسَلُوْنَ
আমি তাদের কাছে হাদিয়াসহ প্রেরণ করেছি। তারপর দেখি রাসুলরা কি নিয়ে ফিরে আসে।
فَلَمَّا جَآءَ سُلَيْمٰنَ قَالَ اَتُمِدُّوْنَنِ بِمَالٍ ۫ فَمَاۤ اٰتٰىنِۦَ اللّٰهُ خَيْرٌ مِّمَّاۤ اٰتٰىكُمْ ۚ بَلْ اَنْتُمْ بِهَدِيَّتِكُمْ تَفْرَحُوْنَ
অতঃপর যখন সুলাইমানের কাছে পৌঁছায়, তখন সে বলে, তুমি আমাকে ধন-সম্পদ দিয়ে সাহায্য করছো ? অথচ, আল্লাহ আমাকে তো তার চাইতে অনেক উত্তম সম্পদ দান করেছেন, যা তোমাদেরকে দান করা হয়েছে। বরং তোমরাই তোমাদের হাদিয়া (জিনিস-পত্র) নিয়ে আনন্দ করো।
اِرْجِعْ اِلَيْهِمْ فَلَنَاْتِيَنَّهُمْ بِجُنُوْدٍ لَّا قِبَلَ لَهُمْ بِهَا وَلَنُخْرِجَنَّهُمْ مِّنْهَاۤ اَذِلَّةً وَّهُمْ صٰغِرُوْنَ
তার কাছে ফিরে যাও। এখন তো আমি এমন সৈন্য সামন্ত নিয়ে পৌঁছে যাবো, যার মোকাবিলা করা সম্ভব হবে না। আর তাদেরকে সেখান থেকে অপদস্থ করে বের করে আনবো। আর তারাই হেয় বলে গণ্য হবে।
قَالَ يٰۤاَيُّهَا الْمَلَؤُا اَيُّكُمْ يَاْتِيْنِيْ بِعَرْشِهَا قَبْلَ اَنْ يَّاْتُوْنِيْ مُسْلِمِيْنَ
সুলাইমান বলে,হে আমার সভাসদবৃন্দ। তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি ? যে তার সিংহাসন আমার কাছে নিয়ে আসবে, তারা আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম) হয়ে আমার কাছে আসার পূর্বেই।
قَالَ عِفْرِيْتٌ مِّنَ الْجِنِّ اَنَا اٰتِيْكَ بِهٖ قَبْلَ اَنْ تَقُوْمَ مِنْ مَّقَامِكَ ۚ وَاِنِّيْ عَلَيْهِ لَقَوِيٌّ اَمِيْنٌ
জিনদের (নেতাদের) মধ্য হ'তে এক দৈত্য বলে, আমিই তা আপনার কাছে নিয়ে আসবো, আপনি আপনার স্থান হ'তে উঠে দাঁড়ানোর পূর্বেই। আর নিশ্চয়ই আমি এর উপর খুব শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত।
قَالَ الَّذِيْ عِنْدَهٗ عِلْمٌ مِّنَ الْكِتٰبِ اَنَا اٰتِيْكَ بِهٖ قَبْلَ اَنْ يَّرْتَدَّ اِلَيْكَ طَرْفُكَ ؕ فَلَمَّا رَاٰهُ مُسْتَقِرًّا عِنْدَهٗ قَالَ هٰذَا مِنْ فَضْلِ رَبِّيْ ۟ۖ لِيَبْلُوَنِيْۤ ءَاَشْكُرُ اَمْ اَكْفُرُ ؕ وَمَنْ شَكَرَ فَاِنَّمَا يَشْكُرُ لِنَفْسِهٖ ۚ وَمَنْ كَفَرَ فَاِنَّ رَبِّيْ غَنِيٌّ كَرِيْمٌ
আর একজন বলে, যার কাছে আল কিতাবের জ্ঞান ছিলো, আমি এনে দিচ্ছি এই এখনই আপনার দিকে নিজের দৃষ্টি ফিরে আসার আগেই। অতঃপর যখন দেখতে পায় যে, সে জিনিস তো তার সামনেই রয়েছে। তখন সে বলে, এটা তো আমার প্রতিপালকের অনুগ্রহ থেকে। আমাকে পরীক্ষা করার জন্যই, আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি, না অকৃতজ্ঞ হই। আসলে যে কেউ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, সে তা নিজের জন্যই করে। আর যদি কেউ অকৃতজ্ঞ হয়, তবে নিশ্চয় আমার প্রতিপালক সম্মানিত, অভাবমুক্ত।
قَالَ نَكِّرُوْا لَهَا عَرْشَهَا نَنْظُرْ اَتَهْتَدِيْۤ اَمْ تَكُوْنُ مِنَ الَّذِيْنَ لَا يَهْتَدُوْنَ
সে বলে, তার সিংহাসন তার সামনে অজ্ঞাতসারে রেখে দাও। আমি দেখবো সে সঠিক ব্যাপার বুঝতে পারে কিনা, না সেও তাদের মতোই যারা সঠিক পথ পায়না।
فَلَمَّا جَآءَتْ قِيْلَ اَهٰكَذَا عَرْشُكِ ؕ قَالَتْ كَاَنَّهٗ هُوَ ۚ وَاُوْتِيْنَا الْعِلْمَ مِنْ قَبْلِهَا وَكُنَّا مُسْلِمِيْنَ
অতঃপর সে যখন উপস্থিত হয়। তখন একজন তাকে বলে, তোমার সিংহাসনটা কি এরূপই ? সে বলে, এ যেন সেটাই। আমার কাছে তো এর পূর্বেই জ্ঞান এসেছে। আমি তো আত্মসমর্পণ করছি।
وَصَدَّهَا مَا كَانَتْ تَّعْبُدُ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ ؕ اِنَّهَا كَانَتْ مِنْ قَوْمٍ كٰفِرِيْنَ
আর তাকে সে সব জিনিস থেকে নিষেধ করা হয়েছে। আল্লাহকে বাদ দিয়ে সে যা কিছু পূজা করতো। কারণ সেও তো কাফির সম্প্রদায়ের লোক ছিলো।
قِيْلَ لَهَا ادْخُلِي الصَّرْحَ ۚ فَلَمَّا رَاَتْهُ حَسِبَتْهُ لُجَّةً وَّكَشَفَتْ عَنْ سَاقَيْهَا ؕ قَالَ اِنَّهٗ صَرْحٌ مُّمَرَّدٌ مِّنْ قَوَارِيْرَ ؕ قَالَتْ رَبِّ اِنِّيْ ظَلَمْتُ نَفْسِيْ وَاَسْلَمْتُ مَعَ سُلَيْمٰنَ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ
তাকে বলা হল, তুমি প্রাসাদে প্রবেশ কর। অতঃপর সে যখন ভিতরে এসে দেখল, তখন যেন মনে হল, এখানে তো পানীর হাউজ রয়েছে। তাই সে নিজের দুই পায়ের গোড়ালী অনাবৃত্ত করতে লাগে। সুলাইমান বলে, নিশ্চয় এটি স্বচ্ছ কাঁচ দিয়ে নির্মিত একটি প্রাসাদ'। সে বলে হে আমার প্রতিপালক ! নিশ্চয়ই আমি আমার নিজের উপর অন্যায় করেছি। আর আমি সুলাইমানের সাথে বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করছি
وَلَقَدْ اَرْسَلْنَاۤ اِلٰي ثَمُوْدَ اَخَاهُمْ صٰلِحًا اَنِ اعْبُدُوا اللّٰهَ فَاِذَا هُمْ فَرِيْقٰنِ يَخْتَصِمُوْنَ
আর নিশ্চয়ই আমি সামুদের প্রতি তাদের ভাই সালেহকে (এ বার্তাসহ) প্রেরণ করেছি যে, তোমরা আল্লাহর দাসত্ব করো। অতঃপর তারা তখন দু'দলে বিভক্ত হয়ে তর্কে মেতে উঠে।
قَالَ يٰقَوْمِ لِمَ تَسْتَعْجِلُوْنَ بِالسَّيِّئَةِ قَبْلَ الْحَسَنَةِ ۚ لَوْلَا تَسْتَغْفِرُوْنَ اللّٰهَ لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُوْنَ
সে বলে হে আমার জাতি ! কেন তোমরা কল্যাণের পূর্বে অকল্যাণকে তাড়াতাড়ি করতে চাচ্ছো? কেনো তোমরা আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাচ্ছো না? হয়তো তোমাদের প্রতি করুণা করা হবে।
قَالُوا اطَّيَّرْنَا بِكَ وَبِمَنْ مَّعَكَ ؕ قَالَ طٰٓئِرُكُمْ عِنْدَ اللّٰهِ بَلْ اَنْتُمْ قَوْمٌ تُفْتَنُوْنَ
তারা বলে, আমরা তোমাকে ও তোমার সাথে যারা আছে তাদেরকে অমঙ্গল ভাবছি। সে বলে, তোমাদের শুভাশুভ আল্লাহর নিকট। বরং তোমরা এমন লোক যাদেরকে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
وَكَانَ فِي الْمَدِيْنَةِ تِسْعَةُ رَهْطٍ يُّفْسِدُوْنَ فِي الْاَرْضِ وَلَا يُصْلِحُوْنَ
আর মদিনা-শহরের নয়টি নেতা লোক এমন, যারা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়ায়। উন্নত সংশোধনের জন্যে কিছুই করে না।
قَالُوْا تَقَاسَمُوْا بِاللّٰهِ لَنُبَيِّتَنَّهٗ وَاَهْلَهٗ ثُمَّ لَنَقُوْلَنَّ لِوَلِيِّهٖ مَا شَهِدْنَا مَهْلِكَ اَهْلِهٖ وَاِنَّا لَصٰدِقُوْنَ
তারা বলে, তোমরা পরস্পরে আল্লাহর নামে শপথ করো, আমরা রাতের বেলা তার উপরে আর তার পরিবার পরিজনের উপরে হামলা চালাবো। এরপর তার আত্মীয়-বন্ধুদেরকে আমরা বলবো, আমরা দেখিনি যখন তার বাড়ীঘর ধ্বংস করা হচ্ছিলো। তখন আমরা কিছুই যে দেখিনি। আর নিশ্চয়ই আমরা এব্যাপারে সত্যবাদী।
وَمَكَرُوْا مَكْرًا وَّمَكَرْنَا مَكْرًا وَّهُمْ لَا يَشْعُرُوْنَ
তারা এক ভয়ানক ষড়যন্ত্র পাকায়, আমিও উত্তম কৌশল অবলম্বন করি। অথচ তারা কিছুই টের পায় না।
فَانْظُرْ كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ مَكْرِهِمْ ۙ اَنَّا دَمَّرْنٰهُمْ وَقَوْمَهُمْ اَجْمَعِيْنَ
অতঃপর লক্ষ্য কর, তাদের ষড়যন্ত্রের পরিণাম কি হয়। নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে ও তাদের জাতির সবাইকে ধ্বংস করে দিবো।
فَتِلْكَ بُيُوْتُهُمْ خَاوِيَةًۢ بِمَا ظَلَمُوْا ؕ اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَةً لِّقَوْمٍ يَّعْلَمُوْنَ
তাই ঐসব তাদের ঘরবাড়ি, যা তাদের সীমালংঘন করার জন্যে শূণ্য হয়ে আছে। নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে এমন সম্প্রদায়ের জন্যে যারা জ্ঞান রাখে।
وَاَنْجَيْنَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَكَانُوْا يَتَّقُوْنَ
আর যারা ঈমান আনবে, আর (রাসুলের অবাধ্যতা হতে) বিরত থাকবে, তাদেরকেই আমি রক্ষা করবো।
وَلُوْطًا اِذْ قَالَ لِقَوْمِهٖۤ اَتَاْتُوْنَ الْفَاحِشَةَ وَاَنْتُمْ تُبْصِرُوْنَ
আর লূত তার জাতির উদ্দেশ্যে যখন বলে, তোমরা অশ্লীল কাজ কর্ম করে যাচ্ছো, যখন তা তোমরা সবাই ভালো ভাবে প্রত্যক্ষও করছো।
اَئِنَّكُمْ لَتَاْتُوْنَ الرِّجَالَ شَهْوَةً مِّنْ دُوْنِ النِّسَآءِ ؕ بَلْ اَنْتُمْ قَوْمٌ تَجْهَلُوْنَ
তোমরা কি কামাতুর অবস্থায়, নিজেদের স্ত্রীদেরকে বাদ দিয়ে পুরুষদের পিছনেই ধাওয়া করে যাচ্ছো ? আসলে তোমরা এমন সম্প্রদায় যারা মূর্খতা করছো।
فَمَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهٖۤ اِلَّاۤ اَنْ قَالُوْۤا اَخْرِجُوْۤا اٰلَ لُوْطٍ مِّنْ قَرْيَتِكُمْ ۚ اِنَّهُمْ اُنَاسٌ يَّتَطَهَّرُوْنَ
অতঃপর তার জাতির কাছে এছাড়া আর কোনো জবাব থাকে না। তারা শুধু এ কথাই বলে বেড়ায়, তোমরা নিজেদের এলাকা থেকে লূত ও তার পরিবারকে বের করে দাও। নিশ্চয় তারা এমন লোক যারা পবিত্র থাকতে চায়।
فَاَنْجَيْنٰهُ وَاَهْلَهٗۤ اِلَّا امْرَاَتَهٗ ۫ قَدَّرْنٰهَا مِنَ الْغٰبِرِيْنَ
অতঃপর আমিই তাকে, আর তার পরিবারের লোকজনকে রক্ষা করি। কিন্তু একমাত্র তার স্ত্রী ব্যতীত। আমি সাব্যস্ত করেছি যে, সে তো পিছে পড়ে থাকাদের অন্তর্ভুক্ত।
وَاَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ مَّطَرًا ۚ فَسَآءَ مَطَرُ الْمُنْذَرِيْنَ
আর আমি তাদের উপরে অত্যন্ত কঠিন বর্ষণের ব্যবস্থা করেছি। তা কতো নিকৃষ্ট বর্ষণ, সেই লোকগুলোর উপরে, যাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিলো।
قُلِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ وَسَلٰمٌ عَلٰي عِبَادِهِ الَّذِيْنَ اصْطَفٰي ؕ آٰللّٰهُ خَيْرٌ اَمَّا يُشْرِكُوْنَ ؕ
তুমি বলো, সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্যেই। আর শান্তি তাঁর দাসদের উপরে, যাদেরকে তিনি মনোনীত করেছেন। (তাদেরকে জিজ্ঞেস কর) আল্লাহ কি উত্তম, না যাদেরকে তারা শরীক করছে ?
اَمَّنْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ وَاَنْزَلَ لَكُمْ مِّنَ السَّمَآءِ مَآءً ۚ فَاَنْۢبَتْنَا بِهٖ حَدَآئِقَ ذَاتَ بَهْجَةٍ ۚ مَا كَانَ لَكُمْ اَنْ تُنْۢبِتُوْا شَجَرَهَا ؕ ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللّٰهِ ؕ بَلْ هُمْ قَوْمٌ يَّعْدِلُوْنَ ؕ
কে এই আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন ? আর তোমাদের জন্যে আকাশ হ'তে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর তা দ্বারা আমি শোভা মন্ডিত বাগানসমূহ উৎপন্ন করি। তোমাদের সাধ্য আছে ? যে তার একটি গাছ-পালা উৎপন্ন করতে পারবে। তবে কি (একাজে) আল্লাহর সাথে আর কোনো বিধানদাতা আছে ? বরং তারা এমন সম্প্রদায়, যারা সত্যবিচ্যুত হচ্ছে।
اَمَّنْ جَعَلَ الْاَرْضَ قَرَارًا وَّجَعَلَ خِلٰلَهَاۤ اَنْهٰرًا وَّجَعَلَ لَهَا رَوَاسِيَ وَجَعَلَ بَيْنَ الْبَحْرَيْنِ حَاجِزًا ؕ ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللّٰهِ ؕ بَلْ اَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ ؕ
কে এই পৃথিবীকে বসবাসের উপযুক্ত করে দিয়েছেন ? আর তার মাঝে নদীসমূহ প্রবাহিত করেছেন ? আর কেই বা তাতে সুদৃঢ় পর্বতসমূহ স্থাপন করেছেন ? আর কেই বা দুই সাগরের মাঝে আড়াল সৃষ্টি করে রেখেছেন ? এখন বলো, এ কাজে আল্লাহর সাথে আর কোনো আইনদাতা আছে কি ? বরং তাদের অধিকাংশরাই কিছুই জানেনা।
اَمَّنْ يُّجِيْبُ الْمُضْطَرَّ اِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوْٓءَ وَيَجْعَلُكُمْ خُلَفَآءَ الْاَرْضِ ؕ ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللّٰهِ ؕ قَلِيْلًا مَّا تَذَكَّرُوْنَ ؕ
অসহায়-নিরুপায়ের আহ্বানে সাড়া কে দেয় ? যখন তাকে সে ডাকে, আর কে মন্দকষ্ট দুর করে দেন ? আর কেই বা তোমাদেরকে এই পৃথিবীতে প্রতিনিধিরূপে প্রতিষ্ঠিত করেন ? এখন বলো, এ কাজে আল্লাহর সাথে আরও কোনো আইনদাতা আছে কি ? তোমরা তো খুব কমই উপদেশ গ্রহণ করে থাকো।
اَمَّنْ يَّهْدِيْكُمْ فِيْ ظُلُمٰتِ الْبَرِّ وَالْبَحْرِ وَمَنْ يُّرْسِلُ الرِّيٰحَ بُشْرًۢا بَيْنَ يَدَيْ رَحْمَتِهٖ ؕ ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللّٰهِ ؕ تَعٰلَي اللّٰهُ عَمَّا يُشْرِكُوْنَ ؕ
কে তোমাদেরকে স্থলের ও সমুদ্রের অন্ধকারের মধ্যে পথ দেখিয়ে দেন, আর কেই বা তাঁর অনুগ্রহ আসার পূর্বে সু-সংবাদ স্বরুপ বাতাসকে পাঠিয়ে থাকেন ? এখন বলো, এ কাজে আল্লাহর সাথে অন্য কোনো আইনদাতা আছে কি ? আল্লাহ তাদের হ'তে অনেক উর্ধ্বে, তারা যাদেরকে শরীক করে।
اَمَّنْ يَّبْدَؤُا الْخَلْقَ ثُمَّ يُعِيْدُهٗ وَمَنْ يَّرْزُقُكُمْ مِّنَ السَّمَآءِ وَالْاَرْضِ ؕ ءَاِلٰهٌ مَّعَ اللّٰهِ ؕ قُلْ هَاتُوْا بُرْهَانَكُمْ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِيْنَ
কেই বা সৃষ্টির সূচনা করে থাকেন ? এরপর কেই বা তার পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন ? আর কেই বা তোমাদেরকে আকাশ ও পৃথিবী হ'তে জীবিকা দান করে থাকেন ? এখন বলো, এ কাজে আল্লাহর সাথে অন্য কোনো আইনদাতা আছে কি ? তুমি বলো, তোমরা তোমাদের প্রমাণ উপস্থিত করো ! যদি তোমরা সত্যবাদী হয়েই থাকো।
قُلْ لَّا يَعْلَمُ مَنْ فِي السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ الْغَيْبَ اِلَّا اللّٰهُ ؕ وَمَا يَشْعُرُوْنَ اَيَّانَ يُبْعَثُوْنَ
তুমি বলে দাও, আল্লাহ ছাড়া আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যারা রয়েছে তাদের কেউ অদৃশ্যর খবর জানে না। তারা অনুভব করতেও পারে না, কখন তারা উত্থিত হবে ?
بَلِ ادّٰرَكَ عِلْمُهُمْ فِي الْاٰخِرَةِ ۟ بَلْ هُمْ فِيْ شَكٍّ مِّنْهَا ۫۟ بَلْ هُمْ مِّنْهَا عَمُوْنَ
বরং তাদের জ্ঞান-শক্তি পরকাল সম্পর্কে ভাবতে গিয়ে পরিশ্রান্ত হয়ে ভূ-লুন্ঠিত হয়ে আসে। বরং এ নিয়ে তারা সন্দেহের মধ্যেই রয়েছে। আসলে তারা এ ব্যাপারে তো অন্ধের দল।
وَقَالَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْۤا ءَاِذَا كُنَّا تُرٰبًا وَّاٰبَآؤُنَاۤ اَئِنَّا لَمُخْرَجُوْنَ
আর যারা অবিশ্বাসী কাফির, তারাই বলবে, আমরা যখন মাটিতে পরিণত হব, আর আমাদের বাপ, দাদারাও। তারপরেও কি আমাদেরকে বের করা হবে ?
لَقَدْ وُعِدْنَا هٰذَا نَحْنُ وَاٰبَآؤُنَا مِنْ قَبْلُ ۙ اِنْ هٰذَاۤ اِلَّاۤ اَسَاطِيْرُ الْاَوَّلِيْنَ
নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, আর এর পূর্বে আমাদের বাপ দাদাদের কাছেও, এসব পূর্ববর্তী লোকদের উপকথা ছাড়া আর কিছুই নয় !
قُلْ سِيْرُوْا فِي الْاَرْضِ فَانْظُرُوْا كَيْفَ كَانَ عَاقِبَةُ الْمُجْرِمِيْنَ
তুমি বলো ! তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো, অতঃপর লক্ষ্য করো, অপরাধীদের পরিনাম কেমন দাঁড়িয়েছে ?
وَلَا تَحْزَنْ عَلَيْهِمْ وَلَا تَكُنْ فِيْ ضَيْقٍ مِّمَّا يَمْكُرُوْنَ
তাদের সম্পর্কে তুমি দুঃখ করবে না, আর তারা যে সব ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে তাতে তুমি ক্ষুন্ন হবে না।
وَيَقُوْلُوْنَ مَتٰي هٰذَا الْوَعْدُ اِنْ كُنْتُمْ صٰدِقِيْنَ
তারা বলবে, কখন এই প্রতিশ্রুতি কার্যকর হবে ? যদি তোমরা সত্যবাদী হয়েই থাকো।
قُلْ عَسٰۤي اَنْ يَّكُوْنَ رَدِفَ لَكُمْ بَعْضُ الَّذِيْ تَسْتَعْجِلُوْنَ
তুমি বলে দাও ! সম্ভবতঃ তা তোমাদের পিছনে পৌঁছে গেছে, তোমরা যা নিয়ে এতো ব্যস্ত হচ্ছো, তার কিছুটা।
وَاِنَّ رَبَّكَ لَذُوْ فَضْلٍ عَلَي النَّاسِ وَلٰكِنَّ اَكْثَرَهُمْ لَا يَشْكُرُوْنَ
আর অবশ্যই তোমার প্রতিপালকই মানুষের উপর অনুগ্রহ করে থাকেন। কিন্তু মানুষের মধ্যে অধিকাংশরা তো কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।
وَاِنَّ رَبَّكَ لَيَعْلَمُ مَا تُكِنُّ صُدُوْرُهُمْ وَمَا يُعْلِنُوْنَ
তোমার প্রতিপালক অবশ্যই জানেন, তাদের অন্তরের মধ্যে যা গোপন করে রাখছে। আর যা কিছু তারা প্রকাশ করে যাচ্ছে।
وَمَا مِنْ غَآئِبَةٍ فِي السَّمَآءِ وَالْاَرْضِ اِلَّا فِيْ كِتٰبٍ مُّبِيْنٍ
আকাশ ও পৃথিবীর কোথাও এমন কোনো অদৃশ্য বিষয় নেই, যার উল্লেখ সুস্পষ্ট একটি কিতাবের মধ্যে নেই।
اِنَّ هٰذَا الْقُرْاٰنَ يَقُصُّ عَلٰي بَنِيْۤ اِسْرَآءِيْلَ اَكْثَرَ الَّذِيْ هُمْ فِيْهِ يَخْتَلِفُوْنَ
আর নিশ্চয় এই কুরআন, ইসরাঈলের সন্তানদের কাছে বর্ণনা করছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশরাই কুরআনের মধ্যে মতবিরোধ করে যাচ্ছে।
وَاِنَّهٗ لَهُدًي وَّرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِيْنَ
নিশ্চয়ই তা হচ্ছে মুমিনদের জন্যে পথনির্দেশ ও দয়া।
اِنَّ رَبَّكَ يَقْضِيْ بَيْنَهُمْ بِحُكْمِهٖ ۚ وَهُوَ الْعَزِيْزُ الْعَلِيْمُ ۙۚ
নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী তাদের মাঝে ফায়সালা করবেন। আর তিনি হলেন মহা সম্মানী ও মহাজ্ঞানী।
فَتَوَكَّلْ عَلَي اللّٰهِ ؕ اِنَّكَ عَلَي الْحَقِّ الْمُبِيْنِ
সুতরাং তুমি আল্লাহর উপরে নির্ভর করো। নিশ্চয়ই তুমি সুস্পষ্ট সত্যের উপরেই রয়েছো।
اِنَّكَ لَا تُسْمِعُ الْمَوْتٰي وَلَا تُسْمِعُ الصُّمَّ الدُّعَآءَ اِذَا وَلَّوْا مُدْبِرِيْنَ
তুমি তো আর মৃতদেরকে শুনাতে পারবে না। আর বধিরদেরকেও তোমার ডাক শুনাতে পারবে না, যখন তারা পিঠ প্রদর্শন করে ফিরে যায়।
وَمَاۤ اَنْتَ بِهٰدِي الْعُمْيِ عَنْ ضَلٰلَتِهِمْ ؕ اِنْ تُسْمِعُ اِلَّا مَنْ يُّؤْمِنُ بِاٰيٰتِنَا فَهُمْ مُّسْلِمُوْنَ
আর তুমি অন্ধদেরকে পথ দেখাতে পারবে না, তাদের পথভ্রষ্টতা সম্পর্কে। তুমি তো কেবল তাদেরই শুনাতে পারবে, যারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে। সুতরাং তারাই তো আত্মসমর্পণকারী-মুসলিমুন।
وَاِذَا وَقَعَ الْقَوْلُ عَلَيْهِمْ اَخْرَجْنَا لَهُمْ دَآبَّةً مِّنَ الْاَرْضِ تُكَلِّمُهُمْ ۙ اَنَّ النَّاسَ كَانُوْا بِاٰيٰتِنَا لَا يُوْقِنُوْنَ
আর যখন আমার কথা মানুষের সামনে সত্য হয়ে ধরা দিবে, তখন কি তাদের সামনে এমন কোনো প্রাণী এই পৃথিবী থেকে বের করে দেখাবো? যা তাদের সাথে কথা বলবে? বরং মানুষ তো আমার আয়াতগুলোর প্রতি দৃঢ় বিশ্বাসী নয়।
وَيَوْمَ نَحْشُرُ مِنْ كُلِّ اُمَّةٍ فَوْجًا مِّمَّنْ يُّكَذِّبُ بِاٰيٰتِنَا فَهُمْ يُوْزَعُوْنَ
আর যেদিন আমি প্রত্যেকটি সম্প্রদায় হ'তে এক একটি দলকে ঘিরে এনে সমবেত করবো, তাদের মধ্য হ'তে যারা আমার আয়াতগুলোর প্রতি মিথ্যারোপ করতো। অতঃপর তাদেরকে দলবদ্ধ করা হবে।
حَتّٰۤي اِذَا جَآءُوْ قَالَ اَكَذَّبْتُمْ بِاٰيٰتِيْ وَلَمْ تُحِيْطُوْا بِهَا عِلْمًا اَمَّاذَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ
শেষ পর্যন্ত যখন তারা (সব দল) এসে যাবে, তখন তাদেরকে বলা হবে, তোমরা কেনো আমার আয়াতগুলোকে মিথ্যা জেনেছে? অথচ তোমরা তো সে বিষয়ে কোনো জ্ঞানই আয়ত্ব করোনি। এখন বলো, তোমরা কি কি কাজ করেছো ?
وَوَقَعَ الْقَوْلُ عَلَيْهِمْ بِمَا ظَلَمُوْا فَهُمْ لَا يَنْطِقُوْنَ
তাদের উপরে বিশেষ বাণীর (অভিযোগ) সত্যই প্রমাণিত হবে। কারণ তারা সীমালঙ্ঘন করেছে। ফলে তারা কথা বলতে পারবে না।
اَلَمْ يَرَوْا اَنَّا جَعَلْنَا الَّيْلَ لِيَسْكُنُوْا فِيْهِ وَالنَّهَارَ مُبْصِرًا ؕ اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيٰتٍ لِّقَوْمٍ يُّؤْمِنُوْنَ
তারা কি দেখে না ? যে, আমি রাতকে বানিয়েছি, যেনো তারা তার মধ্যে প্রশান্তি লাভ করে। আর দিনকে করেছি দৃশ্যমান। নিশ্চয়ই এর মধ্যে অনেক নিদর্শনাবলী রয়েছে এমন সম্প্রদায়ের জন্যে যারা ঈমান আনে।
وَيَوْمَ يُنْفَخُ فِي الصُّوْرِ فَفَزِعَ مَنْ فِي السَّمٰوٰتِ وَمَنْ فِي الْاَرْضِ اِلَّا مَنْ شَآءَ اللّٰهُ ؕ وَكُلٌّ اَتَوْهُ دٰخِرِيْنَ
আর যেদিন পূনরায় আকৃতি দেওয়া হবে, সেদিন আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে, সবই যে ভীত-কম্পিত হয়ে পড়বে। তবে আল্লাহর চাহিদার উপযুক্তদের ছাড়া। আর সবাই তাঁর কাছে অত্যান্ত হীন অবস্থায় উপস্থিত হবে।
وَتَرَي الْجِبَالَ تَحْسَبُهَا جَامِدَةً وَّهِيَ تَمُرُّ مَرَّ السَّحَابِ ؕ صُنْعَ اللّٰهِ الَّذِيْۤ اَتْقَنَ كُلَّ شَيْءٍ ؕ اِنَّهٗ خَبِيْرٌۢ بِمَا تَفْعَلُوْنَ
আর পর্বতমালার অবস্থা দেখে তুমি মনে করবে, এগুলো বোধ হয় জমাট বাঁধা অবস্থায় থাকবে, কিন্তু তা ভাসমান মেঘমালার মতোই উড়ন্ত থাকবে। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, শিল্প, কলাকৌশল তা তো মহান আল্লাহরই, যিনি প্রত্যেকটি জিনিসকে সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছেন। নিশ্চয়ই তিনি ঐ সম্পর্কে খুব খবর রাখছেন, যা কিছু তোমরা করে যাচ্ছো।
مَنْ جَآءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهٗ خَيْرٌ مِّنْهَا ۚ وَهُمْ مِّنْ فَزَعٍ يَّوْمَئِذٍ اٰمِنُوْنَ
যে কেউ ভালো কাজ নিয়ে আসবে, তখন তার জন্যে তার চেয়েও অনেক উত্তম বস্তু থাকবে। আর তারাই সেদিনকার ভীতিকর অবস্থা হ'তে নিরাপদে থাকবে।
وَمَنْ جَآءَ بِالسَّيِّئَةِ فَكُبَّتْ وُجُوْهُهُمْ فِي النَّارِ ؕ هَلْ تُجْزَوْنَ اِلَّا مَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ
আর যে কেউ মন্দ-অন্যায় কাজ নিয়ে আসবে, উপুড় করে তাদের চেহারা আগুনের মধ্যে ফেলে দেওয়া হবে। (বলা হবে) তোমরা যা কিছু কামাই করেছো, তাই তো তোমরা পাবে।
اِنَّمَاۤ اُمِرْتُ اَنْ اَعْبُدَ رَبَّ هٰذِهِ الْبَلْدَةِ الَّذِيْ حَرَّمَهَا وَلَهٗ كُلُّ شَيْءٍ ۫ وَّاُمِرْتُ اَنْ اَكُوْنَ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ ۙ
আমাকে তো কেবল নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেনো আমি এই শহরের প্রতিপালকের দাসত্ব করতে থাকি, যাকে তিনি সম্মানিত করেছেন। আর প্রত্যেক বস্তু তো তাঁরই জন্যে। আর আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যেনো আমি আত্মসমর্পণকারী-মুসলিমদের অন্তর্ভূক্ত হই।
وَاَنْ اَتْلُوَا الْقُرْاٰنَ ۚ فَمَنِ اهْتَدٰي فَاِنَّمَا يَهْتَدِيْ لِنَفْسِهٖ ۚ وَمَنْ ضَلَّ فَقُلْ اِنَّمَاۤ اَنَا مِنَ الْمُنْذِرِيْنَ
আর এও যে, এই কোরআন আমি তেলাওত করতে থাকবো। অতএব যে কেউ সঠিক পথ অবলম্বন করবে, সে তো শুধু তার নিজের জন্যই সঠিক পথ বেছে নিবে। আর যদি কেউ (কোরআন বহির্ভূত) ভ্রান্তপথ অবলম্বন করে, তাহলে তুমি বলে দাও, আমি মাত্র একজন সতর্ককারী।
وَقُلِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ سَيُرِيْكُمْ اٰيٰتِهٖ فَتَعْرِفُوْنَهَا ؕ وَمَا رَبُّكَ بِغَافِلٍ عَمَّا تَعْمَلُوْنَ
আরও বলো, সকল প্রশংসা শুধু আল্লাহরই জন্যে। শীঘ্রই আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শনাবলী দেখাবেন। আর তোমরা তা চিনতেও পারবে। তোমরা যা কিছু করছো, তোমাদের প্রতিপালক সে সম্পর্কে অমনোযোগী নন।