সূরা : সুরা আয যুমার
تَنْزِيْلُ الْكِتٰبِ مِنَ اللّٰهِ الْعَزِيْزِ الْحَكِيْمِ
মহা-সম্মানী ও মহা-বৈজ্ঞানিক আল্লাহর পক্ষ থেকে আল কিতাব অবতীর্ণ করা হয়েছে।
تَنْزِيْلُ الْكِتٰبِ مِنَ اللّٰهِ الْعَزِيْزِ الْحَكِيْمِ
মহা-সম্মানী ও মহা-বৈজ্ঞানিক আল্লাহর পক্ষ থেকে আল কিতাব অবতীর্ণ করা হয়েছে।
اِنَّاۤ اَنْزَلْنَاۤ اِلَيْكَ الْكِتٰبَ بِالْحَقِّ فَاعْبُدِ اللّٰهَ مُخْلِصًا لَّهُ الدِّيْنَ ؕ
নিশ্চয় আমি তোমার কাছে এই আল কিতাবকে সত্যসহকারে অবতীর্ণ করেছি। সুতরাং দাসত্ব করো আল্লাহর। একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর দেওয়া জীবন ব্যবস্থা অনুসারে।
اَلَا لِلّٰهِ الدِّيْنُ الْخَالِصُ ؕ وَالَّذِيْنَ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِهٖۤ اَوْلِيَآءَ ۘ مَا نَعْبُدُهُمْ اِلَّا لِيُقَرِّبُوْنَاۤ اِلَي اللّٰهِ زُلْفٰي ؕ اِنَّ اللّٰهَ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ فِيْ مَا هُمْ فِيْهِ يَخْتَلِفُوْنَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا يَهْدِيْ مَنْ هُوَ كٰذِبٌ كَفَّارٌ
জেনে রাখবে, একান্ত নির্ভেজাল ফায়সালা শুধু আল্লাহর জন্যেই শোভা পায়। আর যারা তাঁকে বাদ দিয়ে অন্যদেরকে আউলিয়ারূপে গ্রহণ করবে, তারা বলবে, আমরা তো আর তাদের দাসত্ব করছি না, তবে কি তারা আমাদেরকে আল্লাহর (কাছে সুপারিশ করে) নিকটবর্তী করে দিবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদের মাঝে ফায়সালা করে দিবেন, যা নিয়ে তারা বিরোধে লিপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে সঠিক পথ দেখান না, যে মিথ্যাবাদী কট্টর কাফির।
لَوْ اَرَادَ اللّٰهُ اَنْ يَّتَّخِذَ وَلَدًا لَّاصْطَفٰي مِمَّا يَخْلُقُ مَا يَشَآءُ ۙ سُبْحٰنَهٗ ؕ هُوَ اللّٰهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ
আল্লাহ যদি কোনো পুত্র সন্তান গ্রহণ করতে চাইতেন, তাহলে তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তা থেকে যাকে ইচ্ছা বেছে নিতেন; তিনি পবিত্র মহান। তিনিই আল্লাহ, তিনি এক, প্রবল পরাক্রমশালী।
خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ بِالْحَقِّ ۚ يُكَوِّرُ الَّيْلَ عَلَي النَّهَارِ وَيُكَوِّرُ النَّهَارَ عَلَي الَّيْلِ وَسَخَّرَ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ ؕ كُلٌّ يَّجْرِيْ لِاَجَلٍ مُّسَمًّي ؕ اَلَا هُوَ الْعَزِيْزُ الْغَفَّارُ
সুপরিকল্পিতভাবে আকাশ ও পৃথিবীকে তিনি সৃষ্টি করেছেন। এছাড়া রাতকে দিনের দ্বারা আচ্ছাদিত করেন, আর দিনকে রাতের দ্বারা আচ্ছাদিত করেন। সূর্য ও চন্দ্রকে কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন। প্রত্যেকেই নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত গতিশীল রয়েছে। তোমরা জেনে রেখো, তিনি হলেন মহাসম্মানী ও পরম ক্ষমাশীল।
خَلَقَكُمْ مِّنْ نَّفْسٍ وَّاحِدَةٍ ثُمَّ جَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَاَنْزَلَ لَكُمْ مِّنَ الْاَنْعَامِ ثَمٰنِيَةَ اَزْوَاجٍ ؕ يَخْلُقُكُمْ فِيْ بُطُوْنِ اُمَّهٰتِكُمْ خَلْقًا مِّنْۢ بَعْدِ خَلْقٍ فِيْ ظُلُمٰتٍ ثَلٰثٍ ؕ ذٰلِكُمُ اللّٰهُ رَبُّكُمْ لَهُ الْمُلْكُ ؕ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۚ فَاَنّٰي تُصْرَفُوْنَ
তিনি তোমাদেরকে একটি মাত্র নফস (কোষ) থেকে সৃষ্টি করেছেন। এরপর তার থেকে তার জোড়া সৃষ্টি করেছেন। আর তোমাদের জন্যে দিয়েছেন গবাদী পশুদের মধ্য হতে নর-মাদী আট জোড়া। তিনি তোমাদেরকে তোমাদের মায়েদের পেটের মধ্যে পর্যায়ক্রমে তিনটি অন্ধকার অবস্থা অতিক্রম করিয়ে তোমাদের সৃষ্টি সম্পন্ন করেন। এই তো হচ্ছেন তোমাদের সেই আল্লাহ, তোমাদের প্রতিপালকের জন্যেই তো সার্বভৌমত্বের কর্তৃত্ব। তিনি ব্যতীত কোনো সত্যিকারের আইনদাতা নেই। সুতরাং তোমরা কোথায় ফিরে যাচ্ছো ?
اِنْ تَكْفُرُوْا فَاِنَّ اللّٰهَ غَنِيٌّ عَنْكُمْ ۟ وَلَا يَرْضٰي لِعِبَادِهِ الْكُفْرَ ۚ وَاِنْ تَشْكُرُوْا يَرْضَهُ لَكُمْ ؕ وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِّزْرَ اُخْرٰي ؕ ثُمَّ اِلٰي رَبِّكُمْ مَّرْجِعُكُمْ فَيُنَبِّئُكُمْ بِمَا كُنْتُمْ تَعْمَلُوْنَ ؕ اِنَّهٗ عَلِيْمٌۢ بِذَاتِ الصُّدُوْرِ
তোমরা যদি অকৃতজ্ঞ হও, তবে জেনে রাখবে, আল্লাহ তোমাদের থেকে অমুখাপেক্ষী, আর তিনি তাঁর দাসদের অকৃতজ্ঞতাকে পছন্দ করেন না। আর তোমরা যদি কৃতজ্ঞ হও, তাহলে তিনি তা তোমাদের জন্যে পছন্দ করেন। আর কোনো বোঝা বহনকারী অন্যের বোঝা বহন করবে না। এরপর তোমাদের প্রতিপালকের দিকেই তোমাদের প্রত্যাবর্তন হবে। অতঃপর তিনি তোমাদেরকে ঐ সব বিষয়ে জানিয়ে দিবেন, যে সব কাজ তোমরা করেছো। নিশ্চয় তিনি অন্তরসমূহের অবস্থা সম্পর্কে খুব ভালোভাবেই জানেন।
وَاِذَا مَسَّ الْاِنْسَانَ ضُرٌّ دَعَا رَبَّهٗ مُنِيْبًا اِلَيْهِ ثُمَّ اِذَا خَوَّلَهٗ نِعْمَةً مِّنْهُ نَسِيَ مَا كَانَ يَدْعُوْۤا اِلَيْهِ مِنْ قَبْلُ وَجَعَلَ لِلّٰهِ اَنْدَادًا لِّيُضِلَّ عَنْ سَبِيْلِهٖ ؕ قُلْ تَمَتَّعْ بِكُفْرِكَ قَلِيْلًا ۖ اِنَّكَ مِنْ اَصْحٰبِ النَّارِ
আর যখন মানুষকে কোনো দুঃখ দৈন্য স্পর্শ করে , তখন কিন্তু সে তার প্রতিপালককে একাগ্রচিত্তে ডাকতে থাকে। এরপর তিনি যখন তাঁর পক্ষ হ'তে অনুগ্রহ দান করেন, তখন কিন্তু সে একেবারে ভুলে যায় যার জন্যে সে এর পূর্বে তাঁর কাছে একনিষ্ঠভাবে প্রার্থনা করেছিলো। আর আল্লাহর জন্যে সমকক্ষ নির্ধারণ করে , যেনো সে তাঁর পথ (কোরআন) হ'তে বিভ্রান্ত হয়ে যায়। তুমি বলো, তুমি তোমার অকৃতজ্ঞতার স্বাদ সামান্য কিছুকাল উপভোগ করে নাও। নিশ্চয়ই তুমি বিশেষ আগুনের অধিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত।
اَمَّنْ هُوَ قَانِتٌ اٰنَآءَ الَّيْلِ سَاجِدًا وَّقَآئِمًا يَّحْذَرُ الْاٰخِرَةَ وَيَرْجُوْا رَحْمَةَ رَبِّهٖ ؕ قُلْ هَلْ يَسْتَوِي الَّذِيْنَ يَعْلَمُوْنَ وَالَّذِيْنَ لَا يَعْلَمُوْنَ ؕ اِنَّمَا يَتَذَكَّرُ اُولُوا الْاَلْبَابِ
যে ব্যক্তি রাতের বেলায় অনুগত হয়ে পরম আনুগত্য প্রকাশ করে, এবং জাগ্রত অবস্থায় পরকাল সম্পর্কে সন্ত্রস্ত থাকে আর তার প্রতিপালকের অনুগ্রহ কামনা করে। তুমি বলে দাও, তারা কি সমান ? একদল যারা শিক্ষিত জ্ঞানবান, আর যারা কিছুই জানে না মূর্খ। প্রকৃতপক্ষে বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন লোকেরাই শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে।
قُلْ يٰعِبَادِ الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوْا رَبَّكُمْ ؕ لِلَّذِيْنَ اَحْسَنُوْا فِيْ هٰذِهِ الدُّنْيَا حَسَنَةٌ ؕ وَاَرْضُ اللّٰهِ وَاسِعَةٌ ؕ اِنَّمَا يُوَفَّي الصّٰبِرُوْنَ اَجْرَهُمْ بِغَيْرِ حِسَابٍ
তুমি বলে দাও, হে আমার কর্মচারীগণ, তোমরা যারা ঈমান এনেছো ! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর। যারা এই দুনিয়াতে উত্তম কাজ করেছে তাদের জন্যে কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহর পৃথিবী তো খুব প্রশস্ত। মূলতঃ ধৈর্যশীল ব্যাক্তিদেরকেই তাদের পূর্ণ প্রতিফল দেওয়া হবে কোনো হিসাব ব্যতীতই।
قُلْ اِنِّيْۤ اُمِرْتُ اَنْ اَعْبُدَ اللّٰهَ مُخْلِصًا لَّهُ الدِّيْنَ ۙ
তুমি বলে দাও, আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেনো আমি আল্লাহর দাসত্ব এমন নিষ্ঠার সাথে করতে থাকি, যা কেবল মাত্র আল্লাহর জন্যে জীবন ব্যবস্থা হিসেবে সুনির্দিষ্ট থাকে।
وَاُمِرْتُ لِاَنْ اَكُوْنَ اَوَّلَ الْمُسْلِمِيْنَ
আর এই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে, যেনো আমি আত্মসমর্পণকারী-মুসলিমদের মধ্যে সবার প্রথম গণ্য হতে পারি।
قُلْ اِنِّيْۤ اَخَافُ اِنْ عَصَيْتُ رَبِّيْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيْمٍ
তুমি বলে দাও, নিশ্চয়ই আমি ভয় করছি, কঠিন দিনের শাস্তি সম্পর্কে, যদি আমি আমার প্রতিপালকের অবাধ্য হই !
قُلِ اللّٰهَ اَعْبُدُ مُخْلِصًا لَّهٗ دِيْنِيْ ۙ
তুমি বলে দাও, আল্লাহর দাসত্ব যেনো এভাবে করি, যাতে আমার জীবন ব্যবস্থা শুধু তাঁর জন্যে সুনির্দিষ্ট থাকে।
فَاعْبُدُوْا مَا شِئْتُمْ مِّنْ دُوْنِهٖ ؕ قُلْ اِنَّ الْخٰسِرِيْنَ الَّذِيْنَ خَسِرُوْۤا اَنْفُسَهُمْ وَاَهْلِيْهِمْ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ ؕ اَلَا ذٰلِكَ هُوَ الْخُسْرَانُ الْمُبِيْنُ
তাহলে কি তোমরা তাঁকে বাদ দিয়ে তোমাদের নিজেদের খুশীমত দাসত্ব করবে ? তুমি বলো, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্থ হবে, যারা তাদের নিজেদেরকে আর তাদের পরিবারকে কিয়ামতের দিনে ক্ষতিগ্রস্থ করবে। তোমরা জেনে রেখো, এটাই হচ্ছে সেই সুস্পষ্ট ক্ষতি।
لَهُمْ مِّنْ فَوْقِهِمْ ظُلَلٌ مِّنَ النَّارِ وَمِنْ تَحْتِهِمْ ظُلَلٌ ؕ ذٰلِكَ يُخَوِّفُ اللّٰهُ بِهٖ عِبَادَهٗ ؕ يٰعِبَادِ فَاتَّقُوْنِ
তাদের জন্যে উপর দিক হতে আগুনের শিখা আর তাদের নীচের দিক হতেও সেই আগুনের শিখা ঘিরে ধরবে। এটাই সেই জিনিস যা নিয়ে আল্লাহ তাঁর দাসদেরকে ভয় দেখিয়েছেন। হে আমার দাসগণ ! তোমরা আমাকেই ভয় কর।
وَالَّذِيْنَ اجْتَنَبُوا الطَّاغُوْتَ اَنْ يَّعْبُدُوْهَا وَاَنَابُوْۤا اِلَي اللّٰهِ لَهُمُ الْبُشْرٰي ۚ فَبَشِّرْ عِبَادِ ۙ
আর যারা তাগুত (কোরআন বহির্ভূত যাবতীয় বিভ্রান্তিকর উপায় উপকরণ) থেকে দূরে থাকে , যাতে তাগুতের দাসত্ব করা না হয়। আর আল্লাহর দিকে অনুরাগী হবে, তাদের জন্যেই তো বিশেষ সুসংবাদ রয়েছে। সুতরাং আমার দাসদেরকে সুসংবাদ দাও।
الَّذِيْنَ يَسْتَمِعُوْنَ الْقَوْلَ فَيَتَّبِعُوْنَ اَحْسَنَهٗ ؕ اُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ هَدٰىهُمُ اللّٰهُ وَاُولٰٓئِكَ هُمْ اُولُوا الْاَلْبَابِ
যারা মনোযোগ দিয়ে বিশেষ বাণী শোনে, অতঃপর তা অতি উত্তম ভাবে অনুসরণ করে। ঐসব লোক তো তারাই, যাদেরকে আল্লাহ সঠিক পথে পরিচালিত করেছেন। আর ঐসব লোকই বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন।*
*39(18) নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 47(16),7(204),10(42,43)...।
اَفَمَنْ حَقَّ عَلَيْهِ كَلِمَةُ الْعَذَابِ ؕ اَفَاَنْتَ تُنْقِذُ مَنْ فِي النَّارِ ۚ
তবে কি যার উপর শাস্তির বাণী যথার্থ প্রমাণিত হয়েছে, তুমি কি এমন কাউকে উদ্ধার করতে পারবে, যে আগুনের মধ্যে পড়েছে?
لٰكِنِ الَّذِيْنَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ لَهُمْ غُرَفٌ مِّنْ فَوْقِهَا غُرَفٌ مَّبْنِيَّةٌ ۙ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ ؕ وَعْدَ اللّٰهِ ؕ لَا يُخْلِفُ اللّٰهُ الْمِيْعَادَ
কিন্তু যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করেছে, তাদের জন্যে রয়েছে প্রাসাদসমূহ। যার উপরে নির্মিত আছে আরও প্রাসাদ। যার নীচ থেকে ঝর্ণাধারা সমূহ প্রবাহিত হচ্ছে। এটি আল্লাহর প্রতিশ্রুতি। আল্লাহ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না।
اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللّٰهَ اَنْزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً فَسَلَكَهٗ يَنَابِيْعَ فِي الْاَرْضِ ثُمَّ يُخْرِجُ بِهٖ زَرْعًا مُّخْتَلِفًا اَلْوَانُهٗ ثُمَّ يَهِيْجُ فَتَرٰىهُ مُصْفَرًّا ثُمَّ يَجْعَلُهٗ حُطَامًا ؕ اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَذِكْرٰي لِاُولِي الْاَلْبَابِ
তুমি কি দেখ না ! আল্লাহ আকাশ হ'তে পানি বর্ষণ করেন। অতঃপর ভূমির মধ্যে তা স্রোতধারা হিসাবে প্রবাহিত করেন। এরপর তা দিয়ে নানা রঙের ফসল বের করেন। এরপর তা শুকিয়ে যায়, তখন তুমি তা হলুদ রঙের দেখতে পাও। এরপর তিনি তা চূর্ণ বিচূর্ণ করে ফেলেন। নিশ্চয়ই এর মধ্যে জ্ঞান-বুদ্ধি সম্পন্নদের জন্যে উপদেশ নিহিত রয়েছে।
اَفَمَنْ شَرَحَ اللّٰهُ صَدْرَهٗ لِلْاِسْلَامِ فَهُوَ عَلٰي نُوْرٍ مِّنْ رَّبِّهٖ ؕ فَوَيْلٌ لِّلْقٰسِيَةِ قُلُوْبُهُمْ مِّنْ ذِكْرِ اللّٰهِ ؕ اُولٰٓئِكَ فِيْ ضَلٰلٍ مُّبِيْنٍ
আল্লাহ যার হৃদয়কে ইসলামের জন্যে খুলে দিয়েছেন, সে-ই তো তার প্রতিপালকের পক্ষ হ'তে আলোর উপরে রয়েছে। সুতরাং তারা ধ্বংস হোক, যাদের অন্তর আল্লাহর স্মরণের জন্যে সাড়া দেয় না। তারাই তো সেই দল, যারা সুস্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যে রয়েছে।
اَللّٰهُ نَزَّلَ اَحْسَنَ الْحَدِيْثِ كِتٰبًا مُّتَشَابِهًا مَّثَانِيَ ۖ تَقْشَعِرُّ مِنْهُ جُلُوْدُ الَّذِيْنَ يَخْشَوْنَ رَبَّهُمْ ۚ ثُمَّ تَلِيْنُ جُلُوْدُهُمْ وَقُلُوْبُهُمْ اِلٰي ذِكْرِ اللّٰهِ ؕ ذٰلِكَ هُدَي اللّٰهِ يَهْدِيْ بِهٖ مَنْ يَّشَآءُ ؕ وَمَنْ يُّضْلِلِ اللّٰهُ فَمَا لَهٗ مِنْ هَادٍ
اَفَمَنْ يَّتَّقِيْ بِوَجْهِهٖ سُوْٓءَ الْعَذَابِ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ ؕ وَقِيْلَ لِلظّٰلِمِيْنَ ذُوْقُوْا مَا كُنْتُمْ تَكْسِبُوْنَ
তবে কি যে ব্যক্তি কিয়ামতের দিনে তার মুখ দিয়ে কঠিন শাস্তিকে ঠেকাতে চাইবে, এমন সীমালঙ্ঘনকারীদেরকেই তো বলা হবে, এখন তোমরা তার স্বাদ আস্বাদন করো, যা কিছু তোমরা অর্জন করেছিলে।
كَذَّبَ الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَاَتٰىهُمُ الْعَذَابُ مِنْ حَيْثُ لَا يَشْعُرُوْنَ
তাদের পূর্বেও যারা মিথ্যারোপ করেছে, তাদের উপরেও তো শাস্তি এমনভাবে এসে পড়েছে যে তারা কল্পনাও করতে পারেনি।
فَاَذَاقَهُمُ اللّٰهُ الْخِزْيَ فِي الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا ۚ وَلَعَذَابُ الْاٰخِرَةِ اَكْبَرُ ۘ لَوْ كَانُوْا يَعْلَمُوْنَ
ফলে আল্লাহ তাদেরকে পার্থিব জীবনের অপমানের স্বাদ আস্বাদন করাবেন, আর আখিরাতের শাস্তি তো বড়ই কঠিন। হায় ! তারা যদি জানতে পারতো।
وَلَقَدْ ضَرَبْنَا لِلنَّاسِ فِيْ هٰذَا الْقُرْاٰنِ مِنْ كُلِّ مَثَلٍ لَّعَلَّهُمْ يَتَذَكَّرُوْنَ ۚ
এবং নিশ্চয়ই আমি মানুষের জন্যে এই কুরআনের মধ্যে প্রত্যেক রকমের দৃষ্টান্ত পেশ করেছি, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করে।
قُرْاٰنًا عَرَبِيًّا غَيْرَ ذِيْ عِوَجٍ لَّعَلَّهُمْ يَتَّقُوْنَ
সহজে বুঝে আসার (আরবী) কুরআন, যাতে কিছুমাত্র বক্রতা নেই। যাতে তারা সতর্ক হয়।
ضَرَبَ اللّٰهُ مَثَلًا رَّجُلًا فِيْهِ شُرَكَآءُ مُتَشٰكِسُوْنَ وَرَجُلًا سَلَمًا لِّرَجُلٍ ؕ هَلْ يَسْتَوِيٰنِ مَثَلًا ؕ اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ ۚ بَلْ اَكْثَرُهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ
আল্লাহ একটি দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন, এক ব্যক্তি যার আছে অনেক অংশীদার (মুনিব), যারা পরস্পরকে দেখতে পারেনা এবং এক ব্যক্তি সম্পূর্ণরূপে একজনের মালিকানায়, এ দু'জনের দৃষ্টান্তে কি সমান? সব প্রসংশাই আল্লাহর জন্যে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই জানেনা।
اِنَّكَ مَيِّتٌ وَّاِنَّهُمْ مَّيِّتُوْنَ ۫
নিশ্চয় তুমি মৃত্যুবরণ করবে, আর তারাও মৃত্যুবরণ করবে।
ثُمَّ اِنَّكُمْ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ عِنْدَ رَبِّكُمْ تَخْتَصِمُوْنَ
এরপর নিশ্চয়ই তোমরা সবাই কিয়ামতের দিন তোমাদের প্রতিপালকের কাছেই তো সব মামলা-মোকদ্দমা পেশ করবে।
فَمَنْ اَظْلَمُ مِمَّنْ كَذَبَ عَلَي اللّٰهِ وَكَذَّبَ بِالصِّدْقِ اِذْ جَآءَهٗ ؕ اَلَيْسَ فِيْ جَهَنَّمَ مَثْوًي لِّلْكٰفِرِيْنَ
সুতরাং তার চাইতে বড় সীমালঙ্ঘনকারী আর কেই বা হতে পারে, যে আল্লাহর উপরে মিথ্যা বলে আর পরম সত্য যখন তার কাছে পৌঁছায় তখন সেটাকে প্রত্যাখ্যান করে। এমন সব কাফিরদের জন্যে ঠিকানা জাহান্নাম নয় কি ?
وَالَّذِيْ جَآءَ بِالصِّدْقِ وَصَدَّقَ بِهٖۤ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُتَّقُوْنَ
আর যে পরম সত্য নিয়ে এসেছে, আর যারা তা সত্য বলে মেনে নিয়েছে , তারাই তো মহৎ।
لَهُمْ مَّا يَشَآءُوْنَ عِنْدَ رَبِّهِمْ ؕ ذٰلِكَ جَزٰٓوٴُا الْمُحْسِنِيْنَ ۚۖ
তারা যা কিছু পেতে ইচ্ছা করবে, সে সব তাদের প্রতিপালকের নিকটে তাদের জন্যে রয়েছে। এটাই তো হচ্ছে সৎকর্মপরায়ণদের পুরস্কার।
لِيُكَفِّرَ اللّٰهُ عَنْهُمْ اَسْوَاَ الَّذِيْ عَمِلُوْا وَيَجْزِيَهُمْ اَجْرَهُمْ بِاَحْسَنِ الَّذِيْ كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ
যেনো আল্লাহ তাদের থেকে মন্দকাজ সমূহ মোচন করতে পারেন। আর তাদের উত্তম কাজের পুরুস্কার দান করতে পারেন, যা তারা করেছে।
اَلَيْسَ اللّٰهُ بِكَافٍ عَبْدَهٗ ؕ وَيُخَوِّفُوْنَكَ بِالَّذِيْنَ مِنْ دُوْنِهٖ ؕ وَمَنْ يُّضْلِلِ اللّٰهُ فَمَا لَهٗ مِنْ هَادٍ ۚ
আল্লাহ কি তাঁর দাসের জন্যে যথেষ্ট নন ? অথচ তারা তোমাকে তাঁকে ছাড়া অন্যদের ডর-ভয় দেখাচ্ছে। কিন্তু যে ব্যক্তি আল্লাহ থেকে বিভ্রান্ত হয় তার জন্যে কোনো পথপ্রদর্শক নেই !
39(36) নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 65(3)...।
وَمَنْ يَّهْدِ اللّٰهُ فَمَا لَهٗ مِنْ مُّضِلٍّ ؕ اَلَيْسَ اللّٰهُ بِعَزِيْزٍ ذِي انْتِقَامٍ
আর যে আল্লাহর দেওয়া সত্য সঠিক পথ পায়, তাকে কেউ বিভ্রান্ত করতে পারেনা। আল্লাহ কি চুড়ান্ত প্রতিশোধ গ্রহণকারী নন ?
وَلَئِنْ سَاَلْتَهُمْ مَّنْ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ لَيَقُوْلُنَّ اللّٰهُ ؕ قُلْ اَفَرَءَيْتُمْ مَّا تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ اِنْ اَرَادَنِيَ اللّٰهُ بِضُرٍّ هَلْ هُنَّ كٰشِفٰتُ ضُرِّهٖۤ اَوْ اَرَادَنِيْ بِرَحْمَةٍ هَلْ هُنَّ مُمْسِكٰتُ رَحْمَتِهٖ ؕ قُلْ حَسْبِيَ اللّٰهُ ؕ عَلَيْهِ يَتَوَكَّلُ الْمُتَوَكِّلُوْنَ
তুমি যদি তাদের (কাফিরদেরকে) জিজ্ঞাসা করো, আকাশ ও পৃথিবী কে সৃষ্টি করেছেন ? তাহলে অবশ্যই তারা বলবে, আল্লাহ। তুমি বলো, তাহলে তোমরা ভেবে দেখো তো ! আল্লাহ যদি আমাকে কোনো অনিষ্ট করতে চান, তাহলে আল্লাহ বাদে তোমরা যাদেরকে ডাকছো তারা কি আল্লাহর অনিষ্ট হ'তে আমাকে কিছুমাত্র রক্ষা করতে পারবে ? অথবা তিনি যদি আমাকে অনুগ্রহ দান করতে চান, তাহলে তারা কি তাঁর অনুগ্রহ ফিরিয়ে রাখতে পারবে ? তুমি বলো, আমার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট। নির্ভরকারীদের উচিত শুধু আল্লাহর উপরেই নির্ভর করা।
قُلْ يٰقَوْمِ اعْمَلُوْا عَلٰي مَكَانَتِكُمْ اِنِّيْ عَامِلٌ ۚ فَسَوْفَ تَعْلَمُوْنَ ۙ
তুমি বলো, 'হে আমার জাতি ! তোমরা তোমাদের অবস্থার উপর কাজ করে যাও। নিশ্চয়ই আমিও কাজ করে যাচ্ছি। অতঃপর শীঘ্রই তোমরা জানতে পারবে।
مَنْ يَّاْتِيْهِ عَذَابٌ يُّخْزِيْهِ وَيَحِلُّ عَلَيْهِ عَذَابٌ مُّقِيْمٌ
কার কাছে তাকে অপমানিত করার জন্যে শাস্তি এসে পড়বে, আর কার উপরেই বা চিরস্থায়ী শাস্তি আপতিত হবে।
اِنَّاۤ اَنْزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتٰبَ لِلنَّاسِ بِالْحَقِّ ۚ فَمَنِ اهْتَدٰي فَلِنَفْسِهٖ ۚ وَمَنْ ضَلَّ فَاِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا ۚ وَمَاۤ اَنْتَ عَلَيْهِمْ بِوَكِيْلٍ
নিশ্চয়ই আমি তোমার উপর আল কিতাব অবতীর্ণ করেছি, প্রত্যেকটি মানুষের জন্যেই সত্য সহকারে। অতঃপর যে কেউ সত্য সঠিক পথ গ্রহণ করবে, সে তো তার নিজের জন্যেই করবে। আর যে ব্যক্তি পথভ্রষ্ট হয়ে পড়বে, তখন মূলতঃ সে তার নিজের বিরুদ্ধেই পথ চলবে। আর তুমি তাদের উপর উকিল নও।
اَللّٰهُ يَتَوَفَّي الْاَنْفُسَ حِيْنَ مَوْتِهَا وَالَّتِيْ لَمْ تَمُتْ فِيْ مَنَامِهَا ۚ فَيُمْسِكُ الَّتِيْ قَضٰي عَلَيْهَا الْمَوْتَ وَيُرْسِلُ الْاُخْرٰۤي اِلٰۤي اَجَلٍ مُّسَمًّي ؕ اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيٰتٍ لِّقَوْمٍ يَّتَفَكَّرُوْنَ
আল্লাহ বয়স পূর্ণ করে ওফাত দেন, ব্যক্তিত্বকে তার মৃত্যুর সময়। আর যাদের মৃত্যু এখনো আসেনি তাদেরকে ঘুমের মধ্যে। অতঃপর সেই প্রাণটাকে আটক করে রাখেন, যার জন্যে মৃত্যুর ফায়সালা করা হয়েছে। আর বাকী প্রাণগুলোকে পাঠিয়ে দেন নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত। নিশ্চয়ই এর মধ্যে আছে অনেক নিদর্শনাবলী সেই সম্প্রদায়ের জন্যে যারা চিন্তা ভাবনা করে। ।
اَمِ اتَّخَذُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ شُفَعَآءَ ؕ قُلْ اَوَلَوْ كَانُوْا لَا يَمْلِكُوْنَ شَيْئًا وَّلَا يَعْقِلُوْنَ
তারা কি আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যান্যদেরকে সুপারিশকারী রূপে গ্রহণ করেছে ? তুমি বলো, যদি তারা কোনো কিছুরই ক্ষমতা না রাখে, আর কিছু না বুঝেও, তবুও।
قُلْ لِّلّٰهِ الشَّفَاعَةُ جَمِيْعًا ؕ لَهٗ مُلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ؕ ثُمَّ اِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ
তুমি বলে দাও, সব রকমের সুপারিশ তো শুধু আল্লাহর এখতিয়ারেই রয়েছে। আকাশ ও পৃথিবী রাজ্যের আধিপত্য শুধু আল্লাহর। এরপর তাঁরই দিকে তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে।
وَاِذَا ذُكِرَ اللّٰهُ وَحْدَهُ اشْمَاَزَّتْ قُلُوْبُ الَّذِيْنَ لَا يُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ ۚ وَاِذَا ذُكِرَ الَّذِيْنَ مِنْ دُوْنِهٖۤ اِذَا هُمْ يَسْتَبْشِرُوْنَ
আর যখন আল্লাহর একারই কথা উল্লেখ করা হয়, তখন তাদেরই অন্তরসমূহ বিতৃষ্ণায় সংকুচিত হয়ে যায়, যারা পরকালের উপর বিশ্বাস করে না। আর যখন আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যান্যদের (পীর বুজোর্গদের) কথা আলোচনা করা হয়, তখনই তারা আনন্দে উল্লসিত হয়।
قُلِ اللّٰهُمَّ فَاطِرَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ عٰلِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ اَنْتَ تَحْكُمُ بَيْنَ عِبَادِكَ فِيْ مَا كَانُوْا فِيْهِ يَخْتَلِفُوْنَ
তুমি বলো, হে আল্লাহ ! আকাশ ও পৃথিবীর স্রষ্টা! অদৃশ্য ও দৃশ্যের বিষয় সম্পর্কে সর্বজ্ঞ। আপনিই তো আপনার দাসদের মাঝে সে সব বিষয়ের ফায়সালা করে দিবেন, যা নিয়ে দাসগণ তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধে লিপ্ত আছে।
وَلَوْ اَنَّ لِلَّذِيْنَ ظَلَمُوْا مَا فِي الْاَرْضِ جَمِيْعًا وَّمِثْلَهٗ مَعَهٗ لَافْتَدَوْا بِهٖ مِنْ سُوْٓءِ الْعَذَابِ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ ؕ وَبَدَا لَهُمْ مِّنَ اللّٰهِ مَا لَمْ يَكُوْنُوْا يَحْتَسِبُوْنَ
আর যদি সীমালঙ্ঘনকারীদের হাতে পৃথিবীর সব কিছু থাকে, আর তেমন সমপরিমাণও যদি থাকে। আর তা দিয়ে কিয়ামতের দিনের খারাপ কঠিন শাস্তি হ'তে বাঁচতে চায়, কিন্তু আল্লাহর কাছ থেকে এমন সব বিষয় পেশ করা হবে, যা তারা ধারনাও করতে পারেনি।
وَبَدَا لَهُمْ سَيِّاٰتُ مَا كَسَبُوْا وَحَاقَ بِهِمْ مَّا كَانُوْا بِهٖ يَسْتَهْزِءُوْنَ
তাদের সামনে তাদের নিজেদের সব মন্দকর্মই প্রকাশ হয়ে যাবে, যা তারা কামাই করেছে। আর যা নিয়ে তারা ঠাট্টা বিদ্রুপ করেছে, তাই এসে তাদেরকে ঘিরে ধরবে।
فَاِذَا مَسَّ الْاِنْسَانَ ضُرٌّ دَعَانَا ۫ ثُمَّ اِذَا خَوَّلْنٰهُ نِعْمَةً مِّنَّا ۙ قَالَ اِنَّمَاۤ اُوْتِيْتُهٗ عَلٰي عِلْمٍ ؕ بَلْ هِيَ فِتْنَةٌ وَّلٰكِنَّ اَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُوْنَ
অতঃপর যখনই কোনো মানুষকে দুঃখদৈন্য স্পর্শ করে, তখন কিন্তু আমাকেই ডাকতে থাকে। এরপর আমি যখন আমার পক্ষ হ'তে কোনো অনুগ্রহ দান করি, তখন সে বলে মূলতঃ এ জিনিস আমি আমার জ্ঞান-কৌশল যোগেই লাভ করেছি। বরং এটা একটি পরীক্ষা মাত্র। কিন্তু মানুষের মধ্যে অধিকাংশরাই কিছুই জানে না।
قَدْ قَالَهَا الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ فَمَاۤ اَغْنٰي عَنْهُمْ مَّا كَانُوْا يَكْسِبُوْنَ
তাদের পূর্বে যারা ছিলো তারাও তো এমন ধরনের কথা-বার্তাই বলেছে। কিন্তু তাদের কর্মতৎপরতা কোনো কাজেই লাগবে না।
فَاَصَابَهُمْ سَيِّاٰتُ مَا كَسَبُوْا ؕ وَالَّذِيْنَ ظَلَمُوْا مِنْ هٰۤؤُلَآءِ سَيُصِيْبُهُمْ سَيِّاٰتُ مَا كَسَبُوْا ۙ وَمَا هُمْ بِمُعْجِزِيْنَ
অবশেষে তাদের মন্দকর্মের ফলসমূহ তাদের উপর আপতিত হবে। এদের মধ্য হ'তে যারা সীমালঙ্ঘনকারী তাদের উপর শীঘ্রই এসে পড়বে মন্দফল সমূহ, যা তারা কামাই করেছে। তারা তো আর আমাকে অক্ষম করতে পারবে না।
اَوَلَمْ يَعْلَمُوْۤا اَنَّ اللّٰهَ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَّشَآءُ وَيَقْدِرُ ؕ اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيٰتٍ لِّقَوْمٍ يُّؤْمِنُوْنَ
তারা কি জানে না যে, আল্লাহ জীবনের উপকরণ প্রশস্ত করে দেন তাকে যে উপযুক্ত, আর নিয়ন্ত্রণ করেন। নিশ্চয়ই এর মধ্যে আছে অনেক নিদর্শনাবলী এমন লোকদের জন্যে যারা ঈমান আনে।
قُلْ يٰعِبَادِيَ الَّذِيْنَ اَسْرَفُوْا عَلٰۤي اَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ يَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِيْعًا ؕ اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِيْمُ
তুমি বলে দাও, হে আমার (প্রতিপালকের) কর্মচারীগণ ! তোমরা যারা নিজেদের উপরে বাড়াবাড়ি করে ফেলেছো, আল্লাহর অনুগ্রহ হ'তে তোমরা নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত পাপসমূহ মাফ করে দিবেন। নিশ্চয় তিনিই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
وَاَنِيْبُوْۤا اِلٰي رَبِّكُمْ وَاَسْلِمُوْا لَهٗ مِنْ قَبْلِ اَنْ يَّاْتِيَكُمُ الْعَذَابُ ثُمَّ لَا تُنْصَرُوْنَ
আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের অভিমুখী হও। আর তাঁর কাছে আত্মসমর্পণ করো, তোমাদের উপরে শাস্তি এসে পড়ার পূর্বেই। এরপর তোমাদের আর সাহায্য করা হবে না।
وَاتَّبِعُوْۤا اَحْسَنَ مَاۤ اُنْزِلَ اِلَيْكُمْ مِّنْ رَّبِّكُمْ مِّنْ قَبْلِ اَنْ يَّاْتِيَكُمُ الْعَذَابُ بَغْتَةً وَّاَنْتُمْ لَا تَشْعُرُوْنَ ۙ
আর তোমরা সে সব অতি উত্তমভাবে অনুসরণ করো, যা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ হ'তে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে। হঠাৎকরে তোমাদের উপর শাস্তি এসে পড়ার পূর্বেই। তখন তোমরা তা টেরও পাবে না।
اَنْ تَقُوْلَ نَفْسٌ يّٰحَسْرَتٰي عَلٰي مَا فَرَّطْتُّ فِيْ جَنْۢبِ اللّٰهِ وَاِنْ كُنْتُ لَمِنَ السّٰخِرِيْنَ ۙ
তুমি যে এ কথাই বলতে থাকবে, হায় দূর্ভাগ্য আমার ! আমি আল্লাহর প্রতি কর্তব্যের ক্ষেত্রে অবহেলা করেছি। আমি তো বিদ্রুপকারীদের অন্তর্ভূক্ত ছিলাম।
اَوْ تَقُوْلَ لَوْ اَنَّ اللّٰهَ هَدٰىنِيْ لَكُنْتُ مِنَ الْمُتَّقِيْنَ ۙ
অথবা কেউ হয়তো বলবে, আল্লাহ যদি আমাকে সঠিক পথ দেখাতেন ! তাহলে অবশ্যই আমি মহৎব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারতাম !
اَوْ تَقُوْلَ حِيْنَ تَرَي الْعَذَابَ لَوْ اَنَّ لِيْ كَرَّةً فَاَكُوْنَ مِنَ الْمُحْسِنِيْنَ
অথবা কেউ হয়তো শাস্তি সামনে উপস্থিত দেখতে পেয়ে বলবে, আমি যদি আবার ফিরে যেতে পারি ! তবে অবশ্যই আমি সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত হবো।
بَلٰي قَدْ جَآءَتْكَ اٰيٰتِيْ فَكَذَّبْتَ بِهَا وَاسْتَكْبَرْتَ وَكُنْتَ مِنَ الْكٰفِرِيْنَ
হ্যাঁ, অবশ্যই ! তোমার কাছে আমার আয়াতসমূহ যখন এসেছিলো, তখন তুমি তা মিথ্যা বলেছিলে এবং তুমি অহংকার করতে। আর তুমি তো কাফিরদের অন্তর্ভূক্ত ছিলে।
وَيَوْمَ الْقِيٰمَةِ تَرَي الَّذِيْنَ كَذَبُوْا عَلَي اللّٰهِ وُجُوْهُهُمْ مُّسْوَدَّةٌ ؕ اَلَيْسَ فِيْ جَهَنَّمَ مَثْوًي لِّلْمُتَكَبِّرِيْ
আর কিয়ামতের দিন তুমি তাদের মূখগুলো কালোই দেখতে পাবে, যারা আল্লাহর উপরে মিথ্যারোপ করেছিলো। অহংকারীদের আবাস্হল জাহান্নাম নয় কি ?
وَيُنَجِّي اللّٰهُ الَّذِيْنَ اتَّقَوْا بِمَفَازَتِهِمْ ۫ لَا يَمَسُّهُمُ السُّوْٓءُ وَلَا هُمْ يَحْزَنُوْنَ
যারা আত্মরক্ষা করেছিলো, তাদেরকে আল্লাহ সাফল্যের সাথেই উদ্ধার করবেন। তাদের কোনো রকম অমঙ্গল স্পর্শ করবে না। আর তারা চিন্তিতও হবে না।
اَللّٰهُ خَالِقُ كُلِّ شَيْءٍ ۫ وَّهُوَ عَلٰي كُلِّ شَيْءٍ وَّكِيْلٌ
আল্লাহই তো প্রত্যেক জিনিসের স্রষ্টা। আর তিনি সব জিনিসের উপর কর্মবিধায়ক-উকিল।
لَهٗ مَقَالِيْدُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ ؕ وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا بِاٰيٰتِ اللّٰهِ اُولٰٓئِكَ هُمُ الْخٰسِرُوْنَ
আকাশের ও পৃথিবীর চাবিহমূহ তো তাঁরই কাছে রয়েছে। আর যারা আল্লাহর আয়াতগুলোকে অমান্য করেছে, তারাই তো সেই দল,যারা ক্ষতিগ্রস্থ।
قُلْ اَفَغَيْرَ اللّٰهِ تَاْمُرُوْٓنِّيْۤ اَعْبُدُ اَيُّهَا الْجٰهِلُوْنَ
তুমি বলে দাও, ওহে অজ্ঞ-জাহিলের দল ! এর পরেও কি তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্য কারোর (পীর পুরোহিতদের) দাসত্ব করতে আমাকে আদেশ দিতে থাকবে ?
وَلَقَدْ اُوْحِيَ اِلَيْكَ وَاِلَي الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِكَ ۚ لَئِنْ اَشْرَكْتَ لَيَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَلَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِيْنَ
আর নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি, আর তোমার পূর্বেকার লোকদের প্রতি ওহিযোগে নির্দেশ দিয়েছি, যদি তুমি শরীক করো, তাহলে তোমার যাবতীয় কর্ম নিষ্ফল হবে। আর তুমি অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্থদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে।
بَلِ اللّٰهَ فَاعْبُدْ وَكُنْ مِّنَ الشّٰكِرِيْنَ
বরং আল্লাহর দাসত্ব করো, আর কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হও।
وَمَا قَدَرُوا اللّٰهَ حَقَّ قَدْرِهٖ ۖ وَالْاَرْضُ جَمِيْعًا قَبْضَتُهٗ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ وَالسَّمٰوٰتُ مَطْوِيّٰتٌۢ بِيَمِيْنِهٖ ؕ سُبْحٰنَهٗ وَتَعٰلٰي عَمَّا يُشْرِكُوْنَ
মানুষেরা আল্লাহকে তাঁর যথোচিত সম্মান দেয় না। অথচ কিয়ামতের দিনে পৃথিবী সবটাই তাঁরই মুঠিতে থাকবে। আর আকাশ তাঁর ডান হাতের মধ্যে গুটানো অবস্থায় থাকবে। তিনি পবিত্র মহান ও তাদের থেকে বহু উর্ধ্বে তারা যাদের শরীক করছে।
وَنُفِخَ فِي الصُّوْرِ فَصَعِقَ مَنْ فِي السَّمٰوٰتِ وَمَنْ فِي الْاَرْضِ اِلَّا مَنْ شَآءَ اللّٰهُ ؕ ثُمَّ نُفِخَ فِيْهِ اُخْرٰي فَاِذَا هُمْ قِيَامٌ يَّنْظُرُوْنَ
আর যখন নতুন আকৃতি দেওয়া হবে, তখন আকাশে ও পৃথিবীতে যে কেউ থাকবে, সবারই জ্ঞান লোপ পাবে। তবে কি আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করবেন তার কথা ভিন্ন। এরপরের আকার আকৃতিতে সবাই হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে দেখতে থাকবে।
وَاَشْرَقَتِ الْاَرْضُ بِنُوْرِ رَبِّهَا وَوُضِعَ الْكِتٰبُ وَجِايْٓءَ بِالنَّبِيّٖنَ وَالشُّهَدَآءِ وَقُضِيَ بَيْنَهُمْ بِالْحَقِّ وَهُمْ لَا يُظْلَمُوْنَ
আর পৃথিবী তার প্রতিপালকের জ্যোতিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। আর আল কিতাব উপস্থিত করা হবে এবং নবীগণকে ও প্রত্যক্ষ স্বাক্ষীগণকে উপস্থিত করা হবে। আর তাদের মাঝে ন্যায়ভাবে ফায়সালা করে দেওয়া হবে। আর তাদের উপরে কিছুমাত্র অবিচার করা হবে না।
وَوُفِّيَتْ كُلُّ نَفْسٍ مَّا عَمِلَتْ وَهُوَ اَعْلَمُ بِمَا يَفْعَلُوْنَ
সবাইকে নিজ নিজ কাজকর্মের পূর্ণ প্রতিফল দেওয়া হবে। আর তিনি তো খুব জানেন, যা তারা করেছে।
وَسِيْقَ الَّذِيْنَ كَفَرُوْۤا اِلٰي جَهَنَّمَ زُمَرًا ؕ حَتّٰۤي اِذَا جَآءُوْهَا فُتِحَتْ اَبْوَابُهَا وَقَالَ لَهُمْ خَزَنَتُهَاۤ اَلَمْ يَاْتِكُمْ رُسُلٌ مِّنْكُمْ يَتْلُوْنَ عَلَيْكُمْ اٰيٰتِ رَبِّكُمْ وَيُنْذِرُوْنَكُمْ لِقَآءَ يَوْمِكُمْ هٰذَا ؕ قَالُوْا بَلٰي وَلٰكِنْ حَقَّتْ كَلِمَةُ الْعَذَابِ عَلَي الْكٰفِرِيْنَ
আর যারা কাফির, তাদেরকে দলে দলে জাহান্নামের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত তারা যখন সেখানে পৌঁছাবে আর তার (জাহান্নামের) দরজাগুলো খোলে দেওয়া হবে, তখন তার রক্ষীরা বলবে, তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য হ'তে রাসূলগণ আসেনি ? যারা তোমাদের প্রতিপালকের আয়াত সমূহ তোমাদের কাছে আবৃত্তি করে শুনাতো, আর তোমাদেরকে সতর্ক করতো, তোমাদের এই দিনের সাক্ষাতকার সম্পর্কে ? তারা বলবে, হ্যাঁ অবশ্যই এসেছিলো, কিন্তু শাস্তির বাণী তো কাফিরদের উপর সত্য সুপ্রমাণিত হলো।*
*39(71)নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 2(87),28(47,59),14(4),18(47-49),26(208),77(11),17(15,71),6(130),40(49-51),67(6-11),25(25-30),10(47),16(36) ...।
قِيْلَ ادْخُلُوْۤا اَبْوَابَ جَهَنَّمَ خٰلِدِيْنَ فِيْهَا ۚ فَبِئْسَ مَثْوَي الْمُتَكَبِّرِيْنَ
বলা হবে, জাহান্নামের দরজা দিয়ে প্রবেশ করো। চিরকাল ধরে সেখানেই থাকবে। অতএব কত নিকৃষ্ট অহংকারীদের আবাসস্থল।
وَسِيْقَ الَّذِيْنَ اتَّقَوْا رَبَّهُمْ اِلَي الْجَنَّةِ زُمَرًا ؕ حَتّٰۤي اِذَا جَآءُوْهَا وَفُتِحَتْ اَبْوَابُهَا وَقَالَ لَهُمْ خَزَنَتُهَا سَلٰمٌ عَلَيْكُمْ طِبْتُمْ فَادْخُلُوْهَا خٰلِدِيْنَ
আর যারা তাদের প্রতিপালকের অসন্তুষ্টি থেকে বেঁচে থাকতো, তাদেরকে দলে দলে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত তারা যখন জান্নাতের কাছে চলে আসবে, তখন তার দরজাগুলো খুলে দেওয়া হবে। আর তার রক্ষীরা বলবে, ‘সালামুন আলাইকুম তিবতুম (তোমাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক,তোমরা ভালো ছিলে), অতঃপর তোমরা এখানে চিরকাল বসবাসের জন্যেই প্রবেশ করো।
وَقَالُوا الْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ صَدَقَنَا وَعْدَهٗ وَاَوْرَثَنَا الْاَرْضَ نَتَبَوَّاُ مِنَ الْجَنَّةِ حَيْثُ نَشَآءُ ۚ فَنِعْمَ اَجْرُ الْعٰمِلِيْنَ
আর তারা বলবে, 'সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্যে , যিনি আমাদেরকে তাঁর প্রতিশ্রুতি সত্য করে দেখালেন। আর আমাদেরকে পৃথিবীর উত্তরাধীকারী করলেন। আমরা জান্নাতের মধ্যে যেখানে ইচ্ছে করবো বসবাস করতে পারবো। অতএব কতোইনা উত্তম সৎকর্মসম্পাদনকারীদের পুরুস্কার !
وَتَرَي الْمَلٰٓئِكَةَ حَآفِّيْنَ مِنْ حَوْلِ الْعَرْشِ يُسَبِّحُوْنَ بِحَمْدِ رَبِّهِمْ ۚ وَقُضِيَ بَيْنَهُمْ بِالْحَقِّ وَقِيْلَ الْحَمْدُ لِلّٰهِ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ
আর তুমি দেখতে পাবে শক্তিধর মালা-ইকারা সিংহাসনের চারিদিকে সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে তারা তাদের প্রতিপালকের প্রশংসাসহ মহিমা ঘোষণা করতে থাকবে, আর তাদের মাঝে ন্যায়ভাবে বিচার করে দেয়া হবে। আর বলা হবে, সকল প্রশংসা শুধু বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যে।