সূরা : সুরা আল হাজ্জ
يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوْا رَبَّكُمْ ۚ اِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ شَيْءٌ عَظِيْمٌ
হে মানুষ ! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর। নিশ্চয়ই বিশেষ সময়ের প্রকম্পন বড়ই ভয়ঙ্কর ব্যাপার।
يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوْا رَبَّكُمْ ۚ اِنَّ زَلْزَلَةَ السَّاعَةِ شَيْءٌ عَظِيْمٌ
হে মানুষ ! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় কর। নিশ্চয়ই বিশেষ সময়ের প্রকম্পন বড়ই ভয়ঙ্কর ব্যাপার।
يَوْمَ تَرَوْنَهَا تَذْهَلُ كُلُّ مُرْضِعَةٍ عَمَّاۤ اَرْضَعَتْ وَتَضَعُ كُلُّ ذَاتِ حَمْلٍ حَمْلَهَا وَتَرَي النَّاسَ سُكٰرٰي وَمَا هُمْ بِسُكٰرٰي وَلٰكِنَّ عَذَابَ اللّٰهِ شَدِيْدٌ
তা যেদিন দেখবে, সেদিন প্রত্যেকটি স্তন্যদানকারিনী কোলের সন্তানকে ভুলে যাবে, প্রত্যেকটি গর্ভবতী তার গর্ভকে গর্ভপাত করে ফেলবে, আর তুমি লোকদেরকে মাতালের মতো দেখতে পাবে, অথচ তারা মাতাল থাকবে না। কিন্তু সেদিন আল্লাহর শাস্তি বড়ই কঠিন হবে।
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُّجَادِلُ فِي اللّٰهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَّيَتَّبِعُ كُلَّ شَيْطٰنٍ مَّرِيْدٍ ۙ
মানুষের মধ্যে কিছু লোক আল্লাহর সম্বন্ধে বিতর্ক করে, কোনো কিছুর জ্ঞান ছাড়াই। আর তারা প্রত্যেকটি অবাধ্য শয়তানকে অনুসরণ করে চলে।
كُتِبَ عَلَيْهِ اَنَّهٗ مَنْ تَوَلَّاهُ فَاَنَّهٗ يُضِلُّهٗ وَيَهْدِيْهِ اِلٰي عَذَابِ السَّعِيْرِ
যার সম্পর্কে লিখে দেওয়া হয়েছে যে কেউ শয়তানকে বন্ধু বানাবে, তখন সে নিশ্চয়ই তাকে বিভ্রান্ত করবে এবং তাকে পরিচালিত করবে সংকীর্ণ জায়গার শাস্তির দিকে।
يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ اِنْ كُنْتُمْ فِيْ رَيْبٍ مِّنَ الْبَعْثِ فَاِنَّا خَلَقْنٰكُمْ مِّنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ مِنْ مُّضْغَةٍ مُّخَلَّقَةٍ وَّغَيْرِ مُخَلَّقَةٍ لِّنُبَيِّنَ لَكُمْ ؕ وَنُقِرُّ فِي الْاَرْحَامِ مَا نَشَآءُ اِلٰۤي اَجَلٍ مُّسَمًّي ثُمَّ نُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوْۤا اَشُدَّكُمْ ۚ وَمِنْكُمْ مَّنْ يُّتَوَفّٰي وَمِنْكُمْ مَّنْ يُّرَدُّ اِلٰۤي اَرْذَلِ الْعُمُرِ لِكَيْلَا يَعْلَمَ مِنْۢ بَعْدِ عِلْمٍ شَيْئًا ؕ وَتَرَي الْاَرْضَ هَامِدَةً فَاِذَاۤ اَنْزَلْنَا عَلَيْهَا الْمَآءَ اهْتَزَّتْ وَرَبَتْ وَاَنْۢبَتَتْ مِنْ كُلِّ زَوْجٍۭ بَهِيْجٍ
হে মানবজাতি ! তোমরা যদি পুনরুত্থান সম্পর্কে সন্দেহের মধ্যে থাকো, তবে নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে মাটি হ'তে সৃষ্টি করেছি, এরপর শুক্র হ'তে, এরপর জমাট রক্ত পিন্ড হ'তে, এরপর নকশা যুক্ত সাদা পেশী হ'তে পূর্ণ ও অপূর্ণভাবে সৃষ্টি করেছি, যাতে আমি বিস্তারিতভাবে তোমাদেরকে বুঝিয়ে দিতে পারি। আর আমিই তো জরায়ুর মধ্যে যা আমার খুশী, নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত থামিয়ে রেখে দিই। এরপরে আমিই তোমাদেরকে শিশুরূপে সেখান থেকে বের করে নিয়ে আসি। এরপর (ব্যবস্থা করি) যেনো তোমরা তোমাদের যৌবনে পৌঁছে যাও। আর তোমাদের মধ্য হ'তে কাউকে মৃত্যু দেওয়া হয়। আবার তোমাদের মধ্য হ'তে কাউকে হীনতম বয়সের দিকে প্রত্যাবর্তন করানো হয়, যেনো সে সবকিছু জানার পরেও কিছুমাত্র না জানে। তুমি তো দেখতেই পাচ্ছো, ভূমি কিভাবে শুকনো অবস্থায় পড়ে থাকে। অতঃপর যখন আমি তার উপর পানি বর্ষণ করি, তখন তা তরুতাজা হয়ে উঠে। আর তাতে বিকাশ ধারা কার্যকরী হয়, সুন্দর মনোরম সর্বপ্রকার জিনিস বিপরীত জোড়া তাতে ফুটিয়ে তুলি।
ذٰلِكَ بِاَنَّ اللّٰهَ هُوَ الْحَقُّ وَاَنَّهٗ يُحْيِ الْمَوْتٰي وَاَنَّهٗ عَلٰي كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ ۙ
এটা এজন্যে যে, আল্লাহই প্রকৃত সত্য এবং তিনিই যে এসব মৃতদেরকে জীবিত করেন। আর এটা প্রমাণ করে যে, তিনি সব কিছুরই উপর পূর্ণ ক্ষমতা রাখেন।
وَّاَنَّ السَّاعَةَ اٰتِيَةٌ لَّا رَيْبَ فِيْهَا ۙ وَاَنَّ اللّٰهَ يَبْعَثُ مَنْ فِي الْقُبُوْرِ
আর এটা প্রমাণ করে যে, বিশেষ সময় (ক্বিয়ামত) আসবেই, তার মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই। আর একথাও প্রমাণ করে যে, (অগোচরের) ক্ববরসমূহের মধ্যে যারা রয়েছে তাদেরকে তো আল্লাহই উঠিয়ে থাকেন।
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يُّجَادِلُ فِي اللّٰهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَّلَا هُدًي وَّلَا كِتٰبٍ مُّنِيْرٍ ۙ
আবার কিছু লোক মানব সমাজে এমনও রয়েছ, যারা কোনো কিছুর জ্ঞান ছাড়াই আল্লাহ সম্বন্ধে ঝগড়া করে। তাদের কাছে কোনো পথ নির্দেশনা কিংবা আলোকময় কিতাব বলতে কিছুই নেই।
ثَانِيَ عِطْفِهٖ لِيُضِلَّ عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِ ؕ لَهٗ فِي الدُّنْيَا خِزْيٌ وَّنُذِيْقُهٗ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ عَذَابَ الْحَرِيْقِ
তাদের ঘাড় বাঁকা করে, যেনো মানুষকে আল্লাহর (কুরআনের) পথ হ'তে বিভ্রান্ত করতে পারে। তার জন্যে এই দুনিয়ার মধ্যে চরম দূর্গতি লাঞ্ছনা রয়েছে, আর কিয়ামতের দিন আমি তাদেরকে দহনের শাস্তি আস্বাদন করাবো।
ذٰلِكَ بِمَا قَدَّمَتْ يَدٰكَ وَاَنَّ اللّٰهَ لَيْسَ بِظَلَّامٍ لِّلْعَبِيْدِ
(বলা হবে) এটা এ কারণে, যা কিছু তোমার দু'হাত আগাম পাঠিয়েছে। আর এ কথাও সত্য যে, আল্লাহ তাঁর দাসদের উপরে অত্যাচার করেন না।
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّعْبُدُ اللّٰهَ عَلٰي حَرْفٍ ۚ فَاِنْ اَصَابَهٗ خَيْرُۨ اطْمَاَنَّ بِهٖ ۚ وَاِنْ اَصَابَتْهُ فِتْنَةُۨ انْقَلَبَ عَلٰي وَجْهِهٖ ۟ۚ خَسِرَ الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةَ ؕ ذٰلِكَ هُوَ الْخُسْرَانُ الْمُبِيْنُ
মানুষের মধ্যে কতক লোক এমন রয়েছে, যারা দ্বিধার সাথে আল্লাহর দাসত্ব করে। অতঃপর যদি তার কোন কল্যাণ হয় তবে সে তাতে প্রশান্ত হয়। আর যদি তার উপর কোন বিপর্যয় পৌঁছে, তখন সে তার আসল চেহারার উপর ফিরে যায় (অর্থাৎ কুফুরী করে)। সে তো দুনিয়া ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটাই সেই সুস্পষ্ট ক্ষতি।
يَدْعُوْا مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَا لَا يَضُرُّهٗ وَمَا لَا يَنْفَعُهٗ ؕ ذٰلِكَ هُوَ الضَّلٰلُ الْبَعِيْدُ ۚ
তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন কাউকে ডাকে, যে তার কোন ক্ষতি কিংবা উপকার কিছুই করতে পারে না। এটাই সেই সুদূর চরম পথভ্রষ্টতা।
يَدْعُوْا لَمَنْ ضَرُّهٗۤ اَقْرَبُ مِنْ نَّفْعِهٖ ؕ لَبِئْسَ الْمَوْلٰي وَلَبِئْسَ الْعَشِيْرُ
কেবল তাকেই ডেকে যাচ্ছে, যার অপকার তার উপকারের চাইতে অনেক ঘনিষ্ট। অবশ্যই এ যে বড় জঘন্য সঙ্গী, নিকৃষ্ট দশজন সঙ্গীর মতো।
اِنَّ اللّٰهَ يُدْخِلُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جَنّٰتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ ؕ اِنَّ اللّٰهَ يَفْعَلُ مَا يُرِيْدُ
যারা ঈমান এনেছে, আর সংশোধনের কাজ করেছে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার নিচ থেকে ঝর্ণাসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাই করেন, যা তিনি চান।
مَنْ كَانَ يَظُنُّ اَنْ لَّنْ يَّنْصُرَهُ اللّٰهُ فِي الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِ فَلْيَمْدُدْ بِسَبَبٍ اِلَي السَّمَآءِ ثُمَّ لْيَقْطَعْ فَلْيَنْظُرْ هَلْ يُذْهِبَنَّ كَيْدُهٗ مَا يَغِيْظُ
যে ব্যক্তি এমন ধারণা পোষন করেছে যে আল্লাহ তাকে দুনিয়া ও পরকালে সাহায্য করবেন না, তাহলে সে আকাশে একটি রশি টানিয়ে নিক, এরপর সেটাকে কেটে ফেলুক। তখন সে দেখে নিক তার এই কৌশল যোগে নিজের আক্রোশটা কিছুমাত্র কমলো কিনা ?
وَكَذٰلِكَ اَنْزَلْنٰهُ اٰيٰتٍۭ بَيِّنٰتٍ ۙ وَّاَنَّ اللّٰهَ يَهْدِيْ مَنْ يُّرِيْدُ
এভাবেই তো আমি কুরআনকে সুস্পষ্ট আয়াতরূপে অবতীর্ণ করেছি। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সঠিক পথ দেখান যে কেউ চায়।
اِنَّ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَالَّذِيْنَ هَادُوْا وَالصّٰبِئِيْنَ وَالنَّصٰرٰي وَالْمَجُوْسَ وَالَّذِيْنَ اَشْرَكُوْۤا ۖ اِنَّ اللّٰهَ يَفْصِلُ بَيْنَهُمْ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ عَلٰي كُلِّ شَيْءٍ شَهِيْدٌ
যারা ঈমান আনার দাবিদার মুসলমান, যারা হিদায়াতের দাবিদার ইয়াহুদী, যারা মূর্তিপূজক হিন্দু ও সাহায্য করার দাবিদার নাসারা (খ্রিষ্টান) এবং আগুনের উপাসক মাজুসী, আর অংশীবাদী মুশরিক, আল্লাহ নিশ্চয়ই তাদের মধ্যে কিয়ামতের সময় ফায়সালা করে দিবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছুর সম্পর্কে প্রত্যক্ষকারী/ সাক্ষ্যদাতা।
اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللّٰهَ يَسْجُدُ لَهٗ مَنْ فِي السَّمٰوٰتِ وَمَنْ فِي الْاَرْضِ وَالشَّمْسُ وَالْقَمَرُ وَالنُّجُوْمُ وَالْجِبَالُ وَالشَّجَرُ وَالدَّوَآبُّ وَكَثِيْرٌ مِّنَ النَّاسِ ؕ وَكَثِيْرٌ حَقَّ عَلَيْهِ الْعَذَابُ ؕ وَمَنْ يُّهِنِ اللّٰهُ فَمَا لَهٗ مِنْ مُّكْرِمٍ ؕ اِنَّ اللّٰهَ يَفْعَلُ مَا يَشَآءُ ؕٛ
তুমি কি দেখো নি ? আকাশমন্ডল ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে সবই যে আল্লাহরই পরম আনুগত্য করছে, সূর্য ও চাঁদ, নক্ষত্রমন্ডলী, পর্বতরাজি, গাছপালা, জীবজন্তু আর মানুষের মধ্য হ'তেও তো অনেকেই এতে শামিল রয়েছে। আবার অনেক লোক এমনও রয়েছে যাদের উপর শাস্তি নির্ধারিত করা হয়েছে। আর যে আল্লাহর দৃষ্টিতে অপমানের উপযুক্ত তার জন্যে কোনো সম্মানদাতা নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাই করেন যা তিনি ইচ্ছা করেন।
هٰذٰنِ خَصْمٰنِ اخْتَصَمُوْا فِيْ رَبِّهِمْ ۫ فَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا قُطِّعَتْ لَهُمْ ثِيَابٌ مِّنْ نَّارٍ ؕ يُصَبُّ مِنْ فَوْقِ رُءُوْسِهِمُ الْحَمِيْمُ
এই দুই বিবদমান পক্ষদ্বয়, যারা তাদের প্রতিপালকের সম্পর্কে বিতর্ক করছে। তাই যারা অস্বীকার করেছে, তাদের জন্যে আগুনের পোষাক কেটে তৈরী করা হয়েছে। আর তাদের মাথার উপর হতে ফুটন্ত পানি ঢেলে দেওয়া হবে।
يُصْهَرُ بِهٖ مَا فِيْ بُطُوْنِهِمْ وَالْجُلُوْدُ ؕ
তাদের পেটের মধ্যে যা কিছু রয়েছে, তাতে সে সব বেরিয়ে যাবে আর চামড়াও খসে পড়বে।
وَلَهُمْ مَّقَامِعُ مِنْ حَدِيْدٍ
আর তাদের জন্য রয়েছে লোহা দিয়ে তৈরি মোগুরগুলো।
كُلَّمَاۤ اَرَادُوْۤا اَنْ يَّخْرُجُوْا مِنْهَا مِنْ غَمٍّ اُعِيْدُوْا فِيْهَا وَذُوْقُوْا عَذَابَ الْحَرِيْقِ
যখনই তারা সেখান থেকে ভয় পেয়ে বেরিয়ে আসতে চাইবে, শোক-দুঃখের কবল থেকে মুক্তি লাভের চেষ্টা করবে, তখনি আবার তাদেরকে সেখানে নিক্ষেপ করা হবে। (বলা হবে) দহনের শাস্তির স্বাদ তোমরা নিতে থাকো।
اِنَّ اللّٰهَ يُدْخِلُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ جَنّٰتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ يُحَلَّوْنَ فِيْهَا مِنْ اَسَاوِرَ مِنْ ذَهَبٍ وَّلُؤْلُؤًا ؕ وَلِبَاسُهُمْ فِيْهَا حَرِيْرٌ
নিশ্চয় যারা ঈমান এনে সংশোধনের কাজ করে, আল্লাহ তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার নিচ থেকে ঝর্ণাসমূহ প্রবাহিত হচ্ছে। সেখানে তাদেরকে স্বর্ণ ও মুক্তা দ্বারা অলংকৃত করা হবে। আর সেখানে তাদের পোষাক হবে রেশমের।
وَهُدُوْۤا اِلٰي الطَّيِّبِ مِنَ الْقَوْلِ ۚۖ وَهُدُوْۤا اِلَي صِرَاطِ الْحَمِيْدِ
তাদেরকে বিশেষ বাণী থেকে পবিত্র পথের দিশা দেওয়া হয়েছে, আর তারা প্রসংশিতের পথের দিকে পরিচালিত হয়েছে।
اِنَّ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَيَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِيْلِ اللّٰهِ وَالْمَسْجِدِ الْحَرَامِ الَّذِيْ جَعَلْنٰهُ لِلنَّاسِ سَوَآءَۨ الْعَاكِفُ فِيْهِ وَالْبَادِ ؕ وَمَنْ يُّرِدْ فِيْهِ بِاِلْحَادٍۭ بِظُلْمٍ نُّذِقْهُ مِنْ عَذَابٍ اَلِيْمٍ
নিশ্চয়ই যারা অবিস্বাস করেছে, এবং যারা আল্লাহর (কুরআনের) পথে বাঁধা সৃষ্টি করে, আর মাসজিদুল হারামের পথে বাঁধা দেয়, যাকে আমি প্রত্যেকটি মানুষের জন্য সমান অধিকার দিয়েছি। যারা তাতে বাস করে, আর বাইরে থেকে যারা সেখানে আসে, সবার জন্যই। কিন্তু যে কেউ তাতে অন্যায়ভাবে পাপ কাজের ব্যাপারে চেষ্টা করবে, আমি তাকে নিদারুণ শাস্তি থেকে আস্বাদন করাবো।
وَاِذْ بَوَّاْنَا لِاِبْرٰهِيْمَ مَكَانَ الْبَيْتِ اَنْ لَّا تُشْرِكْ بِيْ شَيْئًا وَّطَهِّرْ بَيْتِيَ لِلطَّآئِفِيْنَ وَالْقَآئِمِيْنَ وَالرُّكَّعِ السُّجُوْدِ
আমি যখন ইবরাহীমকে বিশেষ ঘরের (কাবার) জায়গা নির্দিষ্ট করে দেখিয়ে দিই আর বলি, আমার সাথে কোনো কিছু তুমি শরীক করবে না, আর আমার ঘরকে যাতায়াতকারী ও (দায়িত্ব পালনে) দন্ডায়মানকারী, সহযোগিতা ও পরম আনুগত্য কারীদের জন্য পবিত্র করে রাখবে।
وَاَذِّنْ فِي النَّاسِ بِالْحَجِّ يَاْتُوْكَ رِجَالًا وَّعَلٰي كُلِّ ضَامِرٍ يَّاْتِيْنَ مِنْ كُلِّ فَجٍّ عَمِيْقٍ ۙ
আর ঘোষণা দিয়ে দাও মানব সমাজের মধ্যে হজ্জের ব্যাপারে ! তারা তোমার নিকট আসবে পায়ে হেঁটে, অথবা যে কোনো যান বাহনের উপর চড়ে।
لِّيَشْهَدُوْا مَنَافِعَ لَهُمْ وَيَذْكُرُوا اسْمَ اللّٰهِ فِيْۤ اَيَّامٍ مَّعْلُوْمٰتٍ عَلٰي مَا رَزَقَهُمْ مِّنْۢ بَهِيْمَةِ الْاَنْعَامِ ۚ فَكُلُوْا مِنْهَا وَاَطْعِمُوا الْبَآئِسَ الْفَقِيْرَ ۫
যেনো তারা নিজেদের উপকার লাভের জন্য হাজির হতে পারে। আর তারা যেনো জানা শোনা দিনগুলোতে চার পেয়ে জাবর কাটা পশুদের হ'তে যা কিছু তাদেরকে জীবিকা হিসেবে দান করা হয়েছে, তার উপর আল্লাহর নাম স্মরণ করে। অতঃপর তোমরা সবাই তা হ'তে খাবে। আর দুঃখী গরীবদেরকেও তা থেকে খেতে দিবে।
ثُمَّ لْيَقْضُوْا تَفَثَهُمْ وَلْيُوْفُوْا نُذُوْرَهُمْ وَلْيَطَّوَّفُوْا بِالْبَيْتِ الْعَتِيْقِ
এরপর কর্তব্য হচ্ছে নিজেদের অপবিত্রগুলিকে পরিস্কার করে ফেলা। আর নিজেদের কৃত মানতকে পুর্ণ করা, আর তারা যেনো সেই প্রাচীন বিশেষ গৃহেই যাতায়াত করে। *
* البيت العتيق পুরাতন ঘর বলতে আল্লাহর দাসত্বের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত দায়িত্ব (তথা সালাত) প্রতিষ্ঠার জন্য তৈরীকৃত সবচাইতে পুরাতন ঘর তথা কা‘বা ঘরকে বুঝানো হয়েছে। কারণ আল্লাহর দাসত্বের জন্য নির্মিত এটাই যমীনের বুকে সর্বপ্রথম ঘর। এব্যাপারে মহাগ্রন্হ আল-কোরআনের ,3(96,97),9(108),5(97),2(124-126),14(37)...। এবং মানত এর ব্যাপারে, 2(270),3(35),19(26),76(7)...।
ذٰلِكَ وَمَنْ يُّعَظِّمْ حُرُمٰتِ اللّٰهِ فَهُوَ خَيْرٌ لَّهٗ عِنْدَ رَبِّهٖ ؕ وَاُحِلَّتْ لَكُمُ الْاَنْعَامُ اِلَّا مَا يُتْلٰي عَلَيْكُمْ فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْاَوْثَانِ وَاجْتَنِبُوْا قَوْلَ الزُّوْرِ ۙ
একথা শুনলে ! যে কেউ আল্লাহর সম্মানিত জিনিসসমূহের মর্যাদা বহাল রাখবে। তাতে তারই ভালাই হবে নিজ প্রতিপালকের নিকটে। আর তোমাদের জন্য জাবরকাটা চতুষ্পদ প্রাণীকে হালাল করা হয়েছে। তবে তোমাদেরকে যা পড়ে শোনানো হয়েছে তা ছাড়া। তাই তোমরা সবাই মূর্তি পূজা ও ব্যক্তিত্বের আওতাধীন হওয়ার আবর্জনা আর মিথ্যা কথার কবল হতে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখবে।
حُنَفَآءَ لِلّٰهِ غَيْرَ مُشْرِكِيْنَ بِهٖ ؕ وَمَنْ يُّشْرِكْ بِاللّٰهِ فَكَاَنَّمَا خَرَّ مِنَ السَّمَآءِ فَتَخْطَفُهُ الطَّيْرُ اَوْ تَهْوِيْ بِهِ الرِّيْحُ فِيْ مَكَانٍ سَحِيْقٍ
আল্লাহর জন্যে একনিষ্ঠ হয়ে তাঁর কোরআনের সাথে কোন কিছুকে শরীক না করে। আর যে কেউ আল্লাহর সাথে শরীক করবে, সে তো এভাবে যেনো উঁচু জায়গা থেকে পড়ে যায়, আর (মরা লাশ ভক্ষণকারী) উড়ন্ত পাখি তাকে ছোঁ মেরে নিয়ে যায়। অথবা বাতাস তাকে উড়িয়ে কোনো দূরবর্তী স্থানে নিয়ে যায়।
ذٰلِكَ وَمَنْ يُّعَظِّمْ شَعَآئِرَ اللّٰهِ فَاِنَّهَا مِنْ تَقْوَي الْقُلُوْبِ
এটাই (আসল ব্যাপার)! যে কেউ আল্লাহর নিদর্শন সমূহের সম্মান করবে, সে তো অন্তরের তাকওয়ার কারণেই।
لَكُمْ فِيْهَا مَنَافِعُ اِلٰۤي اَجَلٍ مُّسَمًّي ثُمَّ مَحِلُّهَاۤ اِلَي الْبَيْتِ الْعَتِيْقِ
তোমাদের জন্য এতে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত অনেক উপকার নিহিত রয়েছে। এরপর সেগুলোকে সেই বিশেষ প্রাচীন (কাবা) ঘরের দিকে বৈধ স্থানে পৌঁছে দাও।
وَلِكُلِّ اُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكًا لِّيَذْكُرُوا اسْمَ اللّٰهِ عَلٰي مَا رَزَقَهُمْ مِّنْۢ بَهِيْمَةِ الْاَنْعَامِ ؕ فَاِلٰـهُكُمْ اِلٰهٌ وَّاحِدٌ فَلَهٗۤ اَسْلِمُوْا ؕ وَبَشِّرِ الْمُخْبِتِيْنَ ۙ
আর আমি প্রত্যেকটি জাতির জন্যই তো দাসত্বের নিয়ম নীতির একটিই ব্যবস্থা বানিয়ে দিয়েছি, চতুষ্পদ প্রাণীদের মধ্যে যারা জাবর কাটে, যা তাদেরকে জীবিকা হিসেবে দেওয়া হয়েছে (সেগুলো বিতরণের সময়ে) যেন আল্লাহর নাম স্মরণ করা হয়। তোমাদের সকলের বিধানদাতা হলেন একই বিধানদাতা। সুতরাং তোমরা তাঁরই নিকট আত্মসমর্পণ করো, আর (আল্লাহর হুকুমের কাছে) অবনতকারীদেরকে সুসংবাদ দাও।
الَّذِيْنَ اِذَا ذُكِرَ اللّٰهُ وَجِلَتْ قُلُوْبُهُمْ وَالصّٰبِرِيْنَ عَلٰي مَاۤ اَصَابَهُمْ وَالْمُقِيْمِي الصَّلٰوةِ ۙ وَمِمَّا رَزَقْنٰهُمْ يُنْفِقُوْنَ
আল্লাহর নাম স্মরণ কালে যাদের অন্তরগুলো কেপে উঠে, আর যারা ধৈয্যের সাথে মোকাবিলা করে যা কিছু (বিপদ) তাদের উপরে এসে পড়ে, আর যারা দায়িত্ব প্ৰতিষ্ঠা করে, আর তাদেরকে আমি যে জীবিকা দান করেছি তা থেকে খরচ করে থাকে।
وَالْبُدْنَ جَعَلْنٰهَا لَكُمْ مِّنْ شَعَآئِرِ اللّٰهِ لَكُمْ فِيْهَا خَيْرٌ ۖ فَاذْكُرُوا اسْمَ اللّٰهِ عَلَيْهَا صَوَآفَّ ۚ فَاِذَا وَجَبَتْ جُنُوْبُهَا فَكُلُوْا مِنْهَا وَاَطْعِمُوا الْقَانِعَ وَالْمُعْتَرَّ ؕ كَذٰلِكَ سَخَّرْنٰهَا لَكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُوْنَ
আর বিশেষ প্রাণীগুলোকে তোমাদের জন্যে আল্লাহর নিদর্শনাবলীর অন্তর্ভুক্ত করেছি, তোমাদের জন্যে এতে অনেক মঙ্গল নিহিত রয়েছে। তাই তোমরা সারিবদ্ধভাবে (দাড়ানো অবস্থায়) সেগুলোর উপর আল্লাহর নাম স্মরণ করো। অতঃপর সেগুলো যখন একপাশে কাত হয়ে পড়বে, তখন তোমরা সবাই তা হ'তে খাবে এবং খাওয়াবে ধৈর্যশীল অভাবগ্রস্তকে এবং চেয়ে-বেড়ায় এমন অভাবগ্রস্তকে। এভাবেই তো আমি সেগুলোকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছি যেনো তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।*
*22(36),নং আয়াতে বর্ণিত বিশেষ প্রাণীর ব্যাখ্যায় 6(142-145)...।
لَنْ يَّنَالَ اللّٰهَ لُحُوْمُهَا وَلَا دِمَآؤُهَا وَلٰكِنْ يَّنَالُهُ التَّقْوٰي مِنْكُمْ ؕ كَذٰلِكَ سَخَّرَهَا لَكُمْ لِتُكَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰي مَا هَدٰىكُمْ ؕ وَبَشِّرِ الْمُحْسِنِيْنَ
আল্লাহর কাছে সেগুলোর গোশ্ত পৌঁছায় না, আর সেগুলোর রক্তও পৌঁছায় না, বরং তোমাদের কাছ থেকে তাকওয়াই তাঁর নিকট পৌঁছে থাকে। এভাবেই সেগুলোকে আল্লাহ তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন। তোমরা যেনো আল্লাহর মহিমা ঘোষনা করো, কারণ তিনিই তোমাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন। আর উত্তম কর্মকারীদেরকে সুসংবাদ পৌঁছে দাও।
اِنَّ اللّٰهَ يُدٰفِعُ عَنِ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا يُحِبُّ كُلَّ خَوَّانٍ كَفُوْرٍ
নিশ্চয়ই আল্লাহ মু'মিনদের রক্ষা করবেন। আল্লাহ কোনো বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞকে ভালোবাসেন না।
اُذِنَ لِلَّذِيْنَ يُقٰتَلُوْنَ بِاَنَّهُمْ ظُلِمُوْا ؕ وَاِنَّ اللّٰهَ عَلٰي نَصْرِهِمْ لَقَدِيْرُۨ ۙ
প্রতিরোধের (কতলের) জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাদেরকে, যাদেরকে নির্যাতন করা হয়। আর আল্লাহ তাদের সাহায্য দানে নিশ্চয়ই পুর্ণ ক্ষমতা রাখেন। *
*22(39),নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 26(227),42(40-43)...।
الَّذِيْنَ اُخْرِجُوْا مِنْ دِيَارِهِمْ بِغَيْرِ حَقٍّ اِلَّاۤ اَنْ يَّقُوْلُوْا رَبُّنَا اللّٰهُ ؕ وَلَوْلَا دَفْعُ اللّٰهِ النَّاسَ بَعْضَهُمْ بِبَعْضٍ لَّهُدِّمَتْ صَوَامِعُ وَبِيَعٌ وَّصَلَوٰتٌ وَّمَسٰجِدُ يُذْكَرُ فِيْهَا اسْمُ اللّٰهِ كَثِيْرًا ؕ وَلَيَنْصُرَنَّ اللّٰهُ مَنْ يَّنْصُرُهٗ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَقَوِيٌّ عَزِيْزٌ
যাদেরকে তাদের নিজ বাড়ী-ঘর হ'তে অন্যায়ভাবে শুধু এ কারণে বের করে দেয়া হয় যে, তারা বলে, ‘আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ’। আর আল্লাহ যদি মানবজাতির একদলকে অপর দল দ্বারা দমন না করতেন, তবে বিধস্ত হয়ে যেত খাদ্য সামগ্রী সংগ্রহের স্থান (অর্থাৎ খাদ্য ভাণ্ডার), লেন-দেনের স্থান (ব্যাংক) এবং দায়িত্ব পালনের স্থান ও পরম আনুগত্য করার স্থানসমূহ - যেখানে আল্লাহর নাম অধিক স্মরণ করা হয়। আর আল্লাহ অবশ্যই তাকে সাহায্য করবেন, যে তাঁর সাহায্যের উপযুক্ত। নিশ্চয় আল্লাহ হলেন সর্বশক্তিধর, ও মহা সম্মানী।*
*22(40),নং আয়াতের দৃষ্টিতে 28(57) আয়াতে মুনাফিক্বদের মনের ভয় ও দাবী...।
اَلَّذِيْنَ اِنْ مَّكَّنّٰهُمْ فِي الْاَرْضِ اَقَامُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتَوُا الزَّكٰوةَ وَاَمَرُوْا بِالْمَعْرُوْفِ وَنَهَوْا عَنِ الْمُنْكَرِ ؕ وَلِلّٰهِ عَاقِبَةُ الْاُمُوْرِ
তাদেরকে আমি যদি দেশে ক্ষমতা দান করি, তাহলে তারা দায়িত্ব প্রতিষ্ঠা করবে, সাহায্য প্রদান করবে, সুপরিচিত বিধি (কিতাব) অনুযায়ী নির্দেশ দিবে, আর অসৎ কাজকর্ম হ'তে নিষেধ করবে। আর সব কাজের চুড়ান্ত পরিণতি শুধু আল্লাহরই হাতে রয়েছে।
وَاِنْ يُّكَذِّبُوْكَ فَقَدْ كَذَّبَتْ قَبْلَهُمْ قَوْمُ نُوْحٍ وَّعَادٌ وَّثَمُوْدُ ۙ
আর তারা যদি তোমাকে মিথ্যারোপ করে, তবে (আর্চয্যের কি) তাদের পূর্বেও তো নূহের জাতি, আ'দ ও সামূদ তেমন করেছে।
وَّاَصْحٰبُ مَدْيَنَ ۚ وَكُذِّبَ مُوْسٰي فَاَمْلَيْتُ لِلْكٰفِرِيْنَ ثُمَّ اَخَذْتُهُمْ ۚ فَكَيْفَ كَانَ نَكِيْرِ
এবং মাদইয়ানের অধিবাসীরাও মূসাকে মিথ্যারোপ করেছে। অতঃপর আমি কাফিরদের জন্যে অবকাশ দিই, এরপরে তাদেরকে আমি পাকড়াও করি। (ভেবে দেখো) তখন কেমন হবে আমার শাস্তি ?
فَكَاَيِّنْ مِّنْ قَرْيَةٍ اَهْلَكْنٰهَا وَهِيَ ظَالِمَةٌ فَهِيَ خَاوِيَةٌ عَلٰي عُرُوْشِهَا وَبِئْرٍ مُّعَطَّلَةٍ وَّقَصْرٍ مَّشِيْدٍ
এভাবে আমি কতো অসংখ্য (কথিত প্রাচীন সভ্যতার) জনপদ ধ্বংস করে দিয়েছি, কারণ সেগুলো অপরাধী ছিলো। সুতরাং সেগুলো নিজ নিজ ছাদের উপরেই পড়ে রয়েছে। কত কূপ এমনকি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। আর চুনকাম করা কতো প্রাসাদ-মহল বিধ্বস্ত হয়ে আছে।
اَفَلَمْ يَسِيْرُوْا فِي الْاَرْضِ فَتَكُوْنَ لَهُمْ قُلُوْبٌ يَّعْقِلُوْنَ بِهَاۤ اَوْ اٰذَانٌ يَّسْمَعُوْنَ بِهَا ۚ فَاِنَّهَا لَا تَعْمَي الْاَبْصَارُ وَلٰكِنْ تَعْمَي الْقُلُوْبُ الَّتِيْ فِي الصُّدُوْرِ
মানুষেরা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করবে না ? তাদের যে অন্তর আছে, নিশ্চয়ই তারা তা দিয়ে কিছুটা বুঝতে পারবে। কিংবা তাদের যে চোখ আছে তা দিয়ে তারা কিছুদিন দেখে নিবে। আসলে তাদের চোখ তো অন্ধ হয়নি, কিন্তু বুকসমূহের মধ্যে যে অন্তর রয়েছে তা অন্ধ হয়ে গেছে।
وَيَسْتَعْجِلُوْنَكَ بِالْعَذَابِ وَلَنْ يُّخْلِفَ اللّٰهُ وَعْدَهٗ ؕ وَاِنَّ يَوْمًا عِنْدَ رَبِّكَ كَاَلْفِ سَنَةٍ مِّمَّا تَعُدُّوْنَ
তারা শাস্তির ব্যাপারে তোমাকে তাড়াতাড়ি করতে বলে। অথচ কখনও আল্লাহ তাঁর প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করবেন না। আসলে তোমার প্রতিপালকের কাছে একটি দিন হচ্ছে, তোমাদের হিসাব-গণনা মোতাবিক এক হাজার বছরের সমান।
وَكَاَيِّنْ مِّنْ قَرْيَةٍ اَمْلَيْتُ لَهَا وَهِيَ ظَالِمَةٌ ثُمَّ اَخَذْتُهَا ۚ وَاِلَيَّ الْمَصِيْرُ
কত অসংখ্য জনপদ রয়েছে যেগুলোকে আমি ঢিল দিয়ে রেখেছি, অথচ সেগুলো বড়ই সীমালঙ্ঘনকারী। এরপরে আমি অবশ্য পাকড়াও করি। আর আমার কাছেই তো ফিরে আসতে হবে।
قُلْ يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ اِنَّمَاۤ اَنَا لَكُمْ نَذِيْرٌ مُّبِيْنٌ ۚ
তুমি ঘোষনা করে দাও ! হে মানুষ ! আমি তোমাদের জন্যে সুস্পষ্ট একজন সতর্ককারী।
فَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ لَهُمْ مَّغْفِرَةٌ وَّرِزْقٌ كَرِيْمٌ
সুতরাং যারা ঈমান এনে সংশোধনের কাজ করবে, তাদের জন্যেই তো ক্ষমা ও সম্মান জনক জীবিকা রয়েছে।
وَالَّذِيْنَ سَعَوْا فِيْۤ اٰيٰتِنَا مُعٰجِزِيْنَ اُولٰٓئِكَ اَصْحٰبُ الْجَحِيْمِ
আর যারা আমার আয়াতসমূহের মধ্যে ব্যর্থ করে দেখাতে চেষ্টা করে, তারাই তো সংকীর্ণ জায়গার অধিবাসী।
وَمَاۤ اَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ مِنْ رَّسُوْلٍ وَّلَا نَبِيٍّ اِلَّاۤ اِذَا تَمَنّٰۤي اَلْقَي الشَّيْطٰنُ فِيْۤ اُمْنِيَّتِهٖ ۚ فَيَنْسَخُ اللّٰهُ مَا يُلْقِي الشَّيْطٰنُ ثُمَّ يُحْكِمُ اللّٰهُ اٰيٰتِهٖ ؕ وَاللّٰهُ عَلِيْمٌ حَكِيْمٌ ۙ
তোমার পূর্বে রাসূল ও নবীদের মধ্যে যাদেরকে পাঠিয়েছি, তারা যখন নিজেদের আকাঙ্খা পেশ করেছে, তখন শয়তান তাদের আকাঙ্খার মধ্যে (কিছু) ছুড়ে দিয়েছে। কিন্ত শয়তান যা কিছু ছুড়ে দেয় আল্লাহ তা দূর করে দেন, এরপর আল্লাহ তাঁর আয়াতকে সুদৃঢ় করে দেন। আসলে আল্লাহ হলেন মহাজ্ঞানী ও মহা বৈজ্ঞানিক।
لِّيَجْعَلَ مَا يُلْقِي الشَّيْطٰنُ فِتْنَةً لِّلَّذِيْنَ فِيْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌ وَّالْقَاسِيَةِ قُلُوْبُهُمْ ؕ وَاِنَّ الظّٰلِمِيْنَ لَفِيْ شِقَاقٍۭ بَعِيْدٍ ۙ
যেনো এভাবে যাদের মনে ব্যধি রয়েছে, তাদেরকে পরীক্ষা করা যায়। আর যাদের মন কঠিন হয়ে গেছে শয়তান যা কিছু ছুড়ে দিয়েছে তাতে। আর নিশ্চয় সীমালংঘনকারীরা বিরোধীতার মাধ্যমে অনেক দূরেই সরে পড়েছে।
وَّلِيَعْلَمَ الَّذِيْنَ اُوْتُوا الْعِلْمَ اَنَّهُ الْحَقُّ مِنْ رَّبِّكَ فَيُؤْمِنُوْا بِهٖ فَتُخْبِتَ لَهٗ قُلُوْبُهُمْ ؕ وَاِنَّ اللّٰهَ لَهَادِ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْۤا اِلٰي صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ
আর যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে, আর এভাবে যেনো জানতে পারে যে, নিশ্চয় সত্য জ্ঞান তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকেই এসেছে। সুতরাং তারা তাতে ঈমান এনেছে, তাইতো তাদের অন্তর এর দ্বারা অবশেষে নরম হয়ে যায়। আসলে আল্লাহই যে তাদেরকে সত্য সুদৃঢ় পথ দেখিয়ে থাকেন, যারা ঈমান এনে থাকে।
وَلَا يَزَالُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا فِيْ مِرْيَةٍ مِّنْهُ حَتّٰي تَاْتِيَهُمُ السَّاعَةُ بَغْتَةً اَوْ يَاْتِيَهُمْ عَذَابُ يَوْمٍ عَقِيْمٍ
আর অবাধ্য লোকগুলোর অন্তরে কিন্তু তাতে সর্বদায় সন্দেহ থাকে। যতক্ষন না তাদের উপরে বিশেষ সময় (কিয়ামত) এসে যায়। কিংবা তাদের উপরে এমন বন্ধ্যা খারাপ দিনের শাস্তি এসে যাবে, যেদিন তারা মুক্তির কোনও পথ খুঁজে পাবে না।
اَلْمُلْكُ يَوْمَئِذٍ لِّلّٰهِ ؕ يَحْكُمُ بَيْنَهُمْ ؕ فَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ فِيْ جَنّٰتِ النَّعِيْمِ
একমাত্র রাজত্ব, সেদিনও তো শুধু আল্লাহরই থাকবে। তাদের মধ্যে আল্লাহই ফায়সালা করবেন। সুতরাং যারা ঈমান আনবে আর সংশোধনের কাজও করে আসবে, তারাই তো নানাবিধ নিয়ামতে ভরপুর জান্নাতে থাকবে।
وَالَّذِيْنَ كَفَرُوْا وَكَذَّبُوْا بِاٰيٰتِنَا فَاُولٰٓئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ مُّهِيْنٌ
আর যারা কাফির হয়ে অমান্য করবে, আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রমাণ করবে, তাদের জন্য তো চরম অপমানজনক শাস্তি রয়েছে।
وَالَّذِيْنَ هَاجَرُوْا فِيْ سَبِيْلِ اللّٰهِ ثُمَّ قُتِلُوْۤا اَوْ مَاتُوْا لَيَرْزُقَنَّهُمُ اللّٰهُ رِزْقًا حَسَنًا ؕ وَاِنَّ اللّٰهَ لَهُوَ خَيْرُ الرّٰزِقِيْنَ
আর যারা আল্লাহর কুরআনের পথে হিজরত করে সবকিছু ছেড়ে দিবে, এরপর কতলের মাধ্যমে অপমানিত হবে, কিংবা মারা যাবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে উৎকৃষ্ট জীবিকা দান করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকলের চাইতে উত্তম জীবিকাদাতা।
لَيُدْخِلَنَّهُمْ مُّدْخَلًا يَّرْضَوْنَهٗ ؕ وَاِنَّ اللّٰهَ لَعَلِيْمٌ حَلِيْمٌ
তিনি অবশ্যই তাদেরকে এমন এক প্রবেশস্থানে প্রবেশ করাবেন। তাতে তারা সন্তুষ্ট হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, পরম সহনশীল।
ذٰلِكَ ۚ وَمَنْ عَاقَبَ بِمِثْلِ مَا عُوْقِبَ بِهٖ ثُمَّ بُغِيَ عَلَيْهِ لَيَنْصُرَنَّهُ اللّٰهُ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَعَفُوٌّ غَفُوْرٌ
এটাও রয়েছে, যে কোনো ব্যক্তি প্রতিশোধ নিবে ঠিক ততটুকুই, যতখানি তাকে কষ্ট দেওয়া হয়েছে। এর পরেও যদি কেউ তার সাথে বাড়াবাড়ি করতে লেগে যায়, তাহলে আল্লাহ তাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল, মার্জনাকারী।
ذٰلِكَ بِاَنَّ اللّٰهَ يُوْلِجُ الَّيْلَ فِي النَّهَارِ وَيُوْلِجُ النَّهَارَ فِي الَّيْلِ وَاَنَّ اللّٰهَ سَمِيْعٌۢ بَصِيْرٌ
এটা এজন্য যে আল্লাহই তো রাতকে দিনের মধ্যে মিলিয়ে নেন, আবার দিনকে রাতের মধ্যে। আসলে আল্লাহই যে সব কিছু শোনেন ও দেখেন।
ذٰلِكَ بِاَنَّ اللّٰهَ هُوَ الْحَقُّ وَاَنَّ مَا يَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِهٖ هُوَ الْبَاطِلُ وَاَنَّ اللّٰهَ هُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيْرُ
একথাও সত্য যে, আল্লাহই হলেন সত্য সঠিক। আর আল্লাহকে বাদ দিয়ে মানুষেরা যাদেরকে (কাল্পনিক দেব-দেবী ও আকাবীর-আসলাফদেরকে) ডাকছে, সে সব বাতিল ও ভ্রান্ত। আসলে আল্লাহ হলেন সবার উপরে সুমহান মহিমাময়।
اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللّٰهَ اَنْزَلَ مِنَ السَّمَآءِ مَآءً ۫ فَتُصْبِحُ الْاَرْضُ مُخْضَرَّةً ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَطِيْفٌ خَبِيْرٌ ۚ
তুমি কি দেখোনি ? আল্লাহই তো আসমান হতে পানি বর্ষণ করে থাকেন, তারপরেই তো পৃথিবীর বুক সবুজ শ্যামলিময় তরুতাজা সুন্দর হয়ে ওঠে। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষুদ্র কৌশলকেও বেশ জানেন, আল্লাহ সব কিছুর খবর রাখছেন।
لَهٗ مَا فِي السَّمٰوٰتِ وَمَا فِي الْاَرْضِ ؕ وَاِنَّ اللّٰهَ لَهُوَ الْغَنِيُّ الْحَمِيْدُ
আকাশমন্ডল আর এই পৃথিবীর বুকে যা কিছু রয়েছে সবই যে তাঁরই জন্যে। নিশ্চয়ই একমাত্র আল্লাহই যে স্বয়ংসম্পূর্ণ আর আল্লাহই যে একমাত্র ধনী প্রশংসিত।
اَلَمْ تَرَ اَنَّ اللّٰهَ سَخَّرَ لَكُمْ مَّا فِي الْاَرْضِ وَالْفُلْكَ تَجْرِيْ فِي الْبَحْرِ بِاَمْرِهٖ ؕ وَيُمْسِكُ السَّمَآءَ اَنْ تَقَعَ عَلَي الْاَرْضِ اِلَّا بِاِذْنِهٖ ؕ اِنَّ اللّٰهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوْفٌ رَّحِيْمٌ
তুমি কি দেখতে পাও না ? আল্লাহই যে তোমাদের জন্য নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছেন, দুনিয়ার বুকে যা কিছু রয়েছে আর নৌ-যান সমূহকে যা নাকি তাঁর আদেশে সমুদ্রের বুকে ভেসে বেড়ায়। আর আসমানকেও আল্লাহ সামাল দিয়ে-আটকিয়ে রেখেছেন, যেনো দুনিয়ার উপরে পড়ে না যায়, তবে কিনা আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত। নিশ্চয় আল্লাহ মানুষের উপর দয়াপরবশ,পরম দয়ালু ।
وَهُوَ الَّذِيْۤ اَحْيَاكُمْ ۫ ثُمَّ يُمِيْتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيْكُمْ ؕ اِنَّ الْاِنْسَانَ لَكَفُوْرٌ
আর তিনিই তোমাদেরকে জীবিত করেছেন, এরপর তিনিই তোমাদের মৃত্যু দিবেন, এরপর আবার তোমাদেরকে জীবিত করবেন। নিশ্চয়ই মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ।
لِكُلِّ اُمَّةٍ جَعَلْنَا مَنْسَكًا هُمْ نَاسِكُوْهُ فَلَا يُنَازِعُنَّكَ فِي الْاَمْرِ وَادْعُ اِلٰي رَبِّكَ ؕ اِنَّكَ لَعَلٰي هُدًي مُّسْتَقِيْمٍ
প্রত্যেকটি জাতির জন্যে আমি দাসত্বের একটিই নিয়ম-নীতি ঠিক করে দিয়েছি। যেনো সবাই সেভাবেই দাসত্ব করে। সুতরাং তোমার কাজ নিয়ে ঝগড়া বাধানো তাদের পক্ষে মোটেই উচিত নয়। তুমি তোমার প্রতিপালকের দিকেই আহ্বান করে যাও। নিশ্চয় তুমি সুদৃঢ় পথের উপরেই রয়েছ।
وَاِنْ جٰدَلُوْكَ فَقُلِ اللّٰهُ اَعْلَمُ بِمَا تَعْمَلُوْنَ
আর মানুষেরা যদি তোমার সাথে ঝগড়া করতে লেগে যায়, তাহলে তুমি বলে দিবে আল্লাহই খুব জানেন তোমরা যা কিছু করছো।
اَللّٰهُ يَحْكُمُ بَيْنَكُمْ يَوْمَ الْقِيٰمَةِ فِيْمَا كُنْتُمْ فِيْهِ تَخْتَلِفُوْنَ
কিয়ামতের দিন আল্লাহ তোমাদের মধ্যে বিচার ফায়সালা করে দিবেন, যা নিয়ে তোমরা বিরোধ করেছিলে।
اَلَمْ تَعْلَمْ اَنَّ اللّٰهَ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَآءِ وَالْاَرْضِ ؕ اِنَّ ذٰلِكَ فِيْ كِتٰبٍ ؕ اِنَّ ذٰلِكَ عَلَي اللّٰهِ يَسِيْرٌ
তুমি কি জানো না ? যে আসমান যমীনের যেখানে যা কিছু রয়েছে, সবই যে আল্লাহ জানেন। আর এসব একটি কিতাবেই লিখা রয়েছে, একথা নিশ্চিত। আর অবশ্যই এ কাজটা আল্লাহর জন্য খুবই সহজ।
وَيَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهٖ سُلْطٰنًا وَّمَا لَيْسَ لَهُمْ بِهٖ عِلْمٌ ؕ وَمَا لِلظّٰلِمِيْنَ مِنْ نَّصِيْرٍ
অথচ মানুষ আল্লাহকে বাদ দিয়ে কতো কিছু (মনগড়া সংবিধানের রীতিনীতির) দাসত্ব করছে, যদিও সেজন্য তাদের কাছে কোনো সনদ প্রমাণ অবতীর্ণ করা হয়নি, আর সে বিষয়ে তাদের কোনো জ্ঞান ধারণাও যে নেই। সীমালঙ্ঘনকারীদের জন্যে তো কোনো সাহায্যকারীও নেই।
وَاِذَا تُتْلٰي عَلَيْهِمْ اٰيٰتُنَا بَيِّنٰتٍ تَعْرِفُ فِيْ وُجُوْهِ الَّذِيْنَ كَفَرُوا الْمُنْكَرَ ؕ يَكَادُوْنَ يَسْطُوْنَ بِالَّذِيْنَ يَتْلُوْنَ عَلَيْهِمْ اٰيٰتِنَا ؕ قُلْ اَفَاُنَبِّئُكُمْ بِشَرٍّ مِّنْ ذٰلِكُمْ ؕ اَلنَّارُ ؕ وَعَدَهَا اللّٰهُ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا ؕ وَبِئْسَ الْمَصِيْرُ
আর যখন তাদের নিকট আমার সুস্পষ্ট আয়াতগুলো তিলাওয়াত করা হয়, তখন কিন্তু কাফিরদের মুখমন্ডলে অসন্তোষের লক্ষণ দেখে তুমি তাদেরকে চিনতে পারবে; তাদের নিকট যারা আমার আয়াতগুলো তিলাওয়াত করে, তাদেরকে তারা আক্রমণ করতে উদ্যত হয়। বলো, তাহলে কি আমি তোমাদেরকে এর চেয়েও খারাপ কিছুর সম্পর্কে সংবাদ দেব? সেটা হলো আগুন। যারা কুফরী করে, আল্লাহ তাদেরকে এর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আর এটা কত নিকৃষ্ট প্রত্যাবর্তনস্থল!
يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ ضُرِبَ مَثَلٌ فَاسْتَمِعُوْا لَهٗ ؕ اِنَّ الَّذِيْنَ تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ لَنْ يَّخْلُقُوْا ذُبَابًا وَّلَوِ اجْتَمَعُوْا لَهٗ ؕ وَاِنْ يَّسْلُبْهُمُ الذُّبَابُ شَيْئًا لَّا يَسْتَنْقِذُوْهُ مِنْهُ ؕ ضَعُفَ الطَّالِبُ وَالْمَطْلُوْبُ
হে মানুষ ! একটি উপমা পেশ করা হচ্ছে। তাই তোমরা মনোযোগ দিয়ে শুনো ! তোমরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যে সব (পীর ও মৃত ব্যক্তিদের) ডাকছো তারা তো একটি মাছিও সৃষ্টি করতে পারে না। এ কাজের জন্য তারা যদি সবাই একত্রিত হয় তবুও। অথচ একটি মাছি যদি কিছু ছিনিয়ে নেয় তাহলে সে জিনিসটা তো তারা উদ্ধার করতে পারবে না। সাহায্য অন্বেষণকারী ও যার কাছে অন্বেষণ করা হয় উভয়েই দুর্বল।
مَا قَدَرُوا اللّٰهَ حَقَّ قَدْرِهٖ ؕ اِنَّ اللّٰهَ لَقَوِيٌّ عَزِيْزٌ
তারা আল্লাহকে যথাযথ সম্মান দিতে চায় না। নিশ্চয়ই আল্লাহ হলেন সর্বশক্তিধর ও মহা সম্মানী।
اَللّٰهُ يَصْطَفِيْ مِنَ الْمَلٰٓئِكَةِ رُسُلًا وَّمِنَ النَّاسِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ سَمِيْعٌۢ بَصِيْرٌ ۚ
আল্লাহ মনোনীত করেন মালা-ইকাদের মধ্য হ'তে বাণীবাহকরূপে রাসূল আর মানুষের মধ্য হ'তেও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব শুনেন, সব দেখেন।
يَعْلَمُ مَا بَيْنَ اَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ؕ وَاِلَي اللّٰهِ تُرْجَعُ الْاُمُوْرُ
তিনি ভালো জানেন, মানুষের সামনে ও পেছনে যা কিছু রয়েছে। আসলে সব ব্যাপার আল্লাহর দিকেই প্রত্যাবর্তিত হয়।
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا ارْكَعُوْا وَاسْجُدُوْا وَاعْبُدُوْا رَبَّكُمْ وَافْعَلُوا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ ۚٛ
হে যারা ঈমান এনেছ ! তোমরা পরস্পর সহযোগিতা করো, পরম আনুগত্য করো ও তোমাদের প্রতিপালকের দাসত্ব করো। আর যাবতীয় কল্যাণের কাজ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।
وَجَاهِدُوْا فِي اللّٰهِ حَقَّ جِهَادِهٖ ؕ هُوَ اجْتَبٰىكُمْ وَمَا جَعَلَ عَلَيْكُمْ فِي الدِّيْنِ مِنْ حَرَجٍ ؕ مِلَّةَ اَبِيْكُمْ اِبْرٰهِيْمَ ؕ هُوَ سَمّٰىكُمُ الْمُسْلِمِيْنَ ۙ مِنْ قَبْلُ وَفِيْ هٰذَا لِيَكُوْنَ الرَّسُوْلُ شَهِيْدًا عَلَيْكُمْ وَتَكُوْنُوْا شُهَدَآءَ عَلَي النَّاسِ ۚۖ فَاَقِيْمُوا الصَّلٰوةَ وَاٰتُوا الزَّكٰوةَ وَاعْتَصِمُوْا بِاللّٰهِ ؕ هُوَ مَوْلٰىكُمْ ۚ فَنِعْمَ الْمَوْلٰي وَنِعْمَ النَّصِيْرُ
আর তোমরা আল্লাহর পথে উৎকৃষ্টতমকর্ম করো, যথাযথভাবে তাঁর (নির্দেশিত) উৎকৃষ্টতমকর্ম। তিনি তোমাদেরকে মনোনীত করেছেন। আর তিনি তোমাদের উপর জীবন ব্যবস্থার ব্যাপারেও অসুবিধার কোনো কিছু আরোপ করেননি। তোমাদের সকলের পিতা ইবরাহীমের পথপন্থায় তোমরা প্রতিষ্ঠিত থাকো। তিনিই তোমাদের নাম দিয়েছেন 'মুসলিম' পূর্ব থেকেই এবং এই ব্যাপারে যেনো রাসূল তোমাদের উপর সাক্ষী হতে পারে। আর তোমরাও যেন সমস্ত মানব জাতির উপরে সাক্ষী হতে পারো! সুতরাং তোমরা দায়িত্ব প্রতিষ্ঠা করো ও সাহায্য প্রদান করো, আর তোমরা সবাই আল্লাহকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো। তিনিই তোমাদের অভিভাবক। অতএব তিনি কতো উত্তম অভিভাবক আর কতোই না উত্তম সাহায্যকারী!*
*22(78) নং আয়াতের ব্যাখ্যায় 2(143),41(33,34), 3(19,20,81-85)....