সূরা : সুরা সোয়াদ
صٓ وَالْقُرْاٰنِ ذِي الذِّكْرِ ؕ
সোয়াদ', উপদেশপূর্ণ কোরআনে প্রমাণ করে।
بَلِ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا فِيْ عِزَّةٍ وَّشِقَاقٍ
কিন্তু কাফিররা সম্মানের পিছনে এবং (কুরআনের) বিরোধিতায় লিপ্ত রয়েছে।
كَمْ اَهْلَكْنَا مِنْ قَبْلِهِمْ مِّنْ قَرْنٍ فَنَادَوْا وَّلَاتَ حِيْنَ مَنَاصٍ
তাদের পূর্বের শতাব্দীর কতো অসংখ্য সম্প্রদায়কে আমি ধ্বংস করে দিয়েছি। তখন তারা আর্তচিৎকার করেছিল, কিন্তু তখন মুক্তি লাভের কোন সময় ছিলো না।
وَعَجِبُوْۤا اَنْ جَآءَهُمْ مُّنْذِرٌ مِّنْهُمْ ۫ وَقَالَ الْكٰفِرُوْنَ هٰذَا سٰحِرٌ كَذَّابٌ ۖۚ
আর তারা এ নিয়ে অবাক হয়েছে যে, তাদের কাছে একজন সতর্ককারী এসেছে তাদেরই মধ্যে হ'তে। আর কাফিররা বলে, এই ব্যক্তি যাদুকর, বড় মিথ্যাবাদী।
اَجَعَلَ الْاٰلِهَةَ اِلٰـهًا وَّاحِدًا ۚۖ اِنَّ هٰذَا لَشَيْءٌ عُجَابٌ
সে কি বহু দেবতাদের পরিবর্তে এক আইনদাতা সাব্যস্ত করেছে? নিশ্চয়ই এ তো এক আজব ব্যাপার !
وَانْطَلَقَ الْمَلَاُ مِنْهُمْ اَنِ امْشُوْا وَاصْبِرُوْا عَلٰۤي اٰلِهَتِكُمْ ۚۖ اِنَّ هٰذَا لَشَيْءٌ يُّرَادُ ۖۚ
আর তাদের প্রধানেরা (ধর্ম পন্ডিতরা) এই বলে সরে পড়ে, যে তোমরা চলে যাও এবং তোমাদের দেবতাদের উপর তোমরা অবিচল থাকো। নিশ্চয়ই এই ব্যাপার উদ্দেশ্যমূলক।
مَا سَمِعْنَا بِهٰذَا فِي الْمِلَّةِ الْاٰخِرَةِ ۚۖ اِنْ هٰذَاۤ اِلَّا اخْتِلَاقٌ ۖۚ
আমরা তো এ সম্পর্কে অন্যান্য জাতি-ধর্মগুলোর মধ্যে শুনতে পাইনি। এটা মনগড়া কথা ব্যতীত অন্য কিছুই নয়।
ءَاُنْزِلَ عَلَيْهِ الذِّكْرُ مِنْۢ بَيْنِنَا ؕ بَلْ هُمْ فِيْ شَكٍّ مِّنْ ذِكْرِيْ ۚ بَلْ لَّمَّا يَذُوْقُوْا عَذَابِ ؕ
আমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তির উপরেই কি বিশেষ সংবিধান অবতীর্ণ হয়েছে ? বরং তারা আমার সংবিধান (কুরআন) সম্পর্কেই তো সন্দেহের মধ্যে রয়েছে। বরং তারা এখনো আমার শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করেনি।
اَمْ عِنْدَهُمْ خَزَآئِنُ رَحْمَةِ رَبِّكَ الْعَزِيْزِ الْوَهَّابِ ۚ
তাদের কাছে কি তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহের ভান্ডারসমূহ রয়েছে ? যিনি মহা-সম্মানী ও মহান দাতা।
اَمْ لَهُمْ مُّلْكُ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا ۟ فَلْيَرْتَقُوْا فِي الْاَسْبَابِ
তারা কি আকাশ ও পৃথিবী আর তাদের উভয়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে সে সবের মালিকানার অধিকারী হয়েছে ? তা'হলে তারা আরোহন করুক উচ্চজগতের সিঁড়ির সাহায্যে।
جُنْدٌ مَّا هُنَالِكَ مَهْزُوْمٌ مِّنَ الْاَحْزَابِ
একটি দল (ছাড়া), বহুদলের বাহিনীও সেক্ষেত্রে অবশ্যই পরাজিত হয়ে থাকবে।
كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوْحٍ وَّعَادٌ وَّفِرْعَوْنُ ذُو الْاَوْتَادِ ۙ
তাদের পূর্বেও তো নূহের জাতি, আ'দ ও বহু শিবিরের অধিপতি ফিরআউনের লোকজন রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
وَثَمُوْدُ وَقَوْمُ لُوْطٍ وَّاَصْحٰبُ لْـَٔيْكَةِ ؕ اُولٰٓئِكَ الْاَحْزَابُ
আর ছামূদ ও লূতের জাতি আর আইকা'র অধিবাসীরাও, এরা সব একই দল।
اِنْ كُلٌّ اِلَّا كَذَّبَ الرُّسُلَ فَحَقَّ عِقَابِ
তাদের প্রত্যেকেই আমার রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছে। ফলে তাদের ক্ষেত্রে আমার শাস্তি কার্যকর হয়েই থাকবে।
وَمَا يَنْظُرُ هٰۤؤُلَآءِ اِلَّا صَيْحَةً وَّاحِدَةً مَّا لَهَا مِنْ فَوَاقٍ
এরা তো শুধু একটি চিৎকারের জন্যেই অপেক্ষা করছে, যাতে দম ফেলার কোন অবকাশ থাকবে না।
وَقَالُوْا رَبَّنَا عَجِّلْ لَّنَا قِطَّنَا قَبْلَ يَوْمِ الْحِسَابِ
এরা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক ! আমাদের পাওনা অংশ হিসাবের দিনের পূর্বেই তাড়া তাড়ি দিয়ে দিন।
اِصْبِرْ عَلٰي مَا يَقُوْلُوْنَ وَاذْكُرْ عَبْدَنَا دَاوٗدَ ذَا الْاَيْدِ ۚ اِنَّهٗۤ اَوَّابٌ
তারা যা কিছু বলছে, তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ করো। আর আমার শক্তিশালী দাস দাউদকে স্মরণ করো। নিশ্চয়ই সে আল্লাহ অভিমুখী।
اِنَّا سَخَّرْنَا الْجِبَالَ مَعَهٗ يُسَبِّحْنَ بِالْعَشِيِّ وَالْاِشْرَاقِ ۙ
নিশ্চয়ই আমি পাহাড়সমূহকে দাউদের অধীনে করে দিই, তার সাথে এগুলো সকাল-সন্ধ্যায় আমার পবিত্র মহিমা ঘোষণা করতে থাকে ।
وَالطَّيْرَ مَحْشُوْرَةً ؕ كُلٌّ لَّهٗۤ اَوَّابٌ
আর পাখিগুলোও সমবেত হতো। প্রত্যেকে তাঁরই অভিমুখী ও আনুগত্য করে থাকে।
وَشَدَدْنَا مُلْكَهٗ وَاٰتَيْنٰهُ الْحِكْمَةَ وَفَصْلَ الْخِطَابِ
আমিই তার রাজ্যটিকে শক্তিশালী করেছি। আর আমিই তাকে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি এবং ফায়সালাকারী বাগ্মীতা দিয়েছি।
وَهَلْ اَتٰىكَ نَبَؤُا الْخَصْمِ ۘ اِذْ تَسَوَّرُوا الْمِحْرَابَ ۙ
তোমার কাছে কি সেই বিবাদমান লোকদের খবর পৌঁছেছে ? যখন তারা দেয়াল টপকে খাসকামরায় তথা আদালতের কক্ষে ঢুকে পড়ে।
اِذْ دَخَلُوْا عَلٰي دَاوٗدَ فَفَزِعَ مِنْهُمْ قَالُوْا لَا تَخَفْ ۚ خَصْمٰنِ بَغٰي بَعْضُنَا عَلٰي بَعْضٍ فَاحْكُمْ بَيْنَنَا بِالْحَقِّ وَلَا تُشْطِطْ وَاهْدِنَاۤ اِلٰي سَوَآءِ الصِّرَاطِ
যখন তারা দাউদের কাছে প্রবেশ করে ,তখন সে তাদের থেকে ভয় পায়। তারা দাউদকে বলে, আপনি ভয় পাবেন না, আমরা বিবাদমান দু'পক্ষ। আমরা দু'জন একটা ব্যাপার নিয়ে এসেছি, একজন অপর জনের উপরে বাড়াবাড়ি করেছি। সুতরাং আপনি আমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করে দিন। অবিচার করবেন না। আর আমাদেরকে সঠিক পথের নির্দেশনা দিন।
اِنَّ هٰذَاۤ اَخِيْ ۟ لَهٗ تِسْعٌ وَّتِسْعُوْنَ نَعْجَةً وَّلِيَ نَعْجَةٌ وَّاحِدَةٌ ۟ فَقَالَ اَكْفِلْنِيْهَا وَعَزَّنِيْ فِي الْخِطَابِ
এই লোকটি হচ্ছে আমার ভাই। এর কাছে রয়েছে নিরানব্বইটি দুম্বী আর আমার কাছে মাত্র একটি দুম্বী রয়েছে। তবুও সে বলছে, ওটা আমার দায়িত্বে দিয়ে দাও। আর সে কথাবার্তায়ও আমাকে পরাস্ত করে ফেলে।
قَالَ لَقَدْ ظَلَمَكَ بِسُؤَالِ نَعْجَتِكَ اِلٰي نِعَاجِهٖ ؕ وَاِنَّ كَثِيْرًا مِّنَ الْخُلَطَآءِ لَيَبْغِيْ بَعْضُهُمْ عَلٰي بَعْضٍ اِلَّا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَقَلِيْلٌ مَّا هُمْ ؕ وَظَنَّ دَاوٗدُ اَنَّمَا فَتَنّٰهُ فَاسْتَغْفَرَ رَبَّهٗ وَخَرَّ رَاكِعًا وَّاَنَابَ ٛ
দাউদ বলে, সে তো তোমার উপরে বড়ই জুলুম করেছে, যে তোমার দুম্বীটিকে তার দুম্বীর সাথে মিলিয়ে দেয়ার জন্যে বলছে। আর শরীকদের অনেকেই তো একে অন্যের উপরে বাড়াবাড়ি করে থাকে। তবে যারা ঈমান এনে সংশোধনের কাজ করে থাকে তারা বাদে, আর এরা সংখ্যায় খুবই কম। আর দাউদ চিন্তা করে, এভাবে আমি তাকে পরীক্ষা করি। তাই সে তার প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং সহযোগিতায় লুটিয়ে পড়ে ও তাঁর অভিমুখী হয়
فَغَفَرْنَا لَهٗ ذٰلِكَ ؕ وَاِنَّ لَهٗ عِنْدَنَا لَزُلْفٰي وَحُسْنَ مَاٰبٍ
তখন আমি তাকে ক্ষমা করে দিই। আর নিশ্চয়ই আমার কাছে রয়েছে তার জন্যে নৈকট্যর মর্যাদা ও সুন্দর পরিণাম।
يٰدَاوٗدُ اِنَّا جَعَلْنٰكَ خَلِيْفَةً فِي الْاَرْضِ فَاحْكُمْ بَيْنَ النَّاسِ بِالْحَقِّ وَلَا تَتَّبِعِ الْهَوٰي فَيُضِلَّكَ عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِ ؕ اِنَّ الَّذِيْنَ يَضِلُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِ لَهُمْ عَذَابٌ شَدِيْدٌۢ بِمَا نَسُوْا يَوْمَ الْحِسَابِ
হে দাউদ! নিশ্চয়ই আমি তোমাকে পৃথিবীর মধ্যে খলিফা বানিয়েছি। সুতরাং মানুষের মধ্যে ন্যায়বিচার করে দাও। নিজের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবে না, (যদি কর) তাহলে তা তোমাকে আল্লাহর (কুরআনের) পথ হতে সরিয়ে দিবে। নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর (কুরআনের) পথ হ'তে বিভ্রান্ত হয়, তাদের জন্যে কঠোর শাস্তি রয়েছে। এ কারণে যে,তারা হিসাবের দিনকে ভুলে গেছে।
وَمَا خَلَقْنَا السَّمَآءَ وَالْاَرْضَ وَمَا بَيْنَهُمَا بَاطِلًا ؕ ذٰلِكَ ظَنُّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا ۚ فَوَيْلٌ لِّلَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنَ النَّارِ ؕ
আকাশ ও পৃথিবী আর এ দু'য়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে সে সব আমি অনর্থক সৃষ্টি করিনি। এতে সংশয় রয়েছে তাদের যারা কুফুরী করে, সুতরাং কাফিরদের জন্যে রয়েছে আগুনের দুর্ভোগ।
اَمْ نَجْعَلُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ كَالْمُفْسِدِيْنَ فِي الْاَرْضِ ۫ اَمْ نَجْعَلُ الْمُتَّقِيْنَ كَالْفُجَّارِ
যারা ঈমান এনে সংশোধনের কাজ করে, আমি কি তাদেরকে পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের সমতুল্য গণ্য করব? নাকি আমি মহৎব্যক্তিদেরকে পাপাচারীদের সমতুল্য গণ্য করব?
كِتٰبٌ اَنْزَلْنٰهُ اِلَيْكَ مُبٰرَكٌ لِّيَدَّبَّرُوْۤا اٰيٰتِهٖ وَلِيَتَذَكَّرَ اُولُوا الْاَلْبَابِ
আমি তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি একটি কল্যাণকর কিতাব ! যেন লোকজন তাঁর আয়াতসমূহ সম্পর্কে চিন্তাভাবনা করে এবং যেন জ্ঞান বুদ্ধি সম্পন্নরা উপদেশ নেয়।
وَوَهَبْنَا لِدَاوٗدَ سُلَيْمٰنَ ؕ نِعْمَ الْعَبْدُ ؕ اِنَّهٗۤ اَوَّابٌ ؕ
আর আমিই তো দাউদের জন্যে সুলাইমানকে দান করি। বড়ই উত্তম দাস। নিশ্চয় সে অতিশয় আল্লাহ অভিমূখী থাকে।
اِذْ عُرِضَ عَلَيْهِ بِالْعَشِيِّ الصّٰفِنٰتُ الْجِيَادُ ۙ
এক সন্ধায় যখন তার সামনে উত্তম জাতের ভালো ঘোড়া পেশ করা হয়।
فَقَالَ اِنِّيْۤ اَحْبَبْتُ حُبَّ الْخَيْرِ عَنْ ذِكْرِ رَبِّيْ ۚ حَتّٰي تَوَارَتْ بِالْحِجَابِ ٝ
তখন সে বলতে লাগে, আমি আমার প্রতিপালকের স্বর্ণের কারনে উত্তম জিনিস জিনিসকে ভালোবাসি, এমন কি তা (চোখের) আড়ালে অদৃশ্য হয়ে গেলেও ।
رُدُّوْهَا عَلَيَّ ؕ فَطَفِقَ مَسْحًۢا بِالسُّوْقِ وَالْاَعْنَاقِ
দাউদ বলে, সেগুলোকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনো। অতঃপর সে সেগুলোর পা ও ঘাড়ের উপর হাত বুলাতে লাগে।
وَلَقَدْ فَتَنَّا سُلَيْمٰنَ وَاَلْقَيْنَا عَلٰي كُرْسِيِّهٖ جَسَدًا ثُمَّ اَنَابَ
আর নিশ্চয়ই আমি সুলাইমানকে পরীক্ষার মধ্যে ফেলি। আর তার আসনের ভিত্তি মজবুত করে দিই। এরপর সে আমার অভিমুখী হয়।
قَالَ رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَهَبْ لِيْ مُلْكًا لَّا يَنْۢبَغِيْ لِاَحَدٍ مِّنْۢ بَعْدِيْ ۚ اِنَّكَ اَنْتَ الْوَهَّابُ
সুলাইমান বলে, হে আমার প্রতিপালক ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন রাজ্য দান করুন, যা আমার পর থেকে কারও জন্যে শোভনীয় হবে না। নিশ্চয়ই আপনি মহা দাতা।
فَسَخَّرْنَا لَهُ الرِّيْحَ تَجْرِيْ بِاَمْرِهٖ رُخَآءً حَيْثُ اَصَابَ ۙ
তখন আমি তার জন্যে বাতাসকে অনুগত করে দিই। যেনো তার আদেশে প্রবাহিত হয়। যখন যেখানে সে পৌঁছতে চাইতো।
وَالشَّيٰطِيْنَ كُلَّ بَنَّآءٍ وَّغَوَّاصٍ ۙ
আর অবাধ্য শক্তিশালী-শয়তানগণকেও ইমারত নির্মানের কাজে আর ডুবুরির কাজে নিযুক্ত করে
وَّاٰخَرِيْنَ مُقَرَّنِيْنَ فِي الْاَصْفَادِ
এছাড়া আরও একদল, যারা জিঞ্জির-শিকলে আবদ্ধ থাকতো।
هٰذَا عَطَآؤُنَا فَامْنُنْ اَوْ اَمْسِكْ بِغَيْرِ حِسَابٍ
এটা আমার দেওয়া দান। সুতরাং তুমি যাকে চাও দান করো অথবা নিজের জন্যে রেখে দাও, সেজন্যে তোমাকে কোনো হিসাব দিতে হবে না।
وَاِنَّ لَهٗ عِنْدَنَا لَزُلْفٰي وَحُسْنَ مَاٰبٍ
নিশ্চয়ই তার জন্যে আমার কাছে নৈকট্য ও উত্তম পরিণাম রয়েছে।
وَاذْكُرْ عَبْدَنَاۤ اَيُّوْبَ ۘ اِذْ نَادٰي رَبَّهٗۤ اَنِّيْ مَسَّنِيَ الشَّيْطٰنُ بِنُصْبٍ وَّعَذَابٍ ؕ
তুমি আমারই দাস আইয়ুবকে স্মরণ করো। সে যখন তার প্রতিপালককে ডেকে বলে, ‘শয়তান তো আমাকে কষ্ট ও শাস্তির ছোঁয়া দিয়েছে।
اُرْكُضْ بِرِجْلِكَ ۚ هٰذَا مُغْتَسَلٌۢ بَارِدٌ وَّشَرَابٌ
আমি বলি, তুমি তোমার পা দিয়ে দৌড়ে পালাও। এ হচ্ছে গোসলের সুশীতল পানী আর পানীয়।*
*38(42) নং আয়াতের আরবী " اركض" শব্দের ব্যাখ্যায় 21(12,13)...।
وَوَهَبْنَا لَهٗۤ اَهْلَهٗ وَمِثْلَهُمْ مَّعَهُمْ رَحْمَةً مِّنَّا وَذِكْرٰي لِاُولِي الْاَلْبَابِ
আমিই তাকে তার পরিবার পরিজনকে দান করেছি, তাদের সাথে তাদের মতোই আরও লোকজনকে আমারই পক্ষ থেকে অনুগ্রহ হিসেবে। বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন লোকদের জন্যে শিক্ষা স্বরূপ।
وَخُذْ بِيَدِكَ ضِغْثًا فَاضْرِبْ بِّهٖ وَلَا تَحْنَثْ ؕ اِنَّا وَجَدْنٰهُ صَابِرًا ؕ نِعْمَ الْعَبْدُ ؕ اِنَّهٗۤ اَوَّابٌ
আর তুমি তোমার শক্তি দিয়ে অলীক কল্পনাকে আঘাত করো। আর কোনো প্রকারে পাপ করবে না। নিশ্চয়ই আমি তাকে ধৈর্যশীল হিসেবেই পেয়েছি, অতি উত্তম দাস। নিশ্চয়ই সে বড়ই আল্লাহ অভিমুখী থাকে।*
*38(44) নং আয়াতের আরবী "ضغثا" শব্দের ব্যাখ্যায় 12(44),21(5)...।
এখানে "يد" হাত/শক্তির ব্যাপারে 58(22)...।
অনুমান/কল্পনার ব্যাপারে 6(116,148,),10(36,60,66),33(10),34(20),49(12),53(23,28)...।
وَاذْكُرْ عِبٰدَنَاۤ اِبْرٰهِيْمَ وَاِسْحٰقَ وَيَعْقُوْبَ اُولِي الْاَيْدِيْ وَالْاَبْصَارِ
স্মরণ করো আমার দাস ইবরাহীম, ইসহাক এবং ইয়াকুবকে, যারা হলো বড়ই শক্তিশালী ও পর্যবেক্ষক-সূক্ষ্মদর্শী
اِنَّاۤ اَخْلَصْنٰهُمْ بِخَالِصَةٍ ذِكْرَي الدَّارِ ۚ
নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে একটি স্বতন্ত্রগুণের কারণে মর্যাদা দিয়েছি, তা হলো পরকালের বিশেষ ঘরের কথা স্মরণ করা।
وَاِنَّهُمْ عِنْدَنَا لَمِنَ الْمُصْطَفَيْنَ الْاَخْيَارِ ؕ
আর নিশ্চয়ই তারা আমার কাছে মনোনীত দাসদের মধ্য হতে সর্বত্তোম।
وَاذْكُرْ اِسْمٰعِيْلَ وَالْيَسَعَ وَذَا الْكِفْلِ ؕ وَكُلٌّ مِّنَ الْاَخْيَارِ ؕ
আর তুমি ইসমাঈল, আলইয়াসাআ ও জুলকিফলকে স্মরণ করো। এরা প্রত্যেকেই উত্তম দাসদের মধ্যে সেরা।
هٰذَا ذِكْرٌ ؕ وَاِنَّ لِلْمُتَّقِيْنَ لَحُسْنَ مَاٰبٍ ۙ
এটা হচ্ছে একটি সংবিধান। আর নিশ্চয় মহৎব্যক্তিদের জন্যে রয়েছে উত্তম আবাস।
جَنّٰتِ عَدْنٍ مُّفَتَّحَةً لَّهُمُ الْاَبْوَابُ ۚ
চিরস্থায়ী জান্নাতসমূহ, যার দরজা তাদের জন্যেই খোলা থাকবে।
مُتَّكِـِٕيْنَ فِيْهَا يَدْعُوْنَ فِيْهَا بِفَاكِهَةٍ كَثِيْرَةٍ وَّشَرَابٍ
সেখানে তারা হেলান দিয়ে বসবে। সেখানে তারা অনেক ফল-মূল ও পান করার মতো অনেক জিনিস চাইবে।
وَعِنْدَهُمْ قٰصِرٰتُ الطَّرْفِ اَتْرَابٌ
আর তাদের কাছেই আনত নয়নাগণ ও সমবয়স্কাগণ দাঁড়িয়ে থাকবে।
هٰذَا مَا تُوْعَدُوْنَ لِيَوْمِ الْحِسَابِ ؓ
এই তো হচ্ছে সেই সব জিনিস, যা হিসাবের দিনের জন্যে তোমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে।
اِنَّ هٰذَا لَرِزْقُنَا مَا لَهٗ مِنْ نَّفَادٍ ۚۖ
নিশ্চয়ই এটি আমারই দেওয়া জীবিকা, যা কোন দিন শেষ হবেনা।
هٰذَا ؕ وَاِنَّ لِلطّٰغِيْنَ لَشَرَّ مَاٰبٍ ۙ
এটাই (মহৎব্যক্তিদের পরিণাম)। আর নিশ্চয়ই সীমালংঘন কারীদের জন্যে রয়েছে নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল।
جَهَنَّمَ ۚ يَصْلَوْنَهَا ۚ فَبِئْسَ الْمِهَادُ
জাহান্নাম। তারা সেখানেই প্রবেশ করবে। কতোই না নিকৃষ্ট সে ঠিকানা।
هٰذَا ۙ فَلْيَذُوْقُوْهُ حَمِيْمٌ وَّغَسَّاقٌ ۙ
এটাই (কাফিরদের পরিনাম), সুতরাং তারা আস্বাদন করুক, ফুটন্ত পানি ও পুঁজ।
وَّاٰخَرُ مِنْ شَكْلِهٖۤ اَزْوَاجٌ ؕ
এছাড়া এমন ধারা আরো অনেক জিনিস জোড়ায় জোড়ায় রয়েছে।
هٰذَا فَوْجٌ مُّقْتَحِمٌ مَّعَكُمْ ۚ لَا مَرْحَبًۢا بِهِمْ ؕ اِنَّهُمْ صَالُوا النَّارِ
এই তো একটি দল, যারা তোমাদের সাথে প্রবেশ করেছে। তাদের জন্যে কোনো অভিনন্দন নেই। নিশ্চয়ই তারা আগুনে পৌঁছাবে।
قَالُوْا بَلْ اَنْتُمْ ۟ لَا مَرْحَبًۢا بِكُمْ ؕ اَنْتُمْ قَدَّمْتُمُوْهُ لَنَا ۚ فَبِئْسَ الْقَرَارُ
তারা বলবে, বরং তোমারও তাতে পৌঁছে যাবে, তোমাদের জন্যেও কোনো অভিনন্দন নেই। তোমরাই তো এ বিপদ আমাদের জন্যে সামনে নিয়ে এসেছো। অতএব এ কতোই না নিকৃষ্ট আবাস্হল।
قَالُوْا رَبَّنَا مَنْ قَدَّمَ لَنَا هٰذَا فَزِدْهُ عَذَابًا ضِعْفًا فِي النَّارِ
তারা বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক ! যে ব্যক্তি এটা আমাদের সম্মূখীন করেছে, তাকে আগুনের মধ্যে দ্বিগুন শাস্তি দিন।
وَقَالُوْا مَا لَنَا لَا نَرٰي رِجَالًا كُنَّا نَعُدُّهُمْ مِّنَ الْاَشْرَارِ ؕ
আর তারা বলবে, আমাদের কি হলো ! আমরা সে সব লোকদেরকে দেখতে পাচ্ছি না ! যাদেরকে আমরা খুব খারাপ লোকদের মধ্যে গণ্য করতাম !
اَتَّخَذْنٰهُمْ سِخْرِيًّا اَمْ زَاغَتْ عَنْهُمُ الْاَبْصَارُ
আমরা কি তাদেরকে ঠাট্টা বিদ্রুপ করতাম না? তাদেরকে দেখেই তো আমাদের চোখ ঝলসাতো।
اِنَّ ذٰلِكَ لَحَقٌّ تَخَاصُمُ اَهْلِ النَّارِ
নিশ্চয়ই এটা সত্য, আগুণের অধিবাসীদের মধ্যে এই ঝগড়া বিতর্ক চলতেই থাকবে।
قُلْ اِنَّمَاۤ اَنَا مُنْذِرٌ ۖ وَّمَا مِنْ اِلٰهٍ اِلَّا اللّٰهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ ۚ
তুমি বলে দাও ! আমি মূলতঃ একজন সতর্ককারী। আর মহাপরাক্রমশালী এক আল্লাহ ছাড়া আর কোনো সত্যিকারের আইনদাতা নেই।
رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا الْعَزِيْزُ الْغَفَّارُ
আকাশ ও পৃথিবী আর এ দু'য়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে সে সবের প্রতিপালক হলেন মহা-সম্মানী ও পরম ক্ষমাশীল।
مَا كَانَ لِيَ مِنْ عِلْمٍۭ بِالْمَلَاِ الْاَعْلٰۤي اِذْ يَخْتَصِمُوْنَ
উর্ধ্বলোকের বাদানুবাদের সম্পর্কে আমার তো কোনো জ্ঞান নেই, যখন তথায় ঝগড়া হয়।
اِنْ يُّوْحٰۤي اِلَيَّ اِلَّاۤ اَنَّمَاۤ اَنَا نَذِيْرٌ مُّبِيْنٌ
আমার প্রতি ওহী এসেছে, শুধু এই কারণে, আমি তো সুস্পষ্টরূপে সতর্ককারী বৈ-তো-নই।
اِذْ قَالَ رَبُّكَ لِلْمَلٰٓئِكَةِ اِنِّيْ خَالِقٌۢ بَشَرًا مِّنْ طِيْنٍ
তোমার প্রতিপালক যখন মালা-ইকাদেরকে বলেন, নিশ্চয়ই আমি মাটি থেকে মানুষ সৃষ্টি করবো।
فَاِذَا سَوَّيْتُهٗ وَنَفَخْتُ فِيْهِ مِنْ رُّوْحِيْ فَقَعُوْا لَهٗ سٰجِدِيْنَ
অতঃপর যখন আমি তাকে পুরোপুরিভাবে ঠিক করবো, আর তার মধ্যে আমার রূহ থেকে ফুঁকে দিবো, তখন তোমরা তার আনুগত্য করবে।
فَسَجَدَ الْمَلٰٓئِكَةُ كُلُّهُمْ اَجْمَعُوْنَ ۙ
অবশেষে মালা-ইকারা সবাই একত্রে পরম আনুগত্য করে।
اِلَّاۤ اِبْلِيْسَ ؕ اِسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكٰفِرِيْنَ
ইবলীস ছাড়া, সে অহংকার করে, আর সে কাফিরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যায়।
قَالَ يٰۤاِبْلِيْسُ مَا مَنَعَكَ اَنْ تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ ؕ اَسْتَكْبَرْتَ اَمْ كُنْتَ مِنَ الْعَالِيْنَ
আল্লাহ বলেন, হে ইবলীস ! কিসে তোমাকে বাধা দিলো ? যাকে আমি আমার নিজের দু’হাত দ্বারা সৃষ্টি করেছি, তাকে তুমি মানলে না। তুমি কি অহংকার করলে, না তুমি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্নদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেলে ?*
*38(75) নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 36(71)...।
قَالَ اَنَا خَيْرٌ مِّنْهُ ؕ خَلَقْتَنِيْ مِنْ نَّارٍ وَّخَلَقْتَهٗ مِنْ طِيْنٍ
সে বলে, আমি তার চেয়ে বড়/ উত্তম। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন আগুন থেকে। আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটি থেকে।
قَالَ فَاخْرُجْ مِنْهَا فَاِنَّكَ رَجِيْمٌ ۚۖ
আল্লাহ বলেন, তাহলে তুমি এখান থেকে বের হয়ে যাও। তাহ'লে তুমি নিশ্চয়ই বিতাড়িত ।
وَّاِنَّ عَلَيْكَ لَعْنَتِيْۤ اِلٰي يَوْمِ الدِّيْنِ
আর নিশ্চয়ই তোমার উপর আমার অভিশাপ থাকবে বিচার দিন পর্যন্ত।
قَالَ رَبِّ فَاَنْظِرْنِيْۤ اِلٰي يَوْمِ يُبْعَثُوْنَ
সে বলে, হে আমার প্রতিপালক ! তাহলে আপনি আমাকে উত্থানের দিন পর্যন্ত অবকাশ দিন।
قَالَ فَاِنَّكَ مِنَ الْمُنْظَرِيْنَ ۙ
আল্লাহ বলেন, তাহলে তুমি অবকাশ প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলে।
قَالَ فَبِعِزَّتِكَ لَاُغْوِيَنَّهُمْ اَجْمَعِيْنَ ۙ
সে বলে, তাহ'লে আপনার সম্মানের শপথ, আমি তাদের সবাইকে অবশ্যই বিভ্রান্ত করবো।
اِلَّا عِبَادَكَ مِنْهُمُ الْمُخْلَصِيْنَ
তবে তাদের মধ্যে হ'তে যারা আপনার একনিষ্ঠ দাস হবে তাদের ব্যতীত।
قَالَ فَالْحَقُّ ۫ وَالْحَقَّ اَقُوْلُ ۚ
আল্লাহ বলেন, এটাই সত্য, আর আমি সত্যই বলি।
لَاَمْلَـَٔنَّ جَهَنَّمَ مِنْكَ وَمِمَّنْ تَبِعَكَ مِنْهُمْ اَجْمَعِيْنَ
আমি অবশ্যই তোমাকে আর যারা তোমার অনুগত হবে তাদের সবাইকে দিয়ে জাহান্নাম ভরিয়ে তুলবো।
قُلْ مَاۤ اَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ اَجْرٍ وَّمَاۤ اَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِيْنَ
তুমি বলে দাও ! আমি এই (কুরআনের) জন্যে তোমাদের কাছে কোনো পারিশ্রমিক চাই না। আর আমি ভানকারীদের অন্তর্ভুক্ত নই।
اِنْ هُوَ اِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعٰلَمِيْنَ
নিশ্চয়ই এই কুরআন বিশ্ববাসীদের জন্যে সংবিধান।
وَلَتَعْلَمُنَّ نَبَاَهٗ بَعْدَ حِيْنٍ
আর কিছুকাল পরেই তোমরা তার খবর বিস্তারিতভাবে জানতে পারবে।