সূরা : সুরা মু'মিনুন
قَدْ اَفْلَحَ الْمُؤْمِنُوْنَ ۙ
নিশ্চয়ই মু'মিনরা সফলকাম হবে।
الَّذِيْنَ هُمْ فِيْ صَلَاتِهِمْ خٰشِعُوْنَ ۙ
যারা নিজেদের দায়িত্ব পালনে বিনীত-বিনম্র অবস্থায় থাকে।
وَالَّذِيْنَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُوْنَ ۙ
আর যারা বেহুদা কথা কাজ থেকে বিরত থাকে।
وَالَّذِيْنَ هُمْ لِلزَّكٰوةِ فٰعِلُوْنَ ۙ
আর যারা সাহায্য প্রদানের ব্যাপারে সক্রিয়।
وَالَّذِيْنَ هُمْ لِفُرُوْجِهِمْ حٰفِظُوْنَ ۙ
আর যারা নিজেদের যৌন অংগের হিফাজত করে।
اِلَّا عَلٰۤي اَزْوَاجِهِمْ اَوْ مَا مَلَكَتْ اَيْمَانُهُمْ فَاِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُوْمِيْنَ ۚ
তবে তাদের নিজেদের আঝওয়াজ (বিপরীত লিঙ্গের জোড়া, স্বামী-স্ত্রী), কেননা তারা একটি অঙ্গীকার সূত্রে তাদের অধিকারভুক্ত হয়েছে, তাই তাদের উপরে কোনো অভিযোগ নেই।
فَمَنِ ابْتَغٰي وَرَآءَ ذٰلِكَ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْعٰدُوْنَ ۚ
তবে যে কেউ এর বাইরে কামনা করবে, তারাই সীমালংঘনকারী হবে।
وَالَّذِيْنَ هُمْ لِاَمٰنٰتِهِمْ وَعَهْدِهِمْ رٰعُوْنَ ۙ
আর যারা তাদের আমানতসমূহের জন্যে ও প্রতিশ্রুতির সংরক্ষণকারী।
وَالَّذِيْنَ هُمْ عَلٰي صَلَوٰتِهِمْ يُحَافِظُوْنَ ۘ
আর যারা নিজেদের দায়িত্বগুলো পালনে যত্নবান।
الَّذِيْنَ يَرِثُوْنَ الْفِرْدَوْسَ ؕ هُمْ فِيْهَا خٰلِدُوْنَ
যারা (জান্নাতুল) ফিরদাউসের অধিকারী হবে। সেখানে তারা চিরকাল বসবাস করবে।
وَلَقَدْ خَلَقْنَا الْاِنْسَانَ مِنْ سُلٰلَةٍ مِّنْ طِيْنٍ ۚ
আর নিশ্চয়ই আমি মানুষকে মথিত মাটির নির্যাস থেকে সৃষ্টি করেছি।
ثُمَّ جَعَلْنٰهُ نُطْفَةً فِيْ قَرَارٍ مَّكِيْنٍ ۪
এরপর তাকে আমি শুক্ররূপে সুরক্ষিত আঁধারের মধ্যে স্থাপন করি।
ثُمَّ خَلَقْنَا النُّطْفَةَ عَلَقَةً فَخَلَقْنَا الْعَلَقَةَ مُضْغَةً فَخَلَقْنَا الْمُضْغَةَ عِظٰمًا فَكَسَوْنَا الْعِظٰمَ لَحْمًا ثُمَّ اَنْشَاْنٰهُ خَلْقًا اٰخَرَ ؕ فَتَبٰرَكَ اللّٰهُ اَحْسَنُ الْخٰلِقِيْنَ ؕ
এরপরে সেই শুক্রকে জমাট রক্তে পরিণত করেছি। অতঃপর সেই রক্তপিণ্ডকে পেশীতে পরিণত করেছি, তারপরে সেই পেশীকে হাড়ে পরিণত করেছি। গোস্ত দিয়ে সেই হাড়গুলো ঢেকে দিয়েছি। এরপরে তাকে সম্পূর্ণ আলাদা সৃষ্টিরূপেই দাঁড় করিয়েছি। অতএব সকল মহিমা শুধু আল্লাহরই, যিনি হলেন সর্বোত্তম সৃষ্টিকর্তা।
ثُمَّ اِنَّكُمْ بَعْدَ ذٰلِكَ لَمَيِّتُوْنَ ؕ
এরপরে নিশ্চয়ই তোমরা সবাই পুনঃরায় অবশ্যই মৃত্যুবরণ করবে ।
ثُمَّ اِنَّكُمْ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ تُبْعَثُوْنَ
এরপরে তোমাদের সবাইকে কিয়ামতের দিন উঠানো হবে।
وَلَقَدْ خَلَقْنَا فَوْقَكُمْ سَبْعَ طَرَآئِقَ ۖ وَمَا كُنَّا عَنِ الْخَلْقِ غٰفِلِيْنَ
আর নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মাথার ওপরে সাতটি কক্ষপথ সৃষ্টি করেছি। আর সৃষ্টি জগৎ সম্পর্কে আমি তো অমনোযোগী নই।
وَاَنْزَلْنَا مِنَ السَّمَآءِ مَآءًۢ بِقَدَرٍ فَاَسْكَنّٰهُ فِي الْاَرْضِ ۖ وَاِنَّا عَلٰي ذَهَابٍۭ بِهٖ لَقٰدِرُوْنَ ۚ
আমিই তো আকাশ হ'তে নির্দিষ্ট পরিমাণ মতো পানি বর্ষণ করে থাকি। অতঃপর তা মাটিতে রেখে দিই। আর নিশ্চয়ই আমি তা অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার ব্যপারে ক্ষমতাও রাখি।
فَاَنْشَاْنَا لَكُمْ بِهٖ جَنّٰتٍ مِّنْ نَّخِيْلٍ وَّاَعْنَابٍ ۘ لَكُمْ فِيْهَا فَوَاكِهُ كَثِيْرَةٌ وَّمِنْهَا تَاْكُلُوْنَ ۙ
অতঃপর আমি তা দিয়ে তোমাদের জন্য খেজুর ও আঙ্গুরের জান্নাত-বাগিচা সৃষ্টি করে থাকি। তোমাদের জন্য তাতে অনেক ফলমূল রয়েছে। তা হ'তে কিছুটা তোমরা খেয়েও থাকো।
وَشَجَرَةً تَخْرُجُ مِنْ طُوْرِ سَيْنَآءَ تَنْۢبُتُ بِالدُّهْنِ وَصِبْغٍ لِّلْاٰكِلِيْنَ
আর সেই গাছটি, যা চায়নার পাহাড়ে জন্মায়, তাতে তেল উৎপন্ন হয় আর ভোজনকারীদের জন্য ব্যঞ্জন তৈরী করা হয়।
وَاِنَّ لَكُمْ فِي الْاَنْعَامِ لَعِبْرَةً ؕ نُسْقِيْكُمْ مِّمَّا فِيْ بُطُوْنِهَا وَلَكُمْ فِيْهَا مَنَافِعُ كَثِيْرَةٌ وَّمِنْهَا تَاْكُلُوْنَ ۙ
আর চারপেয়ে পশুদের মধ্যেও তোমাদের জন্য ভেবে দেখবার মতো বিষয় অবশ্যই রয়েছে। ওদের পেটের মধ্যে যা রয়েছে তা থেকে তোমাদেরকে পান করিয়ে থাকি (দুধ)। আর তোমাদের জন্য তাদের মধ্যে প্রচুর উপকার নিহিত রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে কিছুটা তোমরা খেয়েও থাকো।
وَعَلَيْهَا وَعَلَي الْفُلْكِ تُحْمَلُوْنَ
সেগুলোর উপরে আর নৌ-যানে তোমরা বোঝা চাপিয়ে থাকো।
وَلَقَدْ اَرْسَلْنَا نُوْحًا اِلٰي قَوْمِهٖ فَقَالَ يٰقَوْمِ اعْبُدُوا اللّٰهَ مَا لَكُمْ مِّنْ اِلٰهٍ غَيْرُهٗ ؕ اَفَلَا تَتَّقُوْنَ
আর আমি যখন নূহকে তার জাতির প্রতি রাসূল হিসেবে পাঠাই। তখন সে বলে, হে আমার জাতি ! তোমরা আল্লাহর দাসত্ব করো। তিনি ছাড়া তোমাদের জন্যে অন্য কোন (সত্যিকারের) আইনদাতা নেই। তবুও কি তোমরা সাবধান হবে না"?
فَقَالَ الْمَلَؤُا الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْ قَوْمِهٖ مَا هٰذَاۤ اِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ ۙ يُرِيْدُ اَنْ يَّتَفَضَّلَ عَلَيْكُمْ ؕ وَلَوْ شَآءَ اللّٰهُ لَاَنْزَلَ مَلٰٓئِكَةً ۚۖ مَّا سَمِعْنَا بِهٰذَا فِيْۤ اٰبَآئِنَا الْاَوَّلِيْنَ ۚ
তখন তার জাতির মধ্য হ'তে প্রধান (মৌলভী) ব্যক্তিরা যারা অস্বীকার করে তারা বলে, এই ব্যক্তি তোমাদেরই মতো একজন মানুষ ছাড়া কিছুই নয়। সে তোমাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করতে চায়। আর আল্লাহ যদি ইচ্ছা করতেন, তাহলে অবশ্যই মালা-ইকাদেরকে পাঠিয়ে দিতেন। এ ধরনের কথা আমরা আমাদের পূর্বেকার বাপ-দাদাদের মধ্যেও শুনিনি।
اِنْ هُوَ اِلَّا رَجُلٌۢ بِهٖ جِنَّةٌ فَتَرَبَّصُوْا بِهٖ حَتّٰي حِيْنٍ
সে তো একজন মানুষই, তার মধ্যে জ্বিন/পাগলামী রয়েছে ! অতএব তোমরা তার সম্পর্কে কিছুকাল অপেক্ষা করো।
قَالَ رَبِّ انْصُرْنِيْ بِمَا كَذَّبُوْنِ
সে বলে, হে আমার প্রতিপালক ! আপনি আমাকে সাহায্য করুন। এ কারণে যে তারা আমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করেছে।
فَاَوْحَيْنَاۤ اِلَيْهِ اَنِ اصْنَعِ الْفُلْكَ بِاَعْيُنِنَا وَوَحْيِنَا فَاِذَا جَآءَ اَمْرُنَا وَفَارَ التَّنُّوْرُ ۙ فَاسْلُكْ فِيْهَا مِنْ كُلٍّ زَوْجَيْنِ اثْنَيْنِ وَاَهْلَكَ اِلَّا مَنْ سَبَقَ عَلَيْهِ الْقَوْلُ مِنْهُمْ ۚ وَلَا تُخَاطِبْنِيْ فِي الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا ۚ اِنَّهُمْ مُّغْرَقُوْنَ
অতঃপর আমি তার প্রতি ওহী করি যে, তুমি আমার চোখের সামনে ও আমার ওহীর ভিত্তিতে নৌকা নির্মাণ কর। অতঃপর যখন আমার নির্দেশ আসবে,এবং চুলা উথলে উঠবে (অর্থাৎ ভূ-পৃষ্ঠ প্লাবিত হবে)। তখন প্রত্যেক ধরণের (জীব-জন্তু) এক জোড়া করে (অর্থাৎ নর ও নারী) তার মধ্যে উঠিয়ে নিবে, আর তোমার পরিবারকে, তবে তাদের মধ্য হ'তে যাদের সম্পর্কে বিশেষ বাণী পূর্বেই নির্ধারিত হয়েছে, তাদের ছাড়া ! অত্যাচারী-জালিমদের সম্পর্কে আমাকে কিছুই বলবে না, নিশ্চয়ই তারা নিমজ্জিত হবে।
فَاِذَا اسْتَوَيْتَ اَنْتَ وَمَنْ مَّعَكَ عَلَي الْفُلْكِ فَقُلِ الْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ نَجّٰنَا مِنَ الْقَوْمِ الظّٰلِمِيْنَ
অতঃপর যখন তুমি আর তোমার সাথে যারা নৌকার উপর স্থির হবে, তখন তুমি বলবে, সব প্রশংসা আল্লাহর জন্যই। যিনি আমাদেরকে সীমালঙ্ঘনকারী জাতি হ'তে উদ্ধার করেছেন।
وَقُلْ رَّبِّ اَنْزِلْنِيْ مُنْزَلًا مُّبٰرَكًا وَّاَنْتَ خَيْرُ الْمُنْزِلِيْنَ
তুমি আরও বলবে, হে আমার প্রতিপালক ! আপনি আমাকে অবতরণ করান কল্যাণকর অবতরণস্থানে। আর আপনি উত্তম অবতরণকারী।
اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيٰتٍ وَّاِنْ كُنَّا لَمُبْتَلِيْنَ
নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে। আর আমি অবশ্যই পরীক্ষাকারী।
ثُمَّ اَنْشَاْنَا مِنْۢ بَعْدِهِمْ قَرْنًا اٰخَرِيْنَ ۚ
এরপর ওদের শতাব্দীর পর নতুন আরেকটি জাতি সৃষ্টি করি।
فَاَرْسَلْنَا فِيْهِمْ رَسُوْلًا مِّنْهُمْ اَنِ اعْبُدُوا اللّٰهَ مَا لَكُمْ مِّنْ اِلٰهٍ غَيْرُهٗ ؕ اَفَلَا تَتَّقُوْنَ
আর তাদেরই মধ্য হ'তে তাদের একজনকে রাসূলরূপে পাঠাই। এ তার দাওয়াত যে, তোমরা আল্লাহর দাসত্ব করবে। তিনি ছাড়া তোমাদের জন্যে অন্য কোনো (সত্যিকারের) আইনদাতা নেই। তবুও কি তোমরা সাবধান হবে না ?
وَقَالَ الْمَلَاُ مِنْ قَوْمِهِ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَكَذَّبُوْا بِلِقَآءِ الْاٰخِرَةِ وَاَتْرَفْنٰهُمْ فِي الْحَيٰوةِ الدُّنْيَا ۙ مَا هٰذَاۤ اِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ ۙ يَاْكُلُ مِمَّا تَاْكُلُوْنَ مِنْهُ وَيَشْرَبُ مِمَّا تَشْرَبُوْنَ ۪ۙ
তার জাতির মধ্য হ'তে প্রধান ব্যক্তিরা (মৌলভীরা) যারা অস্বীকার করে এবং পরকালের সাক্ষাতের প্রতি মিথ্যারোপ করে, আর আমিই তাদেরকে এই পার্থিব জীবনের মধ্যে স্বাচ্ছন্দ্য দিয়েছি। তারা বলে এ তো আমাদের মতোই একজন মানুষ বৈ-তো-নয়। তোমরা যা কিছু খাও, তা হ'তেই সে খায়, আর তোমরা যা কিছু পান করো তা তো সেও পান করে থাকে।
وَلَئِنْ اَطَعْتُمْ بَشَرًا مِّثْلَكُمْ اِنَّكُمْ اِذًا لَّخٰسِرُوْنَ ۙ
‘আর অবশ্যই যদি তোমরা তোমাদের মতোই একজন মানুষের আনুগত্য কর, তা'হলে নিশ্চয়ই তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে’।
اَيَعِدُكُمْ اَنَّكُمْ اِذَا مِتُّمْ وَكُنْتُمْ تُرَابًا وَّعِظَامًا اَنَّكُمْ مُّخْرَجُوْنَ
সে কি তোমাদেরকে এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যে, তোমরা যখন মরে যাবে, এমন কি মাটি ও হাড়ে পরিণত হয়ে যাবে, তোমাদেরকে অবশ্যই বের করা হবে?
هَيْهَاتَ هَيْهَاتَ لِمَا تُوْعَدُوْنَ ۪ۙ
কি করে তা সম্ভব হবে ? কেমনে তা সত্য হবে ? তোমাদের সাথে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে।
اِنْ هِيَ اِلَّا حَيَاتُنَا الدُّنْيَا نَمُوْتُ وَنَحْيَا وَمَا نَحْنُ بِمَبْعُوْثِيْنَ ۪ۙ
আমাদের এই পার্থিব জীবন, আমরা মারা যাচ্ছি আবার আমরা বেঁচেও রয়েছি, এই তো ! আবার আমাদেরকে উঠতে হবে না।
اِنْ هُوَ اِلَّا رَجُلُۨ افْتَرٰي عَلَي اللّٰهِ كَذِبًا وَّمَا نَحْنُ لَهٗ بِمُؤْمِنِيْنَ
সে শুধু এক ব্যক্তি যে আল্লাহর উপরে মিথ্যা রচনা করে যাচ্ছে। আমরা তার উপর ঈমান আনতে যাচ্ছি না।
قَالَ رَبِّ انْصُرْنِيْ بِمَا كَذَّبُوْنِ
নূহ বলে, হে আমার প্রতিপালক ! আপনি আমাকে সাহায্য করুন, যা নিয়ে ওরা আমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করতে চাচ্ছে।
قَالَ عَمَّا قَلِيْلٍ لَّيُصْبِحُنَّ نٰدِمِيْنَ ۚ
আল্লাহ বলেন, এবারে ওরা অল্প দিনের মধ্যেই সকাল বেলা উঠে পস্তাতে থাকবে।
فَاَخَذَتْهُمُ الصَّيْحَةُ بِالْحَقِّ فَجَعَلْنٰهُمْ غُثَآءً ۚ فَبُعْدًا لِّلْقَوْمِ الظّٰلِمِيْنَ
অতঃপর তাদেরকে এক মহাগর্জন ন্যায়ের সাথে পাকড়াও করে, আর আমি তাদেরকে খড়কুটোয় পরিণত করি। সুতরাং দূর হোক (অর্থাৎ ধ্বংস হোক) সীমালঙ্ঘনকারী জাতি ।
ثُمَّ اَنْشَاْنَا مِنْۢ بَعْدِهِمْ قُرُوْنًا اٰخَرِيْنَ ؕ
এরপর তাদের শতাব্দীগুলির পর আমি নতুন আরেকটি জাতি সৃষ্টি করি।
مَا تَسْبِقُ مِنْ اُمَّةٍ اَجَلَهَا وَمَا يَسْتَاْخِرُوْنَ ؕ
কিন্তু কোনো জাতিই তার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের কিছুমাত্র আগু পিছু করতে সক্ষম নয়।
ثُمَّ اَرْسَلْنَا رُسُلَنَا تَتْرَا ؕ كُلَّ مَا جَآءَ اُمَّةً رَّسُوْلُهَا كَذَّبُوْهُ فَاَتْبَعْنَا بَعْضَهُمْ بَعْضًا وَّجَعَلْنٰهُمْ اَحَادِيْثَ ۚ فَبُعْدًا لِّقَوْمٍ لَّا يُؤْمِنُوْنَ
এরপর আমি একের পর এক রাসূলগণকে প্রেরণ করি। যখন কোনো জাতির নিকট তাদের রাসূল আসে। তাকে তারা মিথ্যাবাদী বলে। অতঃপর আমি তাদেরকে একটার পিছনে আরেকটাকে লাগিয়ে দিই। অবশেষে আমি তাদেরকে হাদীসে-কাহিনীতে পরিণত করি। সুতরাং দূর হোক (অর্থাৎ ধ্বংস হোক) এমন জাতি, যারা ঈমান আনে না।
ثُمَّ اَرْسَلْنَا مُوْسٰي وَاَخَاهُ هٰرُوْنَ ۙ بِاٰيٰتِنَا وَسُلْطٰنٍ مُّبِيْنٍ ۙ
এরপরে আমি মূসা ও তার ভাই হারুনকে আমার আয়াত ও সুস্পষ্ট প্রমাণ সহ পাঠাই।
اِلٰي فِرْعَوْنَ وَمَلَا۠ئِهٖ فَاسْتَكْبَرُوْا وَكَانُوْا قَوْمًا عَالِيْنَ ۚ
ফিরআউন ও তার সভাষদদের (মৌলভীদের) প্রতি। কিন্তু তারা অহংকার করতে লাগে। আর তারা হতে চায় উদ্ধত জাতি।
فَقَالُوْۤا اَنُؤْمِنُ لِبَشَرَيْنِ مِثْلِنَا وَقَوْمُهُمَا لَنَا عٰبِدُوْنَ ۚ
অতঃপর তারা বলে, আমরা কি আমাদের মতোই দু'জন মানুষের উপর ঈমান আনবো। অথচ তাদের উভয়ের জাতি আমাদের জন্য দাস-দাসী হয়ে আছে।
فَكَذَّبُوْهُمَا فَكَانُوْا مِنَ الْمُهْلَكِيْنَ
অতএব তারা উভয়কে মিথ্যাবাদী বলে, অবশেষে তারাও ধ্বংসপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়।
وَلَقَدْ اٰتَيْنَا مُوْسَي الْكِتٰبَ لَعَلَّهُمْ يَهْتَدُوْنَ
নিশ্চয়ই আমি মূসাকে আল কিতাব দিয়েছি, যাতে তারা সঠিক পথ পায়।
وَجَعَلْنَا ابْنَ مَرْيَمَ وَاُمَّهٗۤ اٰيَةً وَّاٰوَيْنٰهُمَاۤ اِلٰي رَبْوَةٍ ذَاتِ قَرَارٍ وَّمَعِيْنٍ
আমিই তো মারইয়ামের পুত্র ও তার মাকে আয়াতরূপে সৃষ্টি করেছি। তাদেরকে উপযোগী উচ্চভূমির কাছে (কাবায়) আশ্রয় দিয়েছি। যেখানে থাকার ব্যবস্থা আর পরিস্কার পানি (জমজম) রয়েছে।
يٰۤاَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوْا مِنَ الطَّيِّبٰتِ وَاعْمَلُوْا صَالِحًا ؕ اِنِّيْ بِمَا تَعْمَلُوْنَ عَلِيْمٌ ؕ
হে রাসূলরা ! তোমরা পবিত্র বস্তু হ'তে খাবে, আর সংশোধনের কাজ করবে। নিশ্চয়ই আমি খুব জানি, তোমরা যা কিছু করছো।
وَاِنَّ هٰذِهٖۤ اُمَّتُكُمْ اُمَّةً وَّاحِدَةً وَّاَنَا رَبُّكُمْ فَاتَّقُوْنِ
আর নিশ্চয়ই তোমাদের এ জাতি, সবাই একই জাতি। আর আমিই তোমাদের প্রতিপালক। সুতরাং তোমরা আমাকেই ভয় করে চলো।
فَتَقَطَّعُوْۤا اَمْرَهُمْ بَيْنَهُمْ زُبُرًا ؕ كُلُّ حِزْبٍۭ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُوْنَ
কিন্তু লোকেরা তাদের কাজকে নিজেদের মাঝে যুবুর তথা টুকরো টুকরো করে বিভক্ত করেছে। প্রত্যেকটি দল তাদের নিজেদের কাছে যা আছে তা নিয়েই আনন্দিত ।
فَذَرْهُمْ فِيْ غَمْرَتِهِمْ حَتّٰي حِيْنٍ
সুতরাং তুমি তাদেরকে তাদের বিভ্রান্তির মধ্যে ছেড়ে দাও এক নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত।
اَيَحْسَبُوْنَ اَنَّمَا نُمِدُّهُمْ بِهٖ مِنْ مَّالٍ وَّبَنِيْنَ ۙ
তাহলে তারা কি চিন্তা করে ? আমি যে তাদেরকে ধন-সম্পদ আর সন্তান-সন্ততি দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছি।
نُسَارِعُ لَهُمْ فِي الْخَيْرٰتِ ؕ بَلْ لَّا يَشْعُرُوْنَ
তাড়াহুড়া করে তাদের জন্য সব রকম খয়রাত-কল্যাণ পৌঁছে দিচ্ছি, একথা তারা মোটেই অনুভব করছে না।
اِنَّ الَّذِيْنَ هُمْ مِّنْ خَشْيَةِ رَبِّهِمْ مُّشْفِقُوْنَ ۙ
নিশ্চয় যারা নিজেদের প্রতিপালকের ভয়ে সন্ত্রস্ত রয়েছে।
وَالَّذِيْنَ هُمْ بِاٰيٰتِ رَبِّهِمْ يُؤْمِنُوْنَ ۙ
আর যারা তাদের প্রতিপালকের আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে।
وَالَّذِيْنَ هُمْ بِرَبِّهِمْ لَا يُشْرِكُوْنَ ۙ
আর যারা তাদের প্রতিপালকের সাথে কিছুই শরীক করে না।
وَالَّذِيْنَ يُؤْتُوْنَ مَاۤ اٰتَوْا وَّقُلُوْبُهُمْ وَجِلَةٌ اَنَّهُمْ اِلٰي رَبِّهِمْ رٰجِعُوْنَ ۙ
আর যারা (কোরআনের পথে) দান করে, যা কিছু তাদেরকে দেওয়া হয়। আর তাদের অন্তর শঙ্কিত থাকে, কারণ তারা অবশ্যই তাদের প্রতিপালকের দিকে ফিরে যাবে।
اُولٰٓئِكَ يُسٰرِعُوْنَ فِي الْخَيْرٰتِ وَهُمْ لَهَا سٰبِقُوْنَ
তারাই তো সেই দল, যারা কল্যাণের জন্য বিশেষ তৎপর ও সচেষ্ট থাকে, যেনো তারা সবার আগে পৌঁছাতে সক্ষম হয়।
وَلَا نُكَلِّفُ نَفْسًا اِلَّا وُسْعَهَا وَلَدَيْنَا كِتٰبٌ يَّنْطِقُ بِالْحَقِّ وَهُمْ لَا يُظْلَمُوْنَ
আমি কাউকে সাধ্য শক্তির বেশী দায়িত্বভার ন্যস্ত করিনা। আর আমার কাছে এমন এক কিতাব রয়েছে যা যথাযথ ভাবে ব্যক্ত করবে। তাদেরকে কিছুমাত্র অত্যাচার করা হবে না।
بَلْ قُلُوْبُهُمْ فِيْ غَمْرَةٍ مِّنْ هٰذَا وَلَهُمْ اَعْمَالٌ مِّنْ دُوْنِ ذٰلِكَ هُمْ لَهَا عٰمِلُوْنَ
বরং মানুষের অন্তর এই (কিতাবের) ব্যাপারে অসাড় ও অসচেতন অবস্থায় রয়েছে, এছাড়া আর সব কাজেই তারা ব্যতিব্যস্ত রয়েছে, যা তারা সমানে করে যাচ্ছে।
حَتّٰۤي اِذَاۤ اَخَذْنَا مُتْرَفِيْهِمْ بِالْعَذَابِ اِذَا هُمْ يَجْـَٔرُوْنَ ؕ
শেষ পর্যন্ত আমি যখন তাদের মধ্যকার সুখী-ঐশর্যশ্বালী লোকগুলোকে শাস্তি দিয়ে পাকড়াও করবো, তখন তারা চিৎকার করে উঠবে।
لَا تَجْـَٔرُوا الْيَوْمَ ۟ اِنَّكُمْ مِّنَّا لَا تُنْصَرُوْنَ
(বলা হবে) আজ তোমরা চিৎকার করো না। নিশ্চয়ই তোমাদেরকে আমার পক্ষ হতে কোনো সাহায্য করা না।
قَدْ كَانَتْ اٰيٰتِيْ تُتْلٰي عَلَيْكُمْ فَكُنْتُمْ عَلٰۤي اَعْقَابِكُمْ تَنْكِصُوْنَ ۙ
যখন তোমাদেরকে আমার আয়াতগুলো পড়ে শোনানো হতো, তখন কিন্তু তোমরা তোমাদের পিছনে ফিরে চলে যেতে।
مُسْتَكْبِرِيْنَ ۖ بِهٖ سٰمِرًا تَهْجُرُوْنَ
অহংকারী হয়ে এই কোরআন সম্পর্কে গুরুত্ব দিতে না, তোমরা (সামেরী-কথ্যক) অর্থহীন গল্পগুজবে মেতে থাকতে।
اَفَلَمْ يَدَّبَّرُوا الْقَوْلَ اَمْ جَآءَهُمْ مَّا لَمْ يَاْتِ اٰبَآءَهُمُ الْاَوَّلِيْنَ ۫
তবে কি মানুষেরা চিন্তা ভাবনা করে না এই বিশেষ বাণী সম্পর্কে ? না তাদের কাছে সে এমন কিছু নিয়ে এসেছে, যা তাদের বাপ-দাদাদের কাছে আসেনি !
اَمْ لَمْ يَعْرِفُوْا رَسُوْلَهُمْ فَهُمْ لَهٗ مُنْكِرُوْنَ ۫
নাকি, তারা তাদের রাসূলকে চিনতে পারেনি, তাই তারা তাকে অস্বীকার করছে?
اَمْ يَقُوْلُوْنَ بِهٖ جِنَّةٌ ؕ بَلْ جَآءَهُمْ بِالْحَقِّ وَاَكْثَرُهُمْ لِلْحَقِّ كٰرِهُوْنَ
নাকি, তারা বলছে তার মধ্যে পাগলামী-জিন্নাত রয়েছে। বরং সে তো তাদের কাছে সত্য নিয়ে এসেছে। আসলে তাদের অধিকাংশই সত্যকে পছন্দ করে না।
وَلَوِ اتَّبَعَ الْحَقُّ اَهْوَآءَهُمْ لَفَسَدَتِ السَّمٰوٰتُ وَالْاَرْضُ وَمَنْ فِيْهِنَّ ؕ بَلْ اَتَيْنٰهُمْ بِذِكْرِهِمْ فَهُمْ عَنْ ذِكْرِهِمْ مُّعْرِضُوْنَ ؕ
আর যদি মহাসত্য (আল্লাহ) তাদের কামনা-বাসনার অনুসারে কাজ করেন তাহলে আকাশমন্ডলি ও পৃথিবী আর যা কিছু তাদের মাঝে রয়েছে সব কিছুই বেশৃঙ্খল হয়ে যাবে। বরং আমি তাদেরকে দিয়েছি তাদের উপদেশের বাণী (কোরআন)। কিন্তু তারা তাদের উপদেশ বাণী হ'তে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
اَمْ تَسْـَٔلُهُمْ خَرْجًا فَخَرَاجُ رَبِّكَ خَيْرٌ ۖ وَّهُوَ خَيْرُ الرّٰزِقِيْنَ
তুমি কি তাদের কাছে কোনো প্রতিদান চাচ্ছো ? অতচ তোমার প্রতিপালকের প্রতিদানই উত্তম। আর তিনিই হলেন সর্বোত্তম জীবিকাদাতা।
وَاِنَّكَ لَتَدْعُوْهُمْ اِلٰي صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ
আর নিশ্চয়ই তুমি তাদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত পথের দিকেই ডাকছো।
وَاِنَّ الَّذِيْنَ لَا يُؤْمِنُوْنَ بِالْاٰخِرَةِ عَنِ الصِّرَاطِ لَنٰكِبُوْنَ
আর নিশ্চয়ই যারা আখিরাতের প্রতি ঈমান আনে না, তারাই সরল সঠিক পথ ছেড়ে আঁকা-বাঁকা পথে চলে।
وَلَوْ رَحِمْنٰهُمْ وَكَشَفْنَا مَا بِهِمْ مِّنْ ضُرٍّ لَّلَجُّوْا فِيْ طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُوْنَ
আমি যদি তাদেরকে দয়া করি এবং তাদের দুঃখ-কষ্ট দূর করে দিই। তবুও তারা তাদের অবাধ্যতার মধ্যে লেগে থাকবেই ও দিশে হারা হয়ে ঘুরে বেড়াবে।
وَلَقَدْ اَخَذْنٰهُمْ بِالْعَذَابِ فَمَا اسْتَكَانُوْا لِرَبِّهِمْ وَمَا يَتَضَرَّعُوْنَ
নিশ্চয়ই আমি তাদেরকে শাস্তি দিয়ে পাকড়াও করেছি, কিন্তু তারা তাদের প্রতিপালকের কাছে নত হয়নি, আর তারা কাতর প্রার্থনাও করেনি।
حَتّٰۤي اِذَا فَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَابًا ذَا عَذَابٍ شَدِيْدٍ اِذَا هُمْ فِيْهِ مُبْلِسُوْنَ
তাইতো আমি তাদের জন্য কঠিন শাস্তির দরজাসমূহ খুলে দিবো, তখনই তাতে তারা হতাশ হয়ে পড়বে।
وَهُوَ الَّذِيْۤ اَنْشَاَ لَكُمُ السَّمْعَ وَالْاَبْصَارَ وَالْاَفْـِٕدَةَ ؕ قَلِيْلًا مَّا تَشْكُرُوْنَ
আর তিনিই (আল্লাহ) যিনি তোমাদের জন্য কান, চোখ, আর অন্তর সৃষ্টি করে দিয়েছেন। কিন্তু তোমরা তো খুব কমই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।
وَهُوَ الَّذِيْ ذَرَاَكُمْ فِي الْاَرْضِ وَاِلَيْهِ تُحْشَرُوْنَ
আর তিনিই তোমাদেরকে পৃথিবীতে ছড়িয়ে রেখেছেন, আর তাঁরই কাছে তোমাদের সকলকে একত্র করা হবে।
وَهُوَ الَّذِيْ يُحْيٖ وَيُمِيْتُ وَلَهُ اخْتِلَافُ الَّيْلِ وَالنَّهَارِ ؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ
আর তিনিই বাঁচিয়ে রাখেন, আর মৃত্যু দান করেন। দিন ও রাতের পরিবর্তন তো আল্লাহই করে থাকেন। তবুও কি তোমরা বুঝবে না?
بَلْ قَالُوْا مِثْلَ مَا قَالَ الْاَوَّلُوْنَ
বরং তারা বলে, ঠিক যেমন আগেকার লোকগুলো বলেছে।
قَالُوْۤا ءَاِذَا مِتْنَا وَكُنَّا تُرَابًا وَّعِظَامًا ءَاِنَّا لَمَبْعُوْثُوْنَ
তারা বলে, আমরা যখন মরেই যাবো, আর মাটি হয়ে যাবো, আমরা হাড়ে পরিণত হবো, তখনো কি আমাদেরকে বেঁচে উঠতে হবে ?
لَقَدْ وُعِدْنَا نَحْنُ وَاٰبَآؤُنَا هٰذَا مِنْ قَبْلُ اِنْ هٰذَاۤ اِلَّاۤ اَسَاطِيْرُ الْاَوَّلِيْنَ
নিশ্চয়ই ইতিপূর্ব থেকেই এই প্রতিশ্রুতি আমাদেরকে দেওয়া হয়েছে, আর আমাদের বাপ-দাদা দেরকেও। এসব কেবল পূর্ব কালের লোকদের গল্প কাহিনী ছাড়া আর তো কিছুই নয়।
قُلْ لِّمَنِ الْاَرْضُ وَمَنْ فِيْهَاۤ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
তুমি জিজ্ঞাসা করো ! এই পৃথিবী কার ? আর এর মধ্যে যা কিছু রয়েছে সেসব কার ? তোমাদের জানা থাকলে বলো।
سَيَقُوْلُوْنَ لِلّٰهِ ؕ قُلْ اَفَلَا تَذَكَّرُوْنَ
অচিরেই তারা বলবে, আল্লাহর। তুমি বলো ! তবুও কি তোমরা শিক্ষা নিবে না !
قُلْ مَنْ رَّبُّ السَّمٰوٰتِ السَّبْعِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ
তুমি জিজ্ঞাসা করো ! সাত আকাশের প্রতিপালক ও সুমহান সংসদের পরিচালক কে ?
سَيَقُوْلُوْنَ لِلّٰهِ ؕ قُلْ اَفَلَا تَتَّقُوْنَ
তারা বলবে, আল্লাহ। তুমি বলে দাও ! তবুও কি তোমরা ভয় করবে না ?
قُلْ مَنْۢ بِيَدِهٖ مَلَكُوْتُ كُلِّ شَيْءٍ وَّهُوَ يُجِيْرُ وَلَا يُجَارُ عَلَيْهِ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
তুমি জিজ্ঞাসা করো ! প্রত্যেকটি জিনিসের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কার হাতে রয়েছে ? একমাত্র তিনিই আশ্রয় দেন, অথচ তাঁর বিপক্ষে কেউ আশ্রয় দিতে পারে না, যদি তোমরা জেনে থাকো বলে দাও না !
سَيَقُوْلُوْنَ لِلّٰهِ ؕ قُلْ فَاَنّٰي تُسْحَرُوْنَ
অচিরেই তারা বলবে, আল্লাহর কথাই। তুমি বলে দাও ! তা'হলে কোথা থেকে তোমাদেরকে যাদু করা হচ্ছে?
بَلْ اَتَيْنٰهُمْ بِالْحَقِّ وَاِنَّهُمْ لَكٰذِبُوْنَ
বরং আমি তাদের কাছে মহা সত্যকে পৌঁছে দিয়েছি, কিন্তু আসলে তারাই মিথ্যাবাদী।
مَا اتَّخَذَ اللّٰهُ مِنْ وَّلَدٍ وَّمَا كَانَ مَعَهٗ مِنْ اِلٰهٍ اِذًا لَّذَهَبَ كُلُّ اِلٰهٍۭ بِمَا خَلَقَ وَلَعَلَا بَعْضُهُمْ عَلٰي بَعْضٍ ؕ سُبْحٰنَ اللّٰهِ عَمَّا يَصِفُوْنَ ۙ
আল্লাহ কাউকে কোন সন্তান হিসেবে গ্রহণ করেননি। আর আল্লাহর সাথে অন্য কোনো বিধানদাতাও নেই। যদি থাকতো তবে প্রত্যেক বিধানদাতা নিজের সৃষ্টি করা বস্তু কেড়ে নিয়ে যেতো, আর একে অন্যের উপরে প্রাধান্য বিস্তার করতো। তা হ'তে আল্লাহ পবিত্র,যা কিছু তারা রচনা করছে।
عٰلِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَتَعٰلٰي عَمَّا يُشْرِكُوْنَ
আল্লাহ জানেন, গোপন ও প্রকাশ্য সব কিছুই। অতএব তিনি বহু ঊর্ধ্বে তা'হতে যা কিছু তারা শরীক করছে।
قُلْ رَّبِّ اِمَّا تُرِيَنِّيْ مَا يُوْعَدُوْنَ ۙ
তুমি বলো, হে আমার প্রতিপালক, আপনি যদি আমাকে দেখাতে চান, যে বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি দেয়া হচ্ছে।
رَبِّ فَلَا تَجْعَلْنِيْ فِي الْقَوْمِ الظّٰلِمِيْنَ
হে আমার প্রতিপালক! তবে আপনি আমাকে সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করবেন না।
وَاِنَّا عَلٰۤي اَنْ نُّرِيَكَ مَا نَعِدُهُمْ لَقٰدِرُوْنَ
আর নিশ্চয়ই আমার সে শক্তি আছে, তাদের সাথে আমার যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, তোমাকে তা দেখিয়ে দিব।
اِدْفَعْ بِالَّتِيْ هِيَ اَحْسَنُ السَّيِّئَةَ ؕ نَحْنُ اَعْلَمُ بِمَا يَصِفُوْنَ
তুমি প্রতিহত করবে তা দিয়ে যা মন্দের মোকাবেলা উত্তম। আমি খুব জানি, যা কিছু তারা বলছে।
وَقُلْ رَّبِّ اَعُوْذُ بِكَ مِنْ هَمَزٰتِ الشَّيٰطِيْنِ ۙ
আর তুমি বল, হে আমার প্রতিপালক ! আমি শয়তানের প্ররোচনা থেকে আপনার আশ্রয় চাই,
وَاَعُوْذُ بِكَ رَبِّ اَنْ يَّحْضُرُوْنِ
আর হে আমার প্রতিপালক ! আপনার নিকট আশ্রয় চাই যে শয়তান আমার নিকট উপস্থিত হবে।
حَتّٰۤي اِذَا جَآءَ اَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُوْنِ ۙ
শেষ পর্যন্ত তাদের মধ্যে যখন কারোর মৃত্যু এসে পড়ে তখন বলে, হে আমার প্রতিপালক ! আপনি আমাকে আবার পৃথিবীতে ফেরত পাঠিয়ে দিন।
لَعَلِّيْۤ اَعْمَلُ صَالِحًا فِيْمَا تَرَكْتُ كَلَّا ؕ اِنَّهَا كَلِمَةٌ هُوَ قَآئِلُهَا ؕ وَمِنْ وَّرَآئِهِمْ بَرْزَخٌ اِلٰي يَوْمِ يُبْعَثُوْنَ
যাতে আমি কিছু সংশোধনের কাজ করতে পারি, যা কিছু তার মধ্যে ছেড়ে এসেছি। এটাই তাদের একমাত্র কথা নয়, যা তারা বলছে ! ওদের পিছনে বারঝাখ-পর্দা পড়ে রয়েছে, তাদেরকে যেদিন আবার তোলা হবে, যে পর্যন্ত তা থাকবে।
فَاِذَا نُفِخَ فِي الصُّوْرِ فَلَاۤ اَنْسَابَ بَيْنَهُمْ يَوْمَئِذٍ وَّلَا يَتَسَآءَلُوْنَ
অতঃপর যখন নতুন আকৃতি দেওয়া হবে,তখন তাদের মাঝে সেদিন আত্মীয়তার কোনো বন্ধন থাকবে না। আর তারা পরস্পরে খোঁজ খবর করবে না।
فَمَنْ ثَقُلَتْ مَوَازِيْنُهٗ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
অতঃপর যার ওজন ভারী হবে, তারাই তো সফল হবে।
وَمَنْ خَفَّتْ مَوَازِيْنُهٗ فَاُولٰٓئِكَ الَّذِيْنَ خَسِرُوْۤا اَنْفُسَهُمْ فِيْ جَهَنَّمَ خٰلِدُوْنَ ۚ
আর যার ওজন হালকা হবে, তারাই তো সেই দল, যারা নিজেদেরকে ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে ফেলে রেখেছে। জাহান্নামের মধ্যেই তারা চিরকাল থাকতে বাধ্য হবে।
تَلْفَحُ وُجُوْهَهُمُ النَّارُ وَهُمْ فِيْهَا كٰلِحُوْنَ
আগুন তাদের মুখমণ্ডল জ্বালিয়ে দিবে। তারা সেখানে চেহারায় বীভৎস হবে।
اَلَمْ تَكُنْ اٰيٰتِيْ تُتْلٰي عَلَيْكُمْ فَكُنْتُمْ بِهَا تُكَذِّبُوْنَ
বলা হবে, আমার আয়াতগুলো কি তোমাদের নিকট তিলাওয়াত করা হতো না? তোমরা কিন্তু তখন তা মিথ্যা জানতে।
قَالُوْا رَبَّنَا غَلَبَتْ عَلَيْنَا شِقْوَتُنَا وَكُنَّا قَوْمًا ضَآلِّيْنَ
তারা বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক ! আমাদের উপরে আমাদের দুর্ভাগ্যই যে প্রাধান্য বিস্তার করেছিলো; আর আমরা পথভ্রষ্ট জাতিই ছিলাম।
رَبَّنَاۤ اَخْرِجْنَا مِنْهَا فَاِنْ عُدْنَا فَاِنَّا ظٰلِمُوْنَ
হে আমাদের প্রতিপালক ! এ (আগুন) থেকে আমাদেরকে বের করে নিন। অতঃপর যদি আমরা পুনরায় তেমন কাজ করি, তবে আমরা সীমালঙ্ঘনকারী (প্রমাণিত) হবো।
قَالَ اخْسَـُٔوْا فِيْهَا وَلَا تُكَلِّمُوْنِ
আল্লাহ বলবেন, তোমরা সবাই ধিকৃত অবস্থায় সেখানে পড়ে থাকো। আমার সাথে তোমরা কোন কথাই বলবে না।
اِنَّهٗ كَانَ فَرِيْقٌ مِّنْ عِبَادِيْ يَقُوْلُوْنَ رَبَّنَاۤ اٰمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا وَاَنْتَ خَيْرُ الرّٰحِمِيْنَ ۚۖ
তবে কি আমারই দাসদের মধ্যে এমন একটি দল আছে, যারা বলে, হে আমাদের প্রতিপালক ! আমরা ঈমান এনেছি। তাই আপনি আমাদের ক্ষমা করুন। আমাদের উপর দয়া করুন, আসলে আপনিই সকল দয়াকারীদের চাইতে অতি উত্তম দয়ালু।
فَاتَّخَذْتُمُوْهُمْ سِخْرِيًّا حَتّٰۤي اَنْسَوْكُمْ ذِكْرِيْ وَكُنْتُمْ مِّنْهُمْ تَضْحَكُوْنَ
অথচ তোমরা তাদেরকে ঠাট্টা বিদ্রুপ করতে, এমনকি তোমরা আমার স্মরণ ভুলে বসলে। তোমরা তো তাদের সাথে কেবল ঠাট্টাই করতে।
اِنِّيْ جَزَيْتُهُمُ الْيَوْمَ بِمَا صَبَرُوْۤا ۙ اَنَّهُمْ هُمُ الْفَآئِزُوْنَ
নিশ্চয়ই আমি আজ তাদেরকে পুরস্কার দিয়েছি, যা নিয়ে তারা ধৈর্য অবলম্বন করেছিলো। তারাই যে সফলকাম হলো।
قٰلَ كَمْ لَبِثْتُمْ فِي الْاَرْضِ عَدَدَ سِنِيْنَ
আল্লাহ বলবেন, বছরের হিসেব মোতাবিক পৃথিবীতে তোমরা কতক্ষন ছিলে ?
قَالُوْا لَبِثْنَا يَوْمًا اَوْ بَعْضَ يَوْمٍ فَسْـَٔلِ الْعَآدِّيْنَ
তারা বলবে, আমরা সেখানে ছিলাম একদিন কিংবা একদিনের কিছু সময়। তবে আপনি গণনাকারীকে জিজ্ঞাসা করুন।
قٰلَ اِنْ لَّبِثْتُمْ اِلَّا قَلِيْلًا لَّوْ اَنَّكُمْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ
আল্লাহ বলবেন, তোমরা সেখানে ছিলে বটে কিন্তু খুবই অল্প সময় বৈ-তো-নয়। তোমরা যদি জানতেই পারতে ?
اَفَحَسِبْتُمْ اَنَّمَا خَلَقْنٰكُمْ عَبَثًا وَّاَنَّكُمْ اِلَيْنَا لَا تُرْجَعُوْنَ
তাহলে কি তোমরা ভেবেছিলে ? আমি তোমাদেরকে খামাখাই-অনর্থক সৃষ্টি করেছিলাম, আর তোমরা আমার দিকে কিছুতেই ফিরবে না।
فَتَعٰلَي اللّٰهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ ۚ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا هُوَ ۚ رَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيْمِ
অতএব মহান শ্রেষ্ঠ আল্লাহ, যিনি প্রকৃত অধিপতি। তিনি ছাড়া আর কোনো সত্যিকারের শাসনকর্তা নেই। তিনি হলেন মহা সম্মানিত সংসদের প্রতিপালক।
وَمَنْ يَّدْعُ مَعَ اللّٰهِ اِلٰـهًا اٰخَرَ ۙ لَا بُرْهَانَ لَهٗ بِهٖ ۙ فَاِنَّمَا حِسَابُهٗ عِنْدَ رَبِّهٖ ؕ اِنَّهٗ لَا يُفْلِحُ الْكٰفِرُوْنَ
আর যে কেউ আল্লাহর সাথে শাসনকর্তা হিসেবে অন্য কাউকে ডাকছে, যার সমর্থনের জন্য কোনো প্রমাণ বলতে কিছুই নেই। সুতরাং তার হিসাব নিকাশ তারই প্রতিপালকের কাছেই রয়েছে। নিশ্চয়ই তিনি কাফিরগুলোকে সফলকাম হতে দিবেন না।
وَقُلْ رَّبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَاَنْتَ خَيْرُ الرّٰحِمِيْنَ
তুমি বলো, হে আমার প্রতিপালক ! আপনি ক্ষমা করুন, দয়া করুন। আপনিই তো সকল দয়াকারীদের চাইতে অতি উত্তম দয়ালু।