সূরা : সুরা শোয়া'রা
طٰسٓمّٓ
ত্ব-সীম-মীম।
لَعَلَّكَ بَاخِعٌ نَّفْسَكَ اَلَّا يَكُوْنُوْا مُؤْمِنِيْنَ
তুমি হয়তো এ চিন্তায় তোমার নিজের প্রাণ ধ্বংস করে ফেলবে ! কারণ মানুষেরা যে ঈমান আনছে না।
اِنْ نَّشَاْ نُنَزِّلْ عَلَيْهِمْ مِّنَ السَّمَآءِ اٰيَةً فَظَلَّتْ اَعْنَاقُهُمْ لَهَا خٰضِعِيْنَ
অথচ আমি যদি ইচ্ছা করি, তাহলে আকাশ থেকে তাদের উপর এমন একটি নিদর্শন অবতীর্ণ করতে সক্ষম যে, তাদের ঘাড়গুলো সর্বদাই তাঁর প্রতি নত হয়ে থাকবে।
وَمَا يَاْتِيْهِمْ مِّنْ ذِكْرٍ مِّنَ الرَّحْمٰنِ مُحْدَثٍ اِلَّا كَانُوْا عَنْهُ مُعْرِضِيْنَ
দয়াময়ের পক্ষ হ'তে তাদের কাছে এমন কোনো নতুন উপদেশ আসে না। যা হ'তে তারা মুখ ফিরিয়ে নেয় না।
فَقَدْ كَذَّبُوْا فَسَيَاْتِيْهِمْ اَنْۢبٰٓؤُا مَا كَانُوْا بِهٖ يَسْتَهْزِءُوْنَ
অতএব নিশ্চয়ই তারা অস্বীকার করেছে। সুতরাং তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত, তার সংবাদ সীঘ্রই তাদের কাছে এসে পড়বে।
اَوَلَمْ يَرَوْا اِلَي الْاَرْضِ كَمْ اَنْۢبَتْنَا فِيْهَا مِنْ كُلِّ زَوْجٍ كَرِيْمٍ
তাহলে তারা কি পৃথিবীর দিকে লক্ষ্য করে না? যে, তার মধ্যে আমি প্রত্যেকটি জিনিস জোড়ায় জোড়ায় চমৎকারভাবে সৃষ্টি করেছি।
اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَةً ؕ وَمَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِيْنَ নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন না।
নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু তাদের অধিকাংশই মুমিন না।
وَاِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيْزُ الرَّحِيْمُ
আর নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক, তিনি তো মহা সম্মানী ও পরম দয়ালু।
وَاِذْ نَادٰي رَبُّكَ مُوْسٰۤي اَنِ ائْتِ الْقَوْمَ الظّٰلِمِيْنَ ۙ
আর তোমার প্রতিপালক যখন মূসাকে ডেকে বলেন যে, তুমি সীমালঙ্ঘনকারী জাতির নিকট যাও।
قَالَ رَبِّ اِنِّيْۤ اَخَافُ اَنْ يُّكَذِّبُوْنِ ؕ
মূসা বলে, হে আমার প্রতিপালক ! নিশ্চয়ই আমি আশংকা করছি যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে।
وَيَضِيْقُ صَدْرِيْ وَلَا يَنْطَلِقُ لِسَانِيْ فَاَرْسِلْ اِلٰي هٰرُوْنَ
আমার অন্তর সংকুচিত হচ্ছে। আর আমার ভাষাও যে ঠিকমত চলছে না। সুতরাং আপনি হারুনের প্রতিও (ওহী) পাঠান।
وَلَهُمْ عَلَيَّ ذَنْۢبٌ فَاَخَافُ اَنْ يَّقْتُلُوْنِ ۚ
আর তাদের পক্ষ থেকে আমার উপরে একটি অপরাধের অভিযোগ আছে। সুতরাং আমি আশংকা করছি যে, তারা হয়তো আমাকে হত্যা করবে।
(15) قَالَ كَلَّا ۚ فَاذْهَبَا بِاٰيٰتِنَاۤ اِنَّا مَعَكُمْ مُّسْتَمِعُوْنَ
(আল্লাহ) বলেন, না ! তা কখনও করতে পরবে না। অতএব তোমরা দু'জন যাও, আমার নিদর্শননাবলী নিয়ে। নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সাথেই রয়েছি, আমি সবই শুনবো।
فَاْتِيَا فِرْعَوْنَ فَقُوْلَاۤ اِنَّا رَسُوْلُ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ ۙ
সুতরাং তোমরা দু'জনে ফিরআউনের কাছে যাও, অতঃপর তোমরা বলো, নিশ্চয়ই আমরা দু'জন বিশ্বজগতের প্রতিপালকের রাসূল হয়ে এসেছি।
اَنْ اَرْسِلْ مَعَنَا بَنِيْۤ اِسْرَآءِيْلَ ؕ
আরও বল যে, তুমি ইসরাঈলের সন্তানদেরকে আমাদের সাথে যেতে দাও।
قَالَ اَلَمْ نُرَبِّكَ فِيْنَا وَلِيْدًا وَّلَبِثْتَ فِيْنَا مِنْ عُمُرِكَ سِنِيْنَ ۙ
ফিরআউন বলে, আমরা কি তোমাকে আমাদের কাছে রেখে সন্তানের মতোই প্রতিপালন করিনি ? আর তুমি আমাদের মাঝেই তো তোমার জীবনের কয়েকটি বছর কাটিয়েছো।
وَفَعَلْتَ فَعْلَتَكَ الَّتِيْ فَعَلْتَ وَاَنْتَ مِنَ الْكٰفِرِيْنَ
আর তুমি যে কাজ করছো, সেটাও তো গুরুতর কাজই বটে। আসলে তুমি তো কাফিরদের অন্তর্ভুক্ত।
قَالَ فَعَلْتُهَاۤ اِذًا وَّاَنَا مِنَ الضَّآلِّيْنَ ؕ
মূসা বলে, আমি তা সেই সময় করেছিলাম, যখন আমি পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।
فَفَرَرْتُ مِنْكُمْ لَمَّا خِفْتُكُمْ فَوَهَبَ لِيْ رَبِّيْ حُكْمًا وَّجَعَلَنِيْ مِنَ الْمُرْسَلِيْنَ
অতঃপর আমি তোমাদের হ'তে পালিয়ে গেলাম, কারণ আমি তোমাদেরকে ভয় করেছিলাম। তারপর আমার প্রতিপালক আমাকে জ্ঞান দান করলেন। আর আমাকে রাসূলদের অন্তর্ভূক্ত করলেন।
وَتِلْكَ نِعْمَةٌ تَمُنُّهَا عَلَيَّ اَنْ عَبَّدْتَّ بَنِيْۤ اِسْرَآءِيْلَ ؕ
আর তুমি কি এটাকেই আমার উপরে তোমার একটা বিরাট অনুগ্রহ বলে চালাতে চাও ? যে, তুমি ইসরাঈল সন্তানদেরকে দাস বানিয়ে রাখবে?
قَالَ فِرْعَوْنُ وَمَا رَبُّ الْعٰلَمِيْنَ ؕ
ফিরআউন বলে, বিশ্বজগতের প্রতিপালক আবার কি (কে)?
قَالَ رَبُّ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا ؕ اِنْ كُنْتُمْ مُّوْقِنِيْنَ
মুসা বলে, (বিশ্বজগতের প্রতিপালক) আকাশমণ্ডলীর ও পৃথিবীর চিরস্থায়ী প্রতিপালক, আর তাদের উভয়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে, সে সবেরও। এখন তুমি যদি দৃঢ় বিশ্বাস করতে সক্ষম হও !
قَالَ لِمَنْ حَوْلَهٗۤ اَلَا تَسْتَمِعُوْنَ
তার চারপাশে যারা ছিলো তাদেরকে সে বলে, তোমরা কি কিছু শুনতে পাও না?
قَالَ رَبُّكُمْ وَرَبُّ اٰبَآئِكُمُ الْاَوَّلِيْنَ
মূসা বলে, তোমাদের প্রতিপালক এবং তোমাদের বাপ-দাদাদেরও প্রতিপালক।
قَالَ اِنَّ رَسُوْلَكُمُ الَّذِيْۤ اُرْسِلَ اِلَيْكُمْ لَمَجْنُوْنٌ
ফিরআউন বলে, তোমাদের এই রাসুলটি, যাকে তোমাদের প্রতি পাঠানো হয়েছে, অবশ্যই একটা পাগল !
قَالَ رَبُّ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ وَمَا بَيْنَهُمَا ؕ اِنْ كُنْتُمْ تَعْقِلُوْنَ
মূসা বলে, পূর্ব ও পশ্চিমের প্রতিপালক। আর এ দু'য়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে সে সবেরও, যদি তোমরা বুঝে থাকো, তবেই তো !
قَالَ لَئِنِ اتَّخَذْتَ اِلٰـهًا غَيْرِيْ لَاَجْعَلَنَّكَ مِنَ الْمَسْجُوْنِيْنَ
ফিরআউন বলে, তুমি যদি আমাকে ছাড়া অন্যকে আইনদাতারূপে গ্রহণ করো, তাহলে অবশ্যই আমি তোমাকে জেলখানায় পাঠিয়ে দিবো।
قَالَ اَوَلَوْ جِئْتُكَ بِشَيْءٍ مُّبِيْنٍ ۚ
মূসা বলে, আমি যদি তোমাদের কাছে কোনো সুস্পষ্ট বস্তু নিয়ে এসে থাকি তবও?
قَالَ فَاْتِ بِهٖۤ اِنْ كُنْتَ مِنَ الصّٰدِقِيْنَ
ফিরআউন বলে, তবে সে বস্তুটি নিয়ে এসো, যদি তুমি সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হয়েই থাকো।
فَاَلْقٰي عَصَاهُ فَاِذَا هِيَ ثُعْبَانٌ مُّبِيْنٌ ۚۖ
তারপরে মূসা তার সাহারার শক্তি দেখানো শুরু করলে তখনি তা সুস্পষ্ট অজগরের মতো মনে হচ্ছিলো।
وَّنَزَعَ يَدَهٗ فَاِذَا هِيَ بَيْضَآءُ لِلنّٰظِرِيْنَ
আর মূসা নিজের একখানা হাত বের করে, তখন তা দর্শকের জন্যে উজ্জ্বল মনে হয়।
قَالَ لِلْمَلَاِ حَوْلَهٗۤ اِنَّ هٰذَا لَسٰحِرٌ عَلِيْمٌ ۙ
তার চার পাশে উপস্থিত মালাউ (মৌলভী হুজুর ও অফিসারদের) সে বলে, এ তো দেখছি এমন দক্ষ-আলেম যাদুকর।'
يُّرِيْدُ اَنْ يُّخْرِجَكُمْ مِّنْ اَرْضِكُمْ بِسِحْرِهٖ ۖ فَمَاذَا تَاْمُرُوْنَ
(ফিরআউন বলে), মূসা চায় তোমাদেরকে তোমাদের দেশ থেকে বের করে দিতে, তার যাদুর সাহায্যে। এখন তোমরা আমাকে কি সব নির্দেশ মানতে বলো?
قَالُوْۤا اَرْجِهْ وَاَخَاهُ وَابْعَثْ فِي الْمَدَآئِنِ حٰشِرِيْنَ ۙ
তারা বলে, তার ও তার ভাইয়ের ব্যাপার স্থগিত রাখো। আর সংগ্রহকারীদেরকে শহরে শহরে পাঠিয়ে দাও।
يَاْتُوْكَ بِكُلِّ سَحَّارٍ عَلِيْمٍ
তোমার কাছে প্রত্যেকটি দক্ষ-আলেম যাদুকরকে নিয়ে আসবে।
فَجُمِعَ السَّحَرَةُ لِمِيْقَاتِ يَوْمٍ مَّعْلُوْمٍ ۙ
অতঃপর যাদুকরদেরকে একটি দিনের নির্দিষ্ট সময়ে সমবেত করা হয়।
وَّقِيْلَ لِلنَّاسِ هَلْ اَنْتُمْ مُّجْتَمِعُوْنَ ۙ
আর লোকদেরকে বলে দেওয়া হয়, তোমরা কি সম্মেলনে সমবেত হচ্ছো?
لَعَلَّنَا نَتَّبِعُ السَّحَرَةَ اِنْ كَانُوْا هُمُ الْغٰلِبِيْنَ
হয়তো আমরা যাদুকরদের পথই অনুসরণ করবো, যদি তারা জয়ী হয়।
فَلَمَّا جَآءَ السَّحَرَةُ قَالُوْا لِفِرْعَوْنَ اَئِنَّ لَنَا لَاَجْرًا اِنْ كُنَّا نَحْنُ الْغٰلِبِيْنَ
অতঃপর যাদুকরেরা যখন আসে, তারা তখন ফিরআউনকে বলে, আমরা যদি জয়লাভ করি, তাহলে আমাদেরও কিছু পুরুস্কার থাকবে তো ?
قَالَ نَعَمْ وَاِنَّكُمْ اِذًا لَّمِنَ الْمُقَرَّبِيْنَ
ফিরআউন বলে, হ্যাঁ, আর নিশ্চয়ই তোমরা তখন আমারই ঘনিষ্ঠদের অন্তর্ভূক্ত হবে।
قَالَ لَهُمْ مُّوْسٰۤي اَلْقُوْا مَاۤ اَنْتُمْ مُّلْقُوْنَ
মূসা তাদেরকে বলে, তোমাদের যা কিছু পেশ করার মতো রয়েছে, তা তোমরা পেশ পারো।
فَاَلْقَوْا حِبَالَهُمْ وَعِصِيَّهُمْ وَقَالُوْا بِعِزَّةِ فِرْعَوْنَ اِنَّا لَنَحْنُ الْغٰلِبُوْنَ
অতঃপর তারা নিজেদের মনগড়া ফলসফা ও মতবাদ পেশ করে। আর তারা বলে, নিশ্চয়ই আমরা ফিরআউনের সম্মানের সহিত আমরা বিজয়ী হবো !
*26(44),নং আয়াতের حبا لهم শব্দের ব্যাখ্যায় 3(103),...।
فَاَلْقٰي مُوْسٰي عَصَاهُ فَاِذَا هِيَ تَلْقَفُ مَا يَاْفِكُوْنَ ۚۖ 45
অতঃপর মূসা তার সাহারার শক্তিকে পেশ করলে তখনি তাদের সে সব গিলে ফেলতে লাগে, তারা যা কিছু মিথ্যা মনগড়া রচনা করেছিলো।
قَالُوْۤا اٰمَنَّا بِرَبِّ الْعٰلَمِيْنَ ۙ 47
তারা বলে, আমরা সবাই বিশ্বজগতের প্রতিপালকের উপর ঈমান আনলাম।
قَالَ اٰمَنْتُمْ لَهٗ قَبْلَ اَنْ اٰذَنَ لَكُمْ ۚ اِنَّهٗ لَكَبِيْرُكُمُ الَّذِيْ عَلَّمَكُمُ السِّحْرَ ۚ فَلَسَوْفَ تَعْلَمُوْنَ ؕ لَاُقَطِّعَنَّ اَيْدِيَكُمْ وَاَرْجُلَكُمْ مِّنْ خِلَافٍ وَّلَاُوصَلِّبَنَّكُمْ اَجْمَعِيْنَ ۚ
ফিরআউন বলে, তোমরা তো তার প্রতি বিশ্বাস করলে, তোমাদেরকে আমি অনুমতি দান করার পূর্বেই। বোধ হয় সেই তোমাদের বড় নেতা, হয়তো সে তোমাদেরকে যাদু শিক্ষা দিয়েছে। শীঘ্রই তোমরা অবশ্যই বুঝতে পারবে। আমি অবশ্যই তোমাদের হাত পায়ে বেড়ী পরিয়ে (অচল করে) দিবো, আর তোমাদের সবাইকে শুলে চড়াবো।
قَالُوْا لَا ضَيْرَ ۫ اِنَّاۤ اِلٰي رَبِّنَا مُنْقَلِبُوْنَ ۚ
তারা বলে, কোনো ক্ষতি নেই তাতে, নিশ্চয়ই আমরা তো আমাদের প্রতিপালকের দিকেই ফিরে যাবো।
اِنَّا نَطْمَعُ اَنْ يَّغْفِرَ لَنَا رَبُّنَا خَطٰيٰنَاۤ اَنْ كُنَّاۤ اَوَّلَ الْمُؤْمِنِيْنَ ؕ
নিশ্চয়ই আমরা আশা করি যে, আমাদের প্রতিপালক আমাদের ভূলত্রুটিগুলোকে ক্ষমা করে দিবেন, এজন্য যে আমরা হলাম বিশ্বাসীদের প্রথম।
وَاَوْحَيْنَاۤ اِلٰي مُوْسٰۤي اَنْ اَسْرِ بِعِبَادِيْۤ اِنَّكُمْ مُّتَّبَعُوْنَ
আর আমি মূসার প্রতি ওহী পাঠালাম, যেনো সে আমার দাসদেরকে নিয়ে রাতের বেলা চলে যায়, নিশ্চয়ই তোমাদেরকে পিজনে ধাওয়া করবে।
فَاَرْسَلَ فِرْعَوْنُ فِي الْمَدَآئِنِ حٰشِرِيْنَ ۚ
অতঃপর ফিরআউন শহরগুলোর মধ্যে (লোক) সংগ্রহকারীদেরকে পাঠায়।
اِنَّ هٰۤؤُلَآءِ لَشِرْذِمَةٌ قَلِيْلُوْنَ ۙ
এই বলে যে, নিশ্চয় এরা ছোট একটি দল বৈ-তো-নয়।
فَاَخْرَجْنٰهُمْ مِّنْ جَنّٰتٍ وَّعُيُوْنٍ ۙ
এরপর আমিই তাদেরকে জান্নাত তথা বাগান ও ঝর্ণাধারা হতে বের করে তাড়িয়ে দিয়েছি।
كَذٰلِكَ ؕ وَاَوْرَثْنٰهَا بَنِيْۤ اِسْرَآءِيْلَ ؕ
এভাবেই তো আমি ইসরাঈল সন্তাদেরকে সে সবের উত্তারাধিকারী বানাই।
فَاَتْبَعُوْهُمْ مُّشْرِقِيْنَ
সূর্যোদয়ের সময়ে তারা তাদের পিছনে ধাওয়া শুরু করে।
فَلَمَّا تَرَآءَ الْجَمْعٰنِ قَالَ اَصْحٰبُ مُوْسٰۤي اِنَّا لَمُدْرَكُوْنَ ۚ
অতঃপর তারা যখন সৈন্য দলকে দেখতে পায়। মূসার সাথীরা বলতে লাগে, নিশ্চয়ই আমরা ধরা পড়ে গেলাম !
قَالَ كَلَّا ۚ اِنَّ مَعِيَ رَبِّيْ سَيَهْدِيْنِ
মূসা বলে, না ! কখনো তা সম্ভব নয়। কারণ আমার সাথে আমার প্রতিপালক রয়েছেন। আর শীঘ্রই তিনি আমাকে পথ দেখিয়ে দিবেন।
فَاَوْحَيْنَاۤ اِلٰي مُوْسٰۤي اَنِ اضْرِبْ بِّعَصَاكَ الْبَحْرَ ؕ فَانْفَلَقَ فَكَانَ كُلُّ فِرْقٍ كَالطَّوْدِ الْعَظِيْمِ ۚ
অতঃপর আমি মুসার প্রতি এই ওহী পাঠালাম যে, তুমি সমুদ্রের সাথে সাথে নিজের লাঠি মারতে মারতে চলতে থাকো। অতঃপর তাদের প্রত্যেক দল বিভক্ত হয়ে বিশাল টিলার মতো হয়ে যায়।
وَاَنْجَيْنَا مُوْسٰي وَمَنْ مَّعَهٗۤ اَجْمَعِيْنَ ۚ
আমিই তো মূসাকে, আর তার সাথে যারা ছিলো সবাইকে উদ্ধার করি।
اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَةً ؕ وَمَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِيْنَ
নিশ্চয়ই এর মধ্যে একটি নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে অধিকাংশই বিশ্বাসী হতে চায় না।
وَاِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيْزُ الرَّحِيْمُ
আর নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক, তিনি তো মহা সম্মানী ও পরম দয়ালু।
وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَاَ اِبْرٰهِيْمَ ۘ
আর তুমি তাদের কাছে ইবরাহীমের সংবাদ পাঠ করে শুনাও।
اِذْ قَالَ لِاَبِيْهِ وَقَوْمِهٖ مَا تَعْبُدُوْنَ
ইবরাহীম যখন তার পিতার ও তার জাতির উদ্দেশ্যে বলে, তোমরা কিসের পূজা করছো ?
قَالُوْا نَعْبُدُ اَصْنَامًا فَنَظَلُّ لَهَا عٰكِفِيْنَ
তারা বলে, আমরা তো কিছু মূর্তির (নিজেদের হাতে বানানো ভগবান ও দেব-দেবতাদের) পূজাই করছি। আর সেগুলোর কাছে বসে ধ্যান সাধনা করে থাকি।
قَالَ هَلْ يَسْمَعُوْنَكُمْ اِذْ تَدْعُوْنَ ۙ
সে বলে, তোমরা যখন ডাকো, তখন তোমাদের কোনও কথা তারা শোনে কি ?
اَوْ يَنْفَعُوْنَكُمْ اَوْ يَضُرُّوْنَ
অথবা তোমাদের উপকার করতে পারে কি ? কিংবা তোমাদের কোনো ক্ষতি করতে পারে কি ?
قَالُوْا بَلْ وَجَدْنَاۤ اٰبَآءَنَا كَذٰلِكَ يَفْعَلُوْنَ
তারা বলে, না ! বরং আমরা আমাদের বাপ-দাদাদেরকে পেয়েছি, তারা এরূপই করতেন।
قَالَ اَفَرَءَيْتُمْ مَّا كُنْتُمْ تَعْبُدُوْنَ ۙ
সে বলে, তবে কি তোমরা ঐগুলোকে ভেবে দেখেছো, যাদের পূজা অর্চনা তোমরা করছো?
اَنْتُمْ وَاٰبَآؤُكُمُ الْاَقْدَمُوْنَ ۫ۖ
তোমরা এবং তোমাদের বাপ-দাদারা, যারা অতীত হয়েছে।
فَاِنَّهُمْ عَدُوٌّ لِّيْۤ اِلَّا رَبَّ الْعٰلَمِيْنَ ۙ
সুতরাং নিশ্চয়ই তারা আমার শত্রু। একমাত্র বিশ্বজগতের প্রতিপালক ছাড়া।
الَّذِيْ خَلَقَنِيْ فَهُوَ يَهْدِيْنِ ۙ
যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই আমাকে সঠিক পথ দেখিয়ে দিয়েছেন।
وَاِذَا مَرِضْتُ فَهُوَ يَشْفِيْنِ ۪ۙ
আর আমি যখন অসুস্থ হই, তখন যিনি আমাকে আরোগ্য দান করেন।
وَالَّذِيْ يُمِيْتُنِيْ ثُمَّ يُحْيِيْنِ ۙ
আর যিনি আমাকে মৃত্য দিবেন, এরপর জীবিত করবেন।
وَالَّذِيْۤ اَطْمَعُ اَنْ يَّغْفِرَ لِيْ خَطِيْٓئَتِيْ يَوْمَ الدِّيْنِ ؕ
আর সেই মহান আল্লাহর কাছ থেকে আমি আশা পোষণ করছি যে, বিচারের দিনে আমার ভুলত্রুটি ক্ষমা করে দিবেন।
رَبِّ هَبْ لِيْ حُكْمًا وَّاَلْحِقْنِيْ بِالصّٰلِحِيْنَ ۙ
হে আমার প্রতিপালক ! আপনি আমাকে রাজত্ব করার ক্ষমতা দান করুন। আর আমাকে সংশোধনকারীদের অন্তর্ভূক্ত করুন।
وَاجْعَلْ لِّيْ لِسَانَ صِدْقٍ فِي الْاٰخِرِيْنَ ۙ
আর আমার কথা পরবর্তী কালের লোকদের কাছে সত্য সঠিকভাবে কায়েম রাখুন।
وَاجْعَلْنِيْ مِنْ وَّرَثَةِ جَنَّةِ النَّعِيْمِ ۙ
আর আপনি আমাকে নিয়ামতে পরিপূর্ণ জান্নাতের উত্তারাধিকারীদের অন্তর্ভূক্ত করুন।
وَاغْفِرْ لِاَبِيْۤ اِنَّهٗ كَانَ مِنَ الضَّآلِّيْنَ ۙ
আর আপনি আমার পিতাকে ক্ষমা করুন, কারণ সে অবশ্যই পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভূক্ত।
وَلَا تُخْزِنِيْ يَوْمَ يُبْعَثُوْنَ ۙ
আর (হাশরের) পুনরুত্থানের দিনে আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না।
يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَّلَا بَنُوْنَ ۙ
যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কিছুমাত্র উপকারে আসবে না।
اِلَّا مَنْ اَتَي اللّٰهَ بِقَلْبٍ سَلِيْمٍ ؕ
তবে যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে প্রশান্ত-বিশুদ্ধ অন্তর নিয়ে আসবে, তার কথা ভিন্ন।
وَاُزْلِفَتِ الْجَنَّةُ لِلْمُتَّقِيْنَ ۙ
মহৎব্যক্তিদের জন্যে জান্নাত নিকটে আনা হবে।
وَبُرِّزَتِ الْجَحِيْمُ لِلْغٰوِيْنَ
আর বিভ্রান্ত লোকদের জন্যে (জাহান্নামের) সংকীর্ণ জায়গা খোলা হবে।
وَقِيْلَ لَهُمْ اَيْنَ مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُوْنَ ۙ
তাদেরকে বলা হবে, তোমরা যাদেরকে দাসত্ব করতে তারা কোথায় ?
مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ ؕ هَلْ يَنْصُرُوْنَكُمْ اَوْ يَنْتَصِرُوْنَ ؕ
আল্লাহ বাদে, তারা তোমাদের কোনও সাহায্য করছে না কি? অথবা নিজেদেরকে সাহায্য করতে পারছে কি ?
فَكُبْكِبُوْا فِيْهَا هُمْ وَالْغَاوٗنَ ۙ
অতঃপর তাদের সবাইকে উপুড় করে তাতে নিক্ষেপ করা হবে, আর যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে তাদেরকেও।
قَالُوْا وَهُمْ فِيْهَا يَخْتَصِمُوْنَ ۙ
তারা নিজেদের মধ্যে যখন ঝগড়া বিবাদে মেতে উঠবে তখন কিন্তু এ কথাই বলবে,
تَاللّٰهِ اِنْ كُنَّا لَفِيْ ضَلٰلٍ مُّبِيْنٍ ۙ
আল্লাহর কসম ! আমরা তো সুস্পষ্ট বিভ্রান্তির মধ্যেই ছিলাম।
اِذْ نُسَوِّيْكُمْ بِرَبِّ الْعٰلَمِيْنَ
যখন আমরা তোমাদেরকে বিশ্বজগতের প্রতিপালকের সাথে সমকক্ষ বানাতাম'।
وَمَاۤ اَضَلَّنَاۤ اِلَّا الْمُجْرِمُوْنَ
এসব অপরাধীদের ছাড়া আর তো কেউ আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেনি।
فَلَوْ اَنَّ لَنَا كَرَّةً فَنَكُوْنَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ
এখন আবার যদি আমরা কোনো মতে ফিরে যেতে পারি, তা'হলে আমরা অবশ্যই মুমিনদের অন্তর্ভূক্ত হবো।
اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَةً ؕ وَمَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِيْنَ
নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে অধিকাংশই বিশ্বাসী হতে চায় না।
وَاِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيْزُ الرَّحِيْمُ
আর নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক, তিনি তো মহা-সম্মানী ও পরম দয়ালু।
كَذَّبَتْ قَوْمُ نُوْحِ الْمُرْسَلِيْنَ ۚۖ
নূহের জাতি রাসূলদেরকে মিথ্যাবাদী বলেছে।
اِذْ قَالَ لَهُمْ اَخُوْهُمْ نُوْحٌ اَلَا تَتَّقُوْنَ ۚ
যখন তাদের (জাতির) ভাই নূহ যখন লোকদেরকে বলে, তোমরা কি ভয় করবেনা না?
اِنِّيْ لَكُمْ رَسُوْلٌ اَمِيْنٌ ۙ
নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্যে একজন বিশ্বস্ত রাসূল।
فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوْنِ ۚ
অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, আর আমার আনুগত্য করো।
وَمَاۤ اَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ اَجْرٍ ۚ اِنْ اَجْرِيَ اِلَّا عَلٰي رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ ۚ
আর আমি এর জন্যে তোমাদের নিকট কোনো প্রতিদান চাচ্ছি না। আমার প্রতিদান বিশ্বজগতের প্রতিপালক ছাড়া অন্য কারোও নিকট নেই।
فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوْنِ ؕ
অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, আর আমার আনুগত্য করো।
قَالُوْۤا اَنُؤْمِنُ لَكَ وَاتَّبَعَكَ الْاَرْذَلُوْنَ ؕ
তারা বলে, আমরা কি তোমার প্রতি ঈমান আনবো ? অথচ তোমাকে অনুসরণ করছে (সমাজের) নিম্নশ্রেণীর লোকেরা।
اِنَّهُمْ عَنِ السَّمْعِ لَمَعْزُوْلُوْنَ ؕ
তাদেরকে কোরআন শ্রবণ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
قَالَ وَمَا عِلْمِيْ بِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ ۚ
সে বলে, তাদের পেশাগত কাজ কারবার সম্পর্কে আমি কি আর জানতে চাইবো?
فَلَا تَدْعُ مَعَ اللّٰهِ اِلٰـهًا اٰخَرَ فَتَكُوْنَ مِنَ الْمُعَذَّبِيْنَ ۚ
অতএব, তুমি আল্লাহর সাথে অন্য কোনো বিধানদাতাকে ডাকবে না। তা'হলে তুমি শাস্তিপ্রাপ্তদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে।
اِنْ حِسَابُهُمْ اِلَّا عَلٰي رَبِّيْ لَوْ تَشْعُرُوْنَ ۚ
তাদের হিসাব নিকাশ যদি কিছু থাকে, তবে সে কাজ তো আমার প্রতিপালকের কাছেই ন্যস্ত রয়েছে, তোমরা যদি কিছুমাত্র অনুভব করতে পারতে !
وَمَاۤ اَنَا بِطَارِدِ الْمُؤْمِنِيْنَ ۚ
আমি তো আর বিশ্বাসীদেরকে তাড়িয়ে দিতে যাচ্ছি না।
وَاخْفِضْ جَنَاحَكَ لِمَنِ اتَّبَعَكَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ ۚ
আর তোমার বাহু তাদের জন্য অবনত করো (অর্থাৎ বিনয়ী হও), বিশ্বাসীদের মধ্য হ'তে যারা তোমার অনুসরন করে।
اِنْ اَنَا اِلَّا نَذِيْرٌ مُّبِيْنٌ ؕ
আমি শুধু সুস্পষ্টরূপে সতর্ককারী বৈ-তো-নই।
قَالُوْا لَئِنْ لَّمْ تَنْتَهِ يٰنُوْحُ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْمَرْجُوْمِيْنَ ؕ
তারা বলে, হে নূহ! তুমি যদি বিরত না হও, তাহলে তুমি অবশ্যই পাথরের আঘাতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।
قَالَ رَبِّ اِنَّ قَوْمِيْ كَذَّبُوْنِ ۚۖ
সে বলে, হে আমার প্রতিপালক ! আমার জাতি আমাকে মিথ্যাবাদী বলছে !
فَافْتَحْ بَيْنِيْ وَبَيْنَهُمْ فَتْحًا وَّنَجِّنِيْ وَمَنْ مَّعِيَ مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ
সুতরাং আপনিই আমার ও তাদের মধ্যে বিজয়ের ফায়সালা করে দিন, আর আমাকে ও আমার সাথে যারা বিশ্বাসী রয়েছে তাদেরকে রক্ষা করুন।
فَاَنْجَيْنٰهُ وَمَنْ مَّعَهٗ فِي الْفُلْكِ الْمَشْحُوْنِ ۚ
অতঃপর আমি তাকে আর তার সাথীদেরকে সেই বোঝাই করা নৌ-যানের মধ্যে রক্ষা করি।
ثُمَّ اَغْرَقْنَا بَعْدُ الْبٰقِيْنَ ؕ
এরপর বাকী যারা থাকে তাদের সবাইকে ডুবিয়ে দিই।
اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَةً ؕ وَمَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِيْنَ
নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে অধিকাংশরাই বিশ্বাসী হতে চায় না।
وَاِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيْزُ الرَّحِيْمُ
আর নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক, তিনি তো মহা-সম্মানী ও পরম দয়ালু।
كَذَّبَتْ عَادُۨ الْمُرْسَلِيْنَ ۚۖ
আ'দ জাতিও যে রাসূলদেরকে মিথ্যা সাব্যস্ত করতে চায়।
اِذْ قَالَ لَهُمْ اَخُوْهُمْ هُوْدٌ اَلَا تَتَّقُوْنَ ۚ
তাই তাদের (জাতির) ভাই হূদ যখন (তার জাতির) লোকদেরকে বলে, তোমরা কি ভয় করবে না ?
اِنِّيْ لَكُمْ رَسُوْلٌ اَمِيْنٌ ۙ
নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্যে একজন বিশ্বস্ত রাসূল।
فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوْنِ ۚ
অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আর আমার আনুগত্য করো।
وَمَاۤ اَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ اَجْرٍ ۚ اِنْ اَجْرِيَ اِلَّا عَلٰي رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ ؕ
আর আমি এর জন্যে তোমাদের নিকট কোন প্রতিদান চাচ্ছি না ।আমার প্রতিদান বিশ্বজগতের প্রতিপালক ছাড়া অন্য কারোও নিকটে নেই।
اَتَبْنُوْنَ بِكُلِّ رِيْعٍ اٰيَةً تَعْبَثُوْنَ
তোমরা কি প্রত্যেক উঁচু স্থানে স্মৃতিচিহ্ন (মাজার) নির্মাণ করে যাচ্ছ? তোমরা নিরর্থক কাজ করছো।
وَتَتَّخِذُوْنَ مَصَانِعَ لَعَلَّكُمْ تَخْلُدُوْنَ ۚ
কি সব কারিগরী তোমরা বানিয়ে যাচ্ছ, যেন তোমরা চিরকাল এখানেই বাস করবে।
وَاِذَا بَطَشْتُمْ بَطَشْتُمْ جَبَّارِيْنَ ۚ
আর তোমরা যখন কাউকে পাকড়াও করো, তখন তোমরা স্বেচ্ছাচারী হয়ে পাকড়াও করো।
فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوْنِ ۚ
সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আর আমার অনুগত হও।
وَاتَّقُوا الَّذِيْۤ اَمَدَّكُمْ بِمَا تَعْلَمُوْنَ ۚ
'আর তোমরা তাঁকে ভয় করো যিনি তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন এমন কিছু দিয়ে, যা তোমরা জান'।
اَمَدَّكُمْ بِاَنْعَامٍ وَّبَنِيْنَ ۚۙ
‘তিনি তোমাদেরকে সাহায্য করেছেন চতুষ্পদ জন্তু ও সন্তান-সন্ততি দ্বারা’,
اِنِّيْۤ اَخَافُ عَلَيْكُمْ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيْمٍ ؕ
নিশ্চয় আমি তোমাদের ব্যাপারে আশংকা করছি, (কিয়ামতের সেই) মহান দিনের শাস্তি সম্পর্কে।
قَالُوْا سَوَآءٌ عَلَيْنَاۤ اَوَعَظْتَ اَمْ لَمْ تَكُنْ مِّنَ الْوٰعِظِيْنَ ۙ
তারা বলে, তুমি ওয়াজ কর কিংবা নাই কর, আমাদের জন্য সবই সমান। তুমি তো দেখছি বড় ওয়াজের বক্তা বনে গেলে ?
اِنْ هٰذَاۤ اِلَّا خُلُقُ الْاَوَّلِيْنَ ۙ
এসব তো আর কিছুই নয়, আগেকার লোকদের স্বভাব তো এই-ই ছিলো।
فَكَذَّبُوْهُ فَاَهْلَكْنٰهُمْ ؕ اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَةً ؕ وَمَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِيْنَ
এভাবে তারা হূদকে মিথ্যা সাব্যস্ত করতে চাইলে, আমিও তাদেরকে ধ্বংস করে দিই। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন নিহিত রয়েছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে অধিকাংশরাই বিশ্বাসী হতে চায় না।
وَاِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيْزُ الرَّحِيْمُ
আর নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক, তিনি তো মহা-সম্মানী ও পরম দয়ালু।
كَذَّبَتْ ثَمُوْدُ الْمُرْسَلِيْنَ ۚۖ
ছামূদ জাতিও রাসূলদেরকে মিথ্যা সাব্যস্ত করতে চায়।
اِذْ قَالَ لَهُمْ اَخُوْهُمْ صٰلِحٌ اَلَا تَتَّقُوْنَ ۚ
তাই তাদের ভাই ছালেহ্ যখন (তার জাতির) লোকদেরকে বলে, তোমরা কি ভয় করবে না?
اِنِّيْ لَكُمْ رَسُوْلٌ اَمِيْنٌ ۙ
নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্যে একজন বিশ্বস্ত রাসূল।
فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوْنِ ۚ
সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আর আমার অনুগত্য করো।
وَمَاۤ اَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ اَجْرٍ ۚ اِنْ اَجْرِيَ اِلَّا عَلٰي رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ ؕ
আমি তো আর এজন্যে তোমাদের নিকট কোনো রকম প্রতিদান চাচ্ছি না। আমার প্রতিদান যা আছে, তা বিশ্বজগতের প্রতিপালকের নিকট ছাড়া আর তো কোথাও নেই।
اَتُتْرَكُوْنَ فِيْ مَا هٰهُنَاۤ اٰمِنِيْنَ ۙ
তোমাদেরকে কি এখানে নিরাপদ অবস্থায় ছেড়ে রাখা হবে?
وَّزُرُوْعٍ وَّنَخْلٍ طَلْعُهَا هَضِيْمٌ ۚ
আর ফসলের ক্ষেত ও খেজুর বাগানের মধ্যে যার ছড়াগুলো সুকোমল রসে ভরা।
وَتَنْحِتُوْنَ مِنَ الْجِبَالِ بُيُوْتًا فٰرِهِيْنَ ۚ
পাহাড় কেটে কেটে বেশ সাজিয়ে গুছিয়ে তোমরা বাড়ীঘর তৈরী করেছো।
فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوْنِ ۚ
সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আর আমার আনুগত্য করো ।
وَلَا تُطِيْعُوْۤا اَمْرَ الْمُسْرِفِيْنَ ۙ
আর তোমরা সীমালঙ্ঘনকারীদের নির্দেশের আনুগত্য কর না।
الَّذِيْنَ يُفْسِدُوْنَ فِي الْاَرْضِ وَلَا يُصْلِحُوْنَ
যারা দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করে, আর সংশোধনের কাজ করে না।
قَالُوْۤا اِنَّمَاۤ اَنْتَ مِنَ الْمُسَحَّرِيْنَ ۚ
তারা বলে, তুমি মূলতঃ যাদু গ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত !
مَاۤ اَنْتَ اِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا ۚۖ فَاْتِ بِاٰيَةٍ اِنْ كُنْتَ مِنَ الصّٰدِقِيْنَ
তুমি তো আমাদের মতোই একজন মানুষ, বৈ-তো-নও ! যদি তুমি সত্যবাদী হয়েই থাক তাহলে কোন একটি নিদর্শন নিয়ে এসো'।
قَالَ هٰذِهٖ نَاقَةٌ لَّهَا شِرْبٌ وَّلَكُمْ شِرْبُ يَوْمٍ مَّعْلُوْمٍ ۚ
সালেহ বলে, এ একটি ঊট, এটার জন্যে পানি পান করার পালা একদিন, আর তোমাদের পানি পানের জন্যে পালা একদিন নির্দিষ্ট করা হল।
وَلَا تَمَسُّوْهَا بِسُوْٓءٍ فَيَاْخُذَكُمْ عَذَابُ يَوْمٍ عَظِيْمٍ
আর তোমরা এটাকে মন্দভাবে কষ্ট দেয়ার মতলবে স্পর্শ করবে না। তাহলে তোমাদেরকে সেই কঠিন দিনের শাস্তি এসে ঘিরে ধরবে।
فَعَقَرُوْهَا فَاَصْبَحُوْا نٰدِمِيْنَ ۙ
কিন্তু তারা সেই উটনীকে পায়ের রগ কেটে দিয়ে হত্যা করে। আর তারা পরদিন থেকে পস্তাতে শুরু করে।
فَاَخَذَهُمُ الْعَذَابُ ؕ اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَةً ؕ وَمَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِيْنَ
তারপরে শাস্তি এসে ওদেরকে ঘিরে ধরে। এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে, কিন্তু মানুষের মধ্যে অধিকাংশরাই যে বিশ্বাসী হতে চায় না।
وَاِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيْزُ الرَّحِيْمُ
আর নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক, তিনি তো মহা-সম্মানী ও পরম দয়ালু।
كَذَّبَتْ قَوْمُ لُوْطِ الْمُرْسَلِيْنَ ۚۖ
লূতের জাতিও রাসূলদেরকে মিথ্যা সাব্যস্ত করতে চায়।
اِذْ قَالَ لَهُمْ اَخُوْهُمْ لُوْطٌ اَلَا تَتَّقُوْنَ ۚ
যখন তাদেরকে তাদের ভাই লূত বলে, তোমরা কি ভয় করবে না?
اِنِّيْ لَكُمْ رَسُوْلٌ اَمِيْنٌ ۙ
নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্যে একজন বিশ্বস্ত রাসূল।
فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوْنِ ۚ
অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আর আমার আনুগত্য করো
وَمَاۤ اَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ اَجْرٍ ۚ اِنْ اَجْرِيَ اِلَّا عَلٰي رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ ؕ
আর আমি এর জন্যে তোমাদের নিকট কোনো প্রতিদান চাচ্ছি না। আমার প্রতিদান বিশ্বজগতের প্রতিপালক ছাড়া অন্য কারোও নিকটে নেই।
اَتَاْتُوْنَ الذُّكْرَانَ مِنَ الْعٰلَمِيْنَ ۙ
বিশ্বজগতের মধ্য তোমরাই তো পুরুষদের নিকট উপগত হও।
وَتَذَرُوْنَ مَا خَلَقَ لَكُمْ رَبُّكُمْ مِّنْ اَزْوَاجِكُمْ ؕ بَلْ اَنْتُمْ قَوْمٌ عٰدُوْنَ
তোমাদের জোড়া (স্ত্রীগণ) তাদেরকে তোমরা ছেড়ে দিয়েছো যাদেরকে তোমাদের জন্যই সৃষ্টি করে রেখেছেন। আসলে তোমরা এক সীমালংঘনকারী জাতি।
قَالُوْا لَئِنْ لَّمْ تَنْتَهِ يٰلُوْطُ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُخْرَجِيْنَ
(জাতির লোকেরা) বলে, হে লূত ! তুমি যদি বিরত না হও, তাহলে অবশ্যই তোমাকে বের করে দেওয়া হবে।
قَالَ اِنِّيْ لِعَمَلِكُمْ مِّنَ الْقَالِيْنَ ؕ
লূত বলে, নিশ্চয়ই আমি তোমাদের কাজকর্মকে ঘৃণাকরি।
رَبِّ نَجِّنِيْ وَاَهْلِيْ مِمَّا يَعْمَلُوْنَ
হে আমার প্রতিপালক ! আপনি আমাকে আর আমার পরিবারকে রক্ষা করুন, তারা যা করছে তা থেকে।
فَنَجَّيْنٰهُ وَاَهْلَهٗۤ اَجْمَعِيْنَ ۙ
অতঃপর আমি তাকে আর তার পরিবারের সবাইকে রক্ষা করি।
اِلَّا عَجُوْزًا فِي الْغٰبِرِيْنَ ۚ
কিন্তু এক বুড়ী (তার স্ত্রী) বাদে, সে তাদের সাথেই শামিল থাকে, যারা পিছনে পড়ে থাকে।
وَاَمْطَرْنَا عَلَيْهِمْ مَّطَرًا ۚ فَسَآءَ مَطَرُ الْمُنْذَرِيْنَ
আর তাদের উপরে শাস্তি বর্ষণ করি নিদারুণভাবে, সেটি বড়ই শোচনীয় বর্ষণ, ভয় প্রদর্শিতদের প্রতি এ বৃষ্টি বড়ই নিকৃষ্ট।
اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَةً ؕ وَمَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِيْنَ
নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে অধিকাংশরাই বিশ্বাসী হতে চায় না।
وَاِنَّ رَبَّكَ لَهُوَ الْعَزِيْزُ الرَّحِيْمُ
আর নিশ্চয়ই তোমার প্রতিপালক, তিনি তো মহা-সম্মানী ও পরম দয়ালু।
كَذَّبَ اَصْحٰبُ لْـَٔـيْكَةِ الْمُرْسَلِيْنَ ۚۖ
আর আয়কাহ (আমেরিকার) বিশেষ অধিবাসী ! (নেতা ও কর্মীরা) তারাও তো রাসূলদেরকে মিথ্যা আরোপ করে।
اِذْ قَالَ لَهُمْ شُعَيْبٌ اَلَا تَتَّقُوْنَ ۚ
শু'আইব যখন তাদেরকে বলে, তোমরা কি ভয় করবে না?
اِنِّيْ لَكُمْ رَسُوْلٌ اَمِيْنٌ ۙ
নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্যে একজন বিশ্বস্ত রাসূল'।
فَاتَّقُوا اللّٰهَ وَاَطِيْعُوْنِ ۚ
অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আর আমার আনুগত্য করো।
وَمَاۤ اَسْـَٔلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ اَجْرٍ ۚ اِنْ اَجْرِيَ اِلَّا عَلٰي رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ ؕ
আমি তো আর এজন্যে তোমাদের কাছে কোনো রকম প্রতিদান চাচ্ছি না। আমার প্রতিদান যা আছে, তা বিশ্বজগতের প্রতিপালকের নিকট ছাড়া আর তো কোথাও নেই।
اَوْفُوا الْكَيْلَ وَلَا تَكُوْنُوْا مِنَ الْمُخْسِرِيْنَ ۚ
তোমরা মাপ পূর্ণ করে দাও। তোমরা অনিষ্টকারীদের (মাপে কমদানকারীদের) অন্তর্ভূক্ত হয়ো না।
وَزِنُوْا بِالْقِسْطَاسِ الْمُسْتَقِيْمِ ۚ
তোমরা সঠিক দাড়ি-পাল্লা দিয়ে ওজন করবে।
وَلَا تَبْخَسُوا النَّاسَ اَشْيَآءَهُمْ وَلَا تَعْثَوْا فِي الْاَرْضِ مُفْسِدِيْنَ ۚ
আর মানুষকে তাদের প্রাপ্য জিনিসগুলো কম দিবে না। আর পৃথিবীতে তোমরা বিপর্যয় সৃষ্টিকারী হয়ে গোলযোগ সৃষ্টি করবে না।
وَاتَّقُوا الَّذِيْ خَلَقَكُمْ وَالْجِبِلَّةَ الْاَوَّلِيْنَ ؕ
তোমরা ভয় কর (তাঁকে), যিনি তোমাদেরকে আর তোমাদের পূর্ববর্তী জনগোষ্ঠীকেও সৃষ্টি করেছেন।
قَالُوْۤا اِنَّمَاۤ اَنْتَ مِنَ الْمُسَحَّرِيْنَ ۙ
তারা বলে, নিশ্চয়ই তুমি যাদুগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত।
وَمَاۤ اَنْتَ اِلَّا بَشَرٌ مِّثْلُنَا وَاِنْ نَّظُنُّكَ لَمِنَ الْكٰذِبِيْنَ ۚ
আর তুমিও তো আমাদের মতোই একজন মানুষ বৈ-তো-নও। আর নিশ্চয়ই আমরা তো তোমাকে মনে করি তুমি মিথ্যাবাদীদের অন্তর্ভুক্ত।
فَاَسْقِطْ عَلَيْنَا كِسَفًا مِّنَ السَّمَآءِ اِنْ كُنْتَ مِنَ الصّٰدِقِيْنَ ؕ
অতএব আকাশের এক টুকরা আমাদের উপরে ফেলে দেখাও না ? তুমি যদি সত্যবাদী হয়েই থাকো।
قَالَ رَبِّيْۤ اَعْلَمُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ
শু'আইব বলে, আমার প্রতিপালক খুব জানেন, তোমরা যা কিছু করে যাচ্ছো।
فَكَذَّبُوْهُ فَاَخَذَهُمْ عَذَابُ يَوْمِ الظُّلَّةِ ؕ اِنَّهٗ كَانَ عَذَابَ يَوْمٍ عَظِيْمٍ
(তারা) শু'আইবকে মিথ্যা সাব্যস্ত করতে চায়। তখন তাদেরকে মেঘাচ্ছন্ন দিনের শাস্তি এসে গ্রাস করে। নিশ্চয়ই সেই দিনের শাস্তি বড়ই ভয়াবহ শাস্তি হিসেবে গণ্য হয়।
اِنَّ فِيْ ذٰلِكَ لَاٰيَةً ؕ وَمَا كَانَ اَكْثَرُهُمْ مُّؤْمِنِيْنَ
নিশ্চয়ই এর মধ্যে নিদর্শন রয়েছে। কিন্তু মানুষের মধ্যে অধিকাংশরাই বিশ্বাসী হতে চায় না।
وَاِنَّهٗ لَتَنْزِيْلُ رَبِّ الْعٰلَمِيْنَ ؕ
আর নিশ্চয় এই কুরআন তো বিশ্বজগতের প্রতিপালকেই অবতীর্ণ করেছেন।
نَزَلَ بِهِ الرُّوْحُ الْاَمِيْنُ ۙ
যার সাথে বিশ্বস্ত হুকুমের শক্তি (রুহুল আমিন) অবতীর্ণ হয়েছে।
عَلٰي قَلْبِكَ لِتَكُوْنَ مِنَ الْمُنْذِرِيْنَ
তোমার হৃদয়ের উপর, যেনো তুমি সতর্ককারীদের অন্তর্ভুক্ত হও।
وَاِنَّهٗ لَفِيْ زُبُرِ الْاَوَّلِيْنَ
আর এ কথাটি পূর্বের (আয়াতের) টুকরাগুলোতেও লিখা রয়েছে।
اَوَلَمْ يَكُنْ لَّهُمْ اٰيَةً اَنْ يَّعْلَمَهٗ عُلَمٰٓؤُا بَنِيْۤ اِسْرَآءِيْلَ ؕ
মানুষের জন্যে এটা কি কোনও নিদর্শন নয় ? যে ইসরাঈল সন্তানদের ওলামা (মৌলবী পন্ডিতরাও) এ বিষয়ে জানে।
وَلَوْ نَزَّلْنٰهُ عَلٰي بَعْضِ الْاَعْجَمِيْنَ
আর আমি যদি এই কিতাব অষ্পষ্ট কোনো ভাষা-ভাষীর উপর অবতীর্ণ করতাম !
فَقَرَاَهٗ عَلَيْهِمْ مَّا كَانُوْا بِهٖ مُؤْمِنِيْنَ ؕ
অতঃপর সে যদি তা তাদের কাছে পড়ে শোনাতো, তবুও তারা তাতে ঈমান আনতো না।
كَذٰلِكَ سَلَكْنٰهُ فِيْ قُلُوْبِ الْمُجْرِمِيْنَ ؕ
এরূপেই তো আমি সেই অপরাধীদের অন্তরে অবিশ্বাস ঢুকিয়ে দিয়েছি।
لَا يُؤْمِنُوْنَ بِهٖ حَتّٰي يَرَوُا الْعَذَابَ الْاَلِيْمَ ۙ
তারা কিছুতেই তার প্রতি ঈমান আনবে না, যতক্ষন তারা নিদারুণ শাস্তি না দেখবে।
فَيَاْتِيَهُمْ بَغْتَةً وَّهُمْ لَا يَشْعُرُوْنَ ۙ
অতঃপর তাদের উপর তা হঠাৎকরেই এসে পড়বে, এমতাবস্থায় যে তারা অনুভবও করতে পারবে না।
فَيَقُوْلُوْا هَلْ نَحْنُ مُنْظَرُوْنَ ؕ
তখন তারা বলতে থাকবে সামান্য অবকাশ কি আমরা পাবো ?
اَفَبِعَذَابِنَا يَسْتَعْجِلُوْنَ
তবে কি তারা তাড়াহুড়া করে আমার শাস্তি তরান্বিত করতে চায়?
اَفَرَءَيْتَ اِنْ مَّتَّعْنٰهُمْ سِنِيْنَ ۙ
তুমি কি ভেবে দেখেছো ! আমি যদি তাদেরকে বহু বছর ভোগবিলাস করতে দিই।
ثُمَّ جَآءَهُمْ مَّا كَانُوْا يُوْعَدُوْنَ ۙ
এরপর তারা সেই পর্যায়ে পৌঁছায়। যে বিষয়ে তাদের সাথে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
مَاۤ اَغْنٰي عَنْهُمْ مَّا كَانُوْا يُمَتَّعُوْنَ ؕ
তাহলে তারা যা কিছু ভোগ দখল করছে, সে সব আর কি কাজে লাগবে?
وَمَاۤ اَهْلَكْنَا مِنْ قَرْيَةٍ اِلَّا لَهَا مُنْذِرُوْنَ ۖۛ
এমন কোন জনপদকে আমি ধ্বংস করিনা যেখানে কোনও সতর্ককারী (নবী-রাসুল) পাঠানো না হয়।
ذِكْرٰي ۟ۛ وَمَا كُنَّا ظٰلِمِيْنَ
স্মরণ করিয়ে দেবার জন্যে। অন্যায় অবিচার করা তো আর আমার কাজ নয়।
وَمَا يَنْۢبَغِيْ لَهُمْ وَمَا يَسْتَطِيْعُوْنَ ؕ
তারা তা করতেও পারে না। আর তেমন সাধ্যও তাদের নেই।
وَاَنْذِرْ عَشِيْرَتَكَ الْاَقْرَبِيْنَ ۙ
তুমি ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের বিশ জনকে সতর্ক করে দাও।*
*26(214)নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 8(65)...।
فَاِنْ عَصَوْكَ فَقُلْ اِنِّيْ بَرِيْٓءٌ مِّمَّا تَعْمَلُوْنَ ۚ
এর পরেও যদি তারা তোমাকে অমান্য করে চলে, তাহলে তুমি বলে দাও, তোমরা যা কিছু করে যাচ্ছো, আমি সে সব হতে দায়মুক্ত।
وَتَوَكَّلْ عَلَي الْعَزِيْزِ الرَّحِيْمِ ۙ
আর তুমি মহা-সম্মানী, পরম দয়ালুর উপরেই নির্ভর করো।
وَتَقَلُّبَكَ فِي السّٰجِدِيْنَ
আর তুমি যখন পরম আনুগত্য কারীদের মধ্যে চলাফেরা করো।*
*26(219)নং আয়াতের আরবী "تقلب"/তাকাল্লুব শব্দের ব্যাখ্যায় 3(196),16(46),40(4)...।
اِنَّهٗ هُوَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْمُ
নিশ্চয়ই তিনি সবকিছু শোনেন এবং সবকিছু জানেন।
هَلْ اُنَبِّئُكُمْ عَلٰي مَنْ تَنَزَّلُ الشَّيٰطِيْنُ ؕ
আমি কি তোমাদেরকে বলে দিবো, কার উপরে ব্যক্তিত্বের চাহিদা-শয়তানরা অবতীর্ণ হয়?
تَنَزَّلُ عَلٰي كُلِّ اَفَّاكٍ اَثِيْمٍ ۙ
প্রত্যেকটি ঘোর মিথ্যাবাদী ও পাপীদের উপরেই তারা অবতীর্ণ হয়।
يُّلْقُوْنَ السَّمْعَ وَاَكْثَرُهُمْ كٰذِبُوْنَ ؕ
যারা শোনা কথাই শুধু প্রচার করে, আর সেগুলোর মধ্যে অধিকাংশই মিথ্যা হয়।
وَالشُّعَرَآءُ يَتَّبِعُهُمُ الْغَاوٗنَ ؕ
আর কবিদের অনুসরণ করে বিভ্রান্ত লোকেরা।
اَلَمْ تَرَ اَنَّهُمْ فِيْ كُلِّ وَادٍ يَّهِيْمُوْنَ ۙ
তুমি কি দেখো না ? তারা প্রত্যেক উপত্যকার মধ্যেই উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরছে।
وَاَنَّهُمْ يَقُوْلُوْنَ مَا لَا يَفْعَلُوْنَ ۙ
আর তারা তাই বলে, যা তারা নিজেরা করে না।
اِلَّا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَذَكَرُوا اللّٰهَ كَثِيْرًا وَّانْتَصَرُوْا مِنْۢ بَعْدِ مَا ظُلِمُوْا ؕ وَسَيَعْلَمُ الَّذِيْنَ ظَلَمُوْۤا اَيَّ مُنْقَلَبٍ يَّنْقَلِبُوْنَ
তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সংশোধনের কর্ম করেছে, আর আল্লাহকে খুব বেশী পরিমাণ স্মরণ করেছে। আর তারা নির্যাতিত হ'লে পরে সঙ্গতভাবেই প্রতিশোধ নেয়। আর যারা নির্যাতন করেছে তারা শীঘ্রই জানতে পারবে কোন্ প্রত্যাবর্তন স্থলে তারা প্রত্যাবর্তন করবে।*
*26(226),নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 42(40-43),22(39)...।